নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি জানবে আমায়? আমি ভেসে গেছি পদ্মপাতায়। ডুবে গেছি পৃথিবীর নিদারুণ অবহেলায়। ফেইসবুক https://www.facebook.com/tanzir.khan.3

তানজির খান

মানুষ হওয়ার সাধনা আমার চির বহমান, যদি চূড়ান্ত নিশ্বাসেও না হতে পারি তবে ক্ষমা করো বিধাতা, ক্ষমা করো হে প্রভু আর রহমান। ক্ষমা করো তোমরা যারা পেয়েছো আঘাত, তোমরা যারা পাবে অথচ থাকবে নিরাপরাধ।

তানজির খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বই

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৩:১৪



মোসাদ্দেক খুব ঘামতে শুরু করেছে। এমনিতে সে চায়ের দোকানদার, সারাদিন আগুনের সামনে থাকে তাতে সে এতটা ঘামে না।অবশ্য বৈশাখের গরমও চরমে পৌছেছে।সে বুঝতে পারছে না আসলে সে কি করছে। অনেক ক্ষণ ধুম ধরে বসে থেকে বুঝলো ,সে কিছু একটা খুঁজছে। সারা ঘর তন্ন তন্ন করে সে কি যেন খুঁজছে। এবার সে আরও কিছুটা বিচলিত হয়ে খানিক উত্তেজিত হয়ে উঠলো। টেনশানের সময় সামনে কেউ পড়লে তার খুব রাগ হয়। স্ত্রী সামনে আসতেই নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে মোসাদ্দেক বলল রবিনের মা এহানে একখান বই আছিল সেইডা কই? রবিন তাদের একমাত্র ছেলে ক্লাস সেভেনে পড়ে। ফাইভে বৃত্তি পেয়েছে। মোসাদ্দেকের খুব আশা ছেলে কে নিয়ে। তার নিজের খুব ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা করার কিন্তু ক্লাশ এইটে উঠার পড়ে আর পড়া হয় নাই সংসারের দূর অবস্থার কারনে। অবশ্য সে ভাল ছাত্রও ছিলনা।

কোন বই? রবিনের বৃত্তি বই? হ রবিনের বৃত্তি বই। আইজ বিয়ানে কাগজ কিনতে আইছিল এক লোক তার কাছে বেইচা দিছি। মোসাদ্দেক চুপচাপ চকির উপর বসে পড়লো। তারপর আর কোন কথা বলে নাই বৌ এর সাথে। রবিনের মা ভাত দিতে চাইলেও কোন কথা না বলে শুয়ে পড়লো।রবিনের মা বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করলো কি হইছে কিন্তু কোন উত্তর দিলনা মোসাদ্দেক।

শুয়ে শুয়ে সে ভাবছে কত স্বপ্ন ছিল তার জীবনে। একদিন স্বচ্ছল সংসার হবে, কোন অভাব থাকবে না। তার আরেকটা ইচ্ছে ছিল খুব, তার একটা মেয়ে থাকবে। রবিন যে বার হয় সেবারই মোসাদ্দেক খোদাতালার কাছে খুব দোয়া করেছিল যাতে মেয়ে হয়। মোসাদ্দেকের দাদী তখন বেঁচে ছিল। দাদী বলছিল পেরথম মাইয়া অওন বালো, আমি আমার বাপের পেরথম মাইয়া। দেহিস তরো পেরথম মাইয়া হবিনি। মাইয়া অইলো সংসারের সুখের বাত্তি, যার পেরথম মাইয়া অয় আল্লাহ তারে রহম দেয়। মোসাদ্দেক দাদীর কথার সাথে মিল পায়। ছোটবেলা থেকে মোসাদ্দেক দেখে আসছে যে তার দাদী অভাবের সংসার কি সুন্দর করে গুছিয়ে রাখছে। মোসাদ্দেকের দাদার সম্পত্তি বলে ভিটে আর এক বিঘা জমি ছিল। কোনমত সংসার চালাতো দাদা, নিজের আর পরের জমিতে কাজ করে। দাদী একবার কোথা থেকে যেন কিছু টাকা নিয়ে মোসদ্দেকের বাপের আর চাচাকে বললো গোয়ালের গরু দুইডা বেঁচে দিয়ে আর এই টাকা নিয়ে দুইডা মহিষ কিনে আন। আর তোর নানার বাশ ঝাড় থেইকা কয়ডা বাশ নিয়া একটা গাড়ি বানা। তারপর মোসাদ্দেকের বাপ আর চাচা মিলে একখান মহিষের গাড়ি করে ফেলল। সেই গাড়ীতে তারা ফসলের সময় লোকের ফসল আনতো দূর থেকে। সেই খান থেকে গৃহস্ত ধান দিতো তাদের। এভাবে সংসার ভালই চলছিল। সে দিন মোসাদ্দেক ভাবলো দাদী ঠিক কথাই বলেছে মেয়েরা সংসারের সুখের বাত্তি। কিন্তু মোসাদ্দেকের ছেলে জন্ম নিলো। দাদী এই খবর পেয়ে মোসাদ্দেককে বললো মাইয়া অইলে বালো হইতো, তয় পোলাও বালা। তোর দাদা কত্ত বালো ছিল। আমারে ছাড়া একবেলাও ভাত খাইতো না।

