অমর্ত্যবাবুর ভারত দর্শনে যেভাবে বাংলার কথা এলো

২১ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:০৬

প্রথম আলোতে অমর্ত্য সেন বাংলাদেশ নিয়া সুন্দর সুন্দর কি কি কথা বলছেন সেইটা সকালে এক ঝলক দেখসিলাম। আশা ছিল গার্ডিয়ান দেইখা মূল ইংরাজি পৈড়া দেখবো আর কি কইসেন। বাংলা তর্জমার ভরসা নাই। প্রথম আলোর শিরোনাম "গার্ডিয়ানকে অমর্ত্য সেন: চমকে দেওয়ার মতো সাফল্য আছে বাংলাদেশের"

গার্ডিয়ানের শিরোনাম "Amartya Sen: India's dirty fighter"

আমাজনে বইটা দেখলাম "এন আনসারটেইন গ্লোরি: ইন্ডিয়া এন্ড ইটস কট্রাডিকশন্স"

গার্ডিয়ানে উনার ইন্টাভিউতেও পুরাপুরি ইন্ডিয়ার সমালোচনাতেই মুখর ছিলেন। কিন্তু প্রথম আলো পড়লে মনে হয় তিনি শুধু বাংলাদেশ নিয়াই আলাপ করসেন।



অমর্ত্য স্যার বলতেছেন ভারতের অনেক সফল্য আছে আবার অনেক বড় বড় সমস্যাও আছে যা এড্রেস করতে হবে। তাই এই উন্নয়নরে তিনি ডিফেক্টওয়ালা উন্নয়ন কচ্ছেন। সমস্যা বলতে তিনি নাম করসেন- ধনী গরিব বৈষম্য, চিকিত্সা সুবিধা, জাত-পাতের দূরত্ব- এইসব। তিনি বলছেন ইন্ডিয়ার অবস্থা অনেক দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ। বাংলাদেশ গরিব দেশ হইলেও মাত্র ৮% লোকের হাগুখানা নাই, আর ভারতে সেইটা ৫০% বা অর্ধেক। কথা ঠিক এরশাদের আমল থিকা আমরা গ্রামে গঞ্জে পাকা পায়খানা বানাইতেসি। তখন গ্রামে মঙ্গা হইতো, পাছায় গু থাকতো না। কিন্তু বাসায় পাকা পায়খানা থাকতো। এরপরে আমাদের এনজিওগুলা(গ্রামীন ব্যাঙ্ক আর ব্রাকের নাম নিসেন) 'নারীক্ষমতায়ন' করসে। কথা সত্যি। কিন্তু এতে কারওয়ান বাজারের এত উত্ফুল্ল হওনের কিছু নাই। গ্রামের যে উন্নয়ন হইসে সেইটা গ্রামের মানুষের অমানুষিক পরিশ্রম আর ত্যাগে আসছে। আপনারা শত কোটি টাকার হাতিরঝিলে বাতাস খাইয়া কোটি টাকার ফ্লাইওভারের উপর দিয়া উড়াল দিয়া অর্ধকোটি টাকার ফ্লাটে আইসা চুলায় গ্যাস ফল কম পাইলে পত্রিকায় খবর দেন, পানি না পাইলে খবর দেন, শুইয়া সিলিং ফ্যানের বাতাস না পাইলে খবর দেন। কিন্তু দেশের অধিকাংশ মানুষ যে গ্যাসের মুখ দেখে নাই, আপনাদের উচ্ছিষ্ট কারেন্টে সেচের কাজ চালায় তাও ধানের দাম পায় না, কাচা রাস্তায় প্যাডেল মাইরা হাট বাজার স্কুল করে যেটায় কোটি দুরের কথা ২লাখ টাকার বাজেটও মিলে না- তাগো খবর কই? তাগো খবর দিবেন যৌতুকের দায়ে কে কার হাত কাইটা দিসে, কোন চেয়ারম্যানের পোলা কার মেয়েরে ধর্ষণ করসে সেই খবর। গ্রামের মানুষের জীবনরে একটা অন্ধধার্মিক বার্বারিক রূপ প্রেসেন্ট কইরা পত্রিকাগুলান সচেতনভাবেই আমাদের ঢাকাই উন্নয়নের বয়ান শুনায়। যেমন রোমানরা তাগো দেয়ালের ঐপাশের সবাইরে বলতো বারবারিয়ান। তাইলে আমাদের উন্নয়ন কি এমন রসগোল্লা জনাব? অমর্ত্য সেন নাহয় ভারতের সাথে তুলনায় কিছু বিষয়ে আমাদের পিঠ চাপড়াই দিসেন, তাতে এতো উচ্ছাসের কিছু নাই। আমাদের উন্নয়ন জিডিপির দৌড়ে না মাপা সম্পদের বন্টনের দৌড়ে মাপলে, গ্রাম আর ঢাকার চিকিত্সা-শিক্ষা-যোগাযোগব্যবস্থা বিভেদ দেখলে আরো বড় ডিফেক্ট বাইর হবে। গ্রামের পোলারা যে শহরে আসিয়া ***** গালি দিতেছে না শুকরিয়া করেন।

১ টি +২/-০