নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ও বলতে চাই !

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন

ব্লগিং হউক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার ।

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুলিশ কে পুলিশ হিসেবেই পেতে চাই

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:৫৮

গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ নানা সংবাদ মাধ্যমে একটি সংবাদ বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে তা হলে রাজধানীর মৎসভবনের সামনে ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. মুস্তাইন কতৃক দৈনিক মানবজমিনের ফটোসাংবাদিক মো. নাসির উদ্দিনকে নির্যাতনের ঘটনা । বিভিন্ন মাধ্যমে মুস্তাইন কতৃক নাসির উদ্দিনকে নির্যাতনের যে ছবি আমাদের দেখতে হয়েছে একটি সভ্যজাতির জন্য দুঃখজনক তো বটেই লজ্জা এবং বিব্রতকর ও বটে । আমাদের পুলিশ বাহিনী একটি বিশাল সুশৃংখল হিসেবেই আমাদের কাছে বিবেচিত । তবে কেন জানি সব সময় ই আমাদের পুলিশ বাহিনীর রয়েছে ইমেজ ক্রাইসেস । সংবাদ মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ই শিরোনাম হয় এই বাহিনীর কিছু সদস্যের নানা অপকর্ম । একটা বিশাল বাহিনী তে দুই চার জন খারাপ লোকের অবস্হান থাকতেই পারে এটা শুধু আমাদের বাংলাদেশের বেলা ই না বিশ্বের উন্নত দেশের ক্ষেত্রে ও প্রযোজ্য । কিন্তু আমাদের দেশের পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ অনিয়ম ও অপকর্মের কথা উঠছে তা কিন্তু পুরোনো ঘটনা গুলির ই নতুন সংস্করন । আমাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি মিথ্যামামলায় হয়রানি সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে সংবাদিক শিক্ষক রাজনীতিবিদদের শারিরীক নির্যাতন বিনাবিচারে তথাকথিত ক্রশফায়ারে মানুষ খুন কোন অভিযোগ না আছে ? তার পর ও কিন্তু এই ধরনের সকল অপকর্ম গুলিই করে যাচ্ছেন আমাদের এক শ্রেনীর পুলিশ সদস্য ।

এবার ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট মো. মুস্তাইনের ঘটনায় আসি ১১ অক্টোবর ২০১৭ বিকাল ৪টার দিকে প্রেস ক্লাব থেকে কারওয়ান বাজারে দৈনিক মানবজমিনের কার্যালয়ে দৈনিক জনকণ্ঠের সাংবাদিক জীবন ঘোষকে সাথে নিয়ে রওনা দেন ফটোসাংবাদিক নাসির উদ্দিন। এ সময় ঢাকা মহানগর ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের দায়িত্বরত সার্জেন্ট মো. মুস্তাইন নাসির উদ্দিনের মোটরসাইকেলকে সিগনাল দিয়ে থামান মৎস ভবন মোড়ে । এ সময় মুস্তাইন মোটরসাইকেলের নথিপত্র দেখতে চান। নাসির উদ্দিন মোটরসাইকেলের নথিপত্র এবং তার ব্যক্তিগত ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখান। তখন তিনি নাসিরের কাছে জানতে চান, তার হেলমেট কোথায় ? নাসির বলেন, তিন দিন আগে তার হেলমেটটি প্রেস ক্লাব থেকে চুরি হয়ে গেছে। দুই দিন পরই তিনি হেলমেট কিনবেন। শত কাকুতি-মিনতি সত্ত্বেও কর্তব্যরত সার্জেন্ট তার নামে মামলা রুজু করেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের নামে কুৎসা করতে থাকেন। কুৎসার তীব্র প্রতিবাদ জানান নাসির। এক সময় নাসির ও জীবনকে শারীক ভাবে আঘাত করতে আসলে নাসিরের সাথে থাকা ক্যামেরা দিয়ে মুস্তাইন ছবি তোলার চেষ্টাকরেলে সার্জেন্ট মো. মুস্তাইন নাসিরকে শারীরিক নির্যাতন সহ শার্টের কলার ধরে মৎস ভবনের পুলিশ বক্সে নিয়ে যান এবং সেখানে বসিয়ে রাখেন । কোথাও যাতে ফোন দিতে না পারেন এ জন্য নাসিরের ফোনটিও ছিনিয়ে নেন তিনি। পরে খবর পেয়ে নাসির উদ্দিনের সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। অবশ্য এই অপরাধের জন্য সাংবাদিকদের শান্তকরার লক্ষ্যে মুস্তাইনকে ক্লোজ করা হয়েছে।


