নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি তমাল। তমাল মানে তমাল বৃক্ষ! আমি বৃক্ষের মতোই সরল, সহজ এবং মোহনিয়। পেশায় একজন পুরঃ কৌশল প্রকৌশলী। কাজ করেছি দেশের স্বনামধন্য কোন এক দপ্তরে। বর্তমানে উচ্চশিক্ষার জন্য জার্মানীতে অবস্থান করছি। আমি ভালবাসি মানুষ,দেশ এবং পরিবেশ। ধন্যবাদ।

মুহাম্মদ তমাল

একুশ শতকের অদৃষ্ট,সুপথের সন্ধানী তবু পথভ্রষ্ট,পূর্নতায় হৃদয় সিক্ত,রজক জয়ন্তী পূর্ন বন্দি অবশেষে মুক্ত।

মুহাম্মদ তমাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

জার্মানীতে উচ্চশিক্ষাঃ আশা, হতাশা আর অপেক্ষার গল্প

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ রাত ২:১০


আলহামদুলিল্লাহ্ স্বপ্নের রাজ্যে পৌছে গিয়েছি।
সেই স্বপ্নের রাজ্য যাকে আমার মতো মানুষ শুধুই কল্পনা করতে পারতো, এ রাজ্যে পৌছানোর সাহসই করতে পারতো না। স্বপ্নের রাজ্য বললাম কারন অজস্রদিন অপেক্ষা, আর সহস্র নির্ঘুম রাতের সঙ্গি ছিলো সে স্বপ্ন।
সাহিত্য বাদ, আমার গল্পটা শুরু করি,
জার্মানী, ডয়েচল্যান্ড অথবা জার্মান আপনি যাই বলুন , এই পথে পা বাড়ানোর মতো সাহস প্রথমদিকে আমার ছিলো না, তবে অনেক আগে থেকেই ইচ্ছা ছিলো দেশের বাইরে পড়াশোনা করার। কিভাবে করবো জানিনা আমার ইচ্ছা আমি দেশের বাইরে যাবো। তো পলিটেকনিক পার্ট চুকিয়ে ভর্তি হলাম ঢাকার প্রসিদ্ধ এক কোচিং সেন্টারে। তখন অনেককিছুই বুঝতাম না, উচ্চশিক্ষার সম্পর্কিত গ্রুপে অনেকের পোস্ট পড়তে থাকলাম, তথ্য ঘাটাঘাটি এ রকম করে করে কয়েকমাস পরে IELTS এর সিটে বসলাম। ২০১৬ এর মে মাসে আমার স্কোর আসলো টেনেটুনে 5.5, এই এজেন্সি, ঐ এজেন্সি দৌড়ে দৌড়ে বুঝলম এই স্কোর নিয়ে এবং আমার যে যোগ্যতা তা নিয়ে আপাতত উচ্চ শিক্ষার ঝুকি নেয়া ঠিক হবে না।
আর সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, একবারে ৫-৭ লাখ টাকা জোগাড় করার মতো অবস্থা আব্বার ছিলো না। আমার মা বাবা দুজনেই সরকারি চাকরি করতেন। তবে আমাদের নগদ অর্থ কম ছিলো।
বাড়ি থেকে আমার আব্বা সবসময়ই আমাকে সাপোর্ট দিতো, তারপর জমি বিক্রি করে নিজের স্বপ্ন পূরন করার মতো স্পর্ধা আমার ছিলো না। তো আপাতত তখন আমার উচ্চ শিক্ষার স্বপ্নটাকে ঐখানেই পুতে দিলাম। IELTS পরীক্ষা এবং কোচিং করে মোটামুটি ৩০ হাজার টাকা খরচ গেছিলো, এত খরচের পরেও ভাল স্কোর না করতে পারায় পরিবার থেকে এমন কিছু কথা শুনতে হলো যেটা আমাকে প্রচন্ড রকমের জীদ চাপিয়ে দেয়।

সেই দিন থেকে ঠিক করলাম, পরিবার থেকে আর ১ পয়সাও নিবো না। তখন আমার সবেমাত্র ২১ বছর। এরপর আমার যুদ্ধের দিন শুরু, নিজে কিছু করার চেষ্টা
করতে আরম্ভ করলাম, ছোটখাটো একটা ডিজাইন কনসালটেন্ট ফার্ম দাড় করানোর চেষ্টা করলাম। সেই ফার্মের আমিই সব। আলহামদুলিল্লাহ্ টুকটাক করে ভালোই রোজাগার আরম্ভ হলো। তা দিয়ে টেনেটুনে কাজীপাড়ায় ১৯ শ টাকা মেস ভাড়া আর ২৫ শ টাকার মতো মেসের বাজার খরচ দিয়ে হাতে কিছু টাকা জমালাম, ৬ মাসের টাকা গুছিয়ে
দ্রুতই দেশের তথাকথিত নিচের সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যাই, বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমি দেখেছিলাম আমার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসি এবং সরকারিভাবে অনুমোদিত কি না, ব্লক লিস্টেট কি না, বর্হিবিশ্বে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী গ্রহনযোগ্যতা আছে কি না। ব্যাস এরপর পথচলা শুরু।
২১ বছরের একটা ছেলে নিজে ব্যবসা করে একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি দিয়ে ঢাকা শহরে থেকে খেয়ে কিভাবে টিকে থাকতে পারে সেটা চোখ বন্ধ করে অনুধাবন করুন। বুঝতে পারবেন সেই দিনগুলি আমার কেমন ছিলো। এভাবেই প্রথম সেমিষ্টার শেষ করলাম, তারপর,
আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে দেশের স্বনামধন্য এক সরকারি প্রতিষ্ঠানে আমার প্রকল্পে চাকরি হয়।
ফুলটাইম চাকরি আর ফুলটাইম পড়াশোনা। সেটা যদি হয় ইঞ্জিনিয়ারিং! বাহ্ লাইফ ইজ বিউটিফুল। আমার অফিস থাকতো রবি-বৃহস্পিতি । আর ভার্সিটিতে ক্লাস থাকতো, বৃহস্পতি, শনি সন্ধা ৬ টা থেকে রাত ৯.৩০/১০.০ টা আর শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯:৩০।
সপ্তাহে ৫ দিন অফিস করে বৃহস্পতিবার সন্ধা থেকে আবার ভার্সিটিতে ক্লাস করতে যাওয়াটা ছিলো পৃথিবীর অন্যতম কঠিন কাজ। কিছুই করার নাই, করতেই হবে।
এমন করে বিরামহীন ভাবে জব এবং পড়াশোনা দুটোই চালালাম। এত চাপের ভিতরে আমি ক্লাসের সিআর ছিলাম, যা করি আর না করি, কখনই ক্লাস মিস দেইনি।
জীবনর রস, কস, পরিবার সবকিছু থেকেই মোটামুটি সবসময়ই দুরে থাকতে হতো। এমনও দিন আছে আমার মায়ের সাথে ৬ মাসও দেখা হয়নি। শুনতে যতটা সহজ বাস্তবতা অনেক বড় রকমের নির্মম। তখনও মনেমনে স্বপ্ন দেখতাম, বাইরে আমি যাবোই। ফেইসবুকের উচ্চ শিক্ষা সম্পর্কিত সব গ্রুপে ঘাটাঘাটি করলাম, মোটামুটিভাবে সব দেশের প্রসেস, ব্যয়, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগে সব আমার মুখস্থ হয়ে গেলো। প্রথমদিকে ভাবতাম পোল্যান্ড/চেক/পতূর্গাল/হাঙ্গেরীতে যাবো। সহজ হিসাব,টাকা কম লাগে তাই। ৪ বছর চাকরি
করে হাতে কিছু টাকা জমে ছিলো। আমার ফুপাতো ভাই জার্মানীতে আছেন, ওনার সাথে মাঝে কথা হলো, উনি অনুপ্রেরনা দিলেন জার্মানীতে চেষ্টা করার জন্য। ভেবেচিন্তে দেখলাম, জার্মানীতে টাকা অন্য দেশের চেয়ে কম লাগে। আমার সহজ হিসাব, যেখানে টাকা কম লাগবে সেখানেই আমি। তে মনস্থির করলাম, আমি জার্মানীতেই যাবো ইনশাল্লাহ। আমাদের বিএসসিতে ১০ টা সেমিষ্টার, তখন আমার ৮ম সেমিষ্টার চলে, ঠিক করলাম নবম সেমিষ্টারেই IELTS দিয়ে দিবো। কারন চাইছিলাম, বিএসসি শেষ হওয়া মাত্রই যেন জার্মানীতে আবেদন করতে পারি।
যেই কথা, সেই কাজ। ৩ মাসের ভিতরে IELTS দিয়ে দিলাম, ভার্সিটির ক্লাস + ভার্সিটির পড়াশোনা +IELTS+ অফিস।
সবকিছু একসাথে মেনটেইন করাটা কতটা যে ভয়ংকর রকমের কঠিন এটা শুধুই আমি জানি।
আলহামদুলিল্লাহ, IELTS 6.0 আসলো আমার।
আলহামদুলিল্লাহ সকল প্রকারের চাপ সামলে আমি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করি।
এরপর সব পেপারস রেডি করার পালা।