মোসাদ্দেক অভাবের কারনে আর বাচ্চা নেয়ার সাহস করে নাই। তবে মনে মনে একটা মেয়ের স্বপ্ন দেখতো। রবিন এখন ক্লাস সেভেনে পড়ে, এখনই সন্তান না নিলে দেরী হয়ে যাবে। রাত অনেক হয়েছে মোসাদ্দেকের ঘুম আসছে না। এলোমেলো ভাবছে আর গোপনে কাঁদছে। ফজরের আযান পড়ার পরে সে আর বিছানায় থাকতে পারলো না। হাত মুখ ধুয়ে জামা পরে রবিনের মাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বলল সে শহরে যাচ্ছে। রবিনের মা বলল আইজ আবার শহরে যাও ক্যা? কাইল রাইতে খাইলে না, এহন আবার শহরে যাও! মোসাদ্দেক কিছু না বলে চলে গেলো।এমনিতে সে নিয়মিত নামায পড়ে না কিন্তু আজ তার মনে অনেক মেঘ। বাজারের মসজিদে নামায পড়ে গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করছে শহরে যাওয়ার জন্য। কোন গাড়ী নেই গ্রামের রাস্তায় এত সকালে শহরে যাওয়ার জন্য। একটা নসিমন ভ্যান কয়েকজন লোক নিয়ে শহরের কাছাকাছি যাচ্ছে। মোসাদ্দেক হাত তুলে ইশারা করলো থামার জন্য।

সকাল নয়টা মোসাদ্দেক শহরের পুরাতন বই এর মার্কেটে এসে উপস্থিত। দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। মোসাদ্দেক সবাইকে যথা সম্ভব শুদ্ধ ভাষায় জিজ্ঞেস করছে ভাই আপনারা কি মীরগঞ্জ থেকে বই কিনছেন কাইল? দোকানদার বলছে আমরা তো ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে বই কিনি তারা কই থেকে কিনছে জানিনা। মোসাদ্দেক একে একে সবগুলো দোকান তন্ন তন্ন করে খোঁজে, কোথাও সবুজ মলাটের রবিনের বৃত্তি বই পায়না। রবিনের বৃত্তি বইটার উপরে বাংলাদেশের একটা ম্যাপ ছিল। বইটা যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য তার দোকানের পাসের ঔষধের দোকান থেকে পুরাতন একটা ক্যালেন্ডার চেয়ে নিয়েছিল বইয়ের মলাট বাঁধার জন্য। ক্যালেন্ডারে ছবি ছিল জঙ্গলের, সবুজ আর সবুজে ভরা ঘন জঙ্গল।

তারপর টানা এক সপ্তাহ মোসাদ্দেক শহরে গেছে পুরাতন বইয়ের দোকানগুলোতে বইটি খুঁজতে। না মোসাদ্দেক খুঁজে পায় নাই। এর মধ্যে সে বাড়ীতে এসে বৌকে কিছুই বলে নাই মনোবেদনার কথা। সে অবশ্য এই বই হারিয়ে যাওয়ার কারন খুঁজে পেয়েছে মনে মনে। সংসারের সুখের বাতি রমণী, সেই রমনীকে গোপন করে কিছু করা উচিৎ হয় নাই তার। মোসাদ্দেক ভাবছে তার উচিৎ ছিল বইটি দিয়ে সে কি করছে তা তার স্ত্রীর কাছে প্রথম থেকেই বলা। বৌ এর কাছে গোপন করার কারনেই তার বই এভাবে হারিয়ে গেছে, এমনটাই ভাবছে মোসাদ্দেক। যদিও এটাই সত্যি, না জানানোর কারনেই তার বৌ বইটি বিক্রি করেছে কিন্তু মোসাদ্দেক ভাবছে বৌকে না বলে ভাল কাজ করাও অন্যায়। যতই ভাল কাজ হোক তবুও তার উচিৎ ছিল বৌকে বলা। কিন্তু সে ভেবেছিল একদিন বৌকে বলে চমকে দিবে। সিনেমায় সে এ রকম দেখেছে বহুবার। এক সময় সে সিনেমার পোকা ছিল।

