নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমবুঝি কিন্ত কিছু একটা নিয়ে বোঝার চেস্টা করি তাই যত পারি বই পড়ি ।

ঠ্যঠা মফিজ

ঠ্যঠা মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আগ্রা দুর্গ বা আগ্রা লালকেল্লা এর ইতিহাস

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৮


আগ্রা দুর্গ বা আগ্রা লালকেল্লা ভারতীয় উপমহাদেশের শাসক মোঘল রাজবংশের রাজকীয় আবাস্থাল এবং মোগল স্থাপত্যের এক অনবদ্য নিদর্শন। এই কেল্লা ১৯৮২ সালে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে (iii) নং বিভাগে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এর অন্তৰ্ভুক্ত হয়। দুৰ্গটি ভারত এর একটি রাজ্য উত্তর প্রদেশ এর আগ্রার যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। মোগল স্থাপত্যের অন্যতম নিদৰ্শন তাজমহল । আগ্রা কেল্লা থেকে মাত্র ২.৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

আগ্রা একটি রেলওয়ে জংশন এবং আশেপাশের কৃষি এলাকার জন্য এটি একটি বাণিজ্যিক ও শিল্পকেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। আগ্রা শহরে তুলা, খাদ্যশস্য, তামাক, লবণ ও চিনির পাইকারি বাণিজ্য হয়। এখানকার কলকারখানায় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং সুতির টেক্সটাইল, কার্পেট, লোহা ও ইস্পাত উৎপাদন সম্পন্ন হয়। আগ্রাতে প্রায় সাড়ে ১৬ লক্ষ লোকের বাস।আগ্রাতে অবস্থিত ঐতিহাসিক সৌধগুলির মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হল পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের এক আশ্চর্য তাজমহল। আগ্রা আরও বেশ কিছু ইন্দো সারাসেনীয় স্থাপত্যকর্মের জন্য বিখ্যাত যাদের মধ্যে আছে মুঘল সম্রাট আকবরের জন্য নির্মিত শ্বেত মর্মরের জাহাঙ্গিরি মহল এবং ১৭শ শতকের শুরুর দিকে নির্মিত মোতি মসজিদ বা মুক্তার মসজিদ।

আগ্রার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে আছে ১৯২৭ সালে স্থাপিত আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৮১ সালে স্থাপিত দয়ালবাগ এডুকেশনাল ইন্সটিটিউট এবং একটি মেডিক্যাল কলেজ।মুঘল সম্রাট আকবর ১৫৬৬ সালে বর্তমান আগ্রা শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন। অল্পদিনেই এটি সংস্কৃতি এবং জ্ঞানচর্চার একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়। ১৬৪৮ সাল পর্যন্ত এটি মুঘল সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। ওই বছর সম্রাট আওরঙ্গজেব রাজধানী দিল্লীতে সরিয়ে নেন। ১৮০৩ সালে আগ্রা ব্রিটিশদের পদানত হয়। ১৮২৫ সাল থেকে এটি একটি প্রাদেশিক রাজধানী ও প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে ভূমিকা পালন করে আসছে।

আগ্রা দুর্গ রাঙা বেলেপাথরের তৈরি। দুর্গের প্রাঙ্গণের আয়তন ২.৫ কি.মি.। দুর্গটির অভ্যন্তরে অনেক প্রসাদ, মিনার এবং মসজিদ আছে। এসব ষোড়শ শতাব্দী থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম অর্ধায়ের মধ্যবৰ্তী সময়ে নির্মিত হয়। ১১ শতকে নির্মিত একটি প্রাচীন দুর্গের সম্প্রসারণ হিসাবে এর নির্মাণকার্য ষোড়শ শতাব্দীতে আকবর এর রাজত্বকালে আরম্ভ হয় এবং অষ্টাদশ শতাব্দীতে ঔরঙ্গজেব এর রাজত্বকালে শেষ হয়। জাহাঙ্গীর এবং শাহজাহান এর রাজত্বকালে দুর্গের বহু নতুন স্থাপনা নির্মিত হয়েছিল। দুর্গের অভ্যন্তরে উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানসমূহ হল খাস মহল, শীশ মহল, মুহাম্মান বুৰ্জ , দেওয়ান-ই-খাস (১৬৩৭), দেওয়ান-ই-আম, মোতি মসজিদ (নিৰ্মাণকাল ১৬৪৬-৫৩) এবং নাগিনা মসজিদ (১৬৫৮-১৭০৭)। এই স্থাপনাসমূহে তিমুরিদ পারসিক' শিল্পকলা এবং ভারতীয় শিল্পকলা'র এক আশ্চৰ্য মিশ্রণ পরিলক্ষিত হয়।


যদিও বর্তমান দুর্গটির অধিকাংশই মোঘল আমলে নির্মিত হলেও সেখানে ১১ শতকে নির্মিত একটি প্রাচীন দুর্গের অবস্থান ছিল। ১৪৭৫ সালে আগ্রা ফোর্ট ছিল রাজা বাদল সিং এর অধীনে ইষ্টক নির্মিত একটি সামরিক দুর্গ। যার নাম ছিল বাদলগড়। ইতিহাসে ১০৮০ সালে সর্বপ্রথম এর উল্লেখ পাওয়া যায়। সে সময়ে গজনভীর সামরিক বাহিনী এই দূর্গ দখল করেন। সুলতান সিকান্দার লোদি ১৪৮৮সাল থেকে১৫১৭ সালে দিল্লী থেকে তার রাজধানী আগ্রায় স্থানান্তর করেন। তারপর থেকে আগ্রা দ্বিতীয় রাজধানীর পেয়েছিল এবং সুলতানি আমলে আগ্রা থেকেই রাজকীয় কর্মকান্ড পরিচালিত হত। তার পুত্র সিকান্দার লোদি ১৫১৭ সালে পানিপথের যুদ্ধে সম্রাট আকবারের নিকট পরাজিত এবং নিহত হবার পূর্ব পযন্ত এখানে অবস্থান করেন। সিকান্দার লোদি এই কেল্লার বেশ কিছু ইমারত এবং ইদারা নির্মান করেছিলেন।