সার্টিফিকেট তোলাঃ

এবারের উইন্টার ২০ এ এপ্লাইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম।
ব্যচেলরের রেজাল্ট পাব্লিশ হওয়ার পরে তড়িঘড়ি করে প্রভিশনাল সার্টিফিকেট আর মার্কসিটে তুলি ভার্সিটি থেকে। সেটা সহজ ব্যপার ছিলো না।
সেই আবেদন পত্রে ৮ টা সিগনেচার করানো লাগে।
১. একাউন্টস্, ২. সহকারী লাইব্রেরীয়ান ৩. লাইব্রেরীয়ান, ৪.থিসিস সুপারভাইজার ৫. অফিস সেকশন, ৬. ডিপার্টমেন্টলাল হেড ৭. সহকারী রেজিষ্টার ৮. রেজিষ্টার।

এদের থেকে প্রত্যেকের থেকেই স্বাক্ষর নেয়ার নির্দিষ্ট কিছু সময় আছে। সেই সময় ছাড়া এনারা স্বাক্ষর করেন না। তাই মোটামুটি ১২ দিন লেগেছে এই স্বাক্ষর গুলো নিতে। তার ১০ দিন পরে সার্টিফিকেট আর ট্রান্সক্রপ্ট হাতে পেয়েছি।

রিকমান্ডেশন লেটারঃ

পরের ধাপ হচ্ছে ভার্সিটির প্রফেসর থেকে রিকমান্ডেশন লেটার নেয়া। আমি যে ভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর করেছি সেটা নতুন ভার্সিটি। আমি ১২ তম ব্যাচের স্টুডেন্ট। ফ্যাকাল্টি মেম্বার ১০০+ থাকলেও সমস্যা হচ্ছে প্রফেসর মাত্র ৩ জন।
১ জন হচ্ছেন ডিপার্টমেন্টের প্রধান, একজন এসোসিয়েট প্রফেসর আর একজন এসিসটেন্ট প্রফেসর। প্রথমে বিভাগীয় প্রধানের কাছে গেলাম, অনেক সাহস সঞ্চার করে সামনে দাড়ালাম, বললাম স্যার আমার একটা রিকমান্ডেশন লেটার দরকার। জার্মানিতে এপ্লাই করবো, সে বলে অফারলেটার আছে? আমি বললাম স্যার জার্মানিতে এপ্লাই করার পূর্বশর্ত হচ্ছে প্রফেসরের রিকমান্ডেশন লেটার। তিনি একজন অতিমাত্রায় বদমেজাজি মানুষ। আমাকে ধমক দিয়ে বের করে দিলেন, সাথে হালকাপালতা সালসা। তিনি এমন আচারন করলেন তাতে বোঝা গেলো, তিনি জানেনই না যে বাইরের ভার্সিটিতে এপ্লাই করতে রিকমান্ডেশন লেটারটা কতটা প্রয়োজন। অথবা এমন হতে পারে তিনি চান না তার স্টুডেন্টরা বাইরে পড়াশোনা করার জন্য যাক। এবং তিনি তার পিওনকে নিষেধ করে দিলেন আমাকে যেন আর তার রুমে না ঢুকতে দেয়। খুবই অপমানিত এবং ব্যথিত হলাম ওনার আচারনে।

