নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিশিলিন তুরিনের বাংলা ব্লগে স্বাগতম।

মিশিলিন তুরিন

বাঁচার জন্য লিখা, যখন সবকিছু অর্থহীন বলে মনে হয় তখন শুধু কলম ধরার আশায় বাঁচতে ইচ্ছে করে।

মিশিলিন তুরিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেগোম রোকেয়া কি এই শিকষার স্বপন দেখেছিলেন????

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৩

এক কালে বাংগালি মেয়েদের শিক্ষিত হওয়া তো দূরের কথা, অক্ষর জ্ঞান সম্পর্কেও কোন ধারণা দেয়া হতনা। কারণ হিন্দু সমাজ বিশ্বাস করত, মেয়েছেলে (মেয়ে মানুষ) নিকা-পড়া (লেখা-পড়া) জানলে নাকি বিধবা হয়। এই ব্যাপারে মায়েরা যথেষ্ট সচেতন ছিলো, ভুলেও যাতে তার মেয়ের অক্ষর জ্ঞান না হয়।
.
নারী শিক্ষার অগ্রদুত বেগম রোকেয়া ঘরের বাইরে সমাজের বিরুদ্ধে এবং আশাপূর্ণা দেবির বিখ্যাত উপন্যাস "সুবর্ণলতা" এর মূল চরিত্র "সুবর্ণলতা" র মতো অনেক নারী ঘরের ভেতরে পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে নারী শিক্ষার জন্য অনেক লড়াই করেন। অনেক গঞ্জনা অপমান সহ্য করেন। উদ্দেশ্য ছিল একটাই। নারীদের সুস্থ এবং মুক্ত চিন্তার অধিকারী করে তোলা।
.
যাদের শিক্ষা দিক্ষা নেই, তারা সারাদিন পড়ে থাকে শাড়ি গয়না নিয়ে, কুট কাচালী, ঝগড়া ঝাটি নিয়ে, পরচর্চা নিয়ে।
আর একজন শিক্ষিত নারী পরচর্চামুক্ত, হিংসামুক্ত, ঝগড়ামুক্ত, শাড়ি গয়না নিয়ে অহংকার মুক্ত সংসার চালাতে পারে।
এটাই বুঝানো ছিল তাদের লড়াইয়ের উদ্দেশ্য।
.
একজন অশিক্ষিত নারী যদি সেসময় কোন কারণ সংসার হারাতো, তবে তার ভরণ পোষণের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতো। বাবা-মা বেচে থাকলে তো আর চিন্তা নেই। কিন্তু না থাকলে তাকে কোন এক গুরুর আশ্রমে পাঠিয়ে দেয়া হতো। এছাড়া সমাজে তার আর কোন আশ্রয় নেই। অনেকে অপমানে আত্মহত্যাও করতো।

অথচ সেই নারী যদি শিক্ষিত হয়, তবে এই "আশ্রয়" নামক শব্দটার পেছনে আর দৌড়াতে হতো না।শিক্ষার জোড়ে একটা কর্মক্ষেত্র, কর্মের জোড়ে অর্থ, আর সেই অর্থের জোড়ে নিজের খাওয়া আর বাসস্থানের দায়িত্ব সে নিজেই নিতে পারতো।
এটাই বুঝানো ছিল তাদের লড়াইয়ের উদ্দেশ্যে।
.
দিন বদলেছে। লড়াই তাদের সফল হয়েছে। কিন্তু কতটুকু হয়েছে, এটাই হচ্ছে এখন দেখার বিষয়।
.
বর্তমানে মা-বাবারা মেয়েদের পড়াশুনা করানোর ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। কেনো জানেন?? যাতে বিয়ের সময় বায়োডাটায় লিখতে পারে মেয়ে অনার্স পড়ছে, মেয়ে ডাক্তার, মেয়ে শিক্ষিকা। অর্থাৎ একটা ভালো বিয়ে দেবার জন্য।
.
এখনকার মেয়েদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, সার্টিফিকেট সবই আছে ঠিকই, কিন্তু হিংসা, কুট-কাচালী, পরচর্চা,শাড়ি গয়না নিয়ে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা, ঝগড়া ঝাটি কোন কিছুই বন্ধ হয়নি। এসব ব্যাপার পূর্বে যেমন চলছিলো, বর্তমানেও তেমনি চলছে, আশা করি ভবিষ্যতেও অপরিবর্তিত থাকবে।
.
এখন মেয়েদের শিক্ষা আছে ঠিকই, কিন্তু কোন কারণে সংসার হারা হলে "কে খাওয়াবে, কে পড়াবে, আবার বিয়ে হবে তো??? " এই দুঃশ্চিন্তা এখনো পিছু ছাড়েনি।
.
এবার আমার কথা বলি। আজ বাদে কাল হয়তো চাকরী করব। এখনো আমার অবস্থান নিয়ে আমার আম্মুকে মানুষ উস্কায় এই বলে, "আহারে ভাবি, মেয়েটারে শেষ পর্যন্ত এই পথে পাঠাইলেন? মেয়ে মানুষ ভার্সিটি তে পড়লে আজকে একটা প্রাইমারী স্কুলে মাষ্টারি করলেও কোন মতে জীবনটা চলে যেতো", "মেয়ে মানুষ ডাক্তার হওয়াই ভালো। সমাজে একটা সম্মান আছে", "মেয়ে মানুষ শিপের চাকরী করবে?? ভবিষ্যতেরর চিন্তা করতে হবেনা? বিয়ে শাদির একটা ব্যাপার তো আছেই।"
আমার মাথাটা একটু বেশিই গরম। তাই ঘরে আমার সামানে বিয়ের প্রসংগ সাহস করে সহজে কেউ তুলতে আসেনা। কিন্তু আমি বুঝি, বাইরের মানুষ যে কি বিষ আমার জননীর মাথায় ইঞ্জেক্ট করেছে। মুখে না বললে কি হবে, আমি ঠিকই বুঝি, আম্মুও আমাকে নিয়ে ওই একই চিন্তাই করে, আমি ডাক্তার হইলাম না। তাই বিয়ের বাজারে আমার মূল্য নাই। আমার ভালো বিয়ে হবেনা। (হিহিহি)
.

বেগম রোকেয়া যদি আজ এসে দেখতেন, তার মেয়েরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জন করেছে ঠিকই, কিন্তু স্ব-শিক্ষিত, সভ্য এবং স্ব-নির্ভর কোনটাই হতে পারেনি,
যে উদ্দেশ্যে তিনি শিক্ষার জন্য লড়েছেন, তার কোনটাই সফল হয়নি, বরং শিক্ষা গ্রহণ টা হচ্ছে এখন শুধুই "শো-আপ", তবে নিশ্চিত যে এই শিক্ষার মুখে উনি ঝাটা মারতেন।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫৮

শামচুল হক বলেছেন: পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ।

২| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৩

সম্রাট৯০ বলেছেন: আপনার লেখার প্রথম লাইন শুরু হয়েছে "এক কাল " দিয়ে ,কেন এই কালে কি সেটা নেই? অবশ্যই আছে,এখনো ভরা মজলিসে বলা হয় নারিকে শুদু স্বামীর টাকার হিসেব রাখা মত পড়ালেখা করাতে। এমন নির্মম মজলিস এখনো হচ্ছে চলছে।

এখনো নারীর ব্রেইনকে মেমরী কার্ড হিসেবেই বানানো হচ্ছে। পড় মুখস্ত করো খাতা ভরিয়ে সনদ নিয়ে আসো ভালো বিয়ে হবে বলে, এখনো নারী সেই আদিম খেলায় খেলনাই রয়ে গেল ,এখনো নারীর সনদকে নারীর বালিশ বানিয়ে বিছানায় এলিয়ে দেয়া হয়, আর তারাও তেমনি অভ্যস্থই আছে। এখনো নারী তার মন মজায় নারীত্বে,পুরুষ গুলো হয় রসদ।সময়ে মেরুদন্ড।এখনো নারী দাড়ায় লাঠী ভর করে,দিন টানে অনিশ্চিয়তায়,দুচোখ খোঁজে নির্ভরতা।একটু ভালো, আরো ভালো, খুব বেশি ভালো হলে আরো ভালো। জীবনের জন্য এত বেশি পরিমানের বানিজ্যিক আর কোন প্রাণী এই দুনিয়াতে আছে বলে আমার জানা নেই।

নারী তুমি পৃথিবীর মেরুদন্ড,তোমার নামের পাশে অবলা বড্ড বেশি বেমানান।তুমি মানুষ হও...

৩| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৩২

দিয়া আলম বলেছেন: এখনো নারীর সনদকে নারীর বালিশ বানিয়ে বিছানায় এলিয়ে দেয়া হয়, আর তারাও তেমনি অভ্যস্থই আছে

@ সম্রাট আপনার সব কথার সাথে একমত কিন্তু উপরের লাইন দিয়ে কি বুঝিয়েছেন একটু ব্যখ্যা করবেন?

লেখিকাকে ধন্যবাদ বাস্তব সত্য নিয়ে বলার জন্য

৪| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৪০

সম্রাট৯০ বলেছেন: @দিয়া আলম আমার মন্তব্য গুলো এমনি,তবুও বললেন বলে একটু বলি- বালিশ একটা মানুষের মাথা যতটুকু উঠায় ঠিক ততটুকুই,এই টুকু না উঠালেও হয়।কিছু মানুষের কিছু সনদ ঠিক ততটুকুই মাথা উঠাতে কাজে লাগে বা লাগায়,।

আপনাকে ধন্যবাদ

৫| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:৪৪

দিয়া আলম বলেছেন: @সম্রাট - ওরে বাবা!!!!!!!! জটিল

ধন্যবাদ ব্যখ্যার জন্য

৬| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৪৬

গিলগামেশের দরবার বলেছেন: আমরা শিক্ষিত হয়েছি কিন্তু আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি শিক্ষিত হয়নি।

