নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কুরআন পড়ি বুঝে-শুনে

কুরআন বুঝা সহজ

সত্য ও ন্যায়ের পথা চলা জীবনের আসল প্রত্যয়

কুরআন বুঝা সহজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুরআন বুঝার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি কোথায়?

২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:৫০

কুরআন অধ্যয়ন ও গবেষণার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন অত্যন্ত জরুরী। সতর্কতার অভাবে এক্ষেত্রে যথেষ্ট ভুল-ত্রুটি হয়ে যেতেপারে; কেননা অনেক সময় কুরআনের কোন বক্তব্যের সাধারণ অর্থ কেউ বুঝে থাকতে পারেন, অথচ ঐ বক্তব্য দ্বারা বিশেষ অর্থটিই উদ্দেশ্য, সাধারণ ও ব্যাপক অর্থ নয়। কখনো পাঠক বুঝে থাকতে পারেন এমন অর্থ যা বুঝানো কুরআনের উদ্ধেশ্য নয়। এমনটি সাহাবাগণের কারো কারো ক্ষেত্রে ঘটেছিল।

আয়েশা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘‘কিয়ামতের দিন যার হিসাব নেয়া হবে তার আযাব হবে।’’ আমি বললাম, আল্লাহ কি বলেন নি,
﴿فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَاباً يَسِيراً﴾
‘‘অতঃপর অত্যন্ত সহজভাবেই তার হিসাব নিকাশ করা হবে।’’[17]
তিনি বললেন, ‘‘এটা সে হিসাব নয়, বরং এটা শুধু উপস্থাপন মাত্র। কিয়ামতের দিন যার হিসাব পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে নেয়া হবে, তার আযাব হবে।’’[18] এখানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, আয়েশা রা. হিসাবের সাধারণ ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছিলেন যা কম বেশী সব ধরনের হিসাবকে অন্তর্ভুক্ত করে। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্পষ্ট করে দিলেন যে, আয়াতে উল্লিখিত হিসাব মানে হল - মুমিন ব্যক্তির কাছে তার আমল উপস্থাপন, যাতে সে আল্লাহর সে অনুগ্রহ অনুধাবন করতে পারে যা তিনি দুনিয়ায় তার দোষ গোপন করার মাধ্যমে এবং আখিরাতে ক্ষমা করার মাধ্যম করেছিলেন।[19]

আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রা. বলেন, যখন অবতীর্ণ হল ﴿الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ﴾ ‘‘যারা ঈমান এনেছে এবং নিজেদের ঈমানকে যুলম দ্বারা মিশ্রিত করেনি।’’ আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে তার নিজের উপর যুলম করে নি? তিনি বললেন, ‘‘আয়াতটির ব্যাপারে তোমরা যা বলছ বিষয়টি তেমন নয়, বরং যুলম মানে এখানে শির্ক। তোমরা কি শোন নি লুকমান তার ছেলেকে বলছিলেন, ﴿لا تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ﴾ “হে বৎস, তুমি আল্লাহর সাথে শরীক করো না, নিশ্চয় শির্ক বড় যুলম।’’ [সূরা লুকমান : ১৩][20]
এ ধরনের উদাহরণ অনেক। তবে এছাড়াও আরো অনেক ধরনের ভুল হয়ে থাকতে পারে। যেমন :
1. চিন্তা-গবেষণার ত্রুটির কারণে অনুধাবনে ত্রুটি।
2. যে সব মৌলিক বিষয় একজন মুসলিমের জানা থাকা উচিত, তা জানা না থাকার কারণে কুরআন বুঝার ক্ষেত্রে ত্রুটি।
3. প্রবৃত্তির অনুবর্তী হওয়ার কারণে সৃষ্ট ত্রুটি। কারণ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোন ব্যক্তির চিন্তা-চেতনা ও আকীদায় পূর্ব থেকেই একটি বিষয় স্থির হয়ে আছে, যে কোন ভাবেই সে নিজের ধারণাটি কুরআনের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। ফলে আয়াত দ্বারা সেভাবে বুঝা না গেলেও সে নিজের আকীদা ও পূর্বাহ্নে স্থিরীকৃত বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করার জন্য আয়াতের বিপরীত অর্থ বুঝে থাকে। অথচ মুলিম মাত্রই উচিত হল সর্বাবস্থায় আল্লাহর মাকসুদ ও প্রতিপাদ্য বিষয়টি সঠিকভাবে বুঝে নেয়া। কেননা সঠিকভাবে বুঝার জন্য ব্যক্তির সদিচ্ছা, সত্যানুসন্ধিৎসা এবং ভেতর ও বাহিরের সত্যিকার তাকওয়া থাকা প্রয়োজন। প্রবৃত্তির অনুসরণ, দুনিয়া পূজা, প্রশংসা পাওয়ার লোভ ও তাকওয়া বিসর্জন ইত্যদির উপস্থিতিতে সঠিক বুঝ ও উপলব্ধি কখনোই আসবে না।[21]

আরেকটি কথা স্মরণ রাখতে হবে ,কুরআন নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করার মানে এটা নয় যে, ব্যক্তি নিজেকে মুফাসসির হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন, তাই এখন থেকে আলেমগণের তাফসীর না দেখে এবং ভালভাবে বুঝে না নিয়েই প্রত্যেক আয়াতের ব্যাখ্যায় নিজ অভিমত পেশ করবেন না। ভুলে গেলে চলবে না, তাফসীর মানেই হল আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক উদ্দিষ্ট অর্থের বর্ণনা, সঠিক নিয়ম-নীতির আলোকে তাফসীর করা না হলে ভুল করার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

ইবন আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,‘‘যে ব্যক্তি কোন জ্ঞান ছাড়া কুরআনের ব্যাপারে বক্তব্য প্রদান করে, সে জাহান্নামে তার স্থান বেছে নিল।’’[22]

আবু বকর সিদ্দীক রা. বলেন, ‘কোন্ যমীন আমাকে আশ্রয় দেবে আর কোন্ আকাশ আমাকে ছায়া দান করবে যদি আমি আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে এমন কিছূ বলি যা আমি জানি না’।[23]

উবায়দুল্লাহ ইবন মুসলিম ইবন ইয়াসার তার বাবার কাছ থেকে বর্ণনা করে বলেন,‘যখন তুমি আল্লাহ সম্পর্কে বক্তব্য দেবে তখন থেমে গিয়ে দেখ, এর পূর্বে ও পরে কি আছে।’ প্রখ্যাত তাবেয়ী মাসরুক বলেন,‘তাফসীর করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাক; কেননা তাতো আল্লাহর পক্ষ থেকে বর্ণনা ছাড়া আর কিছু নয়।’ সাহাবা এবং তাবেয়ীগণের এ সকল বর্ণনা থেকে প্রতীয়মান হয় তারা তাফসীরের ক্ষেত্রে ইলম ও জ্ঞান ছাড়া কথা বলতে কি বিশাল সতর্কতা অবলম্বন করতেন।[24] (সংকলিত)

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুন, ২০১৫ রাত ১:০৭

হানিফঢাকা বলেছেন: The Quran repeatedly says it explain itself, meaning its a self explanatory. So there is no other book, hadith, tradition is needed to explain itself. Quran has nothing to do with so called Mufassir.

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:৫৫

আবু আঈমান বিন শাহাদাত বলেছেন: দারুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.