নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

•ღ•_\"..মানুষ মানুষের জন্য...•ღ•জীবন খুবই ছোট; প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে অনুতপ্ত বোধ করার কোন মানেই হয় না।\nআসুন মানুষের কথা বলি,মানুষের জন্য লিখি।

তারেক মাহমুদ ৭০১

তারেক মাহমুদ ৭০১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাতের ট্রেনে সাবধান

০৮ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৬


যমুনা টিভির ক্রাইম সিন নামক অনুষ্ঠানে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রচার করে ঢাকা চিটাগাং ট্রেন লাইন নিয়ে। গত কয়েক বছরে এই লাইনের কিছু কিছু স্পটে প্রায় দেড়শ মৃতদেহ পাওয়া গেছে। সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় আখাউড়া ভৈরব কিশোরগঞ্জ কিনবা বি-বাড়িয়া হয়ে নরসিংদী পর্যন্ত। পুলিশ এই লাশগুলা বেশিরভাগ অজ্ঞাতপরিচয় আত্নহত্যা হিসেবে রেকর্ড করে তারপর মর্গ হয়ে মাটিচাপা। হিন্দু মুসলিম ব্যাপার নাই, সব মাটিচাপা। ডোম মৃতব্যাক্তির জামাকাপড় রেলওয়ে ডোমঘরের সামনে ঝুলায়ে রাখে। যদি বছর দুয়েকের ভিতর মা বাবা এসে জামাকাপড় দেখে সনাক্ত করতে পারে তাইলে কবর দেখিয়ে দেওয়া যাবে জামাকাপড় রোদে শুকায়ে বৃষ্টিতে ভিজে চেহারা সুরত আস্ত থাকেনা। এই লাশ গুলা বেশিরভাগই মার্ডার কেস। দশ বিশ পাঁচশ টাকা, পকেটে থাকা মোবাইল ফোন, এগুলা ছিনতাই করার জন্য মার্ডারগুলা করা হয়। বিশ টাকার জন্যও তারা মানুষ খুন করছে। ছিনতাইয়ের নিয়মটা হচ্ছে ট্রেনের দুই বগির মাঝখানে করিডোরের মত থাকে, দুই পাশে দরজা, বাথরুম। রাতের ট্রেনে এসব যায়গায় সুবিধামত লোক পেলে ছিনতাইকারী চক্রের দুইজন পেছন থেকে আক্রমণ করে। আক্রমণের নিয়ম হচ্ছে গামছাকে পেঁচিয়ে চিকন করা হয় প্রথমে।তারপর দুই মাথা দুইজন ধরে যাকে আক্রমণ করা হবে, তার গলায় পেছন থেকে এক প্যাঁচ দিয়ে দুপাশ থেকে হেছকা টান। ১৫ সেকেন্ডের ভিতরই ঐলোক মারা যাবে। না মরলেও তার জীবন ঐখানেই শেষ। এরপর তার পকেট থেকে যা নেওয়ার নিয়ে পাশের দরজা দিয়ে ফেলে দিবে।রাতের ট্রেনে সবাই ঘুমায়। তাছাড়া ট্রেনের আওয়াজ থাকে। কেউ কিচ্ছু টের পাবেনা। পুরো কাজটা করতে সময় লাগে সর্বোচ্চ দেড় মিনিট। এরা ধরা পড়ে, আবার জামিনে বের হয় আদালতের কাছে এভিডেন্স থাকেনা পর্যাপ্ত।এভিডেন্স না থাকলে বিচারও করা সম্ভব হয় না। তাই সতর্ক থাকুন।
আমার এক ছোট ভাই সাদিদ তার সাথেও এই ঘটনা টিই ঘটেছিলো কিন্তু তার ক্ষেত্রে স্থান ছিলো আলাদা। তাকে ২০১২ সালের ২রা জানুয়ারি খিলক্ষেত রেলগেট এলাকায় ফেলে দিয়েছিলো ওই গামছা পার্টির হেরোইনখোড় গুলা। পার্থক্য সে এয়ারপোর্ট থেকে কমলাপুর আসছিলাম ভার্সিটি থেকে তুরাগ ট্রেনে। তুরাগের এক বগি থেকে আরেক বগি তে যাওয়া যায় না (লোকাল ট্রেন) আর ওই বগি তে শুধু এরাই ছিলো। ট্রেন ছাড়ার পরে তার মনে হলো সামথিং ইজ রঙ কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে, পিছন থেকে ওরা চোখের পলকে তার গলায় গামছার ফাঁস টা ঢুকিয়ে দিলো আর টেনে সিট থেকে নিচে ফেলে দিলো।এরপরের আর কিছুই মনে নেই তার, শুধ মনে আছে সে গামছাবাঁধা গলায় গামছার ফাঁক দিয়ে হাত ঢুকানোর চেষ্টা করছিল আর ওরা গালিগালাজ করছে। তার কাছ থেকে ওরা বেশি টাকা পায়নি, সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা ছিলো ক্লাস করে বাসায় যাচ্ছিল কিন্তু ব্যাগ টা বড় ছিলো আর ছিলো প্র‍্যাকটিক্যাল প্যাটার্ন ক্লাসের জিনিসে ঠাসা।