নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ও বলতে চাই !

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন

ব্লগিং হউক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার ।

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজো বেঁচে আছে মানবতা

০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২০

দেশ আজ এক ভয়াবহ দুর্যোগের মোকাবিলা করছে। সারা বিশ্বের মতো মরন ভাইরাস করোনা মরন ছোবল দিয়েছে আমাদের প্রিয় জন্মভুমিকে। দেশের প্রতিটি মানুষের মনের ভিতর এক চরম অশান্তির ছাপ। ধনী-গরীর সবার মনেই এক অজানা আতংক বার বার হান দিচ্ছে। প্রতিদিন ই পাল্লাদিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সেই সাথে মৃত্যু ও। করোনার এখন ও কোন প্রতিষেধক নেই তাই পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রেই আজ শোকের মাতাম। বেঁচে থাকার জন্য মানুষ বাধ্য হয়েই নিজেকে ঘরে বন্দী করতে বাধ্য হচ্ছে। প্রতিটি রাষ্ট্রই করোনার আক্রমনের হাত থেকে নিজেদের নাগরিকদের রক্ষার হাতিয়ার হিসেবে রাষ্ট্রীয় ভাবে জনচলাচল সীমিত ও সামাজিক দুরত্ব বজার রাখার জন্য মানুষকে ঘরে থাকতে আইনগত ভাবে বাধ্য করছেন। আমাদের সরকার ও একই পাথে হেঁটেছেন। গত মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে সরকার করোনার হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারন ছুটি ঘোষনা করেছেন। জানিনা এই ছুটি আরো দীর্ঘায়িত করতে হয় কি না।

দেশের বর্তমান অবস্হায় সবচেয়ে আতংকের মাঝে আছেন আমাদের দিন এনে দিন খাওয়া মানুষেরা। একদিকে মরন ভাইরাস করোনার ভয় অন্যদিকে পেটের ক্ষুধা। পেটের ক্ষুধা মানুষ অনেক সময় হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ভুলে যায় মৃত্যুর ভয়। আমাদের সাধারন মানুষ আজ পেটের ক্ষুধায় মৃত্যুর ভয় উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমে এসেছেন। গভীর রাত পর্যন্ত ঢাকা রাস্তায় দেখাযায় ক্ষুধার্ত মানুষের আগোনা। কিছু খাদ্য সহযোগিতা পাওয়ার আশার ই তাদের অপেক্ষা। গত রাতে ঔষধের বিশেষ প্রয়োজনে ঘড় থেকে বের হতে হয়েছিল। পন্থ পথের মোড়ে দেখা মিলল কিছু মানুষের সবাই অপেক্ষা কিছু খাদ্য সাহায্যের। দেখতে শুনতে ভালোই এক ভদ্রলোকপের সাথে কথা হলো তিনি একজন নির্মান শ্রমিক বললেন ভাই বারো দিন ধরে কাজ নেই বালবাচ্চা বাড়ীতে না খেয়ে আছে। আমার ও পেটে দানা নাই তা বইসা রইছি কেউ যদি কিছু দেয়। গাড়ী দেখলেই ছুটে যাই কিন্তু কেউই সাহায্য করছে না।

