নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঊণ মানব

অনেক কথা বলার থাকে, কিন্তু সে সকল কথা আর ধ্বনি-বর্ণের সমন্বয়ে শব্দ হয়ে ওঠে না। কেন ওঠে না জানেন? কারণ কিছু কথা মনে ভেতর রাখলেই বেশি ভালো লাগে। প্রকাশ করার সাথে সাথেই অনুভূতি দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাবে। একভাগ আনন্দের এক ভাগ দুঃখের। তখন কল্পনার আশ্রয় হাতড়াতে হবে অনুভূতিগুলো একত্রে জড়ো করবার জন্যে। কি প্রয়োজন... এত কষ্ট করার!! থাকুক না কথাগুলো ধ্বনি বর্ণ ছাড়াই ...

ঊণ মানব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘোর

১০ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:০৯

কোনকিছু হারিয়ে ফেলার আগে মানুষের মধ্যে যে অনুভূতিটা কাজ করে তা হল ভয়, আর পরে কষ্ট। তবে কষ্টটা ঠিক পরপরই কাজ করে না। তাহলে যেটা কাজ করে, সেটা কি?



কোন কিছু হারিয়ে ফেলার পর মানুষের তৎক্ষণাৎ কিছুই মনে হয় না। হারিয়ে ফেলার পর মানুষ কিছুক্ষণের জন্যে হত-বিহ্বল হয়ে পড়ে। কিছু কালের জন্যে নিউরনগুলি অকেজো হয়ে পড়ে। মানুষ পতিত হয় এক অন্ধকারাচ্ছন্ন জগতে।



অনেক কিছু মাথায় ঘুরতে থাকে। বিচ্ছিন্ন চিন্তাভাবনাগুলি। কখনও আবার দেখা যায় মানুষ ভাবনাগুলি অত্যন্ত যুক্তি সহকারেও চিন্তা করতে পারে, কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। প্রবল শোকে মানুষের মধ্যকার যুক্তির ব্যাপারটা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু সে তখন প্রবল শোক অনুভব করে না। মস্তিষ্কের যে অংশ শোক অনুভব করে সে অংশটা অকেজো হয়ে যায়। মনে হয় হৃৎপিণ্ড ঠিক মত মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন করতে পারছে না।

আচ্ছা, তাহলে কি হৃৎপিণ্ড কি থেমে যায় তখন ধীরে ধীরে? সে কি মারা যাতে থাকে? নাকি সে অধিক শোকে পাথর হয়ে যায়?



চিন্তা করা যায়? একটা মানুষ এদিক ওদিক চলাফেরা করছে কিন্তু সম্পূর্ণ অনুভূতিহীন। চিন্তা করা যায়? সবাই কাঁদছে। কিন্তু সে কাঁদতে পারছে না। আসে পাশের বুড়ো বয়স্করাও চিৎকার করে কাঁদতে পারছে। কিন্তু সে কাঁদতে পারছে না।



ব্যাপারটা মাথায় ঠিকমত ধরা দেয় না। অনুভূতিগুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে এদিক ওদিক ছিটকে পড়ে আর পাগলের মত এদিক-অদিক ছোটাছুটি করে, কিন্তু বিচ্ছিন্ন অনুভূতিগুলিকে এক করা যায় না। এভাবে জলজ্যান্ত একটা মানুষের মধ্যে লালিত হওয়া স্বপ্নগুলির মৃত্যু ঘটে। সে থাকে ঘোরের মধ্যে। সে ঘোর ব্ল্যাক হোলের মত অসীম আর গাঢ় অন্ধকার।

দূর থেকে ধক ধক করে শব্দ শোনা শুধু সে অন্ধকারে। কিসের শব্দ ? হৃৎপিণ্ডের ? ঘোর লাগা অবস্থায় হৃৎপিণ্ডের শব্দ এত স্পষ্ট হয় ? আপাত দৃষ্টিতে তখন মানুষগুলিকে জীবিত মনে হলেও মৃতের সাথে তার পার্থক্য শুধু স্বতঃস্ফূর্ত চলাফেরাতেই। এই জন্যেই হয়তো শব্দটা এত স্পষ্ট শোনায়।



মানুষের মৃত্যু একবারই হয় কিন্তু এটা সত্যি যে সেই মৃত্যুর আগেও মানুষ একাধিকবার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে। মানুষ এই দ্বিতীয় মৃত্যুকে ঘোর বলে চিহ্নিত করে থাকে।



ঘটনাটা হয়তো হবে গতকালের। অথচ মনে হয় যেন কত যুগ পেরিয়ে গেছে ইতোমধ্যে। ঘোর, এই একটি ব্যাপারে ভীষণ পারদর্শী। দুজন লোকের মাঝে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলে অসম্ভব দ্রুততায়। কিন্তু রাত আর সকালের মধ্যে স্থাপন করে দেয় অসীমকালের ব্যবধান।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.