মোসাদ্দেকের স্বপ্ন থমকে গেছে ছোট্ট একটা ভুলে। রবিন বৃত্তি পরিক্ষা দেবার পরই সে ভেবেছিল এবার একটা মেয়ের আশায় সন্তান নেবে সে। এই জন্য প্রতিদিন টাকা জমাতো। সারাদিন চা,সিগেরেট, বিস্কিট এসব বিক্রি করে সে মোটামুটি রোজগার করতো। এ ছাড়া চায়ের দোকানের পাশাপাশি সে মাঝেমাঝে টুটকা ব্যবসা করতো বভিন্ন সিজেনে। রবিনের বৃত্তি পরিক্ষা হওয়ার পর গত দেড় বছর ধরে সে ওই বৃত্তি বইয়ের ভেতর টাকা জমিয়ে আসছিল। বইটি সে যত্ন করে ঘরের বেড়ার সাথে তকতা লাগিয়ে র‍্যাকের মত বানিয়ে তার উপর রেখেছিল উচুতে। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পরে জামার পকেট থেকে টাকা বের করে সে বইয়ের ভেতর রাখতো। দুই একদিন বৌ বই নাড়াচড়া করা দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করেছিল কি করছে সে। কিন্তু মোসাদ্দেক উত্তর দিয়েছিল ইঁদুর হয়েছে খুব, কুটকুট শব্দ হচ্ছে ভাবলাম ইঁদুর মনে হয় বই কাটছে। বেশ কয়েকদিন ধরে জমিয়ে খুচরা টাকাগুলো সে পাঁচ শত টাকার নোট করে বইয়ের পাতার ভেতরে রাখতো। ঊনপঞ্চাশ হাজার পাঁচশত টাকা জমেছিল, মোসাদ্দেকের ইচ্ছে ছিল যেদিন পঞ্চাশ হাজার টাকা জমবে সেদিন সে দোকান থেকে ফিরে রাতের খাবার খেয়ে একটা পান মুখে দিয়ে বৌকে সব বলে সন্তান নেবার কথা জানাবে

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ গল্পটি বাড়ীর পাশে ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা অবলম্বন করে লেখা। আমাদের বাজারের এক চায়ের দোকানদারের এই ঘটনা শুনলাম এলাকা থেকে আসা বন্ধুর কাছে। মনটা খারাপ হয়ে গেল শোনার পরে।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৬:৪৭

চাঁদগাজী বলেছেন:



প্লটটা দু:খে ভরা, দু:খী বাংলার দু:খের ইতিহাস।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:২৩

তানজির খান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। ওই চায়ের দোকানে আমি চা খেয়েছি অনেক।

২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:৪৯

বিজন রয় বলেছেন: সুন্দর এবং কষ্টের।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:২৪

তানজির খান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

৩| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৯:৫২

আরজু পনি বলেছেন:

শেষটা পড়ে মনটাই খারাপ হয়ে গেল !

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:২৫

তানজির খান বলেছেন: গল্প লিখতে পারিনা আমি আপু।চেষ্টা করলাম একটু।

৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:১৮

বিতার্কিক সাধু বলেছেন: মন ছুঁয়ে গেল

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:২৬

তানজির খান বলেছেন: ধন্যবাদ সাধু

৫| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:২১

কল্লোল আবেদীন বলেছেন:



চমৎকার গল্প।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:২০

তানজির খান বলেছেন: ধন্যবাদ আবেদীন ভাই

৬| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৪২

হাসান মাহবুব বলেছেন: হার্ট ব্রেকিং :(

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩০

তানজির খান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। কাল খুব মর্মাহত হয়েছি শুনে।

৭| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৫

সাদিকনাফ বলেছেন: কিন্তু ৯৯খানা পাচশ টাকার নোটের তাড়া বইয়ের ভিতরে থাকলে বইটা অনেকটা উচু হবারই কথা, সেটা কি খেয়াল করার কথা নয়? এমনি গল্প হলে সমস্যা ছিলো না, সত্য ঘটনা অবলম্বনে যেহেতু, তাই খাপছাড়া মনে হলো।