সাম্প্রতি খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিমের আমলি আদালতে খালিশপুর থানার ওসিসহ পুলিশের আট সদস্য তিনজন আনসার সদস্য সহ মোট তের জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন রেনু বেগম নামের এক মহিলা । রেনু বেগমের দাবি গত ১৮ জুলাই তার ছেলে মো. শাহ জালাল স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে পিরোজপুরের গ্রামের বাড়ি থেকে নগরীর নয়াবাটি রেললাইন বস্তি কলোনির শ্বশুর বাড়িতে আসেন। ওইদিন রাত ৮টার দিকে শাহ জালাল তার শিশু কন্যার দুধ কেনার জন্য বাসার পাশের একটি দোকানে যান। এ সময় খালিশপুর থানার ওসি নাসিম খানের নির্দেশে কৌশলে তাকে থানায় ডেকে নেয়া হয়। তার ফিরতে দেরি হওয়ায় খোঁজ নিয়ে পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলে ওসি তাকে ছাড়ানোর জন্য দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় প্রাণনাশের হুমকি দেন। কিন্তু দাবিকৃত টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে স্বজনরা থানার সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন। এর মধ্যে রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ কর্মকর্তারা শাহজালালকে পুলিশের গাড়িতে করে বাইরে নিয়ে যান। পরদিন ১৯ জুলাই ভোরে তারা থানায় গিয়ে জানতে পারেন শাহজালাল নামে কেউ থানায় নেই। পরবর্তীতে খোঁজখবর নিয়ে তারা জানতে পারেন শাহজালাল খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। সেখানে গিয়ে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ১০-১১নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দায় তাকে পড়ে থাকতে এবং দুটি চোখ উপড়ানো অবস্থায় দেখতে পান। শাহজালাল বক্তব্য পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পুলিশ কর্মকর্তারা হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে গাড়িতে করে গোয়ালখালি হয়ে বিশ্ব রোডের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পরে তার দুটি চোখ উপড়ে ফেলে।

নাসির বা শাহজালালের ঘটনার চেয়ে ও আরো আনেক দুর্ধষ আপরাধের নায়ক আমাদের পুলিশ বাহিনের অনেক সদস্য ।পুলিশে চাকুরি কোন সাদা সিদে চাকরি নয় । এটা ইউনিফর্মের আবরনে আবৃত একটি পেশা । যেহেতু পুলিশ রাষ্ট্র তথা সমাজের আইন শৃংখলা রক্ষাকরা ইউনিফর্মে আবৃত তাই আইনশৃংখলা রক্ষার জন্য খুনি চোর ডাকাত অর্থাৎ অপরাধীদের নিয়েই পুলিশের দিন কাল । তাই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা আচার আচরনে কিছুটা কর্কশ হলে অশ্চর্যের কিছুই নাই । তাই বলে কোন ভাবেই হিংস্র হওয়াটা কারো ই কম্যনয় । পুলিশ নামের প্রতিষ্ঠান টি যেহেতু রাষ্ট্র তথা সমাজের সমগ্র আইন শৃংখলা রক্ষার প্রতিষ্ঠান তাই এই প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের কাজ ই হলো রাষ্ট্র তথা নাগরিকের শান্তি-শৃংখলা ও জনস্বার্থ রক্ষা করা। তাই বিশ্বের অনেক দেশেই পুলিশ কে বিভিন্ন উপাধিতে ডাকা হয় যেমন আইরিশ পুলিশদের ডাকা হয় গার্ডা সিওচানা যার বাংলা অর্থ “শান্তির অভিভাবক” আর একজন পুলিশ অফিসারকে শুধু গার্ডা বা শান্তির কর্মী বলে । তবে আমাদের দেশের পুলিশবাহিনীর আচার ব্যবহারের সঙ্গে আইরিশ পুলিশের ঐ উপাধি কতটুকু সামঞ্জস্য পূর্ন এটা ই আজ বড় প্রশ্ন ?