এরপর গেলাম সহকারী প্রফেসরের কাছে, অনেক কাকুতিমিনতি করে বললাম, মহিলা মানুষ।
তিনি সব শুনে আশ্বাস দিলেন তিনি দিবেন। বললেন টাইপ করে পরের সপ্তাহের অমুক দিন নিয়ে আসতে।
তার আশ্বাস পেয়ে কিছুটা খুশি হলাম। তারপর গেলাম এসোসিয়েট প্রফেসরের খোজে। জানলাম তিনি সপ্তাহ খানেক ছুটি নিয়েছেন, ঢাকার বাইরে আছেন। সামনের সপ্তাহে ঢাকাতে ফিরবেন। ঐ দিনের মতো ইস্তেফা দিলাম দৌড়ঝাঁপ।
পরের সপ্তাহে ম্যাডামের সাথে দেখা করলাম, ম্যাডাম এক নজর দেখে বলেন ভার্সিটির প্যাড নিয়ে আসতে রেজিষ্টার অফিস থেকে, সেটা সংগ্রহ করতে সে আরো এক কাহিনী, তারা প্যাড দিবে না। ম্যাডামকে ফোন দিলাম, সহকারী রেজিষ্টারকে ধরিয়ে দিলাম, তারপর দিলো, ভার্সিটির সামনে থেকে সেটাতে প্রিন্ট দিলাম, ম্যাডাম বললেন রেখে জান আগামীকাল এসে দেখা করিয়েন। এসব করতে করতে কোন ফাঁকে যে এসোসিয়েট প্রফেসার ভার্সিটি থেকে বের হয়ে গেছেন, টেরই পাইনি । ঐ দিনের মতো সময় শেষ।
পরের দিন এলাম, ম্যাডামের সাথে দেখা করতে তার রুমে গেলাম, তিনি আমার লেটারে সিগনেচার করেন নাই। কারনটা হচ্ছে তার নাকি কথা পছন্দ হয় নাই। বললেন লাঙ্গুইজ চেঞ্জ করে নিয়ে আসতে, ওনাকে যখন প্রথমবার দেখলাম তখন কিন্তু কিছুই বলেন নাই। তাই বিষয়টা অবাক লাগলো আমার কাছে। কি আর করার আমার রিকমান্ডেশন লেটার লাগবেই সুতরাং আবার চেঞ্জ করে আনলাম, ও আচ্ছা কথা হচ্ছে আবার প্যাড চাইতে গেলাম, এবার তারা প্যাড দিলো না, কি করবো! ভার্সিটির সামনে থেকে স্কান করে প্যাড তৈরি করে আনলাম। তাতে প্রিন্ট দিলাম। বিপদে পড়লে বিড়ালেও লাথি মারে তেমন আচারন করছিলে ভার্সিটটির সামনের ফটোকপির দোকান গুলো, প্রতিটা রঙিন প্রিন্ট দিতে ২০ টাকা করে রেখেছে সেদিন।
সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, ম্যাডাম বারবার আমার ভুল ধরেন, ভুলটা হচ্ছে বলে এটা চেঞ্জ করেন, ওটা চেঞ্জ করেন। প্রতিবার ভার্সিটির সিড়ি বেয়ে নামছিলাম আর মনেমনে ওনার চোদ্দগুষ্টিকে উদ্ধার করছিলাম। আমি নাছোড়বান্দা, আমাকে রিকমান্ডেশন লেটার নিতেই হবে। আমাকে নিয়ে মনেহয় তিনি মজা নিচ্ছিলেন, যেমন মজা নেন অপ্রাপ্ত বয়স্ক গার্লফ্রেন্ডে। প্যারা কাকে বলে, কত প্রকার কি কি, সব বুঝে গেছি সেদিন । এমনি করে ৪ বার চেঞ্জ করার পরে অবশেষে বলেন, তিনি এতসব আমার গুনগান গাইতে পারবেন না, ১ প্যারার ৫-৬ লাইনে একটা লিখে আনতে। আমার এতটা ঘৃনা হচ্ছিলো, বোঝাতে পারবো না। ছি ছি একজন ডক্টরেট হোল্ডারের আচারন এতটা জঘন্য হতে পারে কিভাবে! তারপর রাগে দুঃখে ক্ষোভে ৫ লাইনের একটা রিকমান্ডেশন লেটার লিখে আনলাম, তিনি ফাইনালি স্বাক্ষর করলেন। শেষে তার প্রতি অশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলাম আর বললাম, ম্যাডাম অনেক উপকার করলেন, আপনার কথা কখনই ভুলবো না।

তারপর পরের দিন গেলাম এসোসিয়েট প্রফেসরের কাছে। তিনি আরো ভয়ংকর লোক। প্রধমেই বলেন তিনি কোন রিকমান্ডেশন লেটার দেন না। বের হতে বললেন। তাকে কাকুতিমিনতি করে বললাম। তারপর বলেন একটা টাইপ করে আনতে। আগামীকাল অমুক টাইমে আসতে। বেশ পরদিন গেলাম টাইপ করে নিয়ে। তিনি এটা দেখে খুবই বিরক্ত। হাজারটা প্রশ্ন। বলে তোমারে আমি চিনি না, দিতে পারবো না। বললাম স্যার আমি সিআর ছিলাম, আপনি আমাদের অমুক কোর্স নিতেন। নিজের যত শর্টকাট গুন আছে বলে ফেললাম তাকে । তিনি বললেন তোমার সব সার্টিফিকেটের ফটোকপি আর রিকমান্ডেশন লেটারের সফট কপি তার এসিসটেন্টের কাছে দিয়ে যেতে। বেশ দিয়ে এলাম। এই এসিসটেন্ট সাহেব ভাল মানুষ, তিনি অনেক হেল্প করেছেন। তার মোবাইল নম্বর নিয়ে আসলাম, তিনি জানালেন স্যার আমাকে আবার দেখা করতে বলেছেন, সব সার্টিফিকেটের মেইন কপি নিয়ে। সাথে IELTS. আমার ২ টা পাবলিকেশন আছে। সেগুলো আর IELTS দেখলাম, তিনি বিশ্বাস ই করতে পারছিলেন না তাদের ভার্সিটির কোন ছাত্র কনফারেন্স পেপার পাবলিশ করতে পারে। তিনি বারবার দেখছিলেন আর IELTS স্কোর আর আমার সিজিপিএ দেখে বললেন, কিভাবে এত ভাল রেজাল্ট করলে? ফটোশপ করে আনো নাই তো?
বললাম, স্যার ফুলটাইম জব করে, ফুলটাইম পড়াশোনা করে এতদুর আসছি। এগুলো আমার ঘাম ঝরিয়ে অর্জন করা। রিকমান্ডেশন লেটার দিয়ে দেন, নাহলে আমার স্বপ্ন পূরন হবে না। স্যার আমার কথা শুনলেন। আলহামদুলিল্লাহ তিনি আমাকে আমার টাইপ করা রিকমান্ডেশন লেটারে সামান্য কিছু শব্দ পরিবর্তন করে রিকমান্ডেশন লেটার দিয়ে দিলেন। স্যারকে বললাম, স্যার ইনশাল্লাহ জার্মানীতে যাওয়ার আগে আপনাকে সালাম করে যাবো।

নোটারী করাঃ নোটারী করা পানির মতো সহজ। মোহাম্মাদপুর টাউনহল মার্কেট থেকে করিয়েছি। প্রতিকপি ৭.৫০ পয়সা। আমার কপি অনেক ছিলো। দামাদামি করবেন। ওখানে অনেকগুলা দোকান আছে। দাম কোনমতেই প্রতিকপি ১০ টাকার উপরে যাবেন না।

ডকুমেন্ট পাঠানোঃ DHL দিয়ে পাঠাতে খরচ ২৪০০/- টাকা। তবে আমার ডকুমেন্টের ওজন প্রায় ৩৫০ গ্রাম ছিলো। তারা ৪৫০০ অথবা ৫৫০০ টাকা চেয়েছিলো। আমার তো মাথায় হাত। কি করবো! পরে লোকাল এজেন্ট দিয়ে পাঠিয়েছি ২৮০০/- টাকা দিয়ে।
আমার ইউনিএসিসস্টেরর কপি+অন্যান্য ভার্সিটির ডকুমেন্ট এক খামে ভরে জার্মানীতে অবস্থানরত বড় ভাইয়ের ঠিকানায় পাঠিয়েছি। তিনি ১ ইউরো করে ৪ টা ভার্সিটিতে পাঠিয়েছেন। আপনাও এমনটা করতে পারেন। তবে চেষ্টা করবেন ওজন ২৫০ গ্রামের মধ্যে রাখতে।
বর্তমানে Desh Courier Service অনেক কমে পাঠায়। ১৬০০ টাকা নেয় ওরা। সময়ও ৩-৪ দিনের মধ্যে হয়ে যায়।
এরপর অপেক্ষা অফার লেটারের।
এর মাঝেই করোনা আরম্ভ হয়ে গেলো। হায়রে হায়। যে ভয়টা পাইছি সবাই। বাবা রে বাবা।

অফারলেটারঃ

ভার্সিটিতে ৬ টা এপ্লাই করে আলহামদুলিল্লাহ Winter-20 ৩টা ভার্সিটি
1. TU Freiberg- Ground Water Management,
2. Karlsruhe University of Applied Sciences- GIS,
3. Bauhaus-University Weimar- Urban Design & Management থেকে অফারলেটার পাই।

তখন পুরোদমে সারা বিশ্বে করোনা পরিস্থিতি শুরু। বেঁচে থাকবো কিনা এই নিয়েই তখন সন্দিহান ছিলো সবাই। মানসিকভাবে এতটাই বির্পযস্থ ছিলাম, জার্মানীতে পড়াশোনা করার হাল ছেড়ে দিয়ে, দেশেই FIU তে Msc তে ভর্তি হয়ে গেলাম। ভেবেছিলাম ভবিষ্যতে PhD তে চেষ্টা করবো।

করোনার কারনে জার্মান এম্বাসী বন্ধ হয়ে গেলো। ভিসা ইনটারভিউ দিতে পারলাম না। আপাতত জার্মানীতে যাবার প্লান বাদ। অফারলেটার পেয়েছিলাম মে মাসে আর জার্মানীতে যাবো না তবুও একটা এপয়ানমেন্টের জন্য রেজিষ্টেশেন করলাম ২৮ জুলাই। ০৯ মাস পরে ভিসা ইনটারভিউ এর ডেট পাবো বলে এম্বাসী জানালো। করোনা পরিস্থিতি একটু একটু ভাল হতে থাকলো।
বাসা থেকে বললো জার্মানীতে যাবার প্রিপারেশন নিতে।

অনলাইন ক্লাসঃ
TU Freiberg- Ground Water Management এ অনলাইন এনরোল হয়ে ক্লাস আরম্ভ করলাম অনলাইনে। তখনও এপায়নমেন্টের কোন খোজখবর নাই। তবুও আশাবাদী ছিলাম তখনও। জার্মানীতে অনলাইন ক্লাস অনেক কঠিন ব্যপার। সবচেয়ে কষ্টদায়ক হচ্ছে অফিস টাইমে অনলাইন ক্লাস করা। জব, দেশের Msc, জার্মানীর অনলাইন ক্লাস এসবে একদম হালুয়া টাইট হয়র যাচ্ছিলো, ক্লাস চলাকালীন সময়ে আমার অফিসের বস ডাক দিতো তার রুমে, এই পরিস্থিতি কতটা যে বিরক্তিকর যে এই পরিস্থিতিতে না পড়েছে সে বুঝতে পারবে না।
তো এরই মাঝে আল্লাহ সুবহানাতায়ালার ইচ্ছায় আমি নভেম্বর-২০২০ এ বিয়ে করি।
আমার গায়ে হলুদের সন্ধায়ও অনলাইন ক্লাস করেছি। হবু বউকে দিয়ে এসাইনমেন্ট লিখিয়েছি। আর হানিমুনে যাবার সময় চলতি পথে কমলাপুর রেলস্টেশনে বসে অনলাইন ভাইভা দিয়েছি।
এভাবেই চলছিলো। লাইফ ইজ বিউটিফুল।

মানুষের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ,
একসাথে এতকিছু সুপারহিউম্যান ছাড়া করা সম্ভব না।
আমি ততক্ষণে বুঝে গেছি আমার পক্ষে সব একসাথে চালানো অসম্ভব। তাই TU Freiberg এ মেইল দিলাম আমি সেমিষ্টার ড্রপ দিতে চাই, এবং আগামী Winter-21 এ শুরু করতে চাই। তারা বললো পরীক্ষার রেজিস্টেশন যেহেতু করেছো পরীক্ষা দেয়া লাগবে। আমি কাছের এক ডাক্তার বড়ভাই থেকে মেডিকেল সার্টিফিকেট নিয়ে তাদের মেইল করলাম, তারা একসেপ্ট করলো এবং আমাকে জানালো, Winter-21 এ শুরু করতে পারবো। তবে তারা এটার চুড়ান্ত ডিসিশন জানাবে কিছুদিন পরে। আর কয়েকবার মেইল দিয়েও সাড়া পেলাম না।
TU Freiberg এর এক বড় ভাইকে নক দিলাম, তিনি অভয় দিলেন, তারপরও মনে ভয় রয়েই যায়।
ফেব্রুয়ারি থেকে Winter-20 এর ৫ জুলাইয়ের লোকজন এপায়নমেন্ট পেতে আরম্ভ করলো, মনে আশা জাগ্রত হলো, আমিও মনেহয় খুব দ্রুত ডাক পাবো। তো ঐ পর্যন্তই! আর কোন খোজখবর নাই, অনেক হতাশ হতে থাকলাম, নিভুনিভু প্রদীপের মতো আশা নিভতে আরম্ভ করলো। TU Freiberg এর সাবজেক্ট, ছোট সিটি, জব নাই, এই ধরনের নেগেটিভ কথাবার্তায় অনিশ্চয়তায় ফেলে দিয়েছিলো আমাকে।
খুবই খারাপ লাগতো, এদিক দিয়ে IELTS এর মেয়াদ শেষ হতে লাগলো গেলো। বউ সবসময়ই পাশে থেকে উৎসাহ যোগাতো এবং winter-21 এ এপ্লাই করতে বলতো। বিনাপয়সায় এপ্লাই করা যায় এমন কয়েকটা ভার্সিটিতে এপ্লাই করলাম। তারমধ্যে Darmstadt এ এপ্লাই করতে ১৬ শ টাকা খরচ গেছিলো। চান্স পাবো না জেনেও টাকাটা খরচ করতে খুবই কষ্ট হচ্ছিলো।

পারিপাশ্বিক অবস্থা, মানুষের খোচামারা কথাবার্তা, অর্থনীতিক টানাপোড়ন, ব্লকের টাকা যোগাড় করা নিয়ে এক বিরাট ঘোলাটে অবস্থায় ছিলাম।
যে পরিবারের লোকজন জার্মানীতে যাবার উৎসাহ যোগাতো তারাই তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতে লাগলো। ব্লক একাউন্টের জন্য যে টাকাটা একাউন্টে জমা ছিলো, আছে সেটার কারনে পরিবারের লোকজনের কথা শোনা। যেটা একজন মানুষকে হতাশার চরম পর্যায়ে নিয়ে যেতে বাধ্য।
দাঁতে দাঁতে চেপে দিন পার করছিলাম, মাঝেখানে ঝুক নিলাম UK এর দিকে, UK এর টিউশন ফি যত বেশী তাতে কনডিশনাল ৪টা অফারলেটার পেয়েও কি করবো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম। এতটাই হতাশ ছিলাম জার্মান স্টাডি গ্রুপ গুলাতেও ঢুকে হতাশ এবং বিরক্তি দুইটা একসাথে লাগতো।
নিজে নিজেকে মোটিভেশন দিয়ে এত গুলি দিন পার করছি।
নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে বলতাম, আল্লাহ ধৈর্যশক্তি দান করো।