মোবাইল মানিব্যাগ নিয়ে গেছিলো, মানিব্যাগ এ আইডি কার্ড ছিলো। আর হ্যা, কাঙ্গালি গুলাকে তার যেটা আকৃষ্ট করছিলো বলে তার ধারণা সেটা হলো কাধে ঝুলানো থাকা কালো লম্বা গোল পেপার হোল্ডার। যাই হোক এর পরে তাকে কিছু পথচারী নিকটস্থ ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কিন্তু তারা রাখতে অস্বীকৃতি জানায়,বলে ইয়াং ছেলে এটা পুলিশ কেস। তাই তারা টহল পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছিলো কিছু সময় পরেই। এই ঘটনার পর চারদিন তার কোনো খোজখবর পাওয়া যায় নাই হাসপাতাল গুলোর মর্গে, ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডে, রেল স্টেশন এ, রেলের ডোমঘরে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তার বন্ধু বান্ধব, এলাকাবাসী, পরিবারের লোকজন তাকে খোজেনি (প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সাদিদের বাবা বাংলাদেশ রেলওয়ে তে কর্মরত আছেন)। ঢামেকেই তার আব্বুর কলীগরা আর তার বন্ধু রা এসে খুজে গিয়েছিলো কিন্তু তাকে পায়নি অথবা দেখলেও শনাক্ত করতে পারেনি। তার ভার্সিটির বন্ধু বান্ধবরা তাকে খুজতে এয়ারপোর্ট স্টেশন থেকে কমলাপুর পর্যন্ত রেললাইন ধরে হেটেও এসেছিলো। ক্যান্টনমেন্ট ষ্টেশন এর কিছুটা সামনে অথবা পিছনে বন্ধুরা তার ক্লাসের খাতা, নোট পত্র পরিত্যাক্ত হিসেবে পেলেও তার কোনো খবর কেউ পাচ্ছিলো না। পঞ্চম দিন দুপুর বেলা (৬ই জানুয়ারি) তার মামা ঢামেক এর ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের করিডরের লাস্ট বেডে খুজে পায় তাকে মামা দেখে চিনতে পারেনি, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি তার মাথার স্কাল্প এ একটা বিরল অসুখ আছে যেটার কারণে ওই জায়গার চুল পরে গেছে এবং চামড়া শক্ত হয়ে গেছে ওইটা দেখে মামা তাকে শনাক্ত করেন। তাকে যখন পাওয়া যায় তখন আমার হাত বাধা ছিলো বেডের সাথে, কারণ জিজ্ঞেস করার পরে তার পরিবার কে বলা হলো সে যাতে উঠে চলে না যা্য তার জন্য। যাই হোক সবাই সাবধানে রাতের ট্রেন এ চলাফেরা করবেন, লংজার্নি তে উপরের ঘটনাটা খুব ঘন ঘন হয় সুতরাং সিগারেট খেতে গেলেন বা যে কোন সময় একা দরজার কাছে গেলেন তখন চোখ কান খোলা রাখবেন। আর কখনোই বগি তে কম লোক থাকলে সেটায় উঠবেন না।
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে আমাকে আমাদের সবাই কে হেফাজত করুন, আমিন।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: হায় হায়.।.।.।

২| ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:০৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: তারেক মাহমুদ ৭০১ ,



সচেতন করে দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ ।

৩| ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:১৩

মনিরা সুলতানা বলেছেন: কি নির্মম ।

৪| ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:৪০

শাকিল১২৩৪ বলেছেন: সাংগাতিক ব্যাপার দেখতাছি।

৫| ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:৪২

বালাম সিটিকে বলেছেন: আর ঐ রেল পুলিশগুলো আঙ্গুল চুষে নাকি?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.