![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
- হোঁচট খেয়েছি ঠিকই, কিন্তু থেমে যাইনি , হেরে যাব বলে তো, আর স্বপ্ন দেখিনি।
রাত তাখন ঠিক ১টা বাজে ঘড়িতে। এত্ত রাতে কলের পরিমান কম। সাবার মাঝেই একটা ঝিমুনি ভাব। ঠিক এই সময়য়েই কল বাজে আনন্দ'র কল স্টেশনে।
আনন্দঃ শুভ সন্ধ্যা আনন্দ বলছি,আপনাকে কিভাবে সহযোগিতা করতে পারি?
(ফোনের ওপাশ থেকে কেবলই কান্না'র শব্দ। কাঁদছেন এক বৃদ্ধ পুরুষ। গভীর রাতে তার কান্না'র শব্দে কোন কথাই বোঝা যায় না তবে তার কান্নার শব্দ কানে বাজে খুব)
আনন্দঃ (খুবই উদগ্রীব হয়ে) হ্যালো স্যার, শুনতে কি পাচ্ছেন আমার কথা? আমি আপনার কোন কথা'ই বুঝতে পারছি না।
(এবার তার ফোঁপানো শব্দে ভাঙ্গা ভাঙ্গা কথা বোঝা যায়)
বৃদ্ধঃ বাবা, তোমার কাছে এম্বুলেন্সের নাম্বার আছে? আমার মেয়ে প্রেগনেন্ট। তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। বাসায় আমরা দুই বুড়া বুড়ি ছাড়া কেউ নেই।
আনন্দঃ স্যার আমি আন্তরিকভাবে দুখঃখিত আপনার সমস্যার জন্য, এম্বুলেন্সের নাম্বারটি আপনি জানতে পারবেন (ঠিক এই সময়ে লাইনটি কেটে যায়) হ্যালো স্যার, হ্যালো (আনন্দ চিৎকার করতে থাকে)
ব্রেক নিয়ে হেডফোনটি খুলে রাখে সে। মোবাইলে'র টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় লাইনটি কেটে গেছে। বৃদ্ধের কান্না কানে বাজছে তার। এতটুকু ও মেকি মনে হয়নি তার। বুকের ভেতর নৈতিকতার দামামা বাজে। ফোনে দিয়ে বসে সে নিজের ফোন থেকে নিয়মের বাইরে।
আনন্দঃ হ্যালো।
(বৃদ্ধ মানুষটি কাঁদতে কাঁদতেই ফোন ধরে)
আনন্দ আবার বলেঃ হ্যালো চাচা, আপনি এম্বুলেন্সের জন্য ফোন দিয়েছিলেন। আপনার বাসাটা কোথায়?
বৃদ্ধ মানুষটি ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে তার ঠিকানাটি দেয় কোন ধরনের সংকোচ ছাড়া। দ্রুত তা কাগজে লিখে নেয় আনন্দ এরপর ফোন নামিয়ে রাখে। তার মাথার মাঝে অনেক চিন্তা ঘুরছে তখন। খুঁজে বের করে ফোন দেয় সে কাছের হাসপাতালে এম্বুলেন্সের জন্য। তাদেরকে নিজের পরিচয় দিয়ে তাড়াতাড়ি পৌছাতে বলে সেই ঠিকানাটিতে। নিজের মোবাইল থেকে ব্যালেন্স ট্র্যান্সফার করে দেয় সেই বৃদ্ধ মানুষটির নাম্বারে। এরপর কিছুক্ষণ শুধু ফোনের পর ফোন করতে হয় তাকে। কখনও এম্বুলেন্সের ড্রাইভারকে আবার কখনও সেই বৃদ্ধ মানুষটিকে। এভাবেই চলতে থাকে তাদের হাসপাতালে পৌঁছানো পর্যন্ত। একসময় হাসপাতালে পৌঁছে যায় তারা। আনন্দ'র শরীরেও নেমে আসে ভীষণ অবসাদ। ছুটি নিয়ে বাসায় চলে আসে সে।
পরের দিন আবার ফোন পায় আনন্দ সেই বৃদ্ধ মানুষটির নাম্বারটি থেকে। এবারও কান্না'র শব্দ। তাবে এই কান্না খুশির কান্না। সেই মেয়েটির একটা ছেলে হয়েছে। ছেলেটির নাম রাখা হয় আনন্দ। এত দোয়া এর আগে বোধ হয় কেউ কারও জন্য করেনি, আনন্দের তাই মনে হতে থাকে। পৃথিবীর সব থেকে সুখী মানুষ মনে হতে থাকে তার নিজেকে। ফোনটি রেখে দেয় সে। তার চোখও ভেজা।
©somewhere in net ltd.