নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবসময় নিজেকে মানুষের সামনে বোকা হিসেবে উপস্থাপন করতে ভালোবাসি।যার মাধ্যমে মানুষকে সহজে চেনা এবং জানা যায়,কারন মানুষ বোকার সাথে চালাকি করে,চালাকের সাথে নয়।

uzraaa

সবসময় নিজেকে মানুষের সামনে বোকা হিসেবে উপস্থাপন করতে ভালোবাসি,যার মাধ্যমে মানুষকে সহজে চেনা এবং জানা যায়।কারন মানুষ বোকার সাথে চালাকি করে, চালাকের সাথে নয়।

uzraaa › বিস্তারিত পোস্টঃ

বয়সের ভার।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৫


৯৬ বছরের মমতাজ বেগম ঠিকমত তিনবেলা না খেলেও নিয়ম করে দুইবেলা ডাইব্রেটিক্সের ইনজেকশন নেয়া তার কাছে রুটিনে পরিনত হয়েছে। বৃদ্ধ বয়সে পেটের শান্তির চেয়ে দেহের শান্তি ঢের বেশি খুজে ফেরেন তিনি। বিভিন্ন রোগ মাকড়োসার জালের মত বাসা বেধেছে তার শরীরে।

মাঘ মাসের প্রচন্ড শীতের মধ্যে যখন সবাই সন্ধা আচ্ছাদিত হতেই বিছানায় নিপাতিত হয়ে সারারাত অঘোরে ঘুমিয়ে "গ্রীস্মের প্রখর রোদ্রে বটগাছের নীচে বসে মৃদু হাওয়া উপভোগ করার মত সপ্ন দেখে রাত পার করছে " এমন সময় মমতাজ বেগম কিছুক্ষন পরপর প্রসাব করার জন্য স্বসব্যাস্ত হয়ে যখনি নীচে নামতে যাবেন এমন সময় চৌকির পাশে থাকা তার নির্ভরতার একমাত্র সম্বল লাঠি ধরতে যাবেন তখনি সে কিছুটা গরম অনুভূত হলেন।

বালিশের পাশে থাকা টর্চলাইট যখন প্রজলিত করে নীচের দিকে দৃষ্টিনিপাত করলেন, তার হাত শাড়িতে ঠেকতেই ভেজা অনুভব করলেন। শীতের প্রচন্ড প্রকোপের মধ্যে ভেজা শাড়ির স্পর্শে তার ক্লান্ত শরীর শীতে শিহরে উঠলো।কিন্তু তার মনের মধ্যে কোন চেষ্টার চাঞ্চল্য নাই। রাত্রি নিস্তব্ধ শান্ত, বিশ্বপ্রকৃতি ঐ অগন্য নক্ষত্রলোকের চিরোকর্মের মধ্যে বিশ্রামে বিলীন।

মমতাজ বেগম বিক্ষিপ্ত মন এবং দুর্বল শরীর নিয়ে ওভাবেই কিছুক্ষন পার করলেন। ভেজা কাপড় ছেড়ে অন্য কাপড় পরিধান করবেন নাকি
ওটা পরেই শুয়ে পড়বেন এতক্ষন বসে এটাই ভাবছিলেন মমতাজ বেগম। অবশেষে তিনি ভেজা কাপড় পরিধান করেই শুয়ে পড়লেন,কারন
রশ্মিতে তার যে শাড়ি ঝুলছে তা হয়তো এই ভেজা কাপড়ের চেয়েও তুলনামূলক বেশি ঠান্ডা এই তার বিশ্বাস। অনেক চেষ্টার পরেও তার ঘুম আসছে না। এপাশ ওপাশ করে আরো কিছু সময় অতিবাহিত করলেন তিনি। তীব্র শীত তার হৃৎপিন্ডকে দুলিয়ে দিলো, তার সমস্ত শরীর ঠক ঠক করে কাপতে লাগলো।

মমতাজ বেগমের বয়সের ভারে তার সমস্ত শরীর দুর্বল হলেও সেটা তার মস্তিস্ককে এখনো স্পর্শ করতে পারেনি। তার স্বরন শক্তি ঠিক আগের মতই আছে। বিপদে ধৈর্যধারন করা এবং সৃষ্টিকর্তাকে ডাকার শক্তি এখনো যে প্রবলভাবে বিদ্যমান এটা তার কাজের মাধ্যমে জানান দেই। প্রচন্ড শীতের মধ্যে ভোরে উঠে ওযু করে সালাত আদায় করার মত প্রবল আত্নশক্তি এখনো তার মধ্যে বিদ্যমান।

বিগত বিশ বছরের মধ্যে সজ্ঞানে তার নামায কাযা হয়েছে এমন সাক্ষ্য দেয়া তার অপ্রিয় মানুষদের পক্ষেও বলা ভার। যত কষ্টই হোক,কখনো বসে,কখনো শুয়ে, কখনো বা ইশারার মাধ্যমে সালাত আদায় করে থাকেন। ধর্মের প্রত্যেকটা বিষয় করাই গন্ডায় মেনে চলার আপ্রান চেষ্টার কোন কমতি থাকে না। এমনকি তিনি তার একমাত্র ছেলের বউয়ের হাতের রান্না ছাড়া কখনো কারো হাতের খাবার পর্যন্ত স্পর্শ করেন না। এইতো সেদিন যখন দ্বিতীয়বারের মত স্টোক করলেন, তখন তার জ্ঞান ফেরার পর আশে পাশে আত্নীয় সজন অনেকের সমাগম লক্ষ করলেন। অনেকে বিভিন্ন প্রকার ফলমুল নিয়ে এসেছে কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও তাকে খাওয়ানো গেলো না।

তার বিশ্বাস যে তাকে যেই ফলমুল খাওয়ানো হবে তা হালাল নাকি হারাম টাকায় কেনা সেটা সমপর্কে সে ওয়াকিবহাল। এইজন্য একমাত্র তার ছেলের উপার্জনের টাকায় কেনা জিনিস ছাড়া কিছু খেতে নারাজ তিনি।

চলবে....

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.