নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোন কিছু বলার নাই, কিন্তু নিজেকে ব্যার্থ ব্যাক্তি হিসাবে উধাহরণ দিতে পার ফেসবুক আইডি: https://www.facebook.com/tanmoy69momo/

হেল কিচেন

নিজেও জানিনা।

হেল কিচেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসা !!!

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০৩

দুপুর ১:১২ বাজে, বন্যা ল্যাব এইড এর আই সি ইউ তে। ফারহাত এর মুখটা দেখে খুব মায়া লাগছিলো ওর। অঝোরে কাঁদেতে ইচ্ছা করছে কিন্তু গতকাল রাতেই সব কান্না যেন কেদে ফেলছে তার জীবনে। মা অনেকক্ষণ ধরে কাঁদছে। বাবার চোখও ছলমল করছে।



গতকাল রাতে বাবা-মা ঘুমায় যাবার পর ফারহাত বন্যাকে ওর রুমে ডেকে নিয়ে আসে।

- বন্যা তোমাকে খুব জরুরী একটা কথা বলবো। প্লীজ একটু ধর্য্য ধরে শুন। চিল্লাচিল্লি করবা না।

- কি বলবেন তারাতাড়ি বলেন(ধমকের সূরে)

- আমি অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোন ভাবেই তোমার সাথে আমার সংসার করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি এখনও অনুপমা কে ভালোবাসি। অনেক ভালোবাসি। পায়ে ধরি চিল্লায়ও না। প্লীজ।

- কি বলতেছেন(মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে)!!!!!

- আমি যখন তোমার সাথে থাকি, তখনও আমার চিন্তা ভাবনায় অনু থাকে। আমি আসলেই অনুকে ছাড়া থাকতে পারতেছি না।

- পানি খাব।(ফারহাত পানি এনে দেয়)

- প্লীজ তুমি কিছু একটা করো। অনু আমাকে ছাড়া সারাজীবনে মনে হয়না কাউকে আর ভালবাসতে পারবে। আমাদের মধ্যে জাস্ট কিছুদিনের ভুলবোঝাবুঝির সময় তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়েছিলো।

- আপনি কি সত্যি বলছেন(বন্যারহাত-পা শুঁখায় যাচ্ছে)?

- একমাত্র তুমিই পারো। আমি অনেক চেষ্টা করেও তোমাকে ভালবাসতে পারছি না। আমার সব কিছুই ফেক।(বন্যা উঠে এসে বিছানায় শুয়ে পরে। )

- আপনি যা চাবেন তাই হবে।(বাথরুমে চলে যায়)

ফারহাত চুপ করে দাড়ায় থাকে, ওর মন থেকে জেনো বিশাল একটা পাথর সরে গেছে। একটু একটু মনও খারাপ হচ্ছে বন্যার জন্য। ঠিক সেই সময় বন্যা বাথরুমের দরজা খুলে বলে

- আপনি যা চাবেন তাই হবে।(মুখ ধোঁয়ার পানির মধ্যে থেকেও ওর চোখের পানিগুলা আলাদা করা যাচ্ছিলো।)

বাথরুমের দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে বন্যাবসে বসে কাঁদতে থাকে। ফারহাত ওর বাথরুমের দরজায় টোকা দিলে বন্যা একটু ভরা কণ্ঠে বলে, আপনার চিন্তা করতে হবে না আমি কিছুই করছি না।

২০ মিনিট পর বন্যা বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখে ফারহাত বসে আছে। বন্যার মুখটা কিছুটা ফুলে গেছে। ও আস্তে করে বিছানায় শুয়ে পরে। আর ফারহাত কে বলে

- আপনি কি করবেন?

- আমার অনুর সাথে কয়েক দিন ধরেই যোগাযোগ নাই। কালকে সকালবেলা ওর বাড়ি গোপালপুরে চলে যাব। ওকে সারপ্রাইস দিবো। আর পারলে তুমি এইদিকে একটু দেখবা।

- কিসে যাবেন?

- বাসে যাবো। ওইখানে গিয়ে বাজারে জ্যোতি চাচার কথা বললে বাসা চিনায় দিবে।

- কখন যাবেন?

- সকাল ৬টায় রওনা দিবো।

- আপনি ঘুমায় পড়েন( বলে বন্যা বালিশটা নিয়ে অন্যদিকে মুখ করে শুয়ে পরে।)

- প্লীজ আমাকে মাফ করে দিও।



রাত এখন ১টা বাজে, বন্যা উঠে লাইটটা জ্বালায়। দেখে ফারহাত বালিশটা ধরে শুয়ে আছে। শেষবারের মতো ঘুমানোর অবস্থায় ফারহাতকে দেখে নিচ্ছে। আর অঝোর ধারায় ওর চোখ দিয়ে পানি পরতে থাকে। কতো রাত ঘুম থেকে জেগে উঠলে ওর দিকে তাকিয়েই ঘণ্টা পার করে দিইয়েছি। আর ওই মানুষটাই আমাকে ছেড়ে চলে যেতে যাচ্ছে। মনে হয় ওই মেয়েটা ওকে আমার চেয়েও বেশি ভালোবাসে। বন্যা উঠেফারহাতের ব্যাগটা গুছায় দেয়। ওর মানিব্যাগে দেখে মাত্র ৯০০ টাকা আছে। পাগল ছেলেটা, এই কয়টা টাকা নিয়ে যাচ্ছে প্রেম বিজয় করতে। মনে মনে হাসল। যাই হোক বন্যা কিছু টাকা জমায় ছিল ফারহাত এর জন্য। এসি কিনে দিবে বলে। ছেলেটা সারাদিন এসি এসি করে, তাই ওকে সারপ্রাইস দিবার জন্য একটু একটু করে এই টাকা গুলা জমায় ছিল। যাক এই টাকা গুলা ওকে দিয়ে দেই। ব্যাগটা গুছায় একটা ছোট্ট চিঠি লিখে রাখে ফারহাতের মানিব্যাগে

" আমি আপনার ব্যাগের ভিতরে কিছু টাকা রেখে দিয়েছি। টাকা গুলা আপনার জন্য এসি কিনবো বলেরেখেছিলাম, এর থেকে ২০০০ টাকা আমি রাখছি। আর চিন্তা করবেন না আমি এই দিকে সব ঠিক করে দিবো।"



ভোর ৫ টা বাজে ফারহাত রেডি হচ্ছে, সাদা একটা টিশার্ট মাঝখানে ড্রাগনের ছবি আর উপরে একটা শার্ট পড়ছে। আজকে অনেক সুন্দর লাগছে, আমার সাথে বের হবার সময় যা-তা ভাবে বের হইত। মনে মনে রাগ হইলো বন্যার।



একটু আগে ফারহাত বের হয়ে গেছে,বন্যার কাছে এখনো জেনো সবকিছু দুঃসপ্নের মতো মনে হচ্ছে। ফারহাত কি জানে যেই দিন ফারহাত কে প্রথম দেখেছিল হয় সেইদিন থেকেই ওকে পাগলের মতো ভালবাসতে শুরু করছিলো। কোন ছেলের সাথে কথা বলা ওইটাই ছিল প্রথম। এই বাসায় এসে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবাকে পেলো। তখন মনে হচ্ছিলো জীবনের সব না পাওয়া জিনিষ পেয়ে গেছে। এখন খুব খারাপ লাগছে সবকিছু ছেড়ে চলে যেতে হবে। চিন্তা করতে করতে বন্যা আবার কাঁদতে শুরু করলো। আচ্ছা যেই মেয়েটার কাছে যাচ্ছে ওই মেয়েটা কি ওকে একসেপ্ট করে নিবে তো?

অবশ্যই করবে। আমার চেয়ে অনেক বেশি ভালোবাসে ওকে।

৭টা ১০ বাজে বন্যা একটু আগেঘুমিয়েছে, একটা ফোন কলে ঘুমটা ভেঙ্গে গেছে ওর।

-হ্যালো

-আমি ল্যাব এইড হসপিটাল থেকে রোকনজ্জামান বলছি। আপনি কিফারহাতের আত্মীয়?

- হ্যা আমি ওর ওয়াইফ।

-ওনার খুব বড় একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে আপনি ওনার পরিবারের সবাইকে নিয়ে ধান্মন্ডি ল্যাব এইডে চলে আসেন। অবস্থা খুব খারাপ ওনার।



আজকে বন্যার রুমে এসি লাগায় দিচ্ছেবন্যার বাবা। ২১ দিন হয়ে গেছেফারহাত মারা গেছে, বন্যাকে ওর বাবা(ফারহাতের বাবা) যেতে দেয় নাই, বলছে সারা জীবন এই বাসার মেয়ে হয়ে থাকতে। বন্যা নিজেও জানে না এই এসি সে কোন দিন চালাবে কিনা।



আজকে হঠাত করে বন্যার মনে পরে, আচ্ছা ওই মেয়াটা কি জানতো ফারহাতওকে কতটা ভালোবাসতো। এবং ওর জন্য তাড়াহুড়া করে যেতে গিয়ে উল্টা দিক থেকে আসা একটা বাসের সাথে এক্সিডেন্ট করে। নাম কি ছিলো মেয়েটার? ফারহাতের ফোনটা অন করে ম্যাসেজে গেলে বুঝে মেয়েটার নামঅনুপমা।



বন্যা নাম্বার নিয়ে কল দিলে, ওই সাইড থেকে অনু ও একটু অবাক হয়!ফারহাতের একদিন ফোন দিছিলো ওর বউ এর নাম্বার দিয়ে তাই নাম্বারটা অনুএর কাছেও সেভ করা। অনু সাথে সাথেজুঁইকে বলে ফারহাতের বউ কেনো আমাকে ফোন দিচ্ছে। আমি ফোন ধরবো না। জুঁই বলে ধর ফোনটা। ফারহাতও ফোন দিতে পারে ধর।

-হ্যালো

- হ্যালো কে অনুপমা?

-হ্যা।

- কেমন আছো?

-ভালো তুমি?

-তুমি কি জানো ফারহাতের (_ _ _ _)

অনুপমা জেনো বিশ্বাস করতে পাচ্ছে না। ও বসে পরে, এই দেখে জুই অনুপমাকে ধরে হেলথ সেন্টারে নিয়ে যায়।



[ আমরা যাই বলিনা কেনো, জীবনের সব গল্পই সুখের হয়না। আমরা প্রতিদিন মানুষের সামনে সুখি থাকার অভিনয় করি। এইখানে আমারা কেউ জানিনা অনুপমার ভবিষ্যতে কি করবে অথবা বন্যাও জানেনা তার ভবিষ্যতে কি আছে। যদি অনুপমা প্রথমে ভুল না করতো তাইলে আজকে ফারহাত আর অনুপমা একসাথেই থাকতো। তাই জীবনে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়াটা অনেক জরুরী। আশা করি জীবনে কোন বড় সিদ্ধান্ত নিবার আগের অবশ্যই অবশ্যই আমার কথা গুলা মনে রেখে সিদ্ধান্ত নিবেন]









মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:০৪

আলম দীপ্র বলেছেন: স্বাগতম নতুন ব্লগার । :D :D :D

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৪

নূসরাত তানজীন লুবনা বলেছেন: খুবই সত্য কথন

৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৮

দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: ভালো লেগেছে।
+++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.