নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব

আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব।

তালপাতারসেপাই

লিন্ক সহ পোষ্টের বাহবা/দায়, মূল লেখকের।

তালপাতারসেপাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রশ্নবিদ্ধ বিশ্বব্যাংক

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৬:৩৭


বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন কানাডার আদালত। আদালত এ অভিযোগের কোনো প্রমাণ না পেয়ে কানাডীয় প্রকৌশল ফার্ম এসএনসি-লাভালিনের তিন সাবেক কর্মকর্তাকে খালাস দিয়েছেন। অন্টারিও সুপিরিয়র কোর্ট সম্প্রতি এ রায় দেন। গত শুক্রবার রায়টি প্রকাশিত হয়। আদালতের এ রায়ের ফলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলো। বিশ্বব্যাংকের চাপে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) একটি মামলা করেছিল। ২২ মাস তদন্ত শেষে দুদকের তদন্তকারীরা ২০১৪ সালে জানিয়ে দেন, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ তারা পাননি। দেশে-বিদেশে কোনো আদালতেই পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির প্রমাণ মেলেনি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে জয় হলো সরকারের অবস্থানের।


আদালতের রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিশিষ্টজন অনেকেই বলেছেন, দুর্নীতির অভিযোগকে কেন্দ্র করে পদ্মা সেতুতে ঋণ বাতিল করা ছিল বিশ্বব্যাংকের অন্যায় সিদ্ধান্ত। বিশ্বব্যাংকের এ ভূমিকা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ। সংস্থাটির একরোখা অবস্থানের কারণে এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ পিছিয়ে গেছে, যার দায় সংস্থাটি এড়াতে পারে না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল ষড়যন্ত্রমূলক। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রমাণ করেছেন আমরা চোর নই, বীরের জাতি।


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের পর বাংলাদেশে যারা দুর্নীতির কথা বলে গলা চড়িয়েছিলেন তাদের এখন ক্ষমা চাওয়া উচিত। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল। সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বলেছেন, এ রায় প্রমাণ করে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলেন। এ রায়ের পর বিশ্বব্যাংক অবশ্য অতি সংক্ষিপ্ত একটি বিবৃতি দিয়েছে। যেখানে শুধু দুর্নীতির অভিযোগ পেলে বিশ্বব্যাংক কী করে তা উল্লেখ করা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আদালত যাই বলুক না কেন দুর্নীতির অভিযোগ তো উঠেছিল। সেটাই ছিল বাস্তবতা। কানাডার আদালতের রায় নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য দেননি তিনি।


২০১১ সালের এপ্রিলে পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণচুক্তি হয়। সেতুর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দরপত্রে অংশ নেওয়া এসএনসি-লাভালিনের সঙ্গে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক ২০১২ সালের ২৯ জুন পদ্মা সেতুতে ঋণচুক্তি বাতিল করে। সরকারের অনুরোধে একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর এ প্রকল্পে পুনরায় সম্পৃক্ত হতে রাজি হলেও তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অর্থায়ন করতে অসম্মতি জানায় সংস্থাটি। তবে এর আগে বিশ্বব্যাংকের শর্তের কারণে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়। সাবেক সেতু সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকে ওএসডি করা হয়। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের নামও দুর্নীতির অভিযোগের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। নানা টানাপড়েনের পর ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে শেষ পর্যন্ত সরকারই বিশ্বব্যাংককে 'না' বলে দেয় এবং নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সেতুর নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে ৪০ ভাগ শেষ হয়েছে।


আদালতের রায়: টরন্টো স্টার পত্রিকা, গ্গ্নোব অ্যান্ড মেইলসহ কানাডার বিভিন্ন গণমাধ্যমের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এসএনসি-লাভালিনের জ্বালানি ও অবকাঠামো বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস, প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক প্রকল্প বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ শাহ ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যবসায়ী জুলফিকার আলী ভূঁইয়া মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। রায়ে কানাডার আদালত বলেছেন, আদালতে দাখিল করা কানাডা পুলিশের তদন্ত রিপোর্ট গুজবের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। তথ্যভিত্তিক কোনো প্রমাণ কানাডার সরকারি পক্ষ আদালতে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। গ্গ্নোব অ্যান্ড মেইলের রিপোর্টে বলা হয়, ফোনে আড়ি পেতে সংগ্রহ করা যে তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রসিকিউশন মামলা সাজিয়েছিল, তাকে গালগল্প ও গুজব বলে ছুড়ে ফেলেছেন বিচারক।


পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরামর্শক ফার্ম হিসেবে পাঁচ কোটি ডলারের কাজ পেতে এসএনসি-লাভালিনের কর্মীরা ২০১০ ও ২০১১ সালে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে অভিযোগের পক্ষে প্রমাণ সংগ্রহে ফোনে আড়ি পাতা তথ্য (ওয়্যার ট্যাপস) ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে ২০১১ সালে তিনটি আবেদন করে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি)। অন্টারিও সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক ইয়ান নরডেইমার আদেশে বলেন, ওই তিন আবেদনের বিষয়ে তার ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে। এগুলোতে যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে সেগুলো 'অনুমানভিত্তিক, গালগল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়'। বিচারক নরডেইমার গত জানুয়ারিতে এ সিদ্ধান্ত দিলেও শুক্রবার পর্যন্ত তা প্রকাশে বাধা ছিল বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।


বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ২০১০ সালে নিজেরা তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ সম্পর্কে নিজেদের তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আরসিএমপিকে অনুরোধ জানায়। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে কানাডায় এসএনসি-লাভালিনের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে রমেশ শাহ ও সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ ইসমাইলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২০১২ সালে টরন্টোর আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে এসএনসি-লাভালিনে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেভিন ওয়ালেস ও ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূঁইয়াকেও এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।


সে সময় রমেশ শাহের কাছ থেকে কানাডীয় পুলিশের জব্দ করা একটি ডায়েরি নিয়ে তুমুল আলোচনা হয়, যাতে 'বাংলাদেশের কাকে কত শতাংশ ঘুষ দেওয়া হবে' তার সাংকেতিক বিবরণ ছিল বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়।


বিশ্বব্যাংকের চাপে 'ঘুষ লেনদেনের ষড়যন্ত্রের' অভিযোগে দুদক ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানী থানায় একটি মামলা করে। একটানা ২২ মাস তদন্তের পর দুদক কর্মকর্তারা জানান, অভিযোগের কোনো প্রমাণ তারা তদন্তে পাননি। দুদক চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় ২০১৪ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশে পদ্মা দুর্নীতি মামলার অবসান ঘটে। তখনকার সেতু সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াসহ সাত আসামির সবাইকে অব্যাহতি দেন আদালত।


বিশিষ্টজনের বক্তব্য: বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সমকালকে বলেন, কানাডার আদালতের এই রায়ে প্রমাণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সঠিক ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী সততার সঙ্গে কাজ করেন বলেই দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পেরেছিলেন, বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ মিথ্যা। আজ সেটিই প্রমাণ হলো। তিনি বলেন, কিছু লোক অহেতুক ষড়যন্ত্র করেছিল, যাতে পদ্মা সেতু না হয়। আর যারা এই প্রকল্পে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ এনেছিল, তারা সরকারের বিরুদ্ধে ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল। কানাডার আদালতের রায়ে তা প্রমাণ হয়েছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন সমকালকে বলেন, 'আমরা আগেই জানতাম দুর্নীতির অভিযোগ ঠিক নয়, প্রমাণিত হবে না। এখন বিশ্বব্যাংকের জবাবদিহি করা দরকার। তারা (বিশ্বব্যাংক) যে ষড়যন্ত্রে শামিল হয়েছে এবং সেই ষড়যন্ত্রে দেশেরও নিশ্চয় কেউ না কেউ আছেন। এটা খুব দুঃখজনক।' ফরাসউদ্দিন আরও বলেন, পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হয়েছে বলে যারা বিভিন্ন কথা বলেছেন, তাদের এখন জিজ্ঞেস করা দরকার কিসের ভিত্তিতে তারা তখন এসব কথা বলেছিল। টিআইবি এখন বলছে যে, সরকারের বিশ্বব্যাংকের কাছে জিজ্ঞেস করা উচিত। বিশ্বব্যাংকের কাছে জিজ্ঞেস করার চেয়ে তারাই (টিআইবি) জবাব দিক। তারাও তো বলেছিল, দুর্নীতি হয়েছে।