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৪৩

তানজির খান বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। খুব ভাল প্রশ্ন করেছেন। এখানে সত্য ছিল যেটুকু সেটা বলে দিচ্ছি। ৫০০০০ টাকা জমিয়েছিল টিপু নামের এক লোক বই এর পাতায় পাতায় রেখে। তাকে আমি চিনি। চাও খেয়েছি তার দোকানে বহুবার। তার বৌ বিক্রি করে দিয়েছিল সেই বই।

বাকী যত কাহিনী সব আমার বানানো। যেহেতু পঞ্চাস হাজার টাকা বই এ ছিল সুতরাং সেটা মোটা বই। তাই তার ছেলের বৃত্তি বই বলেছি। তারপর আপনার প্রশ্ন মাথায় আসলো লেখার সময়। তখন ভাবলাম বই এ একটা মলাট লাগিয়ে দেই। মানে টিপু অরফে মোসাদ্দেক শুধু বই এর পাতায় নয় মলাটের ভেতরেও রেখেছিল। এবার ভাবুন নিচের মলাটের ভেতর আর উপরের মলাটের ভেতর সমান স্কয়ার করে ৫০০ টাকা রাখলে কতগুলো রাখা সম্ভব। হয়তো সেটা দুই অথবা তিন লেয়ারে রেখেছিল। এরকম করে অনেক রাখা সম্ভব। বাকীগুলো বই এর পাতায় পাতায়। যেহেতু এটা সত্য ঘটনা সেহেতু এটা যেভাবেই হোক ঘটেছে। এটা মূল ঘটনা একদম সত্য। আর হ্যা উনি উনার বৌকে কিছুই বলে নাই। তাই উনার বর্ননাগুলো ভাল লিখেছি।

৮| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৪

প্রামানিক বলেছেন: এই ঘটনার পর চায়ের দোকানদার চুপ কইরা আছে না বউরে মাইরা বালিশ বানাইছে?

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৪৭

তানজির খান বলেছেন: প্রামানিক ভাই ধন্যবাদ। না উনি উনার বৌকে কিছু বলে নাই। তাই উনার বর্ননায় সব ভাল মিশিয়ে দিয়েছি। আমি একই প্রশ্ন করেছিলাম। একজন প্রায় অশিক্ষিত লোক এত বড় ঘটনার পর বৌকে কিছু বলে নাই, সেটা আমাকে মুগ্ধ করেছে। যদিও তার স্ত্রীর কোন দোষ নেই। কিন্তু অশিক্ষিত লোক তো এতো বোঝে না। তাই তাকে শ্রদ্ধা জানাই।

৯| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:২৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: তানজির খান ,



দুঃখজনক সন্দেহ নেই । শেষেরটুকু খোলাসা করে না বললেও বোঝা গেছে কষ্টের জমানো টাকা বিক্রি করা বইয়ের সাথে লাপাত্তা হয়েছে ।
তবে এটা কষ্টকর ঠেকছে , পাঁচশত টাকার নোটে ঊনপঞ্চাশ হাজার পাঁচশত টাকায় ৯৯টি নোট হবার কথা । তাতে মোটা বইয়ের ভেতরে রাখলেও টাকা রাখার জায়গাটা বেশ ফাঁক/ উচু হয়ে থাকার কথা । আলাদা আলাদা করে রাখলেও বইটি হাতে নিলে যে কারো পক্ষে বোঝার কথা যে , বইয়ের পাতার ভেতরে কিছু না কিছু আছে । সেক্ষেত্রে মোসাদ্দেকের বউ কি কিছুই বুঝতে পারেনি যে , বইয়ের ভেতরে বোধহয় কিছু আছে , একটু উল্টে পাল্টে দেখি ?

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৫২

তানজির খান বলেছেন:
ধন্যবাদ ভাই। খুব ভাল প্রশ্ন করেছেন। এখানে সত্য ছিল যেটুকু সেটা বলে দিচ্ছি। ৫০০০০ টাকা জমিয়েছিল টিপু নামের এক লোক বই এর পাতায় পাতায় রেখে। তাকে আমি চিনি। চাও খেয়েছি তার দোকানে বহুবার। তার বৌ বিক্রি করে দিয়েছিল সেই বই।

