রাইফেলটা কাঁধে নিয়ে

১১ ই ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১২

রাইফেলটা কাঁধে নিয়ে স্বামী বললো
আমায় তুই ক্ষমা করিস বউ
কাঁদিসনা ওরে
স্বাধীন দেশ হবে স্বাধীন জাতি হবে
এ যে কি খুশির খবর
বুঝাতে পারবোনা তোরে

আমি সত্যি যেনো
সাত আসমান থেকে পড়লাম
ঘরে যার এক বেলা খাবার নেই
পরনে নেই বস্র আপন বলিতে যার
না আছে কেহ ফিরে তাকাবার

আমি অবলা যুবতি
এই একা ঘরে কি করে রবো
বিপদে কার কাছে যাবো বলো কি খাবো
সে যেন পশ্রাত ঘুরে দাঁড়াইলো
আর একটা কথাই বলিলো
যার কেউ নেই তার আল্লাহ আছে
আমি চললাম।

সত্যিই চলেই গেলো
আমি কপাট ধরে দিনের পর দিন কাদলাম
চোখের লোনাস্রোতে একদিন
একটা চিঠি লিখে পাঠালাম
চিঠিতে লিখলাম-

ওগো স্বামী,
গিয়েছো যখন দেশটাকে স্বাধীন করেই তবে ফিরো
ফিরে এসে যদি আমায় না পাও
রোজ রাতের আঁধারে
জোনাকির পানে চেয়ে দেখিও
আমি রোজ জোনাকির বেশে
তোমার কাছে আসছি।

সত্যিই তুমি স্বাধীনতা নিয়েই ফিরেছো!
যুদ্ধে তুমি জয়ী হয়েছো! আর আমি অবলা নারী
প্রতীক্ষার প্রহর গুনতেই হেরে গেছি

তুমি যেদিন চলে গেলে
কিছুদিন পর আমিও স্বীকার হলাম হায়নাদের
আহঃ কি যে কঠিন কি যে নির্মম কষ্টঃ
কি পাষণ্ড বঞ্চনার ইতিহাস!
আমায় তুমি অপরাধী করোনা স্বামী
আমায় ক্ষমা করো।

স্বামী, আমি রোজ দেখি
দ্বার ধরে তোমার প্রতীক্ষার প্রহর
সেই দ্বারে আমিও অজস্র চোখের জল
লেপটে রেখেছি তোমারই প্রতিক্ষায়

আজও আমি রোজ আসি জোনাকির বেশে
তোমার সোনার স্বাধীন দেশে
যেখানে নদী ছুটে চলে অবারিত কলতানে
বাতাস বহে মুক্ত ধারায় পাখি গান গায়

আমায় তুমি ক্ষমা করো স্বামী
আমি পারিনি দিতে তোমার
যুদ্ধাহত ক্লান্ত অবশ শরীরে
এতোটুকু শান্তির পরশ দিতে

০ টি +০/-০