নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানব পাচারকারীরা মানবতার শত্রু

৩১ শে মে, ২০১৫ সকাল ৮:৪৫

বহুদিন ধরে আমাদের সমাজে একটা কথা চালু আছে তা হলো মানুষ যখন রাতারাতি বিত্তশালী হয়ে উঠে তখন কটাক্ষ করে বলতে শুনেছি মনে হয় লোকটি আদম বেপারীতে জড়িত। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের কাছে একটি বদ্ধমূল ধারণা জন্মেছে যে সহজেই অবৈধভাবে আয়ের একমাত্র পথ হচ্ছে এই আদম ব্যবসা যা ভাষার পরিবর্তনে আজকে হয়েছে মানবপাচার ব্যবসা। যদিও বা আজকের সমাজে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার অনেক পথই মানুষ বের করেছে তথাপিও সভ্য জগতে পৃথিবীর বহু দেশেই আদি দাস প্রথাকেও হার মানিয়ে আশঙ্কাজনক হারে জড়িয়ে পড়েছে এই মানবপাচার কাজে। তেমনিভাবে আমাদের দেশেও উদ্বেকজনক হারে অমানবিক এই পেশায় যুক্ত হয়েছে সমাজের অসংখ্য মানুষ।
সম্প্রতি থাইল্যান্ডের সমুদ্র উপকুলীয় সীমান্তের গহীন জঙ্গলে মানবপাচারকারীদের আস্তানা থেকে মৃত মানুষের হাড়-গোড় উদ্ধারের পর সে দেশের পুলিশ অনুসন্ধান করে অসংখ্য গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। যার বেশির ভাগই রোহিঙ্গা মুসলমান কিংবা ভাগ্য বিড়ম্বিত বাংলাদেশি মানব সন্তানের। সমুদ্র পথে বিভিন্নভাবে পাচার হওয়া এই মানুষগুলোর রোগে-শোকে, খাদ্যের অভাবে কিংবা পাচারকারীদের হাতে নির্যাতিত হয়ে মারা যাচ্ছে, যার পরিণতিতে ভিন দেশের মাটি চাপায় হয়েছে তাদের চিরকালের ঠিকানা। এদিকে মালয়েশিয়ার উপক‚লীয় সীমান্তের সংরক্ষিত একটি এলাকায়ও গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রালয় সূত্রে জানা যায় সন্ধান পাওয়া গণকবরে উদ্ধার হওয়া দুইশজনই বাংলাদেশি নাগরিক। যদিও বা এর সত্যতা নিশ্চিত করা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। থাইল্যান্ডে প্রথম গণকবর আবিষ্কার হওয়ার পর যখন বিশ্ব মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হলে বাংলাদেশেও এই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। কেননা পাচার হওয়া মানুষের মধ্যে অসংখ্য বাংলাদেশি নাগরিকও রয়েছে।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এ ঘটনায় সাগরে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে উঠে আসে মাসের পর মাস ভাসতে থাকা পাচার হওয়া হাজার হাজার নারী-পুরুষের জীবন-মৃত্যুর করুণ কাহিনী। বিশ্ব মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার পেয়েছে এ অমানবিক ঘটনার। আর তখনই ঘুম ভাঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। দেরীতে ঘুম ভাঙ্গার কাহিনী আজ এদেশের কারোরই অজানা নয়। নড়ে চড়ে উঠে পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র। পাচারকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে পুলিশ-বিজিবি। গ্রেপ্তার হয় কিছু পাচারকারী। ক্রসফায়ারে মারা যায় কয়েকজন পাচারকারী। পাচারকারীদের হাত থেকে উদ্ধার হয় দুয়েকজন এবং সাগরে ভাসমান কিছু মানুষকে উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। ফলে স্বভাতই প্রশ্ন উঠতে পারে এই পাচারকারীরা এতদিন কিভাবে বহাল তবিয়তে সমাজে চলাফেরা করেছে। কিভাবে তারা হাজার হাজার নারী-পুরুষকে পাচার করে সাগরে ভাসিয়ে দিল আর দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কিভাবে এত সংখ্যক মানুষ নিখোঁজ হয়ে গেল আর আমাদের রাষ্ট্র কিছুই জানল না। এ যেন এক বিষ্ময়কর ঘটনা। এখন এ ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর সাধারণ মানুষ সরকারের কাছে যে দাবিটি জোরালভাবে সামনে নিয়ে এসেছে তা হলো-যারা দারিদ্র্যতার সুযোগ নিয়ে মিথ্যা প্রলোভনে ফেলে কিংবা উন্নত জীবনের কথা বলে সাধারণ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে এমনকি পাচারের পর জিম্মি করে স্বজনদের কাছে মুক্তিপন আদায়ের মত ঘৃণ্য অপরাধ করে যারা এই সমাজে প্রাসাদ গড়েছে। এদের শাস্তি দিতে গিয়ে রাস্ট্রের কোন প্রকার শৈথিল্য প্রকাশ পায় তাহলে সরকারকে জনতার কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে জনগণ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.