নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

খালেদার সৌদি সফর বাতিলের নেপথ্যে

১২ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৩৬

রুমানা জামান : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঠিক কী কারণে ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে যাননি তা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন দলের কেউই। তবে এ নিয়ে দলের ভেতরে ও বাইরে নানা গুঞ্জনে শুধু ধোঁয়াশাই তৈরি হয়নি, উঠে আসছে অনেক প্রশ্নও। তবে ধারণা থেকে দলের নেতারা কেউ কেউ বলছেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভিসা জটিলতা। কেউ বলছেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের জামিন না হওয়ায় তিনি দেশের বাইরে যাচ্ছেন না। আবার কেউ বলছেন, বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাসকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করায় তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে একটি বিশেষ আশঙ্কা থেকেই যে বিএনপি নেত্রী হঠাৎ করে তার পূর্বনির্ধারিত সফর বাতিল করেছেন এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে দলের নীতিনির্ধারণী সূত্র থেকে।
সূত্র জানায়, মূলত নেতৃত্ব হারানোর ভয়েই সৌদি যাওয়া থেকে বিরত থেকেছেন খালেদা জিয়া। বিএনপির উচ্চপর্যায়ে এমন সংবাদ ছিল যে, খালেদা জিয়া সৌদি আরব গেলে তাকে আর ফিরতে নাও দেয়া হতে পারে। তাকে বাইরে রেখেই দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের নয়া প্রক্রিয়া শুরু করা হতে পারে। অনেক আগে থেকেই বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের বাইরে রয়েছেন। তার দেশে আসা সম্ভব হচ্ছে না। এখন ওমরাহ পালনের জন্য খালেদা জিয়া দেশের বাইরে যাওয়ার পর যদি তাকে বাইরে থাকতে বাধ্য করা যায় তাহলে সরকার বিশেষ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশের রাজনীতিক অঙ্গনে তারেক রহমানের মতো খালেদা জিয়ারও সরাসরি অংশ নেয়ার সুযোগ থাকবে না।
আর এ সুযোগে সরকার দায়সারা একটি নতুন নির্বাচন করিয়ে নেবে। বিএনপির উচ্চপর্যায়ে এ ধরনের বার্তা থাকার কারণে খালেদা জিয়া সৌদি সফর বাতিল করেছেন বলে সূত্রটি নিশ্চিতভাবে জানিয়েছে।
সূত্রটি আরো জানায়, সৌদি আরবে যাওয়ার পর খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তাকে যেন কোনো বিমানই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে না দেয় এমন উদ্যোগও নেয়া হয়েছিল। আর আন্তর্জাতিক মহলের চাপে দেশে ফিরলেও বিমানবন্দর থেকেই বিএনপি চেয়ারপারসনকে গ্রেপ্তার করে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হতো।
সূত্রের দাবি- খালেদা জিয়ার বিদেশে নির্বাসন বা গ্রেপ্তারের ঘটনার পর দ্রুতই বিএনপিতে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হতো। আর দলের চেয়ারপারসন, মহাসচিব ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান পদে দেখা যেত নতুন মুখ। আর এ বিষয়গুলো নিয়ে দলের সিনিয়র পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বেশ জোরেশোরে কাজ করছিলেন। শেষ মুহূর্তে লন্ডনে এমন ষড়যন্ত্রের খবর পৌঁছলে তারেক রহমানের অনুরোধে সৌদি সফর বাতিল করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার সৌদি সফরের আগেই তার অনুপস্থিতে কে দলের নেতৃত্ব দেবেন- এ বিষয়ে সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং সরকারি শিবির থেকে বিএনপির নেতৃত্ব পরিবর্তন হচ্ছে বলে উচ্ছ¡াস প্রকাশ করা হয়। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও সাবেক পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিএনপির সংস্কারের ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। কীভাবে সেই সংস্কার করতে হবে তাও তিনি বলে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়াকে দলে থেকে সরিয়ে দিলেই বিএনপির সংস্কার হয়ে যাবে। তার ওই কথায় খালেদা জিয়াকে দলের নেতৃত্ব থেকে সরানোর আভাস খুবই স্পষ্ট। এমনকি এ নিয়ে পর্দার অন্তরালে তারা একাধিক কুশীলবের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। আর এ কারণে বিশেষ সূত্র থেকে পাওয়া ষড়যন্ত্রের খবরে নড়েচড়ে বসেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।
এদিকে খালেদা জিয়ার ওমরাহ করতে না যাওয়ার কারণে সরকার যে মনোক্ষুণœ তাও চাপা থাকেনি বেশিক্ষণ। বেশ খানকটা অশান্তিতেও আছেন তারা। গত বুধবার বিকেলে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, খালেদা জিয়া রমজান মাসে ইফতার সামনে রেখে ক্রমাগত মিথ্যাচার করছেন। এবার নতুন করে ওমরাহ-হজকে কেন্দ্র করে সমস্যা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন। তবে খালেদা জিয়ার সৌদি সফর বাতিল নিয়ে সরকারি শিবিরে কিছুটা অস্থিরতাও কাজ করছে। সরকারি একটি সূত্র প্রশ্ন রাখেন, কী হবে দেশে। নেত্রী বিদেশ গেলেন না।
খালেদা জিয়ার সৌদি সফরে না যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান ভোরের কাগজকে বলেন, আমার জানা মতে তারেক রহমানের ভিসা জটিলতার কারণেই আমাদের নেত্রী সৌদি আরবে যাননি। তা ছাড়া তার ব্যক্তিগত কারণ থাকাটাও তো অস্বাভাবিক কিছুই না। এর চেয়ে বেশি আমি জানি না, কিছু বলতেও চাই না।
দলটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামন রিপন খালেদা জিয়ার সৌদিতে না যাওয়ার কোনো কারণ ব্যাখ্যা না করে গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতি বছর সৌদি বাদশাহর আমন্ত্রণে বিএনপি চেয়ারপারসন ওমরাহ করতে গেলেও এবার তিনি যাচ্ছেন না। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন সিনিয়র নেতা ও অসংখ্য কর্মী এখনো কারাবন্দি। এই মুহ‚র্তে ম্যাডাম তাদের পাশে থাকার কথা চিন্তা করছেন। অবশ্য ঈদের পর সুবিধাজনক সময়ে তিনি ওমরাহ করতে যাবেন। আর এটা সম্পূর্ণই তার ওপর নির্ভর করবে।
প্রসঙ্গত, সৌদি সরকারের রাজকীয় অতিথি হিসেবে বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় এমিরেটস এয়ারওয়েজের উড়োজাহাজে ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ার কথা ছিল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার। সেখানে দেখা হওয়ার কথা ছিল বড় ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে। আলাপ হতো দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে। কিন্তু গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে আকস্মিককভাবে এ সফর বাতিল করেন খালেদা জিয়া।
http://www.bhorerkagoj.net/print-edition/2015/07/12/41700.php

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.