নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতিদিন আধপেটা ভাত জুটলেও আজ মকিমের পেটটা একেবারেই খালি,দুই গ্লাস গরম জলের সাথে পকেটে থাকা একটা এক টাকার নোট দিয়ে দুপুরে আট আনা দামের দুটি পেয়াজি তার সমুদ্র সমান গাটে ইঁদুর দৌড় চলতেছে, চলুক।
মনিরাদের বাসার কিচেন আজ কোন থালা-বাটির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছেনা, আজ মনে হয় আন্টির খুব মন খারাপ,মাসের ছাব্বিশ তারিখ বাসার মাস খরচের যা কিছু সমস্ত কিছুই শেষ। অল্প কিছু মুড়ি আছে,চা-পাতি থাকলে ও চিনি আর দুধ একেবারে নেই। মাষ্টার সাহেব কে তো আর শুধু মুড়ি দিয়ে আপ্যায়ন করানো যায়না তাই অনেক ব্যস্ততার ভান দেখিয়ে কিছুক্ষণ গোসলখানার পানির কল ছেড়ে কাপড় কাচা,কিচুক্ষন ঘরের ময়লা পরিস্কার এর ভান দেখানো,এই আর কি।
মন্টু সাহেবের মেজবান। প্রত্যেক বাড়ি থেকে একজন করে লোকের দাওয়াত,খুব জম্পেশ একটা খাবার দাবার হয়,কিন্তু মেজবানের খাওয়া দাওয়ার এক পর্যায়ে কিছু লোককে চিহ্নিত করা হয় যারা আগেও একবার খেয়েছিল এবং কিছু বাচ্ছা কিছিমের ছেলেমেয়েদের চিহ্নিত করা হয় যারা পলিথিনে করে খাবার সংগ্রহ করছিল। মকিমের ভাবনার ডানাগুলো পাখা মেলে এই একবেলার দুইবার খাবার খেয়ে বা পলিথিনে মোড়ানো খাবার বাড়ির আধপেটা লোকটির জনম জনমের বুভুক্ষু ক্ষুধা মিটবে কি করে?
মকিম তখন ক্লাস এইটে পড়ে ,আর দশটা গ্রামের ছেলেদের মত তার ও খুব গরম গরম ভাত খেতে খুবই ভাল লাগে,সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় অবশ্য গরম ভাত খুব একটা জুটেনা,মাটির থালা ভর্তি পানির নিচে কিঞ্ছিত ভাত থাকে সাথে এক মুঠো লবণ আর অল্প পেয়াজ, বিকেলে পাঁচটার পরে যখন স্কুল ছুটি হয় তখন তার দুচোখ ভরা স্বপ্ন থাকে 'থালা ভর্তি গরম ভাতের'।বিসমিল্লাহ্ বলে খাও দেখবা পেট ভরে গেছে-মকিমের মায়ের এই একটা উক্তিই যতেষ্ট বাকী জীবন পার করে দেওয়ার জন্য, "বিসমিল্লাহ্"শব্দটার যে এত বিশাল অমোঘ শক্তি তা বোঝা যেত খাবার গলদকরণ পর্ব শেষে,কি যে শান্তিময়!
©somewhere in net ltd.