৭| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৪:২৫

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: সেই যুগ বলেন বা এই যুগ বলেন - আমাদের কালচারে বাবা-মায়েরা মেয়েদেরকে বড়ই করে ভাল বিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। মেয়েদেরকে জীবনে যাই শেখানো হয় - সবগুলোর উদ্দেশ্যই হল মেয়েদের বিয়ে দেওয়ানো।

সেই যুগে - মেয়েদেরকে গৃহস্থালীর কাজ শেখানো হত, 'সোয়ামি'কে কীভাবে খাতির-যত্ন করবে - তা শেখানো হত, লেখাপড়ার কথা ভুলেও চিন্তা করতো না (মানুষ তো ভুলেও মাঝে মাঝে কিছু চিন্তাভাবনা করে)
তখন কমন ডায়লগ ছিল, 'মাইয়া ডাঙর হইছে, বিয়া দিয়া দেওন লাগবো'

এরপর, মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর হালকা ইচ্ছা জাগলো, সাথে গৃহস্থালীর কাজের প্রশিক্ষণ তো ছিলই...
কমন ডায়লগও পরিবর্তিত হল,
'মাইয়া অক্ষর চিনে, কোনডা কত বুঝে - মাইয়া ডাঙর হইছে, বিয়া দিয়া দেওন লাগবো '
এরপর থেকে,
'মাইয়া দুই কেলাস পইড়ালছে, মাইয়া ডাঙর হইয়া গেছে, বিয়া দিয়া দেওন লাগবো'

'মাইয়া পাঁচ কেলাস পইড়ালছে, মাইয়া ডাঙর হইয়া গেছে, বিয়া দিয়া দেওন লাগবো'

'মাইয়া আট কেলাস পইড়ালছে, মাইয়া ডাঙর হইয়া গেছে, বিয়া দিয়া দেওন লাগবো'

'মাইয়া ম্যাট্রিক পাশ দিছে, মাইয়া ডাঙর হইয়া গেছে গা, বিয়া দিয়া দেওন লাগবো'

'মাইয়ায় আই এ পাশ দিছে, মাইয়া অনেক ডাঙর হইয়া গেছে, বিয়া দিয়া দেওন লাগবোই'

'মেয়ে ভার্সিটি পড়ে, মেয়েটার বিয়ে দেওয়া দরকার, নাহলে পরে সমস্যা'

'মেয়ে ভার্সিটির অর্ধেক সময় পার করে ফেলল, বিয়েটা দেওয়াই উচিৎ এখন'

'মেয়ে তো ভার্সিটিও পাশ করে ফেলল, আবার কখন না কী হয়, সময় থাকতে মেয়ের বিয়েটা সেরে ফেলা উচিৎ'

ইভালুয়েশন।
সেই ইভালুয়েশন।

অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু মূল সেই একটাই।

বেগম রোকেয়া নারীদেরকে শিক্ষিত, স্বাধীন, স্বর্নিভর দেখতে চেয়েছিলেন - হ্যাঁ, শিক্ষিত হচ্ছে, স্বনির্ভরতার ক্ষমতাও পাচ্ছে, স্বাধীনতাও পাচ্ছে - তবে, ঠিক যেইভাবে তিনি চেয়েছিলেন - সেইভাবে না। একদম মূলে এখনও সেই পুরোনো পরাধীনতা, সেই পুরোনো ধারণাটাই রয়ে গেছে।

মেয়েরা স্বাধীন অনেকটা হয়েছেও। তবে, এমনভাবে স্বাধীন হওয়াটা মনে হয় না চেয়েছিলেন। উনি একধরণের সাম্যাবস্থা চেয়েছিলেন। সেই সময়ের সাথে বিবেচনা করে - উনার ধারণা থেকে আমার এটাই মনে হয়েছে। কিন্তু, সেই সাম্যাবস্থা হয়ইনি।

পোস্টটা ভাল লিখেছেন। আমিও অনেক কপচাইতে পারলাম। থ্যাংকু পোস্টের জন্য।

৮| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:২৬

লাল পিপড়ে বলেছেন: নারী তুমি পৃথিবীর মেরুদন্ড,তোমার নামের পাশে অবলা বড্ড বেশি বেমানান।তুমি মানুষ হও...

@ সম্রাট৯০ --- হা হা হা , সম্রাট জি মানুষ হতে হলে লাগে মনুষ্যত্ব ,আর সেটা আসে মায়া মমতা ভালোবাসা দায়বদ্ধতা থেকে , আর এই গুলোই সেই বিশাল জাল/ফাঁদ যার মাঝেই নারী আঁটকে ,শিক্ষিত অশিক্ষিত বিষয় না , সনদ সেত এক টুকরো সিলমোহরের কাগজ আগুনে দিলেই পুড়ে ছাই হবে।। নারী অবলা হয়ে আছে দেখেই পুরুষ পুরুষ থাকতে পারছে নয়ত নারীর পক্ষে দুকথা বলে মহান হউয়া হয়ে উঠত কি করে বলুন ???

কোল বালিশের উঁচুনিচুতে নারী কে মাপা পুরুষের ই সাজে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.