নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেঘের আড়ালে বৃষ্টি খুজি

ত্রিশিলা

মাথার উপর যদি রাখতে না পারো তাহলে মস্তিস্কের চিন্তা্য় রেখো । তারপর আমরা ভিন্ন পথের পথিক হবো।

ত্রিশিলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাওয়া না পাওয়ার সমীকরন

২০ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:২৯

খোলা জানালা দিয়ে নরম শীতল বাতাস ঢুকে ঘুমের আরো জড়তা এনে দিচ্ছে ! ইদানিং যে গরম পড়েছে, তার মাঝে এই শীতল বাতাসে বিছানার একপাশে ভাজ করে রাখা কম্বলটা চোখ না খুলেই হাত দিয়ে টেনে গায়ে জড়িয়ে নিলো রিপরিপ।আবার ঘুমের মধ্যে তলিয়ে যেতে যেতে হঠাৎ করে মনে উঠে পড়ে বসে পড়লো , আজকে বৃষ্টি নামলে তো সর্বনাশ! অনেক জায়গায় এপ্লিকেশন করেছে গত দেড় বছরে, মাত্র একটা এনজিও থেকে ইন্টারভিউর জন্য কল এসেছে। যদিও রিপরিপের এনজিওতে কাজ করার কোন আগ্রহ নেই, তবু চাকরীর আকালের যুগে নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল। কিন্তু আজকের দিনেই এই আকালের বৃষ্টি। তাড়াতাড়ি সোমুকে কল দিল-
- হ্যালো , সোমু, ঘুম ভেঙেছে?
- হ্যাঁ হ্যাঁ , উঠে গেছি, শুধু মুখ ধোয়া বাকি।
- তার মানে তুইও এখনো বিছানায়? উঠে পড় রে, আজ আমার প্রথম ইন্টারভিউ।আমাকে নামিয়ে দিতে হবে।
- মনে আছে, লিভ নিয়েছি অফিস থেকে , নিয়ে ও যাবো আমি, আনবোও আমি।
- হায়রে আদিখ্যেতা, আচ্ছা, রেডি হতে হবে, রাখলাম, পরের কলে যেন তোকেও রেডি পাই।

সোমুর সাথে রিপরিপের পরিচয় হয় ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময়। ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব প্রেমে গড়ায়। সোমুকে ছাড়া রিপরিপের কোন কাজই হয় না। সোমুও রিপরিপের মনের খবর রাখে সবসময়। দুই পরিবার এদের বিয়ের জন্য মরিয়া হয়ে আছে। কিন্তু রিপরিপের একটাই কথা, আগে সে সাবলম্বী হবে এরপর বিয়ে। সোমুও তার এই বিষয়টিকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে নিরন্তর ভাবে।

’গ্রীন ইজ লাইফ’ এনজিও অফিসের সামনে সোমু ওকে নামিয়ে দিল। ভাগ্য ভাল যে বৃষ্টি আর হয় নি।
সোমু - একদম নার্ভাস হবি না বুঝলি, ইন্টারভিউতে যত কনফিডেন্স দেখাতে পারবি তত ইমপ্রেশন জমাতে পারবি।রিপরিপ- মনে তো একটু দুরুদুরু ভাব আসছে, সামলে রাখতে পারছি না। কি প্রশ্নের না কি উত্তর দিয়ে আসি!
সোমু আলতাে করে করে ওর দুইটা হাত চেপে ধরে,- তুই পৃথিবীর বেষ্ট একটা মেয়ে, তাড়াতাড়ি চাকরী টা পেয়ে নে, ঘুম থেকে উঠেই তোর মুখটা দেখতে পাওয়ার ফিলটা নেওয়ার জন্য কিন্তু আমার তর সইছে না।
- সোমু, থাক তুই স্বপ্ন দেখেত থাক, আমি যাই। বলে রিপরিপ যাওয়ার জন্য ঘুরলো । অমনি সোমু ওর হাত ধরে বললো,
- বিয়ে করবি না আমায়?
রিপরিপ ঠোটে রহস্যময়ী একটা হাসি একে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলে, ভুত ভবিষ্যত সব উপরওয়ালার হাতে, আমরা অতি সাধারণ মানব মাত্র।
যাই , দেরি হয়ে যাচ্ছে।

রিপরিপ দ্রুত চলে যায়। সোমু অসহায় হয়ে ওর চলে যাওয়া দেখে। তারপর আপন মনেই হেসে বলে, পাগলিটা আমার!


রিপরিপ অফিসে ঢুকে রিসেপশনে এন্ট্রি করে নিল। ৫ মিনিট পড়েই তাকে ডাকা হল। রিপরিপ দুরুদুরু মন নিয়ে দরজায় টোকা দিয়ে বলে- আসতে পারি?
ভেতরে টিশার্ট পরা একজন যুবক মাথা নিচু করে বাকা হয়ে কিছু প্লাস্টিকের পলি হাতে নিয়ে পরীক্ষা করছিলেন, বললেন-
- আসো প্লিজ, বসো
রিপরিপ বসে গেল, বললো,
- আমি জেরিন সুলতানা রিপরিপ
যুবক এবার পলি থেকে নজর সরিয়ে রিপরিপকে দেখলেন,
- স্বপ্ন, আমি আদিত্য, চিনতে পারছো না ?
স্বপ্ন - নামটা শোনার সাথে সাথে রিপরিপ বিস্ময়ে উঠে দাঁড়ালো, - আদি- সত্যি কি আদি তার সামনে দাঁড়িয়ে, এত বছর পর, এভাবে হঠাৎ!
স্থান কাল পাত্র ভুলে গিয়ে ওর ভেতর থেকে একটা অভিমান দলা পাকিয়ে লবণাক্ত অনুভূতি হয়ে গাল বেয়ে নেমে এল।
আদিত্য এরকম কিছু হবে আশা করেনি। তাই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল।
(চলবে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.