![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে তিগ্রস্লদের তিপহৃরণের বিষয়টি এখনও অন্ধকারে রয়ে গেছে। প্রকৃতপে কতজন শ্রমিক কাজ করছিলেন, কতজন পঙ্গু হয়েছেন, কতজন নিখোঁজ রয়েছেন তার তালিকা এখনও চূড়াšø হয়নি। বাংলাদেশে অবহেলাজনিত চরম দুর্ঘটনার জন্য তিপহৃরণ দেওয়ার বিধান ১৮৫৫ সালের একটি আইনে রয়েছে। এ ছাড়া আইএলও এবং বিশ^ব্যাংকেরও তিপহৃরণ দেওয়ার একটি গাণিতিক হিসাব আছে। এসব পদ্ধতির মধ্যে কোন পদ্ধতিতে তিপহৃরণ দেওয়া হবে তা-ও এখন পর্যšø চূড়াšø নয়। এ কারণে বিচ্ছিšুভাবে প্রধানমšস্লীর প থেকে দুই দফায় ২১৪ জন শ্রমিককে ২ লাখ টাকা করে দেওয়া হলেও শেষ পর্যšø তিগ্রস্ল সবাই সহায়তা পাচ্ছেন কি-না তা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। বরং উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পর প্রকৃত তিগ্রস্লদের তালিকা তৈরির েেত্র আগের তাজরীন ফ্যাশন কিংবা আরও অতীতে স্পেকট্রাম গার্মেন্ট ভবন ধসে পড়ার পর হতভাগ্য হতাহতদের েেত্র যা ঘটেছিল, এবারও তা-ই ঘটছে।
প্রধানমšস্লীর কার্যালয় সহৃত্র জানিয়েছে, রানা প্লাজায় অবস্থিত সব গার্মেন্ট কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের সংখ্যা এবং উদ্ধার হওয়া হতাহতদের তালিকা মিলিয়ে প্রকৃত তিগ্রস্লদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। তালিকা তৈরি হলে এই তালিকা অনুযায়ী তিগ্রস্লদের তিপহৃরণ দেওয়া হবে। তবে তালিকা তৈরির েেত্র এখন নিখোঁজের তালিকায় থাকা শ্রমিকদের নিয়ে জটিলতা তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে সাভারের স্থানীয় প্রশাসন সহৃত্র। এখন পর্যšø অনেকেই ছবি হাতে নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে আসছেন।
শ্রমিক নেতারা বলছেন, এই প্রক্রিয়ায় নিকট অতীতে তাজরীন গার্মেন্ট কারখানা আগুনে ধ্বংস হওয়ার পর সব তিগ্রস্লকে তিপহৃরণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে এবারও শেষ পর্যšø তিগ্রস্লরা প্রকৃত সাহায্য পাবে কি-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, যে অঙ্কে (জনপ্রতি দুই লাখ টাকা) তিপহৃরণ দেওয়া হচ্ছে তা কোনো তিপহৃরণ নয়। ১৮৫৫ সালের আইন অনুযায়ী তিপহৃরণ দেওয়া হলে জনপ্রতি প্রায় ৪৮ লাখ টাকা এবং আইএলও কিংবা বিশ^ব্যাংকের পদ্ধতি অনুসরণ করলে প্রত্যেক তিগ্রস্ল কমপে ৩০ লাখ টাকা পাবেন।
ঢাকার জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন সমকালকে বলেছেন, রানা প্লাজায় তিগ্রস্ল প্রত্যেকের হাতে যথাযথ তিপহৃরণ দেওয়ার জন্য প্রধানমšস্লীর কার্যালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তিগ্রস্ল সবার পরিবার যেন সমাজে স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে তা নিশ্চিত করা হবে।
হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা কত : রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর ২১ দিনের উদ্ধার অভিযানে এক হাজার ১১৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় ধ্বংসস্লহৃপ থেকে। এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় জীবিত উদ্ধারের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১৪ জন।
সব মিলিয়ে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ১২৯ জন। জীবিত উদ্ধারের সংখ্যা ২ হাজার ৪৩৮ জন। জীবিত উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ১৯ জন একেবারেই হাত কিংবা পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে গেছেন। অন্যদের বেশিরভাগই স্বাভাবিক কর্মম হতে পারবেন কি-না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। গত ১৪ মে উদ্ধার অভিযান শেষ করার মুহহৃর্তে স্থানীয় প্রশাসনের তালিকায় ১৭৬ জন নিখোঁজ ছিল। অবশ্য গত কয়েক দিনে নিখোঁজের খোঁজে স্বজনের ভিড় কমেনি। প্রতিদিনই অনেক মানুষ আসছেন নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে। সর্বশেষ ২৯১ জন নিখোঁজ আছে বলে একটি তালিকার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন সহৃত্র। নিহত এক হাজার ১২৯ জনের মধ্যে ৮৪৩ জনের মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্লাšøর করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। ২৩৪ জনের মৃতদেহ জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। দেখা যায়, উদ্ধার অভিযানে জীবিত ও মৃতদেহ উদ্ধারের মোট সংখ্যা ৩ হাজার ৫৫৩ জন।
অন্যদিকে, বিজিএমইএর তালিকা অনুযায়ী রানা প্লাজার ছয়টি গার্মেন্ট কারখানায় মোট কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৫৫ জন। এর মধ্যে ইথার টেক্সে ৩৭৭, নিউ ওয়েভ অ্যাপারেলে ৩৩৩, নিউ ওয়েভ বটমসে ৫২৬, নিউ ওয়েভ ¯দ্বাইলে এক হাজার ৭৩, ফ্যান্টম অ্যাপারেলসে ৭৩৯ এবং ফ্যান্টম টেক লিমিটেডে ৪০৭ জন। হতাহতদের তালিকা সম্পর্কে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম সমকালকে জানান, এখন পর্যšø প্রধানমšস্লীর কার্যালয় কিংবা সরকারি প্রশাসনের প থেকে রানা প্লাজার ছয়টি গার্মেন্ট কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের তালিকা চাওয়া হয়নি। চাইলে তারা যে কোনো সময় তা সরবরাহ করতে প্রস্তুত। সাভারের স্থানীয় প্রশাসন সহৃত্র জানায়, তালিকা তৈরি নিয়ে জটিলতা রয়েছে। বিজিএমইএর সরবরাহ করা কর্মরত শ্রমিকদের তালিকাই প্রকৃত সংখ্যা কি-না তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কারণ উদ্ধার হওয়া (জীবিত ও মৃত) শ্রমিকের সংখ্যাই বিজিএমইএর তালিকার চেয়ে বেশি। নিখোঁজ সংখ্যা হিসাব করলে এ সংখ্যা আরও বেশি। প্রধানমšস্লীর কার্যালয় সহৃত্র জানায়, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তবে এই তালিকা কত দিনের মধ্যে চূড়াšø হবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি সহৃত্রটি।
তিপহৃরণের পরিমাণ কত : এর আগে তাজরীন ফ্যাশনে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাফ্ফে তিগ্রস্লদের তিপহৃরণ নির্ধারণ করা হয়েছিল সাত লাখ টাকা। আর রানা প্লাজায় নিহত ২১৪ জনের পরিবারকে প্রধানমšস্লীর কার্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা করে তিপহৃরণ দেওয়া হয়েছে। তবে তিপহৃরণের এই হার কোনো মানদফ্ফেই উপযুক্ত নয় বলে মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশে কোনো দুর্ঘটনায় তিপহৃরণের জন্য কোনো বিধিমালা নেই। তবে ১৮৫৫ সালের একটি আইন আছে, যেখানে অবহেলাজনিত চরম দুর্ঘটনার জন্য তিপহৃরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। এই আইনে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তি কিংবা