![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অনেক কথা বলার থাকে, কিন্তু সে সকল কথা আর ধ্বনি-বর্ণের সমন্বয়ে শব্দ হয়ে ওঠে না। কেন ওঠে না জানেন? কারণ কিছু কথা মনে ভেতর রাখলেই বেশি ভালো লাগে। প্রকাশ করার সাথে সাথেই অনুভূতি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাবে। একভাগ আনন্দের এক ভাগ দুঃখের। তখন কল্পনার আশ্রয় হাতড়াতে হবে অনুভূতিগুলো একত্রে জড়ো করবার জন্যে। কি প্রয়োজন... এত কষ্ট করার!! থাকুক না কথাগুলো ধ্বনি বর্ণ ছাড়াই ...
আজকাল পড়াশুনা ঠিক মত হয়না। কোনকালেই হয়নি যদিও। পড়াশুনার প্রতি আগ্রহটা আমার কোনকালেই ছিল না। তবুও আগে যা একটু হত, এখন তাও হয় না। আগে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে হয়তো গল্পের বই না হয় আঁকিবুঁকি- এভাবেই চলত। এখন এইসব কিছুতেই আগ্রহ পাই না। গল্পের বই পড়তে বসলে কিংবা আঁকতে বসলে কতবার যে উঠি, উপরওয়ালা জানেন।
বয়সটা খুব বেশী হতে না হতেই জীবনের রঙ গুলি চটে যেতে শুরু করেছে। ডিটারজেন্টের মত ঘষামাজার এ জীবনে কোনকিছুতেই যেন আগ্রহ খুঁজে পাই না। দিনগুলি কাটে বড্ড অবহেলায়, শুয়ে-বসে। ঘরে থাকতে একেবারেই ভালো লাগে না। কিচ্ছুক্ষণ পর পর বের হয়ে যাই। ইচ্ছে হয় শহরের কোলাহলে মিশে যেতে। আর দশটা মানুষের মত চিন্তা করতে শিখতে। ওদের দেখি প্রাণ ঘুরে হাসতে, কথা বলতে। আমিও হাসি, কিন্তু জোর করে। সে হাসির মধ্যে কিসের যেন একটা অভাব। বাইরের মানুষগুলিকে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখি। চেষ্টা করি ওদের মধ্যে ঢুকে যেতে। ওদের মত করে ভাবতে। কখনও পারি, কখনও পারি না।
দিনরাত মাথায় ঘুরতে থাকে বিচ্ছিন্ন চিন্তাভাবনা। কখনও সেগুলি ধরতে পারি, আবার কখনও না। যেগুলি ধরা পড়ে, লিখে রাখি কাব্যের ভাষায় কিংবা কল্পনার মিশ্রণে।
ত্রৈধ বিন্দুতে পানি কঠিন, তরল, বায়বীয়- তিন অবস্থাতেই থাকতে পারে। মানুষের মস্তিষ্কে এরকম একটা ত্রৈধবিন্দু থাকলে ভালো হতো। এই ত্রৈধ বিন্দুটা নেই বলেই মস্তিষ্কে একটা চিন্তা থাকা অবস্থায় অন্য একটা সাংঘর্ষিক চিন্তার অনুপ্রবেশে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা অনুভুত হয়। তখন পুনরায় সাম্যাবস্থায় ফিরে যেতে হলে যেকোনো একটার বহির্গমন ঘটাতে হয়। এই বহির্গমন ঘটে কখনও কথা, কখনও লেখনীর মাধ্যমে। আবার কখনও আত্মসমালোচনায়।
মানুষের মাথায় এরকম বিন্দু আছে যার নাম এমিগডালা। সুফী সাধক ব্যতীত খুব কম মানুষ সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে। কিন্তু সব মানুষ তো আর সুফী সাধক না। সেটা সুত্রের ব্যাতিক্রম। নাহ, ব্যাতিক্রম না। ওই যে বললাম আত্মসমালোচনার কথা। ওইটাই নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে।
অভিব্যাক্তিগুলি হয় দুর্বোধ্য, রহস্যময়। এই নীরব রহস্যময়তার সাথে মিল আছে প্রকৃতির- গাছের, মেঘের, জীবজন্তুর কিংবা নারীর। কখনও সম্পূর্ণ সত্যটা লিখতে হয় না। সত্যের সাথে কখনও কল্পনা, কখনও আধ্যাত্মিকতা আবার কখনও মিথ্যার মিশ্রণ ঘটাতে হয়। তখন সেটা হয় শ্রুতিমধুর, নিখুত মিথ্যের বন্যা বয়ে যায় তাতে। কখনও আবার সত্যের ছিটেফোঁটাও থাকে না তাতে। কারণ সত্যি কথায় প্রাণ থাকে না,উন্মাদনা থাকে না, বর্ণাট্যতা থাকে না।
অস্থিরতা তৈরী করাও একজন লেখকের কাজ। লেখক পাঠকের ভিতরে অস্থিরতা তৈরী করবেন। তাই লেখককে প্রায়ই মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়। সত্যটাকে মনে হয় অনুশাসন, কিন্তু মিথ্যে শোনায় কবিতার মত।
আমি লিখি, লিখে যাই। ইদানীং কোন কিছু মাথায় ঘুরঘুর করলে না লিখে কেন জানি থাকতে পারি না। মনে হয় মাথাটা ফেটে চৌচির হয়ে যাবে। লিখাগুলি মানুষ থেকে মানুষে হয়তো হাত বদল হয়, এক টাকার তাম্র আধুলির মত। তারা উলটে পালটে দেখে কিছুক্ষণ, এরপর তাদের চিন্তার পরিধির মধ্যে হয়তো কিছু একটা বলে দেয়।
সেদিকে খেয়াল নেই। যার যা মনে হয় বলুক। প্রকৃতি সবাইকে একটা নির্দিষ্ট পরিধির মধ্যে ইচ্ছে মত চলাফেরার করার অধিকার দিয়েছে। সীমা লঙ্ঘন না করলেই তো হল। আমার পরিধিটা বোধহয় রাস্তার পাশের স্ট্রিট লাইটের আলোয় আলোকিত ফুটপাতের ওই সামান্য অংশটুকু।
২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৫
ঊণ মানব বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই... লেখালেখি নতুন শুরু করেছি...
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১২:৩৮
খেয়া ঘাট বলেছেন: কখনও সম্পূর্ণ সত্যটা লিখতে হয় না। সত্যের সাথে কখনও কল্পনা, কখনও আধ্যাত্মিকতা আবার কখনও মিথ্যার মিশ্রণ ঘটাতে হয়। তখন সেটা হয় শ্রুতিমধুর, নিখুত মিথ্যের বন্যা বয়ে যায় তাতে।
আপনি খুব চমৎকার লিখেন। অনেক শুভকামনা রইলো ভাই।