নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জ্ঞান যে অর্থ সম্পদের থেকে শ্রেয় তা মুর্খ লোক কখনই অনুধাবন করতে পারবে না।

Tusher Khan

অলস মস্তিস্ক

Tusher Khan › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোরিয়া ও জাপানের ইতিহাস।

৩০ শে জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৫২

এই দেশ দুটি চীনের নিকট প্রতিবেশী বলতে গেলে চীনা সভ্যতারই বংশধর। এই দেশ দুটি এশিয়ার একেবারে পূর্বপ্রান্তে বলতে গেলে এশিয়ার পুর্বে শেষ প্রান্তে অবস্থিত। তার পরই বিরাট প্রশান্ত মহাসাগর। চীন ছাড়া এদের সাথে সুদুর অতীতে কারও সাথেই কোন সম্পক ছিল না ধর্ম , শিল্প সভ্যতা সবই এরা পেয়েছে আসলে চীন থেকেই। অতি প্রাচীন কালে সুমুদ্র পথ আবিস্কার না হওয়ায় বড় বড় সাম্রাজ্যের হুংকার, বড় বড় বিপ্লব প্রতি বিপ্লব এমনকি চেংগিশ খানের সেনাবাহিনীর ও যুদ্ধ জাহাজ না থাকার কারনে তারা এশিয়াতে এমনকি দক্ষিন এশিযার দারপ্রান্তে পৌছালেও তারা জাপান অাক্রমন করেনি কখনও। এভাবেই তারা বলতে গেলে সারা পৃথিবী থেকে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন বা সুখেই ছিল শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে আর এটা সম্ভব হয়েছে তাদের ভৌগলিক অবস্থার কারনে বিশেষ করে জাপানের পক্ষে । মাঝের কিছুকাল তো কোন জাপানী দেশের বাহিরে বা কোন ভীন দেশীও জাপানের ভিতরে ঢুকতে পারেনী এমনকি চীনারাও জাপানে ঢুকতে পারেনী, এইভাবেই তাদের সম্ম্রাটগন তাদের বর্হিজগত থেকে সম্পুর্ন পৃথক রেখেছে।
অনেকেই মনে করেন জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরই শিল্প জগতে ব্যাপক উন্নয়ন লাভ করেছে। আসলে জাপান ১৮৬০ সালের পর থেকেই তাদের ছাত্রদের ইউরোপে পাঠাতে শুরু করে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশেষ করে বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য আর তারা এমন ভাবে বিজ্ঞান শিক্ষা লাভ করে যে দুই জেনারেশনের মধ্যেই তারা ইউরোপের সমকক্ষ হয়ে উঠে এমনকি রাশিয়াকে তারা ১৯০৪-১৯০৫ সালের দিকে একটা যুদ্ধে হারিযে দেয়, কোরিয়া অাক্রমন করে দখল করে নেয় এবং তাদের সেনাবাহিনী চীনের মান্চুরিয়া বা উত্তর পুর্ব চীন পর্যন্ত পৌছে যায় আর চীনের অভ্যন্তরে তারা রেল লাইন বানানোয় লেগে পরে। পৃথিবীর বুকে জায়গা করে নেয় জাপান সাম্রাজ্য।

কোরিয়াতে বৌদ্ধ ধর্ম এসেছিল ভারতে থেকে চীনের মধ্য দিয়ে আর কনফুসীয় দর্শন এসেছিল খাস চীন থেকে। ভারতীয় শিল্পকলার আদর্শ কোরিয়া আর জাপানে পেীছেছিল চীনের মধ্যস্ততায়। কোরিয়ায় শিল্পকলা খুবই সমৃদ্ধি লাভ করল বিশেষ করে ভাস্কর্য শিল্পে, স্পাপত্য শিল্পে তারা অনুসরন করল চীনকে আর জাহাজ শিল্পে হয়ে উঠল সর্বেসর্বা যা দিয়ে তারা একবার জাপান আক্রমন করেছিল। তবে আধুনিক জাপানীদের পুর্ব পুরুষ কোরিয়া থেকে এসে থাকবে হয়ত আর কিছু হয়ত মালয় থেকেও তবে জাপানিরা মঙ্গোলিয়ান বংশোদ্ভব। জাপানের উত্তরাংশে কিছু লোক দেখা যেত যারা সম্ববত জাপানের আদিম আদিবাসী হবে তাদের গায়ের রং ফর্সা, রোমশ দেহ আর জাপানিদের থেকে ধরন ধারন আলাদ।
আদিযুগে জাপানের নাম ছিল ইয়ামাতো বা যামাতো। ২০০ খৃস্টাব্দে ইয়ামাতো রাষ্টের সম্রাজ্ঞী ছিল জিঙ্গো নামের এক নারী। ইংরেজী ভাষায় জিংগো শব্দের অর্থ দাম্ভিক সাম্রাজ্যবাদী । এর দুইশ বছর পরে অর্থাৎ ৪০০ খৃস্টাব্দের দিকে চীনা ভাষাও সেখানে প্রচলিত হয় কোরিয়ার দৌলতে আর সেইসাথে বৌদ্ধ ধর্মও প্রচলিত হয় সেখানে। জাপানে প্রচলিত ধর্মের নাম ছিল সিন্টোধর্ম । সিন্টো কথাটা চীনা শব্দের যার অর্থ দেবতাদের পথ। আসলে এই ধর্মটা ছিল প্রকৃতি পুজা আর পূর্বপুরুষ পুজা এই দুইয়ের সংমিশ্রন। আর এই ধর্মে পরকাল বলে কিছু ছিলনা এটা ছিল যোদ্ধা জাতীর ধর্ম। আর আজও এই সিন্টোধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্ম একসাথে সমান্তরালে চলে আসছে জাপানে।আর সিন্টোধর্ম জাপানীদেরকে ভয়ংকর যোদ্ধাজাতীতে পরিনত করেছিল তাই শাষক শ্রেনীও এই ধর্মের পক্ষে ছিল । সিন্টোধর্মের মুল কথা ছিল দেবতাদের পুজা কর এবং তাদের বংশধরদের প্রতি অর্থাৎ রাজা বা সম্রাটদের প্রতি আনুগত্য থাকো। আর এই জন্যই গত ২/৩ হাজার বছরে জাপানের শাষক শ্রেনীর বিরুদ্ধে কখনও তেমন কোন বড় বিদ্রোহ হয়নি আর এটাই জাপানের শাষক-শ্রেনীকে অজেয় করে তুলেছিল। এই ধর্ম জাপানের জনগনকে তাদের শাষকশ্রেনীর প্রতি অনুগত করে তুলত।
আর বৌদ্ধ ধর্মের প্রচলন যখন থেকে জাপানে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকল তখন থেকেই জাপানের সাথে কোরিয়া ও চীনের আনাগোনা বাড়েতে লাগল। জাপানী সম্রাটদের দুতগনের আনাগোনা চীনের তাং বংশের রাজত্বকালে বেড়েই চলল আর দুইদেশের সংস্কৃতির ব্যবধান ক্রমেই কমতে লাগল। আসলে জাপানীরা এত ভাল করে অনুসরন করতে পারে এরকম কোন জাতী পাওয়া যায় না কোথাও । তারা ভাল মন্দ দুইটাই আমদানী করল চীন থেকে। তাং বংশের রাজত্বকালে অর্থাৎ ৬১৮-৯০৭ চীনের রাজধানী ছিল সিয়ান-ফু যা পুর্ব এশিয়ার খুব সমৃদ্ধ নগর ছিল । ইয়ামাতোর লোকরা অবিকল সিয়ান-ফু নগরের মতো করে একটা নতুন শহর স্হাপন করল যার নাম ছিল নারা। বাস্তবিক অপরকে অনুকরন করার অদ্ভুদ ক্ষমতা এই জাপানিদের ।
চীনা সম্ম্রাট একবার জাপানের সম্ম্রাটকে এক বানী প্রেরন করেছিল তখন নারা নগর ছিল জাপানের রাজধানী আর সেই চিঠিতে জাপানের সম্ম্রাটকে চীনের সম্ম্রাট সম্বোধন করেছিলেন তাই- নিহি- পুং- কোক এর সম্ম্রাট। এই কথাটার অর্থ সুর্যোদয়ের রাজ্য। নামটা জাপানীদের খুব পছন্দ হল। তখন থেকে তারা ইয়ামাতো নামটার পরিবর্তে দাই নিপ্পন অর্থাৎ সুর্যোদয়ের দেশ এই নাম ব্যবহার করতে শুরু করল। আর নিপ্পন কথা থেকে জাপান নামের উৎপত্তি, প্রায় ৭০০ বছর আগে চেংগিশ খানের জামানায় ইতালীয় পরিব্রাজক মার্ক পোলো চীন দেশে গিয়েছিল তবে সে কখনও জাপানে যায় নি তবে তার ভ্রমন কাহিনীতে জাপানের কথা লিখেছে। নি- পুং কোক নামটা সে শুনেছিল। আর এই নামকে সে লিখেছিল চিপাংগো আর তা থেকেই জাপান নামের উৎপত্তি।

অনেক ধন্যবাদ কস্ট করে পরার জন্য ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৪:০৯

সনেট কবি বলেছেন: পড়ে ভাল লাগল।

০১ লা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:২৯

Tusher Khan বলেছেন: আপনাদের আগ্রহ দেখে আরও খানিকটা আপডেট করলাম।

২| ৩০ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:০৫

রাজীব নুর বলেছেন: বেশ।
আপনি কি জাপান থাকেন।

০১ লা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৩:০৮

Tusher Khan বলেছেন: আমি ভাই ঢাকা থাকি কল্যানপুরে।

৩| ৩০ শে জুন, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৩

রাকু হাসান বলেছেন: জানানোর জন্য কৃতজ্ঞ.....কিছু তথ্য জানার সু্ভাগ্য
হলো

০১ লা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:২৯

Tusher Khan বলেছেন: আপনাদের আগ্রহ দেখে আরও খানিকটা আপডেট করলাম।

৪| ০১ লা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৯

লায়নহার্ট বলেছেন: {প্রিয়তে নিলাম ও মনোযোগ দিয়ে পড়লাম, আরো কয়েকবার পরতে হবে। আপনি কি জানেন আপনি যদি লেখায় ছবি ব্যবহার করেন তবে লেখা দেখতে ও পড়তে সুন্দর হবে। আর তথ্যবহুল লেখার সাথে লেখার সোর্স দিলে ভালো হয়। শুভকামনায়...লায়নহার্ট}

৫| ০১ লা জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৫:৫০

লায়নহার্ট বলেছেন: {দুঃখিত 'পড়তে' হবে}

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.