অফারলেটার Winter 2021ঃ

আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অশেষ মেহেরবানীতে Winter'21 এ
১. TU Darmstadt এ "Tropical Hydrogeology and Environmental Engineering” TropHEE)
২. The University of Tuebingen "Applied & Environmental Geoscience" এ অফারলেটার পেয়েছি।
TU Darmstadt আমার ভাললাগা এবং ভালবাসা। এটা আমার ড্রিম সাবজেক্ট।
গতবছর সার্টিফিকেট হাতে পাইনি তাই এটাতে এপ্লাই করতে পারিনি। এবার আল্লাহ রহমত করলো।

ডকুমেন্ট সাবমিশনঃ

শেষ দিকের সময়টা ছিলো আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন। এত বড় মানসিক চাপ, চাপা কষ্ট নিয়ে কখনই দিন পার করিনি। কিছুই ভাল লাগতো না। যদিও আলহামদুলিল্লাহ বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনেক ভাল চাকরি ছিলো আমার, তবুও
চাকরিতে মন নেই। অন্য কোন সরকারি চাকরিতে আবেদন ও করছি না। হালাল ভাবে যা রোজাগার করি, তা দিয়ে সংসারে চালাতে কষ্ট হয়। আমার বউ ব্যাচারি অনেক কষ্ট করেছে। আলহামদুলিল্লাহ সে সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্মেছে, তারপরও আমার সংসারে এসে কিভাবে দিন পার করেছে আমি জানি। আমার স্ট্রাগেল খুব কাছ থেকে দেখেছে, আমাকে অনাবরত সাপোর্ট দিয়েছে।
শুরু হলো এম্বাসী থেকে ডকুমন্ট সাবমিশনের মেইল দেয়া, ৫ জুলাইয়ের সবাই মেইল পাচ্ছে। আমি বুঝলাম, আমার সময় ঘনিয়ে আসছে। আমার ২৮ জুলাই এপায়নমেন্ট নেয়া ছিলো। দিন কঠিন থেকে কঠিনতম হতে লাগলো, দম বন্ধ হবার উপক্রম, এদিক দিয়ে টাকার টেনশন। তারপর আবার এম্বাসী মেইল দেয়া বন্ধ করে দিলো। কি যে যন্ত্রনা। ভাইরে ভাই, পুরাই ফেডআপ।
অফিসে কাজ করছি, ২৫ শে মে। আমার বউ আমাকে ফোন করে ইমেইল চেক করতে বললো, সে গ্রুপে দেখেছে মেইল দিচ্ছে, হ্যা, আমার ডকুমেন্ট সাবমিশনের মেইল এলো। অর্থাৎ আমার সব কাগজপত্র এম্বাসীতে আগে মেইল করতে হবে। এরপর আমার সব কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে, ভিসা ইনটারভিউ ডেট দিবে। আলহামদুলিল্লাহ্ সাথেসাথে বাসায় চলে আসলাম। ব্লক একাউন্ট করার জন্য হাতে টাকা যোগাড় করা ছিলো ৫ লাখ। (জার্মানীতে আপনার নিজের নামে ১০৫৩২ ইউরো বা প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা ১ বছরের জন্য জমা করতে হয়। জার্মানীতে যাওয়ার পরে আপনি পুরো টাকাটা ১২ কিস্তিতে ফেরত পাবেন।)
বাকী ৬ লাখ কোথায় পাবো।
টাকাপয়সা অনেক কঠিন জিনিস, কেউ কেউকে দিতে চায় না। যাদের কাছে টাকা পাই, সবাই বলে এত দ্রুত দেয়া সম্ভব না। সময় চায়। ধার চাই, প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরের বার ফোন করলে না বলে। যেদিকে তাকাই চারিদিকে অন্ধকার। বন্ধুবান্ধব কেমন কাজে লাগে সেদিন চিনে গেছি। কেউ ১ টাকা দিয়েও হেল্প করেনি। কি যে টেনশন। ভাবলেই গা শিউরে ওঠে। টাকার কাজ কথায় সারে না। এদিক দিয়ে সময় নাই, ঐ সময়ে আমাদের গলা দিয়ে খাবার নামতো না। কান্নাকাটি করে বউ, কে কারে স্বান্তনা দিবে! বলে তোমার মনেহয় জার্মানীতে যাওয়া হলো না। যেন এতদিনের লালিত স্বপ্ন সামনের উপরে ভেঙে যেতে দেখছিলাম।
ডকুমেন্ট সাবমিশন করার আমাদের সময় দিলো ৭ দিন। আমার মেইল আসছে মঙ্গলবার, বুধবার বৌদ্ধ পূর্নিমা, ব্যাংক বন্ধ। ২ দিন শেষ। বৃহস্পতিবার ১ দিন ব্যাংক খোলা। আত্নীয় স্বজন থেকে আরো ৫ লাখ ধার করলাম। তবুও ১ লাখ টাকার ঘাটতি। বুধবার দেশের বাইরে থেকে আরো ১ লাখ টাকা আমার একাউন্টে এক বড় ভাই পাঠালো। বৃহস্পতিবার সকালেই জমা হবার কথা।
তবে দুঃখের বিষয় স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে খুলতে ১২ টা বাজলো। তবুও আমার একাউন্টে ঐ ১ লাখ টাকার ঘাটতি। International ট্রান্সজাকশন ১:৩০ এর পরে বন্ধ হয়ে যায়। ব্যাস ঘটনা ফিনিস। ঐদিনও ব্লক করতে পারলাম না। হাত পা কাপছিলো আমার। বউ বারবার ফোন দিচ্ছিলো, ফোন ধরার মতো শক্তি ছিলো না। কারন জানি যে সোমবার ব্লক করে ১ দিনের মধ্যে ফিন্টিবা থেকে কনফার্মেশন পাওয়া সম্ভব না।
শুক্র-শনি ব্যাংক বন্ধ। রবিবার জার্মানী বন্ধ। অনেকেই নক দিলাম ভাই সোমবর টাকা জমা হলে মঙ্গলবার কি কনফার্মেশন পাবো? মঙ্লবার বিকাল ৪ টা আমার শেষ সময়। একরকম হতাশ হয়েই টাকা জমা দিলাম। কি কপাল আমার ঐ দিন ইউরো রেট এবছরের সর্বোচ্চ ছিলো, ১০৫.৫৬ সোনালী ব্যাংকে। গুনেগুনে সবমিলিয়ে ১১ লাখ ১৯ হাজার টাকা গেলো সেদিন।
এরপর সোমবার দুপুরের পর থেবে ফিন্টিবাকে মেইল দিতে আরম্ভ করলাম। ওরা জানালো, ৩-৭ দিন লাগবে। আমার গায়ে জ্বর উঠে গেলো। অফিসে নাপা ২ টা খেলাম। ভাইরে ভাই, কি যে অবস্থা! তারপর আবার ফোন দিলাম, বললো টাকা জমা হয়নি। রাতে আবার ফোন দিলাম বললো টাকা জমা হয়েছে। দ্রত কনফার্মেশন পেয়ে যাবো। আলহামদুলিল্লাহ। রাতে ঘুম হলো না। সকালে দেখি ৭ টার দিকে কনফার্মেশন চলে আসছে। দ্রুতই সব রেডি করা আরম্ভ করলাম।
মেইল সাবমিশন করলাম, ১১ টার দিকে। অফিস চলে গেলাম। ২ টার দিকে এম্বাসী থেকে কল দিলো, বললো ১৭ই জুন ইনটারভিউ।