১৫২৬ সালে দিল্লী জয়ের পর সম্রাট বাবর আগ্রা দুর্গে অবস্থান করেন। তিনি এখানে একটি বাউলি (সিঁড়ি যুক্ত ইদারা) নির্মান করেন। ১৫৩০ সালে এই দুর্গে সম্রাট হুমায়ুনের রাজ্যাভিষেক হয়। ১৫৪০ সালে হুমায়ুন বিলগ্রামে শের শাহরে কাছে পরাজিত হন। ১৫৫৫ সাল পর্য়ন্ত এই দুর্গ শের শাহের দখলে থাকে। এরপর হুমায়ন আগ্রা দুর্গ পুনরুদ্ধার করেন।

১৫৫৬ সালে আদিল শাহ শূরীর সেনাপতি হিমু আগ্রা ফোর্ট পুনরায় দখল করেন এবং আগ্রার পলায়নরত গভর্ণরের পশ্চাতধাবন করেন। সেসময়ে তুঘলকাবাদের সমরাঙ্গনে মোগল বাহিনীর সাথে তার যুদ্ধ হয়। যা তুঘলাকাবাদের যুদ্ধ নামে পরিচিত।

১৫৫৮ সালে সম্রাট আকবর আগ্রায় রাজধানী স্থানান্তর করেন। ঐতিহাসিক আবুল ফজল সেই সময়ের দুর্গকে বাদালগড় হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। সম্রাট আকবর রাজাস্থানের আরাউলি থেকে সংগ্রহীত বেলেপাথর দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দুর্গটির সংস্কার সাধন করেন। দুর্গের ভিতরের অংশে ইটের গাঁথুনি আর বাইরের অংশে আছে বেলেপাথরের আস্তরন। প্রায় ৪ হাজার কর্মী ৮ বছর প্রতিদিন পরিশ্রম করে ১৫৭৩ সালে আগ্রা দুর্গের নির্মান কাজ সমাপ্ত করে।

সম্রাট আকবরের পৌত্র সম্রাট শাহজাহানের আমলে আগ্রা দুর্গ তার বর্তমান রূপ লাভ করে। শাহাজাহান লাল বেলেপাথরের নির্মিত ইামারতের চেয়ে স্বেত পাথর দ্বারা নির্মিত ভবন অধিকতর পছন্দ করতেন।১৮ শতকের প্রথম দিকে মারাঠা সম্রাট দুর্গটি দখল করেন। তারপর বিভিন্ন সময়ে মারাঠা এবং তাদের শত্রুরা আগ্রা দুর্গের নিয়ন্ত্রন গ্রহন করে। ১৭৬১ সালে আহমেদ শাহ আবদালি পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে মারাঠাদের পরাজিত করলে পরবর্তী এক দশক মারাঠারা এই দুর্গ দখলের কোন চেষ্টা করতে পারেনি।১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময়ে এই দুর্গে দেশীয় সিপাহী ও ইংরেজ সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৭

আহলান বলেছেন: ধন্যবাদ ...সুন্দর পোষ্ট!

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩১

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আহলান।

২| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৩

মামুন ইসলাম বলেছেন: চমৎকার ইতিহাস সমৃদ্ধ পোস্ট ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই মামুন ইসলাম সুন্দর মন্তব্য করেছেন।

৩| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৯

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: বরাবরের মতই 'ঠাঠা' পোস্ট। ইতিহাসের সাথে ভ্রমণ সবসময়ই তৃপ্তিকর। পোস্টে প্লাস।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই রক্তিম দিগন্ত ভালো থাকবেন।

৪| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৫

নাইম রাজ বলেছেন: ভালো লাগল ইতিহাসটি জেনে ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৩৪

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই নাইম রাজ ।

৫| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৪

হাকিম৩ বলেছেন: বরাবরের মতই ভালো লাগল ইতিহাস ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪২

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই হাকিম৩ ।

৬| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২৭

ব্লগ সার্চম্যান বলেছেন: সুন্দর ইতিহাস তুলে ধরেছেন ।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৩

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ব্লগ সার্চম্যান ।আপনার অবস্থা কি ?

৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৫২

গাওসেল এ. রাসেল বলেছেন: সুন্দর। এবং তথ্য বহুল।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৭

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই গাওসেল এ. রাসেল ।

৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৪

নিউ সিস্টেম বলেছেন: দারুন তথ্য বহুল লেখা।

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪৮

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই নিউ সিস্টেম ভালো থাকবেন।

৯| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১১

লেখা পাগলা বলেছেন: ভালো লাগা ইতি হাস ।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৬

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই লেখা পাগলা।

১০| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১৪

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: একটি দুর্গকে কেন্দ্র করে মোগল ইতিহাস, সাথে ভারতবর্ষের ইতিহাস জানা হল!

ধন্যবাদ!

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৯

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ইতিহাসটুকো জানার জন্য।

১১| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:০৭

শামছুল ইসলাম বলেছেন: সুন্দর ইতিহাস !!!!

ভাল থাকুন । সবসময় ।

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:২০

ঠ্যঠা মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই শামছুল ইসলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.