জীবিত থাকলেও পহৃর্ণ অম হওয়া ব্যক্তির দুর্ঘটনার সময়ে তার সর্বশেষ মাসিক আয়ের হিসাব করে গড় আয়ু পর্যšø আয়ের (প্রাপ্টø ভাতা সুবিধাসহ) দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা তিপহৃরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ হিসাব করলে একজন শ্রমিকের নহ্যৃনতম মজুরি হিসাবে তিপহৃরণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৮ লাখ টাকার কিছু বেশি। তিনি বলেন, এই আইনটি সরকার এবং মালিকপ কেউই সামনে আনতে চায় না। বাংলাদেশে এখন পর্যšø এই আইনেই তিপহৃরণের মানদফ্ফ নির্ধারণ করা আছে। এই আইনে দুর্ঘটনার জন্য তিপহৃরণ দিতে হবে সংশিম্লষ্ট প্রতিষ্ঠানের মালিক কিংবা সরাসরি সংশিম্লষ্টদের।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট সংহতি আন্দোলনের নেত্রী তাসলিমা লিমা সমকালকে বলেন, তিপহৃরণ দেওয়ার জন্য আইএলও এবং বিশ^ব্যাংক ‘এক জীবনের আয়’ হিসেবে তিপহৃরণের যে মানদফ্ফ স্থির করেছে তার ভিত্তিতে হিসাব করলে একজন শ্রমিকের কমপে তিপহৃরণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০ লাখ টাকা। সরকার এখন পর্যšø এসব মানদফ্ফ বিবেচনায় নিয়ে তিপহৃরণ প্রদানের কোনো সিদ্ধাšø নেয়নি। ফলে তিগ্রস্লরা আদৌ তিপহৃরণ পাবে কি-না কিংবা পেলে কত টাকা পাবে তা নিয়ে ধোঁয়াটে অবস্থা থেকেই গেছে।
অর্থ সংগ্রহ চলছে যেভাবে :বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম সমকালকে জানান, এখন পর্যšø বিজিএমইএ ৫০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে। কিন্তু তিগ্রস্লদের বর্তমান তালিকা অনুসারেই নহ্যৃনতম তিপহৃরণের জন্য কমপে ১০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এ কারণে বিজিএইমএর প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে নহ্যৃনতম ২৫ হাজার টাকা চাঁদা ধরা হয়েছে। ক্রেতাদের কাছ থেকেও অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া বিকেএমইএ ১ কোটি টাকা এবং স্কয়ার গ্র“প ৫০ লাখ টাকা দিয়েছে।
প্রধানমšস্লীর কার্যালয় সহৃত্র জানায়, বিভিšু মšস্লণালয়, সরকারি সংস্থা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ চলছে। অর্থ সংগ্রহ শেষ হলে চূড়াšø তালিকা অনুযায়ী তিপহৃরণ দেওয়া হবে। তবে সর্বোচ্চ কত অঙ্কে তিপহৃরণ দেওয়া হবে তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি বলে সহৃত্র জানায়।
ঢাকা জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন সমকালকে জানান, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের প থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। আহতদের মধ্যে ৯০৬ জনের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সকে ১০ লাখ টাকা মহৃল্যের উদ্ধারকাজে ব্যবহƒত ছোট যšস্লপাতি জেলা প্রশাসনের প থেকে কিনে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে জেলা প্রশাসন সাড়ে তিন কোটি টাকার ওপরে খরচ করেছে। নিহতদের পরিবার ও আহতদের সাহায্য করা ছাড়াও উদ্ধারকাজে ব্যবহƒত ক্রেনের জ্বালানি তেল কিনে দেওয়া হয়। লাশ বহনের জন্য কফিন দেওয়া হয়েছে। যারা গুরুতর আহত হয়েছেন, প্রধানমšস্লীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদেরও সহযোগিতা করবে সরকার।
সাভার ট্র্যাজেডি :ওরা তিপহৃরণ পাবে তো?
সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে তিগ্রস্লদের তিপহৃরণের বিষয়টি এখনও অন্ধকারে রয়ে গেছে। প্রকৃতপে কতজন শ্রমিক কাজ করছিলেন, কতজন পঙ্গু হয়েছেন, কতজন নিখোঁজ রয়েছেন তার তালিকা এখনও চূড়াšø হয়নি। বাংলাদেশে অবহেলাজনিত চরম দুর্ঘটনার জন্য তিপহৃরণ দেওয়ার বিধান ১৮৫৫ সালের একটি আইনে রয়েছে। এ ছাড়া আইএলও এবং বিশ^ব্যাংকেরও তিপহৃরণ দেওয়ার একটি গাণিতিক হিসাব আছে। এসব পদ্ধতির মধ্যে কোন পদ্ধতিতে তিপহৃরণ দেওয়া হবে তা-ও এখন পর্যšø চূড়াšø নয়। এ কারণে বিচ্ছিšুভাবে প্রধানমšস্লীর প থেকে দুই দফায় ২১৪ জন শ্রমিককে ২ লাখ টাকা করে দেওয়া হলেও শেষ পর্যšø তিগ্রস্ল সবাই সহায়তা পাচ্ছেন কি-না তা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। বরং উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পর প্রকৃত তিগ্রস্লদের তালিকা তৈরির েেত্র আগের তাজরীন ফ্যাশন কিংবা আরও অতীতে স্পেকট্রাম গার্মেন্ট ভবন ধসে পড়ার পর হতভাগ্য হতাহতদের েেত্র যা ঘটেছিল, এবারও তা-ই ঘটছে।
প্রধানমšস্লীর কার্যালয় সহৃত্র জানিয়েছে, রানা প্লাজায় অবস্থিত সব গার্মেন্ট কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের সংখ্যা এবং উদ্ধার হওয়া হতাহতদের তালিকা মিলিয়ে প্রকৃত তিগ্রস্লদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। তালিকা তৈরি হলে এই তালিকা অনুযায়ী তিগ্রস্লদের তিপহৃরণ দেওয়া হবে। তবে তালিকা তৈরির েেত্র এখন নিখোঁজের তালিকায় থাকা শ্রমিকদের নিয়ে জটিলতা তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে সাভারের স্থানীয় প্রশাসন সহৃত্র। এখন পর্যšø অনেকেই ছবি হাতে নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে আসছেন।
শ্রমিক নেতারা বলছেন, এই প্রক্রিয়ায় নিকট অতীতে তাজরীন গার্মেন্ট কারখানা আগুনে ধ্বংস হওয়ার পর সব তিগ্রস্লকে তিপহৃরণ দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে এবারও শেষ পর্যšø তিগ্রস্লরা প্রকৃত সাহায্য পাবে কি-না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, যে অঙ্কে (জনপ্রতি দুই লাখ টাকা) তিপহৃরণ দেওয়া হচ্ছে তা কোনো তিপহৃরণ নয়। ১৮৫৫ সালের আইন অনুযায়ী তিপহৃরণ দেওয়া হলে জনপ্রতি প্রায় ৪৮ লাখ টাকা এবং আইএলও কিংবা বিশ^ব্যাংকের পদ্ধতি অনুসরণ করলে প্রত্যেক তিগ্রস্ল কমপে ৩০ লাখ টাকা পাবেন।
ঢাকার জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন সমকালকে বলেছেন, রানা প্লাজায় তিগ্রস্ল প্রত্যেকের হাতে যথাযথ তিপহৃরণ দেওয়ার জন্য প্রধানমšস্লীর কার্যালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তিগ্রস্ল সবার পরিবার যেন সমাজে স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে তা নিশ্চিত করা হবে।
হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা কত : রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর ২১ দিনের উদ্ধার অভিযানে এক হাজার ১১৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় ধ্বংসস্লহৃপ থেকে। এ ছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় জীবিত উদ্ধারের পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১৪ জন।