দেশের কোথাও অবস্হা তেমন ভাল না। যদিও সরকার সাধারন মানুষের ত্রান সহযোগিতা ১০ টাকা কেজি চাল বা কোথা ও কোথাও টিসিবি কে ও ন্যায্য মুল্যে পন্য বিক্রি করতে দেখা গেলেও যোগানের চেয়ে চাহিদা অনেক বেশি তাই সাধারন মানুষেকে এক ধরনের হতাশা নিয়েই ঘরে ফিরতে হচ্ছে। করোনার ভয়কে ও উপেক্ষা করে ১০ টাকা কেজি চালের জন্য দেশের প্রতিটি জায়গায় ই শত শত মানুষের সমাগম। এর পর ও কারো ভাগ্যে জুটছে তো করো আবার শুন্য হাতে ই ফিরতে হচ্ছে । আর সরকারী ত্রানের চাল নিয়ে তো একধরনের হরিলুটই চলছে। কোথাও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কোথাও মেম্বার আবার কোথাও সরকারী দলের নেতা নাম আসছে ত্রানের চাল চোরের তালিকায়। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে কিছু মানুষ যখন মৃত্যুর ভয়কে উপেক্ষা করে দুমুঠো খাবারের জন্য দিক বেদিক হয়ে ছুটছে তখন তাদের এই খাবারের চাল চুরি করে নিজের পকেট যারা ভারী করছে তাদের কে কি আমরা সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গন্য করতে পারি? ওদের কি একটি বারের জন্য মৃত্যুর কথা মনে পরে না? না এদের রুপটা মানুষের হলে ও এদের ভিতর বাস করে এক ভয়ংকর জানেয়ার। এরা সমাজও রাষ্ট্রের জন্য করোনার চেয়ে ও ভয়াবহ ভাইরাস । এরা মৃত্যু মান সম্মান কোন কিছুর ই পরোয়া করে না। আবার এদের বিপরীত ও অনেক মানুষ আছেন যারা নিজের জীবন বাজি রেখে নিজের সাধ্যমত চেষ্টা করে মানুষের বিপদে মানুষের পাশে দাড়াতে। এই মুহুর্তে ও আমাদের সমাজের অনেক মানুষ তাদের সাধ্যমত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বিপদগ্রস্ত মানুষের জন্য। খাদ্যসামগ্রী ঔষধ পথ্য নিয়ে হাসি মুখে হাজির হচ্ছেন সাধারন মানুষে দরজায়। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সজল কুমার কানুর একটি ঘটনা সত্যি আমাদের জন্য মনবতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে দাড়িয়েছে। ৮ এপ্রিল রাত তখন ১০টা পেরিয়ে গেছে। হঠাৎ সজল কুমার কানুর মোবাইল ফোনে একটি ফোন আাসে না কোথায় কোন খুন হত্যা ডাকিতা বা ধর্ষন হয়নি। তার ই থানার একেবারেই দুর্গম এলাকা কেচুটিলা গ্রাম। ওখানে এক অসহায় মা আছমা বেগম ও তার তিন সন্তান নিয়ে সারা দিন না খেয়ে আছেন। এই কথা শুনে ওসি কানুর ঘরে যা ই রান্না করা ছিল তার সথে মেসের রান্না করা দুই টিফিন ক্যারিয়ারে ভরে খাবার সাথে সহকর্মী এসআই রাজীব, এএসআই সিরাজ ও মাহফুজকে সাথে নিয়ে মোটর বাইকে করে ছুটলেন প্রত্যন্ত এলাকা কেচুটিলার দিকে। দুর্গম পথ পারি দিয়ে যখন কেচুটিলায় আছমা বেগমের দুয়ারের সামনে তারা দাঁড়ালেন, তখন ঘড়ির কাটা বারোটা ছুঁই ছুঁই। মাটির ঘরের টিনের দরজার কড়া নাড়তেই ভেতর থেকে পরিচয় জানতে চেয়ে পুলিশ পরিচয় শুনে ভরকে উঠেন আছমা। তার পর ও ভয় ভীতি নিয়ে দরজা খুলে দেখেন দুই হাতে দুই টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে দড়িয়ে আছেন সজল কুমার কানু। ঘরে ঢুকে ওসি সজল কুমার কানু ক্ষুধার যন্ত্রনায় কাতর হয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া আছমার সন্তানদের ঘুম থেকে জাগিয়ে নিজ হাতে খায়িয়ে আছমা বেগমের হাতে নগদ পাঁচশত টাকা দিয়ে। ভোর রাতের দিকে ঘরে ফিরেন।

আজো আমাদের এই সমাজ তথা রাষ্ট্রে যেমন রাষ্ট্রের এই ক্রান্তিলগ্নে গরীব মানুষের মুখের অন্ন চুরি করে নিজের পকেট ভারী করার মত অনেক রাজনৈতিক নেতা জনপ্রতিনিধি আছেন যেমন কিছু ঘুষখোর দুর্নীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারী তেমন ই আছেন সজল কুমার কানুদের মত অনেক মানবদরদী পুলিশ অফিসার আছেন জনদরদী রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিরাও । আজো আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র তথা বিশ্ব দাড়িয়ে আছে মানবতার উপর ভর করেই। মানবতা আজ ও মরে নি দাফন হয়ে যায় নি চিতার আগুনে ও পুড়েনি আমাদের মানবতা।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৭

শের শায়রী বলেছেন: অমানবিকতার এই সময়ে বিভিন্ন জায়গায় মানবিকতা যেটুকু চোখে পড়ল তা কিছু পুলিশ সদস্যদের সহৃদয়তা। আর প্রায় জায়গায়ই সো কল্ড জন প্রতিনিধি যারা ত্রান বিতরনের দায়িত্বে নিয়োজিত তারাই ভক্ষক হয়ে দাড়াচ্ছে, কিন্তু কয়জনকে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দেয়া হচ্ছে?

২| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৯

rezaul827 বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন

৩| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: আজ শবে বরাতের পবিত্র রজনীতে প্রত্যেকটা ঘরে হয়ে উঠুক মসজিদ।প্রত্যেকটা হাতই উঠুক খোদার দরবারে দোয়ার জন্য।
প্রত্যেকটা চোখ ভেসে উঠুক চোখের পানিতে।
অশ্রুসিক্ত নয়ন আর তৃষিত হৃদয় নিয়ে চলুন কায়মনোবাক্যে প্রভূর কাছে ফরিয়াদ করি,
হে করুণাময়!
আজ লাখো-কোটি মুসলিমের চোখের পানিতে পৃথিবী থেকে করোনা ভাইরাসকে ধূয়ে-মূছে সাফ করে দিন।আমাদেরকে ক্ষমা করে দিন।

৪| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:২৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: পুলিশেও অনেক ভালো মানুষ আছে। পুলিশদের কাজের চাপ অত্যধিক।

৫| ১০ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৪৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: পুলিশ এখন অনেক মানবিক। দোয়া করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.