![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যা কিছু দেখি, সবই বুঝতে চেষ্টা করি, অনুভব করতে চেষ্টা করি, অনুধাবন করি। সবই নীরবে নিভৃতে।
(দয়া করে পুরো অংশ পড়ূন)
মনোজগত, মানসিকতা এবং…
উহা পড়িবার যোগ্য ছিল না।
লোকে বিখ্যাত হবার পরবর্তী সময়ে তার আত্মজীবনী লিখেন এবং সমস্ত পাঠক তা খুবই আগ্রহ নিয়ে পড়েন। কোন লিখা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠককে পড়াতে চাইলে, তাতে একটা আকর্ষণ তৈরী করে নিতে হয়, যাতে এর পর কি ঘটল ধনের ব্যাপার এর উপস্থিতি থাকবে এবং তা জানার জন্য লোকে তা পড়তে বাধ্য হবে।
যে লেখক পাঠককে তার লেখনি পড়তে বাধ্য করেতে পারে, সেই প্রকৃত লেখক, সে বিখ্যাত হইতে বাধ্য। তার বিখ্যাত হওয়ার খবর যেমন সবার কাছে সুনিশ্চিতভাবে অনুমেয়, তেমনি জগতের বিভিন্ন ঘটনা সুনিশ্চিত থাকে সকলের মাঝে। উদাহরণ জানার আগ্রহ হলে দূরে যেতে হবে না, এই লেখনির লেখকের কথাই বিবেচনায় আনতে পারেন। ইহা কোনভাবেই বিখ্যাত হবার যোগ্যতা রাখেনা। ক্রননা ইহাতে এমন উল্লেখযোগ্য কিছুই নেই, যা তার পাঠককে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখবে। ইহা শুধুই একজন অলস মানুষের অলস মস্তিষ্কের অলস কল্পনা মাত্র। তবু সকলের কাছে অনুরোধ, পড়েই দেখুন একবার, একজন অলসের ভাবনা জগত কে, যে কিনা চেষ্টা করবে, আপনাকে মানুষের মানসিকতা সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়ার।
বিখ্যাত লোকের মনোজগত, চিন্তা-ভাবনা, স্বপ্ন, সবই বড় এবং অনুসরণীয়। কিন্তু সাধারণ লোকের সকল কিছুই সাধারণ বলে মনে হয়। তাদের মনোজগত থেকে শুরু করে বাস্তবতা পর্যন্ত সবই সাধারণ হয়ে থাকে।
মানুষের মানসিকতা বড়োই অদ্ভূত এবং “Confusing”। যদি পূর্বোক্ত বাক্যটির মাধ্যমেই বিভিন্ন মানসিকতার পার্থক্য বুঝতে চান, তবে একটু খোলাসা করলেই পুরো ঘটোনা পরিষ্কার হবে। আগের বাক্যের ভাবার্থে নানাজন নানা কথা বলতে উদ্যত হবে। কেউ বলবে “বড়ই সুন্দর এবং যুক্তিযুক্ত কথা বলেছেন।” কেউ বলবে “এটা কোন সুস্থ মানুষের বাক্য হতে পারে না।” কেউ বলবে “উনি Confusing এর বাংলা জানেন না, তাই বাক্যে ইংরেজি ব্যাবহার করিয়াছেন।” কেউ বলবে “ Confusing দ্বারা বাক্যটির অর্থ যতটা পরিষ্কার হয়, অন্য কিছু দ্বারা ততটা হবে না,তাই তা ব্যাবহার করা হয়েছে।” কেউ বলবে “ভীনদেশী ভাষা ব্যাবহার করিয়া বাক্যটিয়ার সৌন্দর্য নস্ট করা হয়েছে।” একদল আছে কিছু না বুঝেই বলে উঠবেন “লেখক রাজাকার।” আবার অনেকেই সকলের চেয়ে একধাপ এগিয়ে বলবেন “উনার নিজের মানসিকতার-ই ঠিক নেই, উনি এসেছেন মানসিকতা বিশ্লেষণ করতে!” আবার আরেকদল তাদের তাদের ও উপরে উঠে বলে দেবে “উনি কি মানসিকতা ব্যাপারটা বুঝেন”?
এর দ্বারা কি বুঝা যায়? মূল ব্যাপারটা হল, “মানসিকতা ব্যাপারটা পৃথিবীর প্রতিটি (আলাদা) মানুষ মাত্রই ভিন্ন।”
সকল ব্যাপার বা ঘটনা খেয়েয়াল করলে, অবশ্যই খুব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে, আপনি নিশ্চিতভাবেই একটা ব্যাপার খুঁজে পাবেন যে প্রত্যেক মানুষ-ই নিজেকে তার নিজের যুক্তিতে সঠিক মনে করেন। অন্য কেউ বা অন্যরা যদি তার চেয়েও জোরালো যুক্তি প্রদর্শনে সমর্থ হয়েও থাকে, তবুও মানুষের অবুঝ যুক্তিবাদী মন অন্যের ব্যাপারটিতে অর্থাৎ যুক্তিতে সায় দিতে পারে না বা সায় দিতে দ্বিধা করে। যে বা যাহারা নইজের যুক্তিকে সঠিক মনে করা সত্ত্বেও, অপরজনকে বলার সুযোগ দেয়, অপরজনের দেয়া তথ্য মনোযোগে শুনে এবং পরবর্তীতে তা নিজের যুক্তির সাথে তুলনা করে সবচেয়ে সঠিক যুক্তিটি বেছে নেয় অথবা নিজের সঠিক মনে করা যুক্তিটির সাথে অপেক্ষাকৃত সেরা বাছাই এর আধুনিকীকরণ করে নিতে পারে, সে অন্য সকল মানুষের চেয়ে নিজেকে আলাদা ভাবার যোগ্য। সে নিঃসন্দেহে অপেক্ষাকৃত ভাল মানসিকতার।
যদিও শুধু এই একটি দিক দিয়ে মানসিকতা বিচার করা যায় না, তবুও এই একটি দিক একজন মানুষের বেশিরভাগই প্রকাশ করে দেয়।
মানসিকতা ব্যাপারটা মূলতঃ পরিবেশগতভাবে প্রভাবিত। আপনি কোন পরিবেশে কীভাবে বড় হয়েছেন, এ ব্যাপারটা এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। শিশু বয়স হতে Teen-age বা উনিশ বছর বয়স পর্যন্ত সময় মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই সময়ের মাঝেই তার পরিপূর্ণতা আসে। এই সময়ের মাঝে যে নিজেকে পরিপূর্ণ করে নিতে পারে না, পরবর্তী সময়টিতে এসে সে আর তার ঘাটতি সমূহ পূরণ করার অন্য কোন সুযোগ পায় না বা পাওয়া যায় না।
একটি নির্দিষ্ট সময় পর হতে মানুষ তার আওতা বা পরিধি বাড়াতে থাকে। ধরুন, একটি শিশু ৬ বছর বয়স হতে স্কুলে যাওয়া শুরু করে। এর আগ পর্যন্ত সে তার নিজের বাড়ি এবং আত্মীয়স্বজন ছাড়া খুব কম মানুষের সান্নিধ্যে আসে। স্কুলে ভরতি হওয়ার পর সে তার পূর্বপরিচিত গন্ডির বাইরে এসে নিজেকে একটি আলাদা জগতে খুঁজে পায়। আস্তে আস্তে তার শেখার ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হতে থাকে। নিজের অজান্তেই সে ধীরে ধীরে পূর্ণতা পেতে থাকে।
চারপাশ উপলব্ধি না করে অন্ধের মত যারা সামনের দিকে এগিয়ে যায়, তাদের জীবনে অনেক কিছুই অজানা রয়েছে এবং রয়ে যায়। তবে যে তার নিজের সম্পূর্ণ বা আংশিক পূর্ণতার খবর বুঝতে পারে, যে কোন সিদ্ধান্ত নিতে আবেগের চেয়ে যুক্তিকে প্রাধান্য দিতে পারে, তার কাছে আনেক না পাওয়াও পাওয়ার মত হয়ে ধরা দেয়।তার জীবনের অপূর্ণতার প্রধান অংশ পূর্ণ হয়ে যায় পাওয়ার অনুভুতির দ্বারা।
একজন পূর্ণ মানুষ কখনো নিজেকে হতাশ ভাববে না, কারণ সে বুঝতে পারবে তার হতাশা তাকে আবার অপূর্ণ করে ফেলতে পারে। ব্যর্থতা তাকে দুঃখ দিতে পারে, কিন্তু হতাশ করতে পারে না।
যার মানসিকতা দুর্বল, সে সকল দিক থেকে সন্দেহপ্রবণ হয়ে উঠে। সন্দেহপ্রবণতা এক ধরণের মানসিক রোগ। এর প্রতিকার নিজেকে পূর্ণ করে তোলা। সব সময় নিজের চিন্তা কে সুযোগমুখী রাখা। যা চিন্তার ধারা রেখা ভালর দিকে অনুকূল তার কখনো কোন বিষয়ে খারাপ হয় না। কারণ সে সব কিছুকেই আশীর্বাদ হিসেবে নেয়।
ব্যাথা ব্যাপারটা বেশিরভাগ সময়েই সাময়িক হয়ে থাকে। জগতে সেই সবচেয়ে বড় দুঃখী, যে নিজেক তা ভাবে, দুঃখী মনে করে। যে নিজেকে দুঃখী ভেবে নেয়, তার দুঃখ-ব্যাথা দূর করার কোন ঔষধ এখনো আবিষ্কৃত হয় নি।
দার্শনিকতা মানুষকে পরিপূর্ণ করতে পারে কিনা, তা নিয়ে মতভেদ থাকলেও, মানুষের দর্শন হইতে যে তার মানসিকতার পরিচয় নিঃসন্দেহে পাওয়া যায়, তা নিয়ে মতবভেদ থাকার কথা নয়।
যার আনন্দ পাওয়ার আগ্রহ রয়েছে, তা সে বিভিন্নভাবেই পেতে পারে। আনন্দ ব্যাপারটাই মানসিক। একে বলা যায় মানসিক সন্তুষ্টি। সুখ ব্যাপারটিও বুঝা যায় মানুষের মানসিক পরিতৃপ্তির দ্বারা। মানসিক আনন্দের চেয়ে বড় আনন্দ এই পৃথিবীতে নেই। মানসিক পরিতৃপ্তি আপনি বিভিন্ন ভাবেই পেতে পারেন।
ধরুন, আপনি একটি গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছেন, একা অবস্থায়। এ অবস্থায়, আপনি গাছটির দিকে তাকান এবং ভাবুন নিজেকে ঐ গাছটির অবস্থানে রেখে।
আপনি হলেন একটই গাছ এবং একজন মানুষ আপনার ছায়ায় এসে দাড়াল। আপনি ঐ মুহূর্তে কি ভাবতেন সেই মানুষটিকে নিয়ে যা এই মুহূর্তে ঐ গাছটি ভাবছে যার ছায়ার নিচে আপনি এখন দাঁড়িয়ে আছেন। মানসিকভাবে সুস্থ হলে যে কারো এইসব ব্যাপার খুবই উপভোগ করার কথা।
কিছু কিছু ব্যাপার শুধু নিজে উপভোগ করতে পারা যায় এবং তা অন্যদের সাথে শেয়ার করলে আপনি ততটা মজা পাবেন না যতটা আপনি নিজে একা উপভোগ করলে পাবেন এবং পরবর্তীতে যদি মজাদার ঘটনাটি অপ্রকাশিত রাখেন তবে তা আরও উপভোগ্য হয়ে উঠে এবং ওই ঘটনা যত বার আপনার মনে পড়বে আপনি ততবার প্রফুল্ল হয়ে উঠবেন, নিজ থেকেই হেসে ফেলবেন।
স্থান-সময়-পরিবেশ সব মিলিয়ে পরিস্থিতির সাথে মিশে আপনাকে সব উপভোগ করতে হবে। যদি আপনি আনন্দ আহরণ করতে জানেন, তবে দুনিয়ায় এমন কোনো মুহূর্ত নেই যা আনন্দবিহীন।
সকল ঘটনা আবার আপনি যুক্তি দিয়ে মেনে নিতে পারবেন না, এমন অনেক কিছুই আপনাকে মেনে নিতে হবে যা যুক্তিহীন ভাবেই যৌক্তিক।
আপনি শিক্ষা গ্রহণ করছেন, আরও অনেকেই করছে। শিক্ষার উদ্দেশ্য কি? শিক্ষা বলতে আপনি কি বুঝেন? প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আর প্রকৃত শিক্ষার তফাত আছে কি? থাকলে তাহা কি? না থাকলে কেন নেই? আতি সাসধারণ কতগুলো প্রশ্ন!!! কিন্তু কোন মানুষের মানসিকতা বুঝার জন্য আপনার উপরের প্রশ্ন কয়েকটির জবাব-ই যথেষ্ট।
আপনার মানসিকতা যদি অনুকূল হয়, তবেই শুধু আপনি অন্যের অনুকূল বা প্রতিকূল মানসিকতার ধরণ বুঝতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি সকলের মাঝেই শুধু প্রতিকূল মানসিকতা খুঁজে পান, তবে বুঝে নিতে হবে আপনার নিজের মানসিকতাও প্রতিকূল ধরণের।
বুঝতে পারছেন নাহ? কঠিন কিছু নয়, আসল ব্যাপার হল (প্রকৃতপক্ষে) সকল মানুষের মানসিকতাই Positive এবং Negative দু’টো মিলিয়ে। আপনি যদি ভাবেন আপনি শতভাগ Positive অথবা শতভাগ Negative আপনি সেই বস্তু যে মানুষ নন। হয়তো ভাববেন মানুষ নন বলার পরও বস্তু বলা হল কেন!! কারণ যে নিজের মানসিকতা সম্পর্কে যে শতভাগ অনুকূল বা প্রতিকূল দৃষ্টিভঙ্গি রাখে, সে ঐ বাক্যে বস্তু ও মানুষের পার্থক্য বুঝতে সমর্থ হবে না। মুলতঃ সবার মাঝেই কিছু না কিছু ভুল/ভ্রান্ত ধারণা আছে বা রয়ে যায়।
যদি রচনার পুরো অংশ পড়ে এ পর্যন্ত এসে থাকেন, তাহলে এই শেষ অংশ পড়ার পর আপনার মন্তব্য হওয়ার কথা, “পুরোই Confusing”, যদি অন্য কোন প্রতিকূল মন্তব্য করেন, তাহলে আপনার মানসিকতায় সমস্যা রয়েছে এবং এই লাইন পড়ার পর নিশ্চিতভাবেই বলবেন লেখকের মানসিকতায় সমস্যা রয়েছে!
কি?
পূর্বেই বলা হয়েছিল তো, “মানুষ মাত্রই ভিন্ন মানসিকতার।”
এবার রেগে গিয়ে আপনি নিশ্চিতভাবেই বলছেন, “ইহা পড়ার যোগ্যই ছিল না।”
- ২৪/০৮/২০১৩
ভুল-ত্রুট মানুষের ই হয়। সব কিছু আমার একান্ত নিজস্ব মতামত। এখানে ভুল খুঁজে পেলে আমাকে মাফ করবেন। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.