সব মিলিয়ে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ১২৯ জন। জীবিত উদ্ধারের সংখ্যা ২ হাজার ৪৩৮ জন। জীবিত উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে ১৯ জন একেবারেই হাত কিংবা পা হারিয়ে পঙ্গু হয়ে গেছেন। অন্যদের বেশিরভাগই স্বাভাবিক কর্মম হতে পারবেন কি-না তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। গত ১৪ মে উদ্ধার অভিযান শেষ করার মুহহৃর্তে স্থানীয় প্রশাসনের তালিকায় ১৭৬ জন নিখোঁজ ছিল। অবশ্য গত কয়েক দিনে নিখোঁজের খোঁজে স্বজনের ভিড় কমেনি। প্রতিদিনই অনেক মানুষ আসছেন নিখোঁজ স্বজনের খোঁজে। সর্বশেষ ২৯১ জন নিখোঁজ আছে বলে একটি তালিকার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন সহৃত্র। নিহত এক হাজার ১২৯ জনের মধ্যে ৮৪৩ জনের মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্লাšøর করেছে ঢাকা জেলা প্রশাসন। ২৩৪ জনের মৃতদেহ জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। দেখা যায়, উদ্ধার অভিযানে জীবিত ও মৃতদেহ উদ্ধারের মোট সংখ্যা ৩ হাজার ৫৫৩ জন।
অন্যদিকে, বিজিএমইএর তালিকা অনুযায়ী রানা প্লাজার ছয়টি গার্মেন্ট কারখানায় মোট কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ৩ হাজার ৪৫৫ জন। এর মধ্যে ইথার টেক্সে ৩৭৭, নিউ ওয়েভ অ্যাপারেলে ৩৩৩, নিউ ওয়েভ বটমসে ৫২৬, নিউ ওয়েভ ¯দ্বাইলে এক হাজার ৭৩, ফ্যান্টম অ্যাপারেলসে ৭৩৯ এবং ফ্যান্টম টেক লিমিটেডে ৪০৭ জন। হতাহতদের তালিকা সম্পর্কে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম সমকালকে জানান, এখন পর্যšø প্রধানমšস্লীর কার্যালয় কিংবা সরকারি প্রশাসনের প থেকে রানা প্লাজার ছয়টি গার্মেন্ট কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের তালিকা চাওয়া হয়নি। চাইলে তারা যে কোনো সময় তা সরবরাহ করতে প্রস্তুত। সাভারের স্থানীয় প্রশাসন সহৃত্র জানায়, তালিকা তৈরি নিয়ে জটিলতা রয়েছে। বিজিএমইএর সরবরাহ করা কর্মরত শ্রমিকদের তালিকাই প্রকৃত সংখ্যা কি-না তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কারণ উদ্ধার হওয়া (জীবিত ও মৃত) শ্রমিকের সংখ্যাই বিজিএমইএর তালিকার চেয়ে বেশি। নিখোঁজ সংখ্যা হিসাব করলে এ সংখ্যা আরও বেশি। প্রধানমšস্লীর কার্যালয় সহৃত্র জানায়, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ তালিকা তৈরির কাজ চলছে। তবে এই তালিকা কত দিনের মধ্যে চূড়াšø হবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি সহৃত্রটি।
তিপহৃরণের পরিমাণ কত : এর আগে তাজরীন ফ্যাশনে স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাফ্ফে তিগ্রস্লদের তিপহৃরণ নির্ধারণ করা হয়েছিল সাত লাখ টাকা। আর রানা প্লাজায় নিহত ২১৪ জনের পরিবারকে প্রধানমšস্লীর কার্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা করে তিপহৃরণ দেওয়া হয়েছে। তবে তিপহৃরণের এই হার কোনো মানদফ্ফেই উপযুক্ত নয় বলে মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশে কোনো দুর্ঘটনায় তিপহৃরণের জন্য কোনো বিধিমালা নেই। তবে ১৮৫৫ সালের একটি আইন আছে, যেখানে অবহেলাজনিত চরম দুর্ঘটনার জন্য তিপহৃরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। এই আইনে দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তি কিংবা জীবিত থাকলেও পহৃর্ণ অম হওয়া ব্যক্তির দুর্ঘটনার সময়ে তার সর্বশেষ মাসিক আয়ের হিসাব করে গড় আয়ু পর্যšø আয়ের (প্রাপ্টø ভাতা সুবিধাসহ) দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা তিপহৃরণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ হিসাব করলে একজন শ্রমিকের নহ্যৃনতম মজুরি হিসাবে তিপহৃরণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৮ লাখ টাকার কিছু বেশি। তিনি বলেন, এই আইনটি সরকার এবং মালিকপ কেউই সামনে আনতে চায় না। বাংলাদেশে এখন পর্যšø এই আইনেই তিপহৃরণের মানদফ্ফ নির্ধারণ করা আছে। এই আইনে দুর্ঘটনার জন্য তিপহৃরণ দিতে হবে সংশিম্লষ্ট প্রতিষ্ঠানের মালিক কিংবা সরাসরি সংশিম্লষ্টদের।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট সংহতি আন্দোলনের নেত্রী তাসলিমা লিমা সমকালকে বলেন, তিপহৃরণ দেওয়ার জন্য আইএলও এবং বিশ^ব্যাংক ‘এক জীবনের আয়’ হিসেবে তিপহৃরণের যে মানদফ্ফ স্থির করেছে তার ভিত্তিতে হিসাব করলে একজন শ্রমিকের কমপে তিপহৃরণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০ লাখ টাকা। সরকার এখন পর্যšø এসব মানদফ্ফ বিবেচনায় নিয়ে তিপহৃরণ প্রদানের কোনো সিদ্ধাšø নেয়নি। ফলে তিগ্রস্লরা আদৌ তিপহৃরণ পাবে কি-না কিংবা পেলে কত টাকা পাবে তা নিয়ে ধোঁয়াটে অবস্থা থেকেই গেছে।
অর্থ সংগ্রহ চলছে যেভাবে :বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম সমকালকে জানান, এখন পর্যšø বিজিএমইএ ৫০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে। কিন্তু তিগ্রস্লদের বর্তমান তালিকা অনুসারেই নহ্যৃনতম তিপহৃরণের জন্য কমপে ১০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। এ কারণে বিজিএইমএর প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে নহ্যৃনতম ২৫ হাজার টাকা চাঁদা ধরা হয়েছে। ক্রেতাদের কাছ থেকেও অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া বিকেএমইএ ১ কোটি টাকা এবং স্কয়ার গ্র“প ৫০ লাখ টাকা দিয়েছে।
প্রধানমšস্লীর কার্যালয় সহৃত্র জানায়, বিভিšু মšস্লণালয়, সরকারি সংস্থা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ চলছে। অর্থ সংগ্রহ শেষ হলে চূড়াšø তালিকা অনুযায়ী তিপহৃরণ দেওয়া হবে। তবে সর্বোচ্চ কত অঙ্কে তিপহৃরণ দেওয়া হবে তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি বলে সহৃত্র জানায়।
ঢাকা জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন সমকালকে জানান, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের প থেকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। আহতদের মধ্যে ৯০৬ জনের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সকে ১০ লাখ টাকা মহৃল্যের উদ্ধারকাজে ব্যবহƒত ছোট যšস্লপাতি জেলা প্রশাসনের প থেকে কিনে দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে জেলা প্রশাসন সাড়ে তিন কোটি টাকার ওপরে খরচ করেছে। নিহতদের পরিবার ও আহতদের সাহায্য করা ছাড়াও উদ্ধারকাজে ব্যবহƒত ক্রেনের জ্বালানি তেল কিনে দেওয়া হয়। লাশ বহনের জন্য কফিন দেওয়া হয়েছে। যারা গুরুতর আহত হয়েছেন, প্রধানমšস্লীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদেরও সহযোগিতা করবে সরকার।
©somewhere in net ltd.