প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিকবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান সমকালকে বলেন, বাংলাদেশের যেসব দায়িত্বশীল ব্যক্তি বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে এ গুজবে কান দিয়েছিলেন, তাদের উচিত হবে নিজেদের দোষ স্বীকার করা। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার দায়ে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলাই একমাত্র পথ নয়। তবে বাংলাদেশের অসন্তুষ্টির কথা তাদের জানানো যেতে পারে।


পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সমকালকে বলেন, যখন অভিযোগ আনা হয় তখন পদ্মা সেতুর কাজই শুরু হয়নি। ছাড় হয়নি এক টাকাও। তবুও তারা অভিযোগ এনেছিল। তবে বর্তমানে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অন্যান্য প্রকল্পে আগের চেয়ে বেশি সহায়তা দিচ্ছে। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতি হলে এত বেশি সহায়তা তারা দিত না। দুর্নীতির অভিযোগের ঘটনা আমাদের জন্য শাপে বর হয়েছে। কারণ আমরা এখন নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পারছি।


ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সমকালকে বলেন, দুর্নীতি হওয়া দূরে থাকুক, দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তারা পদ্মা সেতুর মতো প্রকল্পে অর্থায়ন বন্ধ করে দিল। তিনি প্রশ্ন রাখেন, বিশ্বব্যাংক কি সব ক্ষেত্রেই দুর্নীতিমুক্ত? এই মামলায় হারার মাধ্যমে তাদের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যে দুর্বল তা প্রমাণিত হয়েছে।


সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, এখন বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত। তবে দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সমকালকে বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মামলা করতে পারবে না বাংলাদেশ। কারণ, বিশ্বব্যাংকসহ কোনো দাতা সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করার ক্ষেত্রে দায়মুক্তি দেওয়া আছে। তবে জাতীয় সংসদের অনুমতি নিয়ে এ-সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে মানহানির মামলার সুযোগ আছে।


সাবেক সেতু সচিব, বর্তমানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সমকালকে বলেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যতটুকু ক্ষুণ্ন হয়েছিল, কানাডার আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে তা পুনরুদ্ধার হয়েছে। প্রসঙ্গত দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়। পরে দুদকের মামলা থেকে অব্যাহতি পান তিনি।


বিশ্বব্যাংকের প্রতিক্রিয়া: আদালতের রায়ের ওপর বিশ্বব্যাংকের প্রতিক্রিয়া জানতে সংস্থার ঢাকা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ই-মেইলে বক্তব্য পাঠান বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান। বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে পরে এটি সংস্থার বিবৃতি হিসেবে প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, বিশ্বব্যাংক তার অর্থায়নপুষ্ট প্রকল্পে প্রতারণা ও দুর্নীতির অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের তদন্ত যখন শেষ হয় তখন তার ফলাফল সংশ্লিষ্ট জাতীয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, যাতে ওই কর্তৃপক্ষ সেই দেশের আইন-কানুনের ব্যত্যয় হয়েছে কি-না তা যাচাই করতে পারে। জাতীয় কর্তৃপক্ষকে জানানোর অগ্রগতি বিশ্বব্যাংকের শুদ্ধাচার বিভাগের (আইএনটি) বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়। এরপর প্রত্যেকটি রেফারেলের (অবহিত বিষয়) ওপর পরবর্তী কার্যক্রমের দায়িত্ব সবসময়ই জাতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে ন্যস্ত হয়।