ইনটারভিউঃ
ইনটারভিউ এর আগের রাতে একটুও ঘুম হয়নি। ফজর পড়ে আমার মা'কে ফোন দিলাম, মা বললো, সে রোজা রেখেছে আমার জন্য। আজ পর্যন্ত আমি যতগুণো পরীক্ষা দিয়েছি, সবগুলো দিনে, আমার মা রোজা রেখেছেন। মায়ের দোয়া নিয়ে বের হয়ে গেলাম। ৯:৪০ এ ইনটারভিউ। আমার ডাক পড়লো। কিছুই জিগ্যেস করেনি। কাগজপত্র ঠিকমতো গুছিয়ে দিলাম। ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিলো। বললো থাকবেন কোথায় গিয়ে, বললাম পরিচিত বড় ভাই আছে। আপাতত ওনার কাছে থাকতে পারবো। ইনটারভিউ শেষ। হ্যা, কোন ভার্সিটিতে পড়েছি এটা দেখে বললো, এটাতে পড়েও আপনি এত ভাল ভার্সিটিতে চান্স পাইছেন! খুব ভাল। আমি বললাম ধন্যবাদ স্যার।

ভিসার জন্য অপেক্ষাঃ
দিনগুলি সত্যিই ভয়ানক ছিলো। খুবই ভয় করতো। আল্লাহর কাছে নামাজ পড়ে চোখের পানি ছেড়ে বলতাম, আল্লাহ রিজিকের ব্যবস্থা করে দাও।
এরমাঝে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডি ঘটে গেলো।
০৬ জুলাই সকালে আমার পরম মমতাময়ী মা আমাদের ছেড়ে দুনিয়া থেকে চলে গেলেন। আহারে এটা কিভাবে সইবো। তার আগের দিন রাত ১১ টায় মার সাথে কথা বলছি। সকাল ফজরের নামাজ শেষে শুনি মা নেই। মেজর স্ট্রোক ছিলো সম্ভবতো। সুস্থ্য মানুষ, হটাৎ করে চলে গেলেন। রব্বির হামহুমা কামা রব্বা ইয়ানি সাগিরা। যার মা চলে মারা গেছে সে ছাড়া বুঝবে না, মা হারানোর কি যন্ত্রনা। আমার মায়ের জন্য আপনারা দোয়া করবেন।
তারপর অনেকদিন, কোন খোজখবর নাই এম্বাসী থেকে। আমি তখন পাগলপ্রায় অবস্থা। পুরোপুরিভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন।
ভাবছি মনেহয় রিজেক্ট করে দিছে। মা মারা যাবার পর পাথর হয়ে গেছি।
মায়ের মৃত্যুর যন্ত্রনা এতটাই তীব্রতর ছিলো যে, জার্মানী সম্পর্কে কোন ফিলিংস কাজ করতো না।

ভিসা প্রাপ্তিঃ
২৫ শে আগস্ট বুধবার এম্বাসী থেকে কল আসলো। বললো আপনার পাসপোর্ট টা রেডি। নিয়ে যান। আমি ভয়, হতাশা, বিরক্তি নিয়ে বললাম, আমাকে কি রিজেক্ট করা হইছে? উনি বললো কেন? কেন? আমি বললাম, ৬৫ দিন হয়ে গেলো কোন খোজখবর নাই, তাই ফ্রাস্টেশনে আছি। উনি বললো, ভিসা হইছে আপনার। নেক্সট সোমবারে দুপুর ২ টায় পাসপোর্ট কালেকশন করার সময়।
স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছিলো। জীবনে এত খুশি কখনই হইনি। আফসোস, এই খুশির সংবাদ আমার মা শুনে যেতে পারলেন না। অফিস ছিলাম, আনন্দে ছলছল করে চোখ দিয়ে পানি পড়ছিলো। আব্বাকে , বউকে, ভাইকে জানালাম। বউ তখনও বিশ্বাস করে না। তখনই অফিস থেকে সারাসরি বাসায়।
কিছুতেই আমার বউকে বিশ্বাস করাতে পারি না। সে বহুত টেনশনে থাকে সবসময়ই। বলে তোমাকে স্বান্তনা দিছে এম্বাসী। ট্রাস্ট মি,
বুধবার থেকে সোমবার এই দিনগুলিতে যতট কষ্ট হইছে, গত ১৮ মাস অপেক্ষা করেও এতটা কষ্ট হয়নি। টেনশনে পাগল পাগল লাগে। সত্যিই যদি ভিসা না দেয়। তারপর এলো সেই মহেন্দ্রক্ষন। ভিতরে গেলাম পাসপোর্ট কালেকশন করতে। হাতে পাসপোর্ট দিলো। আমার যেন দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। হাতে পাসপোর্ট পেয়ে ভিসা পেইজ খুজতে থাকলাম, ইস একটুর জন্য হার্টএটাক হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ্। ভিসা হয়েছে। আনন্দে চিৎকার করতে মন চাচ্ছিলো, বউকে ফোন না করে সারাসরি ভিসার ছবি তুলে পাঠালাম। আমার বউকে এত খুশি হতে কখনোই দেখিনি। সবসময়ই পাশে থেকে আমার এই কঠিন সময়ে আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে।
শেষ হলো অপেক্ষার। ৩০ শে আগস্ট দুপুরে ১:৫৫ তে সোনার হরিণ ভিসা হাতে পেলাম। এরপর শুধু সামনে এগিয়ে যাবার, ২০ শে সেপ্টেম্বর টার্কিশ এয়োরলাইন্সে চলে এলাম এই স্বপ্নের রাজ্যে।

সবশেষে বলবো, কোনকিছুই অসম্ভব না। যে কোন পরিস্থিতিতে ধৈর্য্য ধরুন।
আল্লাহর উপরে ভরসা করুন। হতাশ হবেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাতায়ালা উত্তম পরিকল্পনাকরি।
বাই দ্যা ওয়ে, যারা আমাকে রিকমান্ডেশন লেটার দিতে চায় নি। তারাই আমাকে ডেকে নিয়ে সংবার্ধনা দিয়েছে। সবার দোয়া নিয়ে আসছি। আমার সাবেক ভার্সিটির অনেককিছুই পরিবর্তন হয়েছে। তারা এখন উচ্চ শিক্ষার ব্যপারে শতভাগ আন্তরিক।
আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। সকলের জন্য শুভকামনা। শীঘ্রই আপনার সাথে আমার ডয়েচল্যান্ডে দেখা হচ্ছে ইনশাল্লাহ।
ভাল থাকবেন সবাই।