বাকী যত কাহিনী সব আমার বানানো। যেহেতু পঞ্চাস হাজার টাকা বই এ ছিল সুতরাং সেটা মোটা বই। তাই তার ছেলের বৃত্তি বই বলেছি। তারপর আপনার প্রশ্ন মাথায় আসলো লেখার সময়। তখন ভাবলাম বই এ একটা মলাট লাগিয়ে দেই। মানে টিপু অরফে মোসাদ্দেক শুধু বই এর পাতায় নয় মলাটের ভেতরেও রেখেছিল। এবার ভাবুন নিচের মলাটের ভেতর আর উপরের মলাটের ভেতর সমান স্কয়ার করে ৫০০ টাকা রাখলে কতগুলো রাখা সম্ভব। হয়তো সেটা দুই অথবা তিন লেয়ারে রেখেছিল। এরকম করে অনেক রাখা সম্ভব। বাকীগুলো বই এর পাতায় পাতায়। যেহেতু এটা সত্য ঘটনা সেহেতু এটা যেভাবেই হোক ঘটেছে। আর মোসাদ্দেকের বৌ একটা বই বিক্রি করে নাই অনেকগুলো করেছে। আমরা যারা একটু শিক্ষিত তারা কাগজের মূল্য বুঝি কিন্তু চায়ের দোকানদারের অক্ষর জ্ঞানহীন রমণী তা বোঝে না বলেই বোধকরি।এটার মূল ঘটনা একদম সত্য। আর হ্যা উনি উনার বৌকে কিছুই বলে নাই। তাই উনার বর্ননাগুলো ভাল লিখেছি।

১০| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১০:৫১

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: গল্প মোটামুটি, কাহিনী দুঃখজনক। তবে, টাকার অংক বাড়িয়ে বলা, সাধারণত এমন ঘটনায় রটে বেশী। আরেকটা জিনিস খেয়াল করুন, বৃত্তি পরীক্ষার পর যদি রোজ ৫০০ টাকা করেও জমায়, তাহলে ১০০ দিন কমপক্ষে লাগবে ৫০,০০০ হতে। একজন চা বিক্রেতা সারদিনের সব খরচ বাদ দিয়ে কতই বা সঞ্চয় করতে পারে? তাও মফস্বল এলাকায়। তাই, টাকাটা মুখ্য নয়, গল্পটাই মুখ্য হিসেবে ধরে নেয়া হোক।

ভাল থাকুন সবসময়, শুভকামনা।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৩

তানজির খান বলেছেন: ধন্যবাদ বোকা ভাই সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

প্রতিদিন ৫০০ টাকা জমাতো তা কিন্তু গল্পে নেই। এছাড়াও সে কিছু টোটকা বিজনেস করতো বিভিন্ন সিজনে।

শুভকামনা ভালবাসা রইল ভাই। উত্তর দিতে দেরী হয়ে গেল বলে স্যরি।

১১| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৭:৩৮

গেম চেঞ্জার বলেছেন: আমি সংখ্যা দিয়ে কোন কথা বলতে চাই না। গল্পে যে করুণ কাহিনী তুলে ধরেছেন সেটাই মুখ্য। বাস্তবিক ঘটনা শুনে আরো খারাপ লাগছে!!

তবে এটাকে গল্পের রুপ দিলে নাটকীয়তা আরোপ করতাম আমি। :)

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৬

তানজির খান বলেছেন:

অনেক ধন্যবাদ ভাই। আপনার মন্তব্য পড়ে খুব ভাল লাগলো। আমি আসলে একদম গল্প লিখতে পারি না। গল্প লিখতে চেষ্টাও করিনি কখনো। আপনারা জানেন সব। তবুও এটা লিখেছিলাম। মাঝেমাঝে অখাদ্য গল্প লিখব এখন থেকে। আপনাদের জোর করে গিলাবো। হাহাহাহাহা
স্যরি ভাই উত্তর দিতে দেরী হয়ে গেল।

১২| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৬

সুমন কর বলেছেন: ঊনপঞ্চাশ হাজার পাঁচশত টাকা !! শেষের চমকটা দারুণ। +।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৮

তানজির খান বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার বড় ভাই। শুভকামনা ও ভালবাসা রইল।

স্যরি ভাই উত্তর দিতে দেরী হয়ে গেল।

১৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:০৩

উল্টা দূরবীন বলেছেন: মাঝরাতে গল্পটা পড়ে ভুল করলাম কিনা বুঝতেছিনা। কষ্টের গল্প পড়ে ব্যাথিত আরো একটা রাত কেটে যাবে মনে হচ্ছে।

খুব ভালো লিখেছেন।

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:১০

তানজির খান বলেছেন: এত সুন্দর মন্তব্যের উত্তর দিতে এত দেরী করে ফেললাম! আসলে একটু ঝামেলায় আছি ভাই তাই এত দেরী হয়ে গেল সব জায়গা। খুব ভাল লাগল আপনার মন্তব্য পড়ে। ভালবাসা ও শুভেচ্ছা নিবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.