বিএনপির প্রতিক্রিয়া: পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সবচেয়ে সোচ্চার ছিল বিএনপি। গতকাল টেলিফোনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সমকালকে বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে তখন পত্র-পত্রিকায় অনেক তথ্য প্রকাশ হয়েছে এবং বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই তখন তাদের বক্তব্য-বিবৃতি ছিল। পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক অর্থ বন্ধ করে দিয়েছিল, এটাই বাস্তবতা- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, এখন কোথায় কী প্রমাণ হলো কিংবা হলো না সেটা তাদের বিষয় নয়।


পটভূমি: ২০১১ সালের বছরের আগস্টে বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্সি কার্যালয় পদ্মা প্রাক-যোগ্য বাছাই প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ পায়। ওই মাসেই বিশ্বব্যাংক অনানুষ্ঠানিকভাবে জানায় যে, এসএনসি-লাভালিনের বিরুদ্ধে কানাডায় তদন্ত হচ্ছে এবং সে জন্য এবং অন্যান্য কারণেও তারা আপাতত পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ স্থগিত রাখতে চায়। ২০১২ সালের ২৯ জুন এই প্রকল্পে ঋণ বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। ঋণ বাতিলের পর সরকারের কূটনৈতিক যোগাযোগ এবং সব শর্ত মানতে রাজি হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতু প্রকল্পে নতুন করে সম্পৃক্ত হওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্বব্যাংক। তবে বিশ্বব্যাংকের নানা শর্তের কারণে দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে সরকার বিশ্বব্যাংকের কাছে অর্থায়নের অনুরোধ প্রত্যাহার করে। ফলে ঋণচুক্তি বাতিল হয়। পরে সরকার নিজস্ব অর্থে এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু করে। সেই পদ্মা সেতুর কাজ ইতিমধ্যে ৪০ ভাগ শেষ হয়েছে।
সূত্র

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:০১

চাঁদগাজী বলেছেন:


লিলিপুটিয়ান লেভেলের গোয়েবলীয় প্রচেস্টা।

বিশ্ব ব্যাংকের কেরানীরা বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী থেকে কিছুটা ভালো বুঝে।

২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৩৪

সাদা মনের মানুষ বলেছেন: একি বলেন! সারা রাত সাপ মেরে সকালে দেখছি রশি!

৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:১৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



সরকারী পক্ষে ব্লগিং করার জন্য সামান্য মগজধারী কাউকে খুঁজে পেলো না?

৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৩৪

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা বন্ধ করাই ছিল যাদের উদ্দেশ্য তা কি করে টিকতে পারে!


সকল বাঁধা ডিঙিয়ে এগিয়ে যাক প্রিয় বাংলাদেশ।

৫| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৪২

শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: ষড়যন্ত্র, সত্য মিথ্যা বুঝিনা। কারণ, সে সময়টা ছিল প্রারম্ভিক অবস্থায়। কিন্তু এখন চলমান। এই চলমান প্রকল্পে কোন দুর্ণীতি, অনিয়ম বা অর্থের অপব্যবহার হচ্ছে কিনা এখন থেকেই নিরপেক্ষ মনিটরিং করে মাসিক অন্তর রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কারণ, পদ্মা সেতু জনগণের টাকায় নির্মিত হচ্ছে। তাই জনগণের নিকট এর ব্যয়ের হিসাব পুন:পুন দেয়া সরকারের দায়িত্ব।

ভবিষ্যতে যদি কোন দুর্ণীীত, অনিয়ম কিংবা অর্থের লুটের প্রমাণ পাওয়া যায় তখন সরকারের পদ্মা সেতু নির্মাণের সফলতা তার (দুর্ণীতির) নিকট চাপা পরে যাবে। দু’চারজন অসৎ ব্যক্তির কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষতি হতে পারে। বিষয়টি এখনই ভাবা দরকার।

৬| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৪৬

চাঁদগাজী বলেছেন:


চীন ২ বিলিয়ন ডলারের মাঝে সেতু করে দেবে; তারপর, বাংলাদেশীদের হয়ে ৬ বিলিয়ন ডলারের ওভার-ইনভয়েস করবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.