নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।

এম টি উল্লাহ

আমি এম টি উল্যাহ। আইনি উপন্যাস ‘‘অসমাপ্ত জবানবন্দী’’ ও ‘‘নিরু”, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই ‘‘মায়ের মুখে মুক্তিযুদ্ধ’’ ও ‘‘একাত্তরের অবুঝ বালক’’ এর লেখক। পেশায়-আইনজীবী।www.facebook.com/mohammad.toriqueullah , Email- [email protected]

এম টি উল্লাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

BSTI-বিএসটিআই লাইসেন্স করার নিয়ম এবং লাইসেন্স নবায়ন ও প্রত্যাহার সংক্রান্ত পদ্ধতি

১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:১৫



রফিক একজন খুদ্র উদ্যোক্তা। তার ঢাকার কেরানীগঞ্জে একটি বেকারির কারখানা আছে, যেখান থেকে সে রুটি এবং বিস্কুট প্রস্তুত করে থাকে। তার কারখানা থেকে উৎপাদিত রুটি এবং বিস্কুট স্থানীয়ভাবে খুবিই জনপ্রিয় । কিন্তু ইদানিং স্থানীয় প্রশাসন তার কারখানার উৎপাদন বাধাগ্রস্থ করছে, তারা বলছে উৎপাদন চালাতে হলে আপনাকে BSTI থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
রফিক এখন খুব চিন্তায় পরে গেল কিভাবে কোথায় থেকে সে তার রুটি এবং বিস্কুটের জন্য BSTI এর অনুমোদন নিবেন । কারণ, পণ্য বাজারজাত করণের আগে যে কাজটি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ তা হল বিএসটিআই-এর অনুমোদন। আপনার পণ্যটি গুণগত মানসম্পন্ন বা ভোক্তার জন্য উপযোগী কিনা এর লাইসেন্স দেয় বিএসটিআই। এমন সমস্যা প্রতিনিয়ত হচ্ছে। তাহলে জেনে নিন কিভাবে BSTI লাইসেন্স পাওয়ার যায়।

BSTI মানে হল – বাংলাদেশ স্টান্ডার্স এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন

এই প্রতিষ্ঠানের কাজ হল – খাদ্যদ্রব্য, কৃষিপণ্য, পাটবস্ত্র, রাসায়নিক পদার্থ এবং বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ এবং তদারকি করা। বর্তমানে বাংলাদেশে ১৫৪ টি পন্যেকে বাজারজাতকরন করতে হলে বাধ্যতামূলকভাবে BSTI এর অনুমোদন নিতে হবে। এছাড়া অন্যান্ন পন্য দ্রব্য চাইলেই BSTI এর অনুমোদন নিতে পারবে।

অর্থাৎ সরকারি তালিকাভুক্ত ১৫৪ টি পন্য বাজারে বিক্রি করতে চাইলে উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিককে অবশ্যই BSTI থেকে অনুমোদন নিতে হবে । এছাড়া তালিকার বাহিরে থাকা অন্যান্ন পন্য দ্রব্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে BSTI থেকে অনুমোদন নিয়ে রাখতে পারে তবে তাদের জন্য BSTI থেকে অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়।


BSTI এর বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের তালিকাভুক্ত ১৫৪টি পন্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ

ভোজ্য তেল, চিনি, আটা, ময়দা, সুজি, পাউয়া রুটি, বিস্কুট, কেক, জুস, আইসক্রিম, খাবার পানি, সাবান, স্নো, পাউডার, ডিটারজেন, টুথপেস্ট, হেয়ার অয়েল, লিপিস্টিক, সেভিং ক্রিম, সিমেন্ট, বৈদ্যুতিক তার ইত্যাদি
এছাড়া BSTI এর বাধ্যতামূলক ১৫৪ টি পন্যের পুরো তালিকা দেখতে পারেন নিচের ওয়েবসাইট থেকে
bdainkanun.com/bsti-154
তো চলুন এখন আমরা দেখবো কিভাবে রফিক তার রুটি এবং বিস্কুটের জন্য BSTI থেকে অনুমোদন নিবেন ।

সার্টিফিকেশন মার্কস (সিএম) লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন এবং আমাদনিকৃত পণ্যের অনুকূলে বিএসটিআই ছাড়পত্র প্রদানের ধাপসমূহ:

বাধ্যতামূলক পণ্য অথবা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত পণ্য উভয় ক্ষেত্রে একজন উৎপাদনকারী, মোড়কজাতকারী অথবা আমদানিকারক বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে তাদের পণ্যের অনুকূলে বিএসটিআই সার্টিফিকেশন মার্কস (সিএম) লাইসেন্স গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দরখাস্ত ফরম যথাযাথভাবে পূরণ করে বিএসটিআই প্রধান কার্যালয়ের এবং আঞ্চলিক অফিসের ‘‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার’’ এ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং দরখাস্ত ফি সহ জমা প্রদান করতে হবে।

প্রথমেই দেখে নেই BSTI থেকে অনুমোদন পাওয়ার জন্য কি কি কাগজপত্র থাকতে হবেঃ
* প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সের কপি
* ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রেশনের কপি
* TIN সার্টিফিকেটের কপি
* পন্য উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির তালিকা
* পন্য উৎপাদনের প্রসেস ফ্লো চার্ট
* কারখানার লেয়াউট
* পন্যের মোরক/ লেবেলে থাকা সকল তথ্যবলী
* পন্য উৎপাদনের উপাদানগুলোর বিবরন
এছাড়া প্রয়োজন মাপিক আরো কাগজপত্র লাগতে পারে।

উপরোক্ত কাগজপত্রগুলো প্রস্তুত করে এবার আপনাকে জেতে হবে তেজগাঁও শিল্প এলাকার BSTI এর অফিসে । সেখান থেকে BSTI লাইসেন্সের আবেদন ফরম নিতে হবে । আপনি চাইলে নিচের ওয়েবসাইট থেকেও আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন.
Download আবেদন ফরম যথাযথভাবে পুরন করে নির্ধারিত আবেদন ফি জমা দিতে হবে । আবেদন ফি প্রাদানের পর সমস্ত কাগজপত্রগুলো একত্র করে BSTI এর One Stop Service Center এ জমা প্রদান করতে হবে । সেখান থেকে তারা আপনাকে একটি Confirmation শ্লিপ প্রদান করবে ।

দরখাস্ত জমা প্রদানের পর যাচাই পূর্বক ৬(ছয়) কার্যদিবসের মধ্যে কারখানা পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল, উৎপাদন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন স্তর, কারখানায় বিদ্যমান পরীক্ষণ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত অবস্থা, পণ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থাদি এবং পরীক্ষণ কাজে নিয়োজিত ব্যাক্তিদের তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়।

কারখানা পরিদর্শন প্রতিবেদন সন্তোষজনক পাওয়া গেলে উৎপাদনের স্তর হতে অথবা কারখানায় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ হতে দৈবচয়ণ ভিত্তিতে পরীক্ষণের জন্য যৌথস্বাক্ষরে পণ্যের নমুনা সীলগালা করা হয়।

বিএসটিআই অথবা বিএসটিআই স্বীকৃত কোন পরীক্ষাগারে অগ্রিম পরীক্ষণ ফিসহ সংগৃহীত পণ্যের নমুনা জমা দেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠান বরাবরে পত্র দেয়া হয়।
পরীক্ষার প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর সিএম লাইসেন্স প্রদান অথবা নবায়নের জন্য সার্টিফিকেশন কমিটির বরাবরে প্রস্তাব পেশ করা হয় এবং অনুমোদনের পর লাইসেন্স প্রদান অথবা নবায়নের নিমিত্তে সিএমফি’র বিল প্রেরণ করা হয়। সিএমফির বিল পরিশোধের পর লাইসেন্স প্রদান অথবা নবায়ন স্বাক্ষর পূর্বক জারী করা হয়। অর্থাৎ BSTI এর নির্ধারিত মানের সাথে যদি আপনার উৎপাদিত পন্যের মান সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তবে তারা আপনাকে চূরান্ত লাইসেন্সের জন্য জানাবে। চূড়ান্ত লাইসেন্স ফি প্রাদানের মাধ্যমে আপনি পেয়ে জাবেন BSTI এর লাইসেন্স।

৩ (তিন) অর্থ বছরের জন্য লাইসেন্স প্রদান অথবা নবায়ন করা হয়। প্রতি বছর একাধিকবার বাজার ও কারখানা সার্ভিল্যান্স করে পণ্যের নমুনা সংগ্রহ ও গুণগত মান যাচাই করা হয়।

সংগৃহীত সকল নমুনা সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মানের সমকক্ষ না হলে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান এবং ইস্যুকৃত সিএম লাইসেন্স স্থগিত অথবা প্রত্যাহার করা হয়। লাইসেন্স স্থগিত অথবা প্রত্যাহার করার পর উক্ত পণ্যের বাজারজাত ও বিক্রি অথবা পণ্যের লেবেলে/মোড়কে বা বিজ্ঞাপণে বিএসটিআই গুণগতমান চিহ্নের ব্যবহার বিএসটিআই অধ্যাদেশ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হয়।
লাইসেন্সের মেয়াদ উর্ত্তীণের ৩(তিন) মাস পূর্বে নবায়নের জন্য একইভাবে আবেদন পত্র জমা দিতে হয়।
এ্যাক্রিডিটেশনপ্রাপ্ত পণ্য ব্যতীত অন্যান্য সকল পণ্যের ক্ষেত্রে দরখাস্ত জমা হবার পর মোট ৩৮ কার্যদিবসের মধ্যে লাইসেন্স প্রদান অথবা নবায়নের কাজ সম্পাদন পূর্বক লাইসেন্স জারী করা হয়।

আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রতি কনসাইনমেন্ট বা লট ভিত্তিক পণ্য পরীক্ষণ এবং গুণগতমানের ছাড়পত্র প্রদান করা হয়। তবে যে সকল পণ্য সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মান (বিডিএস) অনুযায়ী পরীক্ষণ সময় বেশী প্রয়োজন হয়, সে সকল ক্ষেত্রে চুড়ান্ত ছাড়পত্র প্রদানের পূর্বে বাজারজাত না করার শর্তে সাময়িক ছাড়পত্র প্রদান করা হয়।

নতুন লাইসেন্স গ্রহণের জন্য আবেদন পত্রের সাথে দরখাস্ত ফি বাবদ এক হাজার এবং নবায়নের আবেদন পত্র জন্য দরখাস্ত ফি বাবদ পাঁচ শত মাত্র জমা দিতে হয়। প্রতিটি নমুনা সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মান অনুযায়ী পরীক্ষণের জন্য পণ্যভিত্তিক নির্ধারিত পরীক্ষণ ফি জমা দিতে হয়।

লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের প্রাক্কালে নির্ধারিত মার্কিং ফি’র হার অনুযায়ী সিএম ফি অগ্রিম পরিশোধের জন্য বিল প্রেরণ করা হয় এবং বিল পরিশোধের পর লাইসেন্স প্রদান/নবায়ন করা হয় ।

[email protected]
facebook.com/mohammad.toriqueullah
01733 594 270

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:২১

সনেট কবি বলেছেন: ভাল পোষ্ট।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৫৭

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট। 'বিএসটিআই' নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা হলো।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৫৭

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: টাকা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয় না।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৫৮

এম টি উল্লাহ বলেছেন: সহমত

৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:১০

হাফ হাতা শার্ট বলেছেন: অনেক অজানা জিনিস জানা হলো।ধন্যবাদ

২২ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১১:৫৮

এম টি উল্লাহ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.