সব সময় ই পুলিশ বাহিনীর কর্তাব্যক্তি ও সরকারের তরফ থেকে আমরা বলতে শুনি একটি বিশাল বাহিনীতে দুয়েক জন খারাপ লোকের অবস্হান থাকতে পারে তাতে পুরো বাহিনী বা প্রতিষ্ঠানকে দোষারপ করা ঠিক হবে না । মানলাম তাদের এমন কথা কিন্তু বাস্তবতা হলো পুলিশ বাহিনীর সদস্যের দ্বারা সংগঠিত নানা অপরাধের পর কি ঐ ধরনের অপরাধের খায়েস পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের বন্ধ হয়েছে নাকি মাত্রায় আরো বেড়েছে ? সবার ই উত্তর হবে বেড়েছে । আর যদি বেড়েই যায় তা হলে এমন একটি সু-শৃংখল বাহিনীর সদস্যের অপরাধ প্রবনতা রাড়ার কারন কি সরকার ও প্রশাসন কখনো খতিয়ে দেখেছেন ?

আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পুলিশ বাহিনীর অবদান ছিল অত্যন্ত গুরুত্ব ও বীরত্ব পূর্ণ । ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে বর্বর হানাদার বাহিনী যখন নির্বিচারে বাঙালিদের হত্যা করেছিল, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে তখনো প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। পরবর্তীতে পুলিশের এ সদস্যরা ৯ মাসজুড়ে দেশব্যাপী গেরিলাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলে। স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্রে ১২৬২ জন শহীদ পুলিশ সদস্যের তালিকা উল্লেখ পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত ঝিনাইদহের তৎকালীন সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ মুজিবনগর সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে ঐতিহাসিক গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এত কিছুর পর ও রাজনৈতিক ও ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য আমাদের পুলিশ বাহিনীকে নানা অপকর্মে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং আমাদের পুলিশ ও তাদের কর্তব্য ও ঐতিহ্যের কথা ভুলে গিয়ে নানান অপকর্ম ও অপরাধে জরাচ্ছেন । যা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনা দায়ক সেই সাথে আতংক জনক ও বটে । আমরা চাই আমাদের পুলিশ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের মনের ভিতরে মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনা জাগ্রত হবে জাগ্রত হবে তাদের বিবেক ও কর্তব্য বোধ । আমাদের পুলিশবাহিনী আমাদের বন্ধু হয়ে আমাদের সেবক হয়ে ই আমাদের পাশে থাকবে ।






মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১:৫৭

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: যেদিন দুই পরিবার মুক্ত হবে দেশ, সেদিন পুলিশকে পুলিশ হিসেবে পাবেন। তার আগ পর্যন্ত এভাবেই চলবে...

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ রাত ২:৩৫

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: সেই দিনের অপেক্ষায়

২| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:০৮

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: পুলিশের ৮৫% লোকই বাজে আর যে ১৫% ভালো আছে তাদের জন্যই এখন পর্যন্ত চেইন অব কমান্ড টিকে আছে।





ভােলো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।

৩| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ৯:৩৫

ভাললাগে না বলেছেন: পুলিশের মধ্যে ২/১ জন খারাপ এই তথ্য ভূল আছে। আসলে তাদের মধ্যে ২/১জনই ভাল, বাকি সব যেন তেন।

৪| ১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ দুপুর ১২:০৯

ঢাকাবাসী বলেছেন: পুলিশে আবার ভাল আছে নাকি? যারা আছে বলে শোনা যায় তারা খারাপ হওনের চান্স পায় না ঘুষ খাওনের সুযোগ পায় না তাই ভাল আছে!

৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:২৮

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন বলেছেন: সহমত

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.