My Profile:
BSc in Civil Engineering (EUB) 3.55
MSc in Soil, Water & Environment (FIU) 3.90
IELTS 6.0
Working Experience: 5 Years (Government)
Publication: 02

Regards

Mohammad Tamal
MSc in Tropical Hydrogeology & Environmental Engineering
Technical University of Dramstadt, Germany

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:৫০

কালো যাদুকর বলেছেন: আপনার স্বপ্ন পূরন হোক, এই কামনাই করি। ধন্যবাদ।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৩

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা নিন।

২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:০৬

সোহানী বলেছেন: কনগ্রেচুলেশান। কঠিন পরিশ্রম করে এ স্বপ্নের সিঁড়িতে পা দিয়েছেন এবং বিশ্বাস করি বাকি ধাপ পার হতে খুব বেশী কষ্ট হবে না।

জার্মান চমৎকার একটি দেশ এবং অনেক সুযোগ পাবেন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে।

আমি ২০১৪ তে গেছিলাম জার্মানীতে। অবশ্য darmstadt সিটিতে যাইনি। নেক্সট ইয়ারে আবারো যাবার ইচ্ছে আছে। বেশ ক'জন ব্লগার আছেন জার্মানীর বিভিন্ন শহরে। একটু খোঁজ নিলেই পেয়ে যাবেন।

ভালো থাকুন সবসময়।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৪

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:২২

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: অভিনন্দন !
অনেক কষ্ট করেছেন আপনি !
প্রবাসে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে পারেন আপনি | কিন্তু আপনার যে ফাইটিং স্পিরিট আছে তা দিয়ে আপনি অবশ্যই সাফল্যের মুখ দেখতে পাবেন জার্মানির উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে - ইনশাআল্লাহ।

৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ ভোর ৫:৩২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনি মক্কা গেলে, *জার্মানীর চেয়ে ভালো করতেন।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৫

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: অবশ্যই। ধন্যবাদ। আপনি নর্থ কোরিয়া গেলে আরো বেশী ভাল করতেন।

৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৭:০৪

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: লেখা এতই বড় যে দেখে আর পড়িনি।শুরুটা দেখে মনে হলো ৫নং মন্তব্যই ঠিক।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৬

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: কষ্ট করে ন্ পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

৬| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:২৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: জীবন যোদ্ধা।
আল্লাহ আপনাকে সাফল্যের পথে নিয়ে যান দোয়া করি।

ভালো থাকুন,

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৭

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: আমিন। কৃতজ্ঞতা জানবেন।

৭| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৪৬

নূর আলম হিরণ বলেছেন: জার্মানিকে আপনি স্বপ্নের রাজ্যে বলছেন কেনো? আপনি মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স নেওয়ার দরকার ছিল।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০৯

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: আমার কি দরকার, সেটা আমাকেই ভাল বুঝতে দিন। ধন্যবাদ।

৮| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: নিজের দেশকে কি দিবেন?

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১০

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: ইউরো দিবো। দেশ বড়লোক হবে। এটাই তো সবচেয়ে বড় দেওয়া।

৯| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৪২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
অনেক যুদ্ধ করেন, সফলতা আসুক।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১১

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। দোয়া করবেন।

১০| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৪২

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: অনেক যুদ্ধ করেছেন।

১১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৯

ইসিয়াক বলেছেন:


অভিনন্দন!
আপনি অনেক পরিশ্রমি। অদম্য আপনার ইচ্ছাশক্তি। ইনশাআল্লাহ আপনি অনেক দুর যাবেন। শুভকামনা রইল।
আপনার মায়ের জন্য দোয়া রইলো। আপনি অবশেষে আপনার কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছাতে পেরেছেন এটা আপনার মা দেখে যেতে পারলে খুব ভালো হতো। সবই আল্লাহর ইচ্ছা। সামনে আরও কঠিন যুদ্ধ। আপনি সাফল্য লাভ করবেন আমার বিশ্বাস ।
আপনার আগামী দিনগুলো সুখময় হোক।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১২

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। দোয়া করবেন। ভাল থাকবেন।

১২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:১৫

জগতারন বলেছেন:
মুহাম্মদ তমাল আপনার এই পোষ্টটি আশা করি নিশ্চয়ই উৎসাহ ও উদ্দীপনা জাগাবে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদেোর।
আপনি দয়া করে চাঁদগাজীনুরুলইসলা০৬০৪ -এর মন্তব্যে একদম মনঃক্ষুন্ন হবেন না।
এরা জ্ঞান পাপী বল্লেও অল্প বলা হবে। এরা এভাবেই নতুনদের ভগনাতসাহ করে থাকে।
আপনার সংগ্রাম করে এ পাওয়া বিশাল ও মহৎ প্রাপ্তি।
প্রার্থনা করি করুনাময় আপনার সহায় হউক পরবর্তী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে।
আপনি সবচেয়ে ভালো কাজ করেছেন যথা সময়ে শুভ বিবাহ কাজটি সম্পন্ন করে।
আপনার এই কর্মযজ্ঞের সাথে ১৯৮০ থেকে ১৯৮২ সালের আমার জীবনের
সংগ্রামের স্মৃতির অনেক মিল খুজে পেলাম। আমি ১৯৮২ সালে যুক্ত রাষ্ট্রে ছাত্র ভিসা আসার অনেক কিছু মিল পেলাম।
শুধু একটু পার্থক্য আমি যথা সময়ে বিবাহ করতে পারছিলাম না।
শুধু মা-বাবা, ভাই-বোন আরও অন্যান্যদের সহযোগীতা করার পরিকল্পনা মনে স্থান দিয়ে।
সেটাই আমার জীবনে বড় ভুল। বিদেশে পড়াশুনা, ডিগ্রী, চাকুরী, অর্থনৈতিক সাফল্য অনেক কিছুই পেয়েছিলাম।
শুধু যথা সময়ে উপযুক্ত স্ত্রী গ্রহন না করে আজ এই পড়ন্ত বেলায় অনুশোচনায় ভুগি।
প্রথমে জীবনে মা, আর জীবনের মধ্য গগনে সঠিক স্ত্রী গ্রহন আল্লাহ তা'আলার বড় নেয়ামৎ।
স্ত্রী'কে যথা যত মর্জাদা দিন, তার সাথে পরিকল্পনা করে এবং তাকে সাথে নিয়ে অন্যান্য সিধ্যান্ত নিন।
আর হ্যাঁ, ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজন, পাড়া-প্রতিবেসীদের যথা সাধ্যানুযায়ী সাহায্য ও সহযোগীতা অবশ্যই করবেন।
এতে আপনি আরও উৎসাহ পাবেন কর্মজজ্ঞ সমাধান অর্থ উপার্জন করতে।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১৬

