নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

TORTURE CELL

শূন্য

তির্থক আহসান রুবেল

শূন্য

তির্থক আহসান রুবেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

পান্ডুলিপি (প্রকাশ করতে না পারা বইয়ের একটি লেখা)

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩২

এক রক্তে লেখা পান্ডুলিপির গল্প বলি। যে পান্ডুলিপির কালি আমি পেয়েছি ৩০ লক্ষ শহীদের কাছ থেকে। সেই পান্ডুলিপির আর্তনাদ এসেছে কয়েক লক্ষ ধর্ষিতার কন্ঠ থেকে। গল্পটি আপনাদের ভাল লাগবে খুব। গ্যারান্টি দিচ্ছি। এখানে আছে বারুদের গন্ধ, আছে ধ্বংস্তুপ। আছে জানোয়ারের হা হা চিৎকারের ভয়াল হাসি। গল্পটি থেকে আপনারা সিনেমাও বানাতে পারবেন। কারণ গল্পে গান আছে অনেক। যে গানগুলো প্রযোজনা করেছে, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। গল্পে আছে ট্র্যাজেডি। কারণ গল্পে আপনি দেখবেন মা হারিয়েছে সন্তানকে। ভাই বোনকে, বোন ভাইকে। আছে বিরহ। প্রেমের সলিল সমাধী নির্মিত হয়েছে প্রেমিক কিংবা প্রেমিকার চিরদিনের ঘুমে। আছে টানটান উত্তেজনা। এই বুঝি চলে এলো সপ্ত নৌবহর। এই বুঝি ভারত দিচ্ছে আমাদের স্বীকৃতি।



বাংলা চলচ্চিত্রের গতানুগতিক চিত্রের মতোই এখানে পাবেন অসহায় নিরীহ ডাক্তার, শিক্ষক কিংবা শিল্পীদের উপর নির্যাতন আর হত্যাযজ্ঞের মতো দৃশ্য। আছে নায়কের বীরগাথা। একের পর এক ভিলেনের সাম্রাজ্য গুড়িয়ে দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া। আগেই বলেছি আমি আর্তনাদ নিয়েছি ধর্ষিতার কন্ঠ থেকে। কাজেই ব্যবসায়িক চিন্তা থেকে আপনি ধর্ষণের দৃশ্যটুকু কাটপিস হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।



এই পান্ডুলিপি লিখতে গিয়ে আমার হয়েছে মহা বিপদ। এত এত আইটেম! কিভাবে যে লিঙ্ক আপ করি!



আপনি চাইলে এই পান্ডুলিপির একটু অংশ নিয়েই নির্মাণ করতে পারেন শর্টফিল্ম, টেলিফিল্ম, নাটক কিংবা মেগা সিরিয়াল। আর যদি আপনি আমার মতো অক্ষম হয়ে থাকেন, যার পকেটে পয়সা নেই, নেই চোখে স্বাভাবিক দৃষ্টি, তাই আছে হয়ত চশমা। তাহলে এখুনি একটা পান্ডুলিপি লিখতে বসে যান। তারপর পাঠিয়ে দিন পত্রিকা অফিসে। যদি সম্পাদকের দয়া হয়, তাহরে হয়ত ছাপার অক্ষরে দেখবেন আপনার নাম। কিছু পয়সাও হয়ত পাবেন। যা দিয়ে হয়ত মিটে যাবে আপনার কয়েক বেলার চাল-ডালের খরচ।



যা বলছিলাম। এই পান্ডুলিপিতে আপনি পাবেন ধর্মের উৎকৃষ্ট ব্যবহার। যার দ্বারা আপনি লাইসেন্স পাবেন ধর্ষণের বৈধতার। আরো পাবেন অন্যের ঘরের আগুন দেয়া আর লুটপাটের ধর্মীয় স্বীকৃতি।



এই পান্ডুলিপিতে আছে দেশ প্রেম, আছে আত্মত্যাগ। মহান আত্মত্যাগ। আছে রাজাকার নামক অদ্ভুত এক হিংস্র জানোয়ারের ভৌতিক কার্যকলাপ। আপনার জন্য আছে ভায়োলেন্স। দূর্বল চিত্তের মানুষ, অসুস্থ মানুষ আর শিশুদের একটু দূরে সরিয়ে রাখুন। কারণ কিছুক্ষণ পরপর আপনি পাবেন মানুষের মাংস ছিঁড়ে খাওয়া নিয়ে কুকুর আর শকুনের মারামারির দৃশ্য।



আর এসব দৃশ্য দেখতে দেখতে আপনি পৌঁছে যাবেন পান্ডুলিপির একেবারে শেষ প্রান্তে। আর তখন হয়ত ভাববেন, দূর যা! এ আবার কেমন পান্ডুলিপি! আগা-গোড়া কোন সম্পর্ক নেই! হয়ত নিজেকে মনে মনে গালি দেবেন নির্বুদ্ধিতার জন্য সময় অপচয় হওয়ায়। আসলে হয়েছে কি! আমি নিজেই নিজেকে গাল দিচ্ছি এই পান্ডুলিপিটা লিখে সময় নষ্ট করায়। কারণ সুস্থ ইতিহাস না জানায় এই পান্ডুলিপিটা না হয়েছে কবিতা, না হয়েছে গল্প, না প্রবন্ধ না একটা কিছু।

আসলে এটা কিছুই হয়নি। শুধুমাত্র আমার মতো একজন অক্ষম মানুষের দ্বারা আপনাদের মতো ক্ষমতাবানদের একটু সময় নষ্ট করার ক্ষমতা আছে কি-না সেটা যাচাই হলো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.