নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চরম মানবিক ও মনসিক অবক্ষয়ের দিকে ক্রমেই ধাবিত হচ্ছে আমাদের সমাজ তথা রাষ্ট্র অর্থ বিত্তের কাছে আজ সবই জিম্মি। অর্থ বিত্তের কাছে আজ নীতি সম্পুর্ন মূল্যহীন তাই কখনো কখনো আমাদের সমাজের পরিচিত নীতিবান মানুষদের অনেকে ই নীতিকে বিসর্জন দিতে সম্পদ আহরনের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। কারন তারা ও বুঝে গেছেন এই সমাজ তথা রাষ্ট্রে আজ আর আর্দশ বা নীতি সম্পুর্ন মূল্যহীন। অর্থ বিত্তই আজ সকল কিছুর মুল উৎস। অর্থ সম্পদের উৎস কি বৈধ না অবৈধ তা আজ কোন ভাবেই কেউ বিবেচনায় নিচ্ছে না। তাই আজ আমাদের সমাজ তথা রাষ্ট্রকে গ্রাস করে নিচ্ছেন ঐ অবৈধ আয়ের মানুষেরা।
গত রবিবার অর্থাৎ ২৫ অক্টেবর সন্ধ্যার পর কলাবাগান ক্রসিংয়ের কাছে সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত গাড়ি সাথে একটি মটর বাইকের ধাক্কা লাগে সাথে সাথেই গাড়ী থেকে কয়েক জন নেমে এসে মটর বাইকের চালকে মারধর শুরু ঐ মটর বাইকের চালক ছিলেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খান আর আরোহী ছিলেন তার স্ত্রী। আর সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত গাড়ি আরোহী ছিলেন ঢাকা- ৭ আসনের সাংসদ হাজী সেলিমের পুত্র যিনি নিজের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নাম্বার ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষীরা। গাড়ীর আরোহীরা ওয়াসিমের পরিচয় জেনে ও তাকে বেদম প্রহার করে এমন কি তার স্তীকে পর্যন্ত অপদস্ত করে। মুহুর্তেই এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় যেখানে ওয়াসিফ কে রক্তাক্ত অবস্হায় দেখাযায়। ইরফান বাহিনীর হামলায় ওয়াসিমের দাঁত ভেংগে রক্তাক্ত হন ওয়াসিফ । এই ঘটনায় পরে এই ঘটনার জন্য ধানমন্ডি থানায় মামলা দয়ের করেন লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ। কোন ভাবে রাত্র পার না হতেই র্যাবের বহর হাজী সেলিমের চকর বাজারের বাড়ীতে। বাড়ী থেকে উদ্ধার হয় অবৈধ মাদক ওয়াকিটকি অবৈধ অস্ত্র গুলি ইত্যাদি। ইত্যাদি বলার কারন আমার যত টুকু জানা সাংসদ হাজী সেলিমর অর্থ সম্পদ ক্ষমতা যাই আছে সবই অবৈধ। লালাবাগ এলাকায় হাজী সেলিমের বিশেষ পরিচয় ছিল তালা হাজী নামে তার আগে তাকে চিনতেন গরু হাজী নামে। কারন ১৯৯৪ সালের ৩০ জানুয়ারি অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে লালাবাগের চকবাজার এলাকা থেকে গরু প্রতীক নিয়ে বিএনপির প্রার্থী হয়ে ওয়ার্ড কমিশনা অর্থাৎ কাউন্সিলের নির্বাচিত হন। তখন থেকেই হাজী সেলিমের শাসন ও শোষনের শিকার হতে থাকেন লালবাগ এলাকার মানুষ। এর পর ১৯৯৬ সালে হাজী সেলিম তার রাজনৈতিক গুরু লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মীর শওকত আলী পল্টি দিয়ে নিজেই বিএনপির মনোনয়নের জন্য লালবাগ এলাকা থেকে বিশাল বাহিনী নিয়ে হাজির হন তৎকালীন বিএনপি নির্বাচনী অফিস কাকরাইলে। কিন্তু সেখান থেকে মনোনয়ন আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ঐ দলবল নিয়ে চলে আসেন ধাবমন্ডিতে সেখান থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন হাসিল করে প্রথম সাংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এই হাজী সেলিম। এর পর বনে যান পুরো লালবাগ সহ অনেক এলকার রাজা হাজী সেলিমের দখলের রাজ্যে অসহায় হয়ে পরেন এলাকাবাসী। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রনী ব্যংকের সম্পত্তি ঐতিহাসিক জাহাজ বাড়ী সহ যেখানে যা পেয়েছেন সব ই দখল করে নিয়েছেন হাজী সেলিম। সরকারের উচ্চমহল পর্যন্ত হাজী সেলিমের সকল অপকর্ম সম্পর্কে অবগত থাকলেও কোন ব্যবস্হা নেয়া হয় নি। বরং নানা ভাবে হাজী সেলিমদের মত তথাকথিত মানুষদের উৎসাহিত করা হয়েছে ও হচ্ছে । আজ বিশেষ কারনে আমরা হাজী সেলিম ও তার পুত্র ইরফান সেলিম কে নিয়ে আলোচনা করছি।
তবে যদি আরো একটু পিছনে তাকাই তা হলে এমন আরো অনেক ইরফান সেলিমের গল্প আমাদের জানা। গত বিএনপি জামাত জোট সরকারের সময় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের দুই পুত্র পবন ও ডাবলু অত্যচারে অনেকেই ছিলেন অতিষ্ঠ রাজধানী হাতিরপুলের মোতালেব প্লাজা মার্কেটের পুরোটাই দখলে নিয়ে নিজেদের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন সেখানে। এছাড়া ও জমি দখল চাঁদাবাজি তো ছিল ই এমনকি গাড়ী চোরের সিন্ডিকেট ও মেন্টেন করতেন এই পবন ডাবলু ব্রাদার্স। এর জন্য অবশ্য জেল ও খাটতে হয়েছিল। আওয়ামীলীগের মহিলা সংরক্ষিত সাংসদ পিনু খানের মাতাল পুত্র বখতিয়ার আলম রন মধ্যরাতে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামে আটকে পড়ার কারনে নিজের কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করে একজন রিক্সা চালক ও একজন সিএনজি অটোরিকশা চালককে। যদি ও পরে রনিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনে স্বার্থক হন আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কামাল মজুমদারের বড় ছেলে জিয়া উদ্দিন আহমেদ মজুমদার জুয়েলের সেই বনানীর ব্যবসায়ী শিপু হত্যার কথা অনেকেই ভুলে গেছি। সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার পুত্র দীপু চৌধুরী ও রনি চৌধুরী উত্তরার বনানী সহ রাজধানীর অনেক এলাকা। ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর ই মায়া চৌধুরীর পুত্র দীপু চৌধুরী দখল করে নেয় উত্তরা ফ্রেন্ডস ক্লাবের কতৃত্ব তার