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: কে কি বললো না বললো এটা গায়ে মাখলে এতদুর আসতে পারতাম না ভাই। এসব আমি কিছুই মনে করি না। ঢাকা শহরে রাস্তা দিয়ে চলতে গেলে অনিচ্ছা থাকা স্বত্বেও নাকে দূর্গন্ধ চলে আসে। এটা কোন ব্যপারই না। দূর্গন্ধ দূর্গন্ধের জায়গায় থাকবে, আর আমি পৌছাবো আমার লক্ষ্যে। এসব নিয়ে ভাবিনা।
আপনার জন্য অসংখ্য, শ্রদ্ধা, ভালবাসা রইল। আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ।

১৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৩২

সাইবার সোহেল বলেছেন: একজন মানুষ তাঁর মনের কথা লিখেছে, তার স্বপ্ন ও তার পূরোনের কাহিনী জানিয়েছে, কারও কাছ থেকে সে উপদেশ শুনতে চায়নি। তারপরও কিছু মানুষ অযথা তাকে উপদেশ দিয়ে মন্তব্য করেছেন দেখে খারাপ লাগলো। তাঁর স্বপ্ন তাঁর, আর অন্যজন দেশকে কি দেবে, সেটাও তার নিজস্ব ব্যপার এ নিয়ে প্রশ্ন করার কিছু দেখিনা। আর জনাব সাইদি সাহেব কে যেখানে দেখা গিয়েছিল, তার সাথে মিল রাখা নিক যে এমন মন্তব্য করবেন সেটা দেখে অবাক হইনি, কারন, তিনি যে একজন বিশিষ্ট আঁতেল তা আমি আগে থেকেই জানি। পরিশেষে আপনার আরও সমৃদ্ধ ভবিশ্যত কামনা করছি। ভাল থাকবেন সব সময় স্বপরিবারে...।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১৮

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। নিন্দুকের বাসি আমি সবচেয়ে ভালবাসি। ব্যপার নাহ্।

১৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২১ রাত ১০:০১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: Fortune favors the braves। আপনাকে অভিনন্দন।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১৮

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: ধন্যবাদ।

১৫| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ইউরো দিবো। দেশ বড়লোক হবে। এটাই তো সবচেয়ে বড় দেওয়া।
টাকা তো সৌদির কামলারাও দেয়।

আপনি আপনার জ্ঞান বিতরন করতে পারতেন।

০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:২৪

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: সবাই দেয় কামলা, কেউ রোদে পুড়ে সৌদি আর কেউ সরকারি আমলা। শুধুমাত্র প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তবে সত্যিকারের ফাইটার আপনার ভাষ্যমতে সৌদির কামলারাই। মানুষের পেশাকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন। তারা হয়তো অশিক্ষিত হতে পারে, তবে দেশের জন্য তাদের অবদান কতিপয় জ্ঞান পাপিদের থেকে কম না। বরং বেশী।
আর আমি নিজেই জ্ঞানী নই, আপাতত জ্ঞান আহরোন করতে চাই, এরপর ভাববো.... ধন্যবাদ।

১৬| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৭:১৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আপনার স্বপ্ন, স্বাদ, প্রত্যাশা পূরণ হোক।

০৬ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:৫৮

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

১৭| ০৫ ই নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১১:১৫

বিবেকহীন জ্ঞানি বলেছেন: প্রথমেই আপনাকে অভিনন্দন।

আপনি একজন যোদ্ধা।যুদ্ধ করেই নিজের স্বপ্ন বাস্তব করেছেন।আপনার থেকে আমরা এবং নতুন জেনারেশন অনুপ্রেরণা পাই।আমাদের দেশে এরকম হাজারো যোদ্ধা আছে।
আমিও ২০১৭ সালে IELTS করি উচ্চশিক্ষার আশায়।কিন্তু আপনার মত ত্যাগ,সাধনা,জেদ কিছুই ছিলোনা তাই অন্যত্র চলে আসি।
অনেক পরিশ্রমের ফল ইহা।দেশের জন্য কিছু করবেন আশা করি।আপনাদের খুব দরকার আমাদের এ মূর্খ আর চোরের দেশে।

আপনি আপনার ত্যাগ,সাধনা,কষ্ট আর সফলতার কথা বলেছেন আর ব্লগার চাদগাজী সাহেব আপ্পনাকে তেতো ডিমোটিভেইট করছে।উনার মত জ্ঞানী আর একজন সিনিয়র ব্লগার থেকে এরূপ মন্তব্য আশা করেনা কেউ ই।সে জন্য ই বেচারা কয়দিন পর পর ভ্যানে থাকে।

আপনার আগামীর পথে শুভ কামনা।দেশ এবং দেশের মানুষকে কখনো ভুলবেন না তাদের জন্য কিছু করবেন।আল্লাহ আপনার সহায় হোক।

০৬ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:৫৯

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। কে কি বললো, এগুলা নিয়ে মাথা ঘামানোর মতো বোকা আমি না। বলে বলুক গে। আপনার জন্য শুভ কামনা রইল। ভাল থাকুন। সবসময়ই।

১৮| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২১ ভোর ৬:২০

জিকোব্লগ বলেছেন:



নিজ দেশের চেয়ে জার্মানিকেই আপনার স্বপ্নরাজ্য
কেন মনে হলো?

আপনার চিন্তা ভাবনা দেখে বুঝলাম একটা উন্নত দেশ ও অন্নুনত দেশের
মূল পার্থক্য তাদের চিন্তা-ভাবনা ভিন্ন।

জার্মানিতে নিও নাৎসি দের উৎপাত কেমন?

১১ ই নভেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৩৩

মুহাম্মদ তমাল বলেছেন: স্বপ্ন রাজ্য মনে হইলো, কারন আগে যা স্বপ্নে দেখতাম, এখন তা বাস্তব। কোন ঝামেলা নাই, শিয়াল, কুত্তালীগ, ছাগুলীগ, মাদার অফ মাফিয়াদের উৎপাত নাই, শান্তি করে ঘুমাতে পারবেন, যখন খুশি, যেভাবে খুশি চলতে পারবেন। ৫৭ ধারায় মামলার ভয় নাই, আরো কত যে সুযোগ। তো এবার বলেন স্বপ্নরাজ্য মনে হবে না কেন? নাৎসিদের কোন উৎপাত নাই।

১৯| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:০৩

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: পুরো লেখাটা পড়লাম। হ্যাটস অফ টু ইউ ম্যান, মাথা ঠান্ডা রেখে সদ্য টিনএজ পেরুনোর সময় থেকে জীবন যুদ্ধে চমৎকার লড়ে যাওয়ার জন্য। একরাশ ভালবাসা, শ্রদ্ধা আর শুভকামনা আপনার ভবিষ্যতের দিনগুলোর জন্য। তবে আপনার মা আরও কয়েকটা বছর বেঁচে থাকলে আপনার আজকের এই অর্জন পরিপূর্ণ পূর্ণতা পেতো।

ভালো থাকুন সবসময়, প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.