নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে দেশজ অর্থনৈতিক দর্শন

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:৫০

গণতন্ত্র মানে শৃঙ্খলা, কিছু বিধি-নিষেধ। গণতন্ত্র মানে আইনের শাসন।

গণতন্ত্র উচ্ছৃঙ্খলতা ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে। গণতান্ত্রিক দেশে যা খুশি তা করা যায় না। আমরা আমাদের দেশকে গণতান্ত্রিক দেশ বলে গর্ব করি। অথচ সাম্রাজ্যবাদী চক্র তথা বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কুপরামর্শে বাজার অর্থনীতির নামে আমাদের দেশটাকে একটা নৈরাজ্যজনক অবস্থার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। কৃষি, শিল্প, পরিবহন, ব্যাংকব্যবস্থা, বাণিজ্য, শিক্ষাব্যবস্থা—সর্বত্র নৈরাজ্য। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ অত্যন্ত জরুরি। প্রশ্ন হচ্ছে, কিভাবে ও কোন পথে? বাজার অর্থনীতির ধকল পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ধারক-বাহক দেশগুলোই সহ্য করতে পারেনি। তারা সবাই এক দীর্ঘমেয়াদি মহাসংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে। এই সংকটের শুরু সেই ২০০৭ সালের শেষ দিকে। বর্তমানে এটা তৃতীয় স্তর অতিক্রম করছে। প্রথম স্তরে আইসল্যান্ড, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, স্পেনসহ বেশ কিছু দেশ দেউলিয়া হয়ে যায়। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি ও জাপান দেউলিয়াত্বের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল। বাঁচার জন্য তারা সব ধরনের জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি কাটছাঁট করেই ক্ষান্ত হয়নি, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের পেনশন পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাঁটাই করেছে অত্যন্ত নির্দয় ও অমানবিকভাবে। বন্ধ করেছে উৎপাদন।
পুঁজিবাদ তথা পুঁজিপতিদের বাঁচানোর জন্য তথাকথিত বেল-আউটের নামে জনগণের করের টাকা ওসব দেশের সরকারগুলো তুলে দিয়েছে পুঁজিপতিদের হাতে। সর্বত্র নৈরাজ্য ও আস্থাহীনতা, কেউ কাউকে বিশ্বাস করছে না, ব্যক্তি ব্যাংককে ও ব্যাংক ব্যাংককে, বীমা প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বাস করছে না। স্টক মার্কেট ফেল। বিনিয়োগ হচ্ছে না। সুদহার শূন্য করেও না। অনেকে ক্ষতি সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ও নিচ্ছে। বেকারত্ব বেড়েছে হু হু করে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও জাপানে এই হার কমবেশি ১০ শতাংশ। অন্যান্য দেশে আরো বেশি; স্পেন, পর্তুগাল ও গ্রিসে প্রায় অর্ধেক মানুষ বেকারত্বের শিকার। প্রথম স্তরে প্রবৃদ্ধি ছিল ঋণাত্মক, দ্বিতীয় স্তরে শূন্যের কোঠায়, বর্তমানে চলমান তৃতীয় স্তরে এসে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও তা টেকসই হচ্ছে না। জাপানে তো আবার ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধির মুখে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনে যেতে দস্তুরমতো বাধ্য হয়েছেন। ওদিকে খনিজ সম্পদ রপ্তানিকারক দেশ অস্ট্রেলিয়ার রপ্তানি হ্রাস পাওয়ায় প্রবৃদ্ধি কমে গেছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে বেকারত্ব (বর্তমানে প্রায় ৬ শতাংশ)। পুঁজিবাদী উন্নত দেশগুলোর এমন দুরবস্থার মধ্যেও আমাদের দেশ কিছুুটা ভালো অবস্থানে আছে, অর্থাৎ প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে ধরে রাখতে পেরেছে। এর কারণ সম্ভবত এই সময়ে মহাজোট সরকারের ক্ষমতায় আসা; এ সরকারের ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পবান্ধব ও দরিদ্রবান্ধব আর্থিক ও মুদ্রানীতি অনুসরণ এবং সর্বোপরি পরিকল্পনায় ফিরে আসা; আন্তর্জাতিক ব্যাংকব্যবস্থার সঙ্গে আমাদের দুর্বল সম্পর্ক ও আমাদের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ধরন (পোশাক, পাদুকা, চিংড়ি ইত্যাদি অনেকটা কম দামি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য উন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলোর জন্য)। অন্যদিকে চীনের প্রবৃদ্ধি কিন্তু এই সময়কালে ৭ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যেই ছিল। বিশ্ববাজারের সঙ্গে চীনের শক্ত সম্পর্ক থাকলেও সরকারের নিয়ন্ত্রিত বাজারনীতি এবং সতর্ক আর্থিক ও মুদ্রানীতির কারণে তারা তাদের অর্থনীতি শুধু সংকটমুক্তই রাখেনি, প্রবৃদ্ধিও যথেষ্ট উচ্চস্তরে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। চীন, ভিয়েতনাম, বাইলো রাশিয়া বাজার সংস্কার করছে ঠিকই, কিন্তু এই দেশগুলো বাজারের অদৃশ্য শক্তির কাছে পুরোপুরি আত্মসমর্পণ করেনি, পরিকল্পনাও নির্বাসনে পাঠায়নি। তারা পরিকল্পনার সংস্কার করে নিয়ন্ত্রিত বাজারব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বিত করেছে উৎপাদনের সব সম্ভাবনা কাজে লাগানোর স্বার্থে। রাষ্ট্রীয় তথা সমাজতান্ত্রিক খাতের উৎপাদনমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আধুনিকায়ন করে বাজারের সঙ্গে সমন্বিত করেছে। এটা তারা করেছে দেশীয় অর্থনৈতিক দর্শন অনুসরণ করে। অর্থাৎ দেশের আর্থ-সামাজিক বৈশিষ্ট্য, বাস্তবতা যা চায় তা-ই করেছে তারা। আমাদের দেশেও বাজারকে পরিকল্পিত ও নিয়ন্ত্রিতভাবে কাজে লাগাতে হবে। চীন ও ভিয়েতনামের আদলে সরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারপূর্বক আধুনিকায়নের মাধ্যমে লাভজনক করতে হবে। মনে রাখতে হবে, বেসরকারি খাতের নৈরাজ্য, লাটি-ফুন্ডি চরিত্র এবং সিন্ডিকেট বন্ধ ও ধ্বংস করতে হলে আমাদের দেশেও একটি অত্যন্ত শক্তিশালী সরকারি খাতের উপস্থিতি অত্যাবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্পের আধুনিক ও সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে রাষ্ট্রকে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে। বাস্তবতা আমাদের এ শিক্ষাই দিয়েছে বলে আমি মনে করি। ধার করা পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী তত্ত্ব দিয়ে রূপকল্প-২০২১ ও উন্নত দেশের স্বপ্ন ২০৪১ কখনোই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের সঙ্গে আমিও এ ব্যাপারে একমত পোষণ করি যে রূপকল্প ও জাতির পিতার সোনার বাংলা তথা উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে হলে দেশীয় অর্থনৈতিক দর্শনের (Home Grown Economic Philosophy) কোনো বিকল্প নেই।
সূত্র

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:


তাবিজ ও হোমিওপ্যাথীর সমন্ময়ে কমপ্লেক্স অর্থনীতৈতিক ধারণা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.