![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রশ্ন: বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে কে পড়াতেন?
উত্তর: ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় কবি কাজী কাদের নেওয়াজ দিল্লির বাদশাহ আলমগীরের পুত্রের জন্য নিযুক্ত একজন শিক্ষকের কথা উল্লেখ করেছেন। মোগল বংশীয় দিল্লির সম্রাট শাহজাহানের পুত্র আওরঙ্গজেব আলমগীর উপাধি ধারণ করে দিল্লির সম্রাট হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করেন। একজন মহানুভব সম্রাট হিসেবে তিনি অর্জন করেন যথেষ্ট সুনাম। দিল্লির এক জ্ঞানী ও বিজ্ঞ মৌলভি বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে পড়াতেন।
প্রশ্ন: একদিন সকালে বাদশাহ কী দেখতে পেলেন?
উত্তর: কবি কাজী কাদের নেওয়াজ ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় বাদশাহ আলমগীরের সকাল বেলায় দেখা একটি দৃশ্য সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন।
একদিন সকালে তিনি দেখতে পেলেন, শাহজাদা একটি পাত্র হাতে নিয়ে আনন্দের সঙ্গে তার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের পায়ে পানি ঢালছে আর শিক্ষক নিজের হাত দিয়ে নিজেরই পায়ের ধুলাবালি ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করছেন। শিক্ষকের পায়ে শুধু পানি ঢেলেই শাহজাদা তার শিক্ষকের প্রতি কর্তব্য সম্পাদন করছে। দূর থেকে বাদশাহ এই দৃশ্য দেখতে পেলেন এবং খুবই মর্মাহত হলেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৯:০০
ওয়াজীহ উদ্দীন বলেছেন: প্রশ্ন: বাদশাহকে দেখে শিক্ষক প্রথমে কী ভাবলেন?
উত্তর: কবি কাজী নেওয়াজ ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় বাদশাহকে দেখার পর শাহজাদার শিক্ষকের তাৎক্ষণিক দুর্ভাবনার উল্লেখ করেছেন।
দিল্লির এক মৌলভি শিক্ষক বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে পড়াতেন। একদিন সকাল বেলা শাহজাদা শিক্ষকের পায়ে পানি ঢেলে দিচ্ছিল আর শিক্ষক নিজের পায়ের ধুলাবালি নিজেই পরিষ্কার করছিলেন। বাদশাহ আলমগীর দূর থেকে এই দৃশ্য দেখে ফেলেন। এসময় বাদশাহকে দেখে শিক্ষক প্রথমে ভাবলেন, তিনি একটা গুরুতর অপরাধ করেছেন। দিল্লির সম্রাটের পুত্রকে দিয়ে তিনি পায়ে পানি ঢালিয়েছেন। এমন স্পর্ধার কাজ নিশ্চয় ক্ষমার অযোগ্য। এ জন্য বাদশাহ নিশ্চয় তাঁকে কঠোর শাস্তি দেবেন। শিক্ষক প্রথমে এমনি নানা রকম শাস্তির কথা ভেবে বিচলিত হলেন।
প্রশ্ন: ‘প্রাণের চেয়ে মান বড়’—শিক্ষক এ কথা বললেন কেন?
উত্তর: কবি কাজী কাদের নেওয়াজ ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় ওই কথার মধ্য দিয়ে শিক্ষকের শ্রেষ্ঠত্ব ও সম্মান সম্পর্কে আলোকপাত করেছেন। দিল্লির বাদশাহ আলমগীরের পুত্রকে দিয়ে পায়ে পানি ঢালিয়েছিলেন গৃহশিক্ষক মৌলভি। এই দৃশ্য বাদশাহ দেখে ফেললে শিক্ষক প্রথমে বড় রকমের শাস্তির ভয়ে বিচলিত হয়েছিলেন। কিন্তু পরক্ষণে আত্মমর্যাদা সম্পর্কে তিনি সচেতন হয়ে ওঠেন। শির বিচ্ছিন্ন করার মতো শাস্তিতেও এখন তিনি ভীত নন। কারণ, সমাজের সর্বক্ষেত্রে শিক্ষকের সম্মান সর্বোচ্চ ও সবার ঊর্ধ্বে। শিক্ষক হিসেবে ছাত্রের সেবা নেওয়া কোনো অন্যায়-অপরাধ নয়। তাই শিক্ষক সিদ্ধান্ত নিলেন, এ বিষয়ে বাদশাহ তাঁকে কিছু জিজ্ঞেস করলে তিনি শাস্ত্রের কথা শুনিয়ে শিক্ষকের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে দেবেন। এতে যদি প্রাণ যায়, তাতেও তাঁর আপত্তি নেই। প্রাণের চেয়ে মান-সম্মান অনেক বড়। তাই তিনি বাদশাহকে এ কথা বোঝাতে চেষ্টা করবেন। কাজেই বলা যায়, মান-মর্যাদার স্তর বোঝানোর জন্যই শিক্ষক ওই কথা বললেন।
প্রশ্ন: বাদশাহ আলমগীর শিক্ষককে প্রথমে কী বললেন?
উত্তর: ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় কবি কাদের নেওয়াজ একপর্যায়ে শিক্ষকের প্রতি বাদশাহ আলমগীরের মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।
ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কের দৃশ্য দেখে বাদশাহ আলমগীর খুশি হতে পারেননি। খাসকামরায় ডেকে বাদশাহ শিক্ষককে প্রথমে বললেন, তাঁর পুত্র শিক্ষকের কাছ থেকে কোনো প্রকার ভদ্রতা, শিষ্টাচার. আদব-কায়দা শিখতে পারেনি। বাদশাহর দৃষ্টিতে তাঁর ছেলে এসবের পরিবর্তে বেয়াদবি আর গুরুজনের প্রতি অবহেলা করতে শিখেছে। এই কথার সত্যতা হিসেবে বাদশাহ আগের দিন সকাল বেলা দেখা দৃশ্যের কথা উল্লেখ করেন।
প্রশ্ন: শিক্ষক কী বলে বাদশাহর সুনাম করলেন?
উত্তর: কবি কাদের নেওয়াজ ‘শিক্ষাগুরুর মর্যাদা’ কবিতায় শিক্ষকের উক্তির মধ্য দিয়ে বাদশাহর যথার্থ সুনাম ব্যক্ত করেছেন।
শাহজাদা কর্তৃক শিক্ষকের পায়ে শুধু পানি ঢেলে কর্তব্য সম্পাদনের দৃশ্য দেখে বাদশাহ খুব মর্মাহত হয়েছিলেন। বাদশাহ তাঁর খাসকামরায় শিক্ষককে ডেকে এনে সেই মর্মবেদনার কথা প্রকাশ করে বললেন, শাহজাদার উচিত ছিল শিক্ষকের পায়ের ধুলাবালি স্বহস্তে ধুয়ে দেওয়া। তবেই শাহজাদার গুরুভক্তি, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ও প্রকৃত শিক্ষাদীক্ষা পূর্ণতা লাভ করত। দিল্লির বাদশাহর মুখে শিক্ষকের প্রতি এই আন্তরিক শ্রদ্ধা, সম্মান ও মর্যাদার কথা শুনে শিক্ষক গর্ববোধ করলেন এবং আবেগাপ্লুত হয়ে এই বলে বাদশাহর সুনাম করলেন, ‘আজ হতে চির উন্নত হলো শিক্ষাগুরুর শির/সত্যই তুমি মহান উদার বাদশাহ আলমগীর।’ অর্থাৎ বাদশাহ আলমগীরের মর্মবেদনা প্রকাশের মধ্য দিয়েই চিরকালের জন্য শিক্ষকের মর্যাদা সবার ঊর্ধ্বে স্থাপিত হলো। বাদশাহ আলমগীরের মহানুভবতা ও উদারতা অতুলনীয়।