![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নাম রিয়েল । পেশায় প্রকৌশলী । ভালোবাসি দিনু নামে লিখতে আর ভালোবাসি অনুরাধাকে যে এখনও আমার অদেখা । নিজের নামের মত নিজেকে গড়তে চেয়েছিলাম; পারিনি । একসময় লিখতে পারতাম; তাই লিখতাম । এখন পারিনা; তাই লিখিনা ।
আত্নিক ভালবাসা .......দিনু
বেল্কনিতে বসে আছে চিত্রা । মনটা খারাপ, বাবার সাথে ঝগড়া হয়েছে । চিত্রার বাবা জসিম সাহেব ব্যবসায়ী মানুষ । ব্যবসার কাজে বছরের বেশিরভাগ সময়ই তাকে দেশের বাইরে থাকতে হয় । মাসে এক সপ্তাহের জন্য দেশে থাকেন মাত্র । কিন্তু এই মাসে তিনি আসবেন না । সন্ধার পরে ফোনে বাবার সাথে কথা হয়েছিল । ্তার বাবা আসতে পারবে না বলে প্রচণ্ড খারাপ ব্যাবহার করেছে চিত্রা । মনটা তাই ভীষণ খারাপ । চিত্রা জানে তার বাবারও মন খারাপ । কারণ জগত সংসারে এই পিতা- কন্যার আপন বলতে একজন আরেজনের ছাড়া তৃতীয় কেউ নেই । চিত্রা মনে মনে ভাবল রাতে বাবাকে sweet একটা "sorry" এসএমএস পাঠিয়ে দিবে আর তাতে নিশ্চয় বাবার মন ভালো হয়ে যাবে । কিন্তু তার মন এখন ভাল হবে কিভাবে!
আকাশে চাঁদ, পূর্ণিমার চাঁদ । অনেক বড়, ভীষণ সুন্দর । এই বেল্কনিকে এত সুন্দর চাঁদ দেখার জন্য বড়ই অনুপযুক্ত মনে হয় চিত্রার; কারণ এখান থেকে আকাশটাকে খুব সংকীর্ণ মনে হয় । চিত্রা ছাদে যাবে । ছাদের চাবি আনতে বলে কাজের মেয়ে ইতি কে ।
চারদিকে ঝিরিঝিরি বাতাশ বইছে, ভীষণ স্তব্ধতা, সাথে জ্যোৎস্নার আভা বেশ ভালো লাগছে তার । আপন মনে গেয়ে ওঠে
"চাদের হাসি বাঁধ ভেঙ্গেছে উছলে পরে আলো
ও রজনীগন্ধা তোমার গন্ধ সুধা ঢাল....."
গান শেষ হবার সাথে সাথে স্তব্ধতা ভেঙ্গে হাততালি দেয় কে যেন , পেছনে ফিরে দেখে তাদের পাঁচ তলার ভাড়াটিয়া তমাল, এই বিল্ডিঙের একমাত্র ব্যাচেলর ভাড়াটিয়া ।
চিত্রা - এত রাতে আপনি এখানে কেন? please চলে যান ।
তমাল কিছু না বলে চলে যায়
"ধুর! আজ দিনটাই খারাপ । সবাইকে কষ্ট দিচ্ছে সে , কি এমন ক্ষতি হত তমাল এখানে থাকলে বরং একটু আধটু কথা বলা যেতো ।"- মনে মনে নিজেই নিজেকে কথাগুলো বলে চিত্রা । আর ভালো লাগছে না তার । রুমে চলে যাবে ।
নামার সময় ৫ তলায় এসে দাঁড়িয়ে পরে চিত্রা, কেন দাঁড়ায় সে নিজেও জানে না । কলিং বেল থাকা সত্তেও হাত দিয়ে তমালের দরজায় নক করে । দরজা খুলে কিছুটা অবাক হয় তমাল, বলে
-আপনি ?
-- আপনার সেল নাম্বার বলেন
অন্য কেউ এই সময় এই প্রশ্ন করলে কঠিন একটা ঝাড়ি খেত তাতে কোন সন্দেহ নেই কিন্তু এই মেয়েকে দেখলে তমালের সবকিছু কেমন যেন উল্টা পাল্টা হয়ে যায় ।
- 0182******2
নিজের অজান্তেই মুখ থেকে বের হয়ে যায় ।
এক মুহূর্ত দেরি করে না চিত্রা , যাবার জন্য পা বাড়াতেই তমাল জিজ্ঞেস করে আপনার নাম্বারটা ?
--মেয়েদের নাম্বার নেয়ার এত শখ কেন!
চিত্রা চলে যায় । তমাল ফাঁকা সিঁড়ির দিকে তাকিয়ে চিত্রার চলে যাওয়া কল্পনা করে ।
খেতে ইচ্ছে করছে না চিত্রার ।মা থাকলে তাকে খাওয়ার জন্য জেদ করতো, হয়তো মুখে তুলে খাইয়েও দিতো । চিত্রার মা বেঁচে নেই, তার জন্মের সময়ই মারা যান তিনি । প্রচণ্ড কান্না পায় তার ।
হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে । তার বাবা ফোন করেছে । চিত্রা ফোন রিসিভ করে অনেকক্ষণ কাঁদতে থাকে । ওপাশে চিত্রার বাবাও নিঃশব্দে চোখের জল মোছে ।
- বাবা আমি সরি । তোমাকে কাল অনেক বকেছি ।
-- সরি বললে কাজ হবে না, আমাকে চেপা শুটকির ভর্তা করে খাওয়াতে হবে ।
- বাবা একটা কথা আমাকে বলতো , দুনিয়াতে এত খাবার থাকতে দুর্গন্ধময় এই খাবার টা এত প্রিয় কেন তোমার?
-- তাহলে তুই আমাকে খাওয়াবি না , আমি কিন্তু রাগ করলাম
- আমি কি না করেছি?? তুমি তো আসবে আগামি সপ্তাহে ।
-- আমি কালকেই আসছি ।
- সত্যি ?
-- হুম। আমি জানি তুই রাতে খাওয়া দাওয়া করিস নি , কেন সেটাও জানি। দেখ মা তোর মা ও বাবা দুজনই আমি । কিন্তু কি করবো বল বাবসার কাজে আমাকে দেশের বাইরে আসতেই হয় । আমার উপর রাগ করিস না মা please খেয়ে নে ।
- এত sweet করে যে বাবা বলে তার মেয়ে কি না খেয়ে থাকতে পারে? রাখি বাবা?
--ঠিক আছে মা । bye .
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে ঘুমোতে জায় চিত্রা। ঘুম আসছে না । কি করা যায়, কি করা যায়? তমাল কে ফোন করে সে ।
চিত্রা - হ্যালো
তমাল - হ্যালো কে?
চিত্রা- পেত্নি ।
তমাল - পেত্নির নাম কি
চিত্রা - চিত্রা
তমাল- এটা তো পেত্নির নাম না,পরীর নাম । কল করেছেন কেন বলেন? কি প্রয়োজন?
চিত্রা- কেন প্রয়োজন ছাড়া কি কল করা যাবে না নাকি?
তমাল - আপনি প্রয়োজন ছাড়া কল করে সারারাত লুতুপুতু মার্কা কথা বলার মেয়ে না টা আমি খুব ভাল করেই জানি।
চিত্রা - বাহ আমার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানেন দেখছি ? তা আর কি কি জানেন?
তমাল- আপনি সাজতে পছন্দ করেন না, ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলা অপছন্দ করেন, আপনার প্রিয় মানুষ বাবা ।
চিত্রা - আপনি তো আমার সম্পর্কে সবই জানেন । কে বলেছে এত কথা আপনাকে ।
তমাল - মানুষ তার প্রিয় মানুষ সম্পর্কে সব সময়ই আগ্রহী থাকে আর এই আগ্রহই সেই মানুষ সম্পর্কে সবকিছু জানতে সাহায্য করে ।
চিত্রা - কঠিন কথা। আপনার সম্পর্কে আমি যতদূর জানি তা হোল ঢাকা শহরে আপনাদের ২ বাড়ি আছে । তা সত্ত্বেও আপনি আমাদের বাড়িতে গত ২ মাস যাবত কেন ভাড়া আছেন তা জানি না । আমি কি জানতে পারি কেন?
তমাল - দেখুন আপনি যা জানেন তা ঠিক । আমরা তিন ভাই বোন । আমি সবার ছোট । গত ২ মাস আগে আমার পরিবার থেকে আমাকে বিয়ের জন্য বলে । আমি রাজি হই না । আমার পছন্দ আছে কি না জানতে চাইলে আমি আপনার নাম বলি । সাথে এও বলি এটা সুধু আমার পছন্দ মেয়েটা মানে আপনি আমাকে পছন্দ করেন কি না তা আমি জানি না । আমার পরিবার আমার কথাটাকে গুরুত্ব দেয় না । তারা মনে করে ছেলেরা সুন্দরী মেয়েদের রাস্তাঘাটে দেখলে যেমন পছন্দ করে আমিও আপনাকে ঠিক তেমন পছন্দ করি । কিন্তু আমি আপনাকে আসলে ভালবাসি - এই কথা আমার পরিবার বুঝতে চায় না । তারা এটা বুঝতে চায় না যে আপনাকে ছাড়া অন্য কাওকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না ।
অপরপক্ষে আমার এক কাজিন আমাকে ভীষণ ভালবাসে । আমার পরিবারও ওকে পছন্দ করে আমার জন্য । সবাই মনে করে বিয়ের পরে সব ঠিক হয়ে যাবে ।
এক সময় বিয়ে ঠিক হয়ে যায় । অদ্ভুত কোন এক কারনে কেউ আমার কথা শুনতে চায় না । আমি বাসা থেকে রাগ করে বের হয়ে আসি । তার কয়েকদিন পর অনেকগুলো বাসা পাওয়া সত্ত্বেও আপনাদের বাসা ভাড়া নেই কেবলমাত্র আপনার কাছাকাছি থাকতে পারব বলে । আমার আর কিছু বলার নেই ।
চিত্রা- কি বলবো বুঝতে পারছি না ।একটা কথা জিজ্ঞেস করি ঠিক ঠিক উত্তর দেবেন প্লিস "আমাকে কেন ভালবাসলেন অন্য মেয়েকে নয় কেন?"
তমাল - আপনি দেখতে অনেক সুন্দর । আপনার চোখের চাহনি আমার মনকে পাগল করে তোলে । আপনার হাসিতে মুক্তো না ঝরলেও আমার হৃদয়ে ঝিরি ঝিরি আভা বয়ে যায় । I love you.
চিত্রা - আপনি আমাকে অনেক ভালবাসেন বুঝতে পারছি । আপনি আমার জন্য ঘর ছেড়ে এসেছেন , ছেড়ে এসেছেন আপনার পরিবারকেও । কিন্তু তমাল সাহেব আমার জন্য আপনার এই ভালবাসা একসময় ফুরিয়ে যাবে । কারণ আমার এই সুন্দর চেহারা একসময় ফুরিয়ে যাবে। তখন তো আপনি আমাকে আর ভালবাসবেন না । আমার চোখের নিচে একদিন কালি পড়বে, কিম্বা অনেক বেশি পাওয়ারের চশমার মাধ্যমে ঢেকে যাবে আমার এ আয়ত নয়না চোখ । তখন তো আপনি আমাকে আর ভালবাসবেন না । আমার এই সুন্দর হাসিমাখা দাঁতগুলো বয়সের ভারে ঝরে পড়বে । তখন তো আপনি আমাকে আর ভালবাসবেন না। আমি এই ক্ষনিকের ভাললাগার ভালবাসা চাই না । আমি চিরদিনের আত্নিক ভালবাসা ।
তারপর চিত্রা চুপ হয়ে গেলো, তমালও কিছু বলল না । লাইনটা একসময় কেটে গেল ।
২| ৩১ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১২:৪৪
বিকেল বলেছেন: ধন্যবাদ, পড়ার জন্য ।
৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০১২ সকাল ১১:৪৩
একজন আরমান বলেছেন: গল্পের শেষটা দারুন লাগলো। চিত্রা ঠিক কথাই বলেছে।
০৩ রা আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:৩১
বিকেল বলেছেন: ধন্যবাদ আরমান ভাই.....
৪| ০৫ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৩৪
সান্তনু অাহেমদ বলেছেন: বন্ধু দিবস শুভ হোক।
০৫ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৪৭
বিকেল বলেছেন: শুভ হোক....
৫| ০৫ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৪১
আনমনে বলেছেন: একজন আরমান বলেছেন: গল্পের শেষটা দারুন লাগলো। চিত্রা ঠিক কথাই বলেছে।
০৫ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৪৮
বিকেল বলেছেন: ভাই চিত্রা ঠিক কথা বলারই মেয়ে ......
৬| ০৫ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৪৯
বৃষ্টিবেস্ট বলেছেন: সুন্দর।
০৫ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:০৯
বিকেল বলেছেন: ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য ।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১২:৩১
নীলঞ্জন বলেছেন: ভালো লাগলো গল্প।++++