![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি শ্রদ্ধেয় মানুষ গড়ার কারিগরের উপর যথাযথ সম্মান রেখেই বলছি, মফস্বল বা গ্রামের বেশিরভাগ স্কুলগুলোতে এ সমস্ত প্রশ্ন করার প্রবণতাকে যথাসম্ভব দমিত রাখা হয় ও এ ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয় [খেয়াল করুন- আমি গণহারে বলছি না; তবে অনেক ক্ষেত্রেই এটা সত্য] তাঁরা (শিক্ষক) মুখে কিছু না বললেও আচার আচরণে সেটা প্রকাশ পায়। যেমন- ক্লাসের মধ্যম সারির এক ছাত্র হয়তো সহজ (সে মাঝারি মেধার হওয়ায় তার কাছে বিষয়টি কঠিন কিন্তু ক্লাসের প্রথম সারির ছাত্রের কাছে একেবারেই সহজ) একটা ব্যাপার বুঝতে পারছে না। তার মধ্যে এমনিতেই জড়তা কাজ করে। পার্সোনালিটি কার না আছে (স্কুলে অনেকের এ প্রবণতা থাকে- ব্যাপারটা যে সে বুঝেনি এটা সবাই জানলে যদি সে ছোট হয়ে যায়!) উপরন্তু সমস্ত জড়তা কাটিয়ে যদি সে প্রশ্নটা করেই ফেলে তাহলে কিছু শিক্ষক আছেন যাঁরা প্রশ্নের উত্তর দেয়ার আগে ছাত্রটিকে এমন কিছু বলেন যে ছাত্রটি ভরা ক্লাসে হাসির পাত্রে পরিণত হয়ে যায় (উদাহরণস্বরূপ- বলেন " এই সোজা জিনিস বুঝবি ক্যানো- সারাদিন তো খেলা আর খেলা" অথবা "আরে গাধা! এটা না বোঝার কি হলো!?" অথবা "সারাদিন বই নিয়া না বসলে বুঝবি কিভাবে?" অথবা মুখভঙ্গির মাধ্যমে হতাশা ব্যক্ত করেন)।
আমাদের শিক্ষার্থীদের জানতে চাওয়ার অনাগ্রহের অন্যতম কারণ হলো উপরের অংশটুকু। আসুন দেখি আমাদের শিক্ষকরাই বা কেন এমনটা করেন??
প্রথমত, ছাত্রাবস্থায় যতই বুলি কপচানো হোক না কেন, কর্মক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়ে আমরা কিন্তু আমাদের "ভালোমানুষিগিরি" চালিয়ে যেতে পারিনা! মুষ্টিমেয় লোক বাদে বাকী সবাই নিজেদের সততা বিকিয়ে দেই টাকার বিনিময়ে। তাইতো "তোমার জীবনের লক্ষ্য" রচনায় লেখা "ডাক্তার হয়ে পল্লীগ্রামে গিয়ে দুস্থ মানুষদের বিনামূল্যে সেবা করতে চাই" কেবল পরীক্ষার খাতার পাতাতেই রয়ে যায়। ঠিক তেমনি বড় হয়ে "মানুষ গড়ার কারিগর হবো" টাইপের কথাও কথার কথা হিসেবে থেকে যায়।
দ্বিতীয়ত, ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার প্রফেশন দুটো আমাদের অভিভাবকদের মাথায় কেহ মনে হয় ইনজেক্ট করে দিয়েছে! তা না হলে সন্তানদের প্রাথমিক শ্রেণিসমূহের ভালো রেজাল্ট দেখলেই ৯০% পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের হয় ডাক্তার নতুবা ইঞ্জিনিয়ার বানাতে চাইবেন কেন?? সারাক্ষণ বকবক করতে করতে প্রথম সারির শিক্ষার্থীদের মাথায় এ প্রফেশন দুটো এমনভাবে প্রবেশ করানো হয় যে শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভাবতে বাধ্য হয় ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার না হলে জীবনটাই বৃথা! এদের মধ্যে যারা শেষ পর্যন্ত ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হয় তারা বাদে বাদবাকীদের অনেকেই সারাজীবন একটা হতাশা নিয়ে বাচেঁ। আমার প্রশ্ন হলো প্রথম সারির সব শিক্ষার্থীই যদি নিজেকে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কল্পনা করে তাহলে পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষাদান করবে কারা??
-উত্তরটা অধিকাংশেই দ্বিতীয় সারির শিক্ষার্থীদের উপর পড়বে। এখন আমার আবারো প্রশ্ন- এ দ্বিতীয় সারির ছাত্রটি শিক্ষক হিসেবে কতটা কার্যকরী হবে??
তৃতীয়ত, সবার মধ্যে ভালো বুঝাবার ক্ষমতা থাকে না; থাকে না চমৎকারভাবে উপস্থাপন করার ক্ষমতা। অথচ আদর্শ শিক্ষক হতে হলে এ দুটো গুণ আবশ্যক। এখন, যার মধ্যে এগুলো অনুপস্থিত সে কীভাবে মানুষ গড়ার আদর্শ কারিগর হবে?? হ্যাঁ, শিক্ষকদের ট্রেনিং দেয়া হয়। কিন্তু ট্রেনিং দিয়ে নিশ্চয়ই বেড়ালকে "বাঘের মতো" বানানো যায় কিন্তু "বাঘ" বানানো যায় না।
চতুর্থত, ইদানিং শুনছি প্রাথমিক শিক্ষক হতে হলেও নাকি মামুর জোর/ রাজনৈতিক প্রভাব তো লাগেই সেই সাথে নাকি মানিব্যাগের জোরও লাগে! শতভাগ হয়তো এভাবে শিক্ষক হয়না কিন্তু যদি সংখ্যাটা ৩০% ও হয় তাহলেও অবস্থাটা নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পেরেছেন।
পঞ্চমত, আগেই বলেছি ডাক্তার/ ইঞ্জিনিয়ার না হতে পারা একটা বড় অংশ হতাশা নিয়ে থাকে। এদের অনেকেই জীবিকার প্রয়োজনে নিতান্ত বাধ্য হয়ে শিক্ষকতা করে। আশাহত, নিজের প্রফেশনকে ভাল না বাসা মানুষটি থেকে নতুন প্রজন্ম কি পেতে পারে একরাশ বিরক্তি ব্যতীত??
এ সমস্যার কোন সমাধান আছে কী??
[পুনশ্চঃ আমার এ লেখাটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক লেভেলের শিক্ষকদের নিয়ে লেখা এবং মানুষ গড়ার কারিগরগণকে যথাযথ সম্মানপূর্বক কি-বোর্ড হাতে নিয়েছি। এটাও মানছি সবাই এক নয়।]
২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:২১
বিদ্রোহী তূর্য্য বলেছেন: আমারো তাই মনে হয়।
মন্ত্যব্যের জন্য ধন্যবাদ...
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ৭:৩৯
এম এস কে বাঁধন বলেছেন: এ সমস্যার সমাধান আছে। সমস্যা থাকলে তার সমাধান আছে। তবে সমাধানের পরিস্থিতি নাই। আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় এর সমাধান আছে বলে আমার মনে হয় না।
কিছু বাস্তব কথার জন্য ভাল লাগল পোস্টটা। আমিইতো ভুক্তভোগী...