![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মশিউর তুহিন M.B.A from University of Dhaka. ব্যস্ততার কারণে ব্লগে নিয়মিত লেখা হয় না... কিন্তু অবশ্যই একজন নিয়মিত পাঠক। ভালোবাসি বাইক চালাতে...বাইক দিয়ে ঘুরতে...কিন্তু সময় হয়ে উঠে না!
আজ বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে এলাম।
মনটা একটু খারাপ লাগছে বটে! কিন্তু ভালোও লাগছে এই ভেবে যে একটা কাজ ভালোভাবে শেষ করতে পারলাম। বাবার প্রতি দায়িত্বও শেষ হলো। সংসারটা এবার নতুন করে গুছিয়ে নেব। বাবার ঘরটা গেস্টরুম বানাতে হবে। বাসায় একটা গেস্টরুম ছিল না বলে মুনার কত অভিযোগ—বাসায় গেস্ট এলে ওর নাকি মানসম্মান চলে যায়। ঠিকই তো বলেছে, গেস্টরুম একটা প্রয়োজন বৈকি! বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর বুদ্ধিটাও তার। আমারও যে মত ছিল না, তা নয়। বাবারও বোধ হয় এটাই ইচ্ছা ছিল। কারণ, তিনি আমাদের মতামতের কোনো বিরোধিতা করেননি। তা ছাড়া মায়ের মৃত্যুর পর বাবা খুবই নিঃসঙ্গ ছিলেন। আমি ও মুনা—দুজনই চাকরিজীবী, অফিসে যাই। বাবাকে কে সময় দেবে? ওখানে গিয়ে বাবা নিশ্চয়ই ভালো থাকবেন। সমবয়সী অনেককে পাবেন সঙ্গী হিসেবে। নাহ্, কাজটা ভালোই করেছি। আমার সব স্বপ্ন আমার পরিবারকে ঘিরে। মুনাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। আমাদের দুজনের সংসারে অনাবিল আনন্দ বয়ে এনেছে আমাদের সোনার টুকরো ছেলে। তাকে পেয়ে আমার জীবনটা সত্যিই অন্য রকম হয়ে গেল। আমার সব মনোযোগ এখন স্ত্রী-পুত্রের দিকে। বাবা-মাকে দেখার সময় কই?
যেদিন মা মারা গেলেন, সেদিন একটু অপরাধবোধ মনে জেগেছিল। মনে হয়েছিল, আমার অবহেলার জন্যই কি মা চলে গেলেন? মা স্ট্রোক করেছিলেন। হয়তো ভেতরে ভেতরে আরও অসুখ দানা বেঁধেছিল, কিন্তু মুখ ফুটে কখনো কাউকে কিছু বলেননি তিনি। মাকে দেখতে তো সুস্থই দেখাত, তাই কখনো তাঁকে ডাক্তারের কাছে নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করিনি।
বাবার বিষয়-সম্পত্তি তেমন ছিল না। তবে আমাদের একটা ছিমছাম একতলা বাড়ি ছিল। ছোটবেলা থেকে সেখানে বড় হয়েছি বলেই হয়তো বাড়িটা ভালোই মনে হতো। কিন্তু মুনা আধুনিক মেয়ে, ওর বাড়িটা পছন্দ হতো না মোটেই। বলত, পুরোনো, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। পরে ভেবে দেখলাম, কথাটা তো ও ভুল বলেনি! আমি তখন সবেমাত্র চাকরিতে ঢুকেছি। অন্যখানে বাসা নিয়ে আলাদা হয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য আমার হয়ে ওঠেনি। তাই মুনার পরামর্শে বাবাকে বোঝালাম, এই বাড়িটা জমিসহ বিক্রি করে দিলেই মোটামুটি হালফ্যাশনের একটা ফ্ল্যাট কিনেও কিছু টাকা ব্যাংকে রাখা যাবে। আমার বাবা এই প্রস্তাবে রাজি হননি। শেষে আমি রাগ করে মুনাকে নিয়ে আলাদা হয়ে যাওয়ার হুমকি দিলাম, যদিও জানি, এ আমার সামর্থ্যের বাইরে। মুনা তখন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ সময় ওর বাড়তি কিছু যত্নআত্তি প্রয়োজন। এ অবস্থায় আমার সাহায্যে এগিয়ে এলেন মা। তিনি বাবাকে বুঝিয়ে রাজি করালেন। অবশেষে বাবা রাজিও হলেন, কিন্তু আমার সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলতেন না আর। সেই থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়ে গেল আমার...
নতুন ফ্ল্যাটটা বাবা-মা আমার নামে দিতে চাইলেন, কিন্তু আমার অনুরোধে বাবা ফ্ল্যাটটা তাঁর নাতির নামে উইল করে দেন। আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ ভেবে এই কাজটি করেছিলাম। যেদিন নতুন ফ্ল্যাটে আমরা শিফট করলাম, সেদিন মুনার আনন্দ যেন বাঁধ মানছিল না। আমারও ভালো লাগছিল ওর হাসিমুখ দেখে। আমাদের ছেলের বয়স তখন চার বছর, ওকেও একটা আলাদা ঘর দেওয়া হলো। ছেলের ঘরটি ছবির মতো করে সাজাল মুনা। শুধু ছেলের ঘরই নয়, পুরো বাসাটাই সুন্দর করে সাজাল সে। ফ্ল্যাট কেনার পর যে টাকা বেঁচে ছিল, এর অনেকটাই ব্যয় করা হলো ঘর সাজানোর কাজে। শুধু বদলাল না বাবা-মায়ের ঘরটি—সেই আগেকার খাট, ঘুণে ধরা চেয়ার-টেবিল, আলমারি—ঠিক আগের বাড়ির ঘরটির মতো। এই ঘরটি সাজাতে দেননি মা। তিনি বলেছিলেন, থাকুক কিছু স্মৃতি। আমি কিছু মনে করিনি, কিন্তু মুনার মনে খেদ ছিল খুব। মা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন সেই কবে, বাবাকেও আজ বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এলাম, সেই সঙ্গে বাধামুক্ত হলো মুনার ঘর সাজানোর পথটা।
পরিশিষ্ট
এতক্ষণ নিজের লেখা ডায়েরির কয়েকটি পাতা পড়ছিলেন আবীর চৌধুরী। তাঁর চোখের কোণে পানি। এখন তাঁর বয়স পঁচাত্তর। পাঁচ বছর আগে মুনা তাকে ছেড়ে চলে গেছে। আর তাঁর আদরের ছেলে আনন্দ চৌধুরী আজ সকালে তাঁকে রেখে গেল বৃদ্ধাশ্রমে।
............সংগৃহীত ও সম্পাদিত
পরিশিষ্টের পরিশিষ্টঃ
বাবা-মা আমাদের জন্য যা করেন__ছবি
আমরা বাবা-মা'র জন্য যা করি__
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১২
নেতাজী বলেছেন:
২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১২
লিপু খন্দকার বলেছেন:
এরপর আপনি এতো খুশি...... বাবা-মাকে সবসময় মাথায় করে রাখতে হয়......
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৪
নেতাজী বলেছেন: কিছু বুঝলাম না!
৩| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৫
টুনা বলেছেন: আগে একবার পড়েছি। তার পরেও বলব, এর দ্বারা যদি একজন মানুষেরও সুমতি হয় তবে স্বার্থক। এ ধরনের সচেতনতা মুলক পোস্ট রিপিট হলেও ভাল।
ধন্যবাদ।
ভাল থাকবেন নিরন্তর।
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৫
নেতাজী বলেছেন: ঠিক বলেছেন...আপনাকেও ধন্যবাদ...ভালো থাকবেন।
৪| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০
জুন বলেছেন: এমন সন্তানদের পরিনতিও এমনই হয় কারন তার ছোট ছেলেটি বাবার কাছে শিখলো বুড়ো হয়ে লোকদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসতে হয়।
ইদানীং অনেক সন্তানরাই বাবা মা এর উপর প্রেশার ক্রিয়েট করে বাবা মার সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখিয়ে নিচ্ছে ব্যাংক লোনের অজুহাত দেখিয়ে। তারপরই নেমে আসছে তাদের উপর অত্যাচারের খড়গ।
ভালোলাগলো খারাপ খারাপ ভালোলাগা।
+
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৭
নেতাজী বলেছেন: খারাপ খারাপ ভালোলাগা...
৫| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫
আলাদীন বলেছেন: +
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৭
নেতাজী বলেছেন: ধন্যবাদ...
৬| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫
কাজী হান্নান বলেছেন: নিষ্ঠুর বাস্তবতা।
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৮
নেতাজী বলেছেন: ঠিক...
৭| ২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২৩
আরজু পনি বলেছেন:
২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:২০
নেতাজী বলেছেন:
৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৩১
আমিনুর রহমান বলেছেন:
নিজের সন্তান আছে সে যদি একদিন তাকেও বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে কেমন লাগবে তার সে ভাবনাটাও কি এই অমানুষগুলো ভাবে না
২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৩০
নেতাজী বলেছেন: মনে হয় না! ভাবলে আর এরকম করত না...
৯| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১৮
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: সেই প্রাচীন উপদেশ - নিজের পিতামাতার সম্মান কর, তোমার বাচ্চারাও তোমাকে সম্মান করবে।
ভাল লাগল পোস্টের শিক্ষা।
২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৫
নেতাজী বলেছেন: নিজের পিতামাতার সম্মান কর, তোমার বাচ্চারাও তোমাকে সম্মান করবে...
১০| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৩৮
মশিকুর বলেছেন:
চিন্তা করেন, মানুষ পারেও
১১| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:২২
ঢাকাবাসী বলেছেন: দুনিয়াতে সবচাইতে নিষ্ঠুর প্রানী হল মানুষ।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৭
মদন বলেছেন: