নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[email protected] ০১৯১১৩৮০৭২৮গল্প ও রান্না udrajirannaghor.wordpress.comপ্লে স্টোরে ‘গল্প ও রান্না’ এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! আনন্দ সংবাদ! বাংলা রেসিপি নিয়ে এই প্রথম প্লে স্টোরে এন্ড্রয়েড এপ্লিকেশন! ‘গল্প ও রান্না’ এখন Play Store এ Apps হিসাবে আপনার হাতের কাছে। নেট কানেশন বা WiFi জোনে থেকে Play Store এ যেয়ে golpo o ranna বা “Golpo O Ranna” বা “com.udraji.rannaghor” লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। খুব সহজেই আপনি আপনার এন্ড্রয়েড মোবাইলে ‘গল্প ও রান্না’র আইকন ইন্সটল করে নিতে পারেন। ফলে আপনাকে আর মোবাইলে আমাদের সাইট দেখতে লিঙ্ক বা কোন ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে না। নেট কানেশন বা ওয়াইফাই জোনে থাকলেই আপনি ওয়ান ক্লিকেই গল্প ও রান্না দেখতে পাবেন।
আজকের বিচিত্র পেশার নায়কের নাম মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, ডাকনাম মিজান। বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায়। প্রায় বিশ বছর আগে তিনি ছাত্রাবস্থায় পরিবারের দারিদ্রার কারনে এবং পড়াশুনা ভাল না লাগার কারনে এই শহরে চলে আসেন এবং পরিচিত চাচার মেসে উঠেন। চাচা পেশায় একজন মুড়ি বিক্রেতা ছিলেন এবং তার সাথে বেশ কয়েকদিন এটা দেখে তিনি নিজেই একদিন চাচাকে বলেন, তিনি নিজেও এই ব্যবসা করবেন, খুব সামান্য পুঁজিতে এই ঝালমুড়ি বানানো দিয়ে জীবনের প্রথম কাজ শুরু করেন।
প্রথম দিনের ব্যবসার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তেজগাঁও পলিটেকনিকের সামনে প্রথম দিনের কথা এখনো চোখে ভাসে, কত টাকা বিক্রি হয়েছিল তা মনে নেই তবে বেশ ভাল বিক্রি হয়েছিল। ব্যস, সেই থেকে শুরু।
ঝালমুড়ি বিক্রি করে তিনি ভাল আছেন বলে জানালেন তবে বিক্রি আগের মত নেই বলে কিছুটা আক্ষেপ আছে। সকাল এগারটা থেকে একটা পর্যন্ত কাজ করে বেগুনবাড়ির মেসে ফিরে খেয়ে দেয়ে কিছু সময় ঘুমিয়ে পড়েন আবার বিকেল পাঁচটা থেকে শহরের অন্য কোথায়ও দোকান সাজিয়ে বসেন। চলে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত। বিশেষ করে বিকেলে মগবাজার এলাকার কোথায়ও বসতে পছন্দ করেন। রাতে বাসায় ফিরে সব কিছু ঘুচিয়ে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে উঠে শুরু করেন নিজের কাজ। প্রথমে বাজারে যান, প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনে বাসায় ফিরে আসেন এবং সেগুলো ধুয়ে বা যা যা কাটার তা কেটে সাজিয়ে তোলেন। মুড়ি, টমেটো, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, লেবু, বিট লবন এবং এক প্রকারের বিশেষ মশলা! সব কাজ নিজে করে থাকেন। তবে সকালের নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবার মেসের একজন বুয়া করে দেন এবং ব্যবসার রান্নার একটা বিশেষ কাজ তিনি নিজে করেন। হ্যাঁ, ঝালমুড়ির বিশেষ মশলার রান্না।
মিজান আমাকে জানালেন, এই বিশেষ মশলা মিক্সে প্রায় ১৬ ধরনের মশলা দিয়ে রান্না করা হয়, সাথে থাকে সরিষার তেল, পানি দেন না। আগে এই মশলা তেরী হত পানি দিয়ে এখন আর পানির দেন না, ফলে এই মশলার স্বাদ ও ঘ্রান অনেকদিন অটুট থাকে, একদিন বানালে অনেকদিন ব্যবহার করা যায়। চাচা থেকে যে মশলা বানানো শিখে ছিলেন সেটা এখন আর বানাতে চান না কারন তিনি তার কাষ্টমারদের রুচি বুঝতে পারেন। কাষ্টমাররা এখন এই মশলার ঘ্রান ভাল পান।
ব্যক্তি জীবনে মিজান বিবাহিত এবং দুই ছেলের পিতা, স্ত্রী ও সন্তানরা গ্রামের বাড়িতে থাকেন। এই ব্যবসার মাঝেই এক সময়ে বিবাহ করেন, পাত্রী পূর্বের পরিচিত, পাশাপাশি গ্রামের। ইচ্ছা করেই অভিজ্ঞতার কারনে জানতে চাইলাম, তিনি যে এই ঢাকা ঝালমুড়ির ব্যবসা করেন সেটা তার স্ত্রী ও ছেলেরা জানেন কি না! মিজান হেসে জানালেন, না, বিয়ের সময় এই পেশার কথা বলা হয় নাই, তবে বিবাহের প্রায় মাস খানেক পর স্ত্রী বুঝতে পারছিলেন, তিনি এমন একটা কাজ করেন। তবে এখন আর এই ব্যবসার কথা বলতে লজ্জা পান না, কারন এই ব্যবসার কারনে তিনি স্বাভলম্বী এবং বেশ আরামে দিন কাটছে, ছেলেদের লেখা পড়া শিখাতে পারছেন, বলতে গেলে এখন আর অভাব নেই।
প্রতিদিন কমের পক্ষে পাচশত টাকা লাভ থাকে, কখনো এর বেশি লাভ হয়। ব্যবসায় তেমন পুঁজি লাগে না, এখন মুড়িও কাওরান বাজার থেকে বাকীতে নিয়ে আসতে পারেন, পরের দিন দাম দিলেও চলে। আর চলাচলে তো স্বাধীনতা আছেই, মন চাইলে বাড়ী ফিরে যেতে পারেন যে কোন সময়ে। তবে প্রতি মাসেই একবার বাড়ি যান, কখনো দিন পনর থেকে ফিরে আসেন। হাতে টাকা জমলেই হল!
প্রাসঙ্গিক ভাবে অনেক কথা হল, তিনি বেগুনবাড়ির যে মেসে থাকেন সেই রুমে আরো তিনজন থাকেন। তারা কি করেন জানতে চাইলে বলেন, একজন বাদাম বিক্রি করেন, একজন সিজন্যাল নানান প্রকার রস বিক্রি করেন (কখনো খেজুরের রস, কখনো তালের রস), একজন কি করেন সেটা তিনি জানেন না! আমি হেসে বললাম, রস বিক্রেতাই আমার আসল বিচিত্র পেশার মানুষ, যাকে আমি খুঁজে বেড়াই প্রতিদিন।
মিজান ভাইয়ের সাফল্য কামনা করি। আমাদের স্ট্রীট ফুডে ঝালমুড়ি বিশেষ স্থান দখল করে আছে, আমরা সেই ছোট বেলা থেকেই এই ঢাকা শহরে দেখে আসছি। আমাদের ছোটবেলায় স্কুলের সামনে এই ঝালমুড়ি বিক্রেতাদের দেখতাম এবং তখন আমরা খেতামও। মিজান ভাই জানালেন, মাত্র ৫০ পয়সা বা এক টাকায় আগে অনেক ঝাল মুড়ি দেয়া যেত এখন সেটা কল্পনাও করা যায় না, পাঁচ টাকার চাইলেও বিরক্ত লাগে! ১০টাকা থেকে এখন শুরু হলেই ভাল!
যাই হোক, স্বাভাবিক প্রশ্ন, ভবিষ্যতে কি করবেন? হেসে মিজান ভাই জানালেন, না তেমন কিছু চিন্তায় নাই। ছবি তোলায় অনুমতি চাইলে হেসে বলেন কোথায় লিখবেন? আমি জানালাম, নেটে টুকটাক লিখে থাকি। তিনি বললেন, যা লিখেন তা যদি দেখান তবে খুশি হব। এই সময় তার প্রান খোলা হাসি দেখে আমি আরো কিছু কথা বাড়াই। কি মোবাইল ব্যবহার করেন, দেখতে চাইলে দেখালেন। এন্ড্রয়েড ফোন, সিম্পনি। নেট কানেকশন আছে কি না জানতে চাইলে বললেন, হ্যাঁ মাঝে মাঝে ছেলে দেখে। আমি বললাম, বড় ছেলে এবার কোন ক্লাসে পড়ে? তিনি জানালেন, সে এবার এইটে পড়ছে তবে বেশ লম্বা হয়ে গেছে, মটর সাইকেল চালায়। ছেলের মটর সাইকেল চালানোর কথা শুনে আমি কিছুটা তাজ্জব। পরে জানলাম, গ্রামের বাড়িতে মিজান ভাইয়ের নিজের মটর সাইকেল আছে, তিনি নিজে কিনেছেন। নিজে বাড়ি গেলে নিজেও মটর সাইকেল চালান, বাড়িতে না থাকলে বড় ছেলে চালায়, স্কুল বাজারে যায়!
বিচিত্র এই দুনিয়া, বিচিত্র আমরা এই মানুষেরা!
বিচিত্র পেশাঃ ১৪ (কমলা কাহিনী!)
Click This Link
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৬
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ ব্রাদার।
শুভেচ্ছা নিন।
২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: স্বাধীন ব্যাবসা ...
কি মজা ক্ষিদে পেলে একটু খেয়ে ও নেয়া যায় ...
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৮
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ বোন।
হ্যাঁ, এই স্বাধীনতার ভাষা নেই। হা হা হা.।
আগামীতে আরো আরো বিচিত্র পেশা ও স্ট্রীট ফুড নিয়ে আসছি, আশা করি সাথে থাকবেন। আর আমার রেসিপি সাইট 'গল্প ও রান্না' তো চলছেই।
শুভেচ্ছা।
৩| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:১৭
অন্ধবিন্দু বলেছেন:
ধন্যবাদ রইলো, সাহাদাত।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:২০
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ অন্ধবিন্দু ভাই।
শুভেচ্ছা নিন।
৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১৩
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: শেয়ার করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ
মিজানের প্রতি রইল শুভকামনা
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৮
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ বোন।
৫| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১৭
সুফিয়া বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
আর মুড়িওয়ালা মিজানের জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৩৯
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ বোন।
৬| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:৫৩
সৌদি প্রবাসী আশরাফ বলেছেন: ভালোই ব্যাতিক্রম ধর্মী এক অভিজানে নেমেছেন দেখছি...দেশের আনাচে কানাচে ব্যাতিক্রম পেশাগুলোকে লেখার মাধ্যেমে ফুটিয়ে তুলছেন...ফেরিওয়ালা আইটেমে অনেক প্রকারের বিচিত্র পেশার খোঁজ পাবেন...তুলে এনে আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। আপনার লেখনীর সাফল্য কামনা করছি।
০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৪১
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: ধন্যবাদ সৌদি প্রবাসী ভাই।
আমিও প্রবাসী ছিলাম এক সময়ে, সেই সব কথা এখন মনে পড়ে কিন্তু লিখার সময় পাচ্ছি না।
বেঁচে থাকলে সেই সব কথাও একদিন লিখে ফেলবো।
শুভেচ্ছা।
৭| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৬
জনাব মাহাবুব বলেছেন: মিজানের দেশের বাড়ীতে মটরসাইকেলও আছে।
মিজনের জন্য শুভেচ্ছা।
৮| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:৪৫
সুমন কর বলেছেন: কিছুদিন ব্লগে ছিলাম না, তাই মিস হয়ে গিয়েছিল।
মিজান ভাইয়ের সাফল্য কামনা করি।
৯| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৫৬
মহান অতন্দ্র বলেছেন: পছন্দের সিরিজ। ভাল লাগলো ।
১০| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:২০
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: বিচিত্র পেশাঃ ১৬ (দেলোয়ার হোসেন বয়াতী)
http://www.somewhereinblog.net/blog/udraji/30011921
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৩৫
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: খুবই ভাল লাগলো এই পেশার বিস্তারিত জেনে।। সাথে মিজানের প্রতিও রইলো অনেক শুভেচ্ছা।। ধন্যবাদ আপনাকেও।।