নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাহা বলিব সত্য বলিব... নচেত চুপ থাকিব...

সত্য তখনই দাম পায়, যখন তার পাশে মিথ্যা নামক অদৃশ্য বস্তুটি স্থান পায়......

নহে মিথ্যা

নহে মিথ্যা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিস্ময়কর সামুদ্রিক জীব

৩০ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৩

সমুদ্র তলের প্রানী জগত যে বিশ্বয়ে ভরপুর তা বুঝি আর বলে বুঝাতে হবে না। এখন পর্যন্ত যে সমুদ্র তলের সকল প্রানীকে এখন পর্যন্ত আবিস্কার করাই সম্ভব হয় নাই তা কিন্তু যে কোন বিশেষজ্ঞ অনায়াসে স্বীকার করে নিবে। তবে এ পর্যন্ত যা যা আবিস্কার হয়েছে তা যে কি পরিমান বিস্ময়ে ভরা তা নিজে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। আজ আপনাদের গভীর সমুদ্রের এমন কিছু প্রানীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিব যে গুলিকে দেখলে মোটেও মনে হবে না যে এগুলি আসলে কোন প্রানী, কিন্তু একগুলি প্রানী। চলুন তাহলে আজ পরিচিত হয়ে নেওয়া যাক এরকম কয়েকটি প্রানীর সাথে।



০১) Sponge:
Sponge নামের এই প্রানীকে দেখলে মনে হবে যেন পরিস্কার করার জন্য ব্যাবহৃত স্পঞ্জ মাত্র, কিন্তু তা যে আসলে জীবন্ত কোন প্রানী তা না জানলে আপনার মাথাতেও কখনই আসবে না। ধারনা করা হয় পৃথিবীতে যত প্রানী আছে সকল প্রানীর পূর্ব পুরুষ এই স্পঞ্জ। এই প্রানী থেকে ধীরে ধীরে বর্তমান প্রানী জগতের অবির্ভাব ঘটেছে। স্পঞ্জ নামের এই প্রানীটির কোন দেহ প্রত্যঙ্গ নেই বরং আছে কত গুলি কোষের মিলিত নেটওয়ার্ক মাত্র। আর এই সাধারন দেহ গঠনের মাধ্যমে এরা পারিপার্শিক পানিকে চুষে নিয়ে ফিল্টার করে অনুজীব ভক্ষন করে জীবন ধারন করে। কোন কারনে যদি এদের দেহ গঠনকারী নেটওয়ার্ক ভেংগে যায় তাহলে কোন গুলি পুনঃরায় নিজেদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে নতুন আরেকটি স্পঞ্জ দেহ তৈরি করতে সক্ষম। প্রানী জগতের মধ্যে আর কোন প্রানীর মধ্যে এই চরিত্র বিধ্যমান নেই।



০২) Sea Cucumber:
'Sea Cucumber' যার বাংলা মানে দাঁড়ায় 'সামুদ্রিক শসা'। নাম শুনে যদিও মনে হতে পারে যে এরা কোন প্রানী না, কিন্তু বাস্তবে এরা সমুদ্রের তলদেশে বসবাসরত প্রানী। এদের মুখে চারিপাশে কর্শিকা থাকে, যা দ্বারা এরা সামুদ্রিক শেওলা এবং প্ল্যাঙ্কটন ভক্ষন করে জীবন ধারন করে। যদি কোন ভাবে এরা নিজেদের শিকার হিসেবে বা শিকারি প্রানীর সম্মুখীন হয় তাহলে সব থেকে উদ্ভট উপায়ে নিজেদের রক্ষা করে। এরা মুখ দিয়ে নিজেদের শরীরের ভিতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুলিকে শিকারি প্রানীর দিকে ছুঁড়ে মারে। আর শিকারি প্রানী কিছু বুঝে ওঠার আগেই এরা এলাকা থেকে পলায়ন করে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ছুঁড়ে দেওয়া অঙ্গগুলি পুনঃরায় গজিয়ে যায়।



০৩) Coral:
'Coral' বা 'প্রবাল' কথাটি প্রথমেই শুনলে আপনাদের মনের মাঝে ভেসে ওঠে প্রাবাল প্রাচীরের চিত্র। এই প্রবাল প্রাচীর মূলত শতাব্দী ধরে বেঁচে থাকা এই প্রবাল গুলির বহিঃঅস্থি। আর এ অস্থিগুলি সম্পূর্নটাই প্রায় চুনাপাথরের মত। প্রবাল গুলি মৃত্যুবরন করার পূর্বে একে অপরের উপর চড়ে তৈরি করে এই প্রবাল প্রাচীর, অর্থাৎ এক একটি প্রবাল প্রাচীর তৈরি হতে কয়েক শতাব্দী লেগে যায়। জীবন্ত প্রবাল পলিপ দেহ নরম হয় আর এদের মুখের কাছে কর্ষিকা থাকে যা দিয়ে এরা পানির সাথে ভেসে আসা ছোট মাছ থেকে শুরু করে ছোট ছোট অনুজীব ভক্ষন করে জীবনধারন করে। এই প্রবাল গুলি তাদের মৃত দেহের মাধ্যমে প্রবাল প্রাচীর তৈরি করার মাধ্যমে সমুদ্রের জলজীবনের জীব বৈচিত্রের বাস্তুতন্ত্র গঠনে মূখ্য ও মূল ভূমিকা পালন করে।



০৪) Sand Dollars:
'Sand Dollars' নাম শুনে আবার ভেবে বসেন না যে বালির মধ্যে লুকিয়ে থাকা ডলার (মুদ্রা) এর কথা বলছি। এগুলি বিস্ময়কর সামুদ্রিক জীব। উপরের ভিডিওটিতে এই প্রানী নিয়ে বেশ তথ্য দেওয়া আছে তাই আর আলোচনা করলাম না। তবে যে কথাটি বলা হয় নাই তা হল এরা কিছু প্রজাতির মাছ এবং ষ্টারফিস এর খুব প্রিয় খাবার।



০৫) Giant Tube Worms:
'Worms' বা 'কৃমি' নাম শুনে মোটেও ভয় পেয়েন না। এরা আপনার দেহের মধ্যে বসবাসকারি কোন প্রানী নয় বরং এরা বাস করে গভীর সমুদ্রে, যেখানে জীবন্ত অগ্নিয়গিরির মুখ রয়েছে তার পাশ দিয়ে। এই অগ্নিয়গিরির মুখে বসবাসরত ব্যাক্টেরিয়া গুলি এই Giant Tube Worms এর একমাত্র খাদ্য, আসলে খাদ্য না বলে দেহ অঙ্গ বলাই ভাল। কেননা এরা সম্পুর্ন জীবনকাল এই ব্যাক্টেরিয়া গুলির উপর নির্ভর করে, কেননা এই ব্যাক্টেরিয়া গুলি পানির মধ্যে বিদ্যমান রাসায়নিক পদার্থ গুলিকে এই Giant Tube Worms এর জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক উপাদানে রূপান্তরিত করে। আর এর উপর নির্ভর করেই বেঁচে থাকে Giant Tube Worms। লার্ভা থাকাকালীন সময়ে Giant Tube Worms এর ছোট একটি সাময়িক পরিপাক তন্ত্র থাকে, ছোট হলেও যথেষ্ট বড় প্রয়োজনীয় ব্যাক্টেরিয়া গুলি দিয়ে পরিপূর্ন করার জন্য, যা তার জীবন কাল ধরে তাকে খাদ্য সরবরাহ করবে। একবার সমুদ্র পৃষ্ঠে নিজের দেহ আঁটকে দেহ বৃদ্ধি করা শুরু করলে তাদের বহিঃদেহ কাঁকড়ার দেহের মত শক্ত আবরণে আবৃত হয়ে যায়। আর এরপর যতদিন বেঁচে থাকে কখনই আর কিছু খায় না।



০৬) Pompeii Worm:
Pompeii Worm দেখতে অনেকটা উদ্ভট হলেও এদের বিস্ময়কর জীবন আপনাকে অবাক করে দিবে। এদের বসবাস সমুদ্রের গভীরে জীবন্ত অগ্নিয়গিরির মুখে। এরা সমূদ্রতলে ১৭৬ ডিগ্রী ফারেনাইট তাপমাত্রায় বসবাস করতে খুব বেশি পছন্দ করে অথবা এই তাপমাত্রা বাদে এরা জীবন ধারন করতে পারে না। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এদের দেহের তাপমাত্রার ধারন ক্ষমতা মাত্র ১২২ ডিগ্রী ফারেনাইট। তারপরেও কিভাবে যে এরা এত বেশী তাপমাত্রায় বেঁচে থাকে তা এখন পর্যন্ত রহস্যে ঘেরা। তবে অনেকের মতে এদের দেহে লোমের মত আচ্ছাদিত ব্যাক্টেরিয়া গুলি কোন না কোন ভাবে হয়ত এদের দেহের তাপমাত্রার উপর প্রভাব ফেলে, যার ফলে এরা এত বেশি তাপমাত্রাতেও বেঁচে থাকে।



০৭) Sea Butterflies:
বালি কনার থেকেও ছোট সামুদ্রিক এই প্রজাপতি গুলির গুরুত্ব যে কতখানি তা হয়ত এখনও আপনার জানা নেই। এই সামুদ্রিক প্রজাপতি গুলি 'zooplankton' প্রজাতির প্রানীদের অন্তর্ভুক্ত। মেরু অঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এবং পাখিদের প্রিয় খাবার এরা, আর এই মেরু অঞ্চলেই এই সামুদ্রিক প্রজাপতি গুলির জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি বসবাস করে। এরা এই মেরু অঞ্চলের খাদ্য শৃঙ্খলের মূল উপাদান। এই সামুদ্রিক প্রজাপতি গুলির দেহে প্রতি নিয়ত 'ক্যালসিয়াম কার্বনেট' এর আবরন তৈরি হয়, যা প্রতিনিয়ত দেহ থেকে ঝরে পরে, আর এগুলি পানিতে এসিডের পরিমান বাড়িয়ে দেয় যার ফলে পানিতে উপস্থিত কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষিত হয়। এই ছোট প্রানী যে কত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখছে তা বুঝি আর বলে বুঝানো লাগবে না। তবে এরা দিন দিন সংখ্যায় কমে যাচ্ছে। এদের জীবনের উপর প্রভাব ফেলছে মূলত বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি। এরা যদি হারিয়ে যায় তাহলে তা মেরু অঞ্চলের প্রানীদের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

লেখকঃ জানা অজানার পথিক AKA নহে মিথ্যা।

মূল লেখাঃ Weirdest Looking Sea Creatures

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: বেশ কয়েকটা একুরিয়াম এ যেয়ে সেদিন দেখছি , কিন্তু বিস্তারিত জানতাম না
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য ...

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:২৬

নহে মিথ্যা বলেছেন: জানাতে পেরেছি জেনে ভাল লাগছে :D

২| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২২

আবদুর রব শরীফ বলেছেন: ভালো লাগলো... :#p

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:২৭

নহে মিথ্যা বলেছেন: জানাতে পেরে আমারো ভাল লাগছে :D

৩| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩১

তানভীরএফওয়ান বলেছেন: প্রিয়তে +++++++++++++

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:২৭

নহে মিথ্যা বলেছেন: ধন্যবাদ :D

৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:৫৫

সুমন কর বলেছেন: দারুণ শেয়ার।

৩১ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৯:২৭

নহে মিথ্যা বলেছেন: :D

৫| ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:২০

হাসান মাহবুব বলেছেন: বিচিত্র এবং চমৎকার।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:৪৫

নহে মিথ্যা বলেছেন: :D

৬| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:০৮

কলমের কালি শেষ বলেছেন: অসাধারণ ! দারুন লেগেছে ।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:১০

নহে মিথ্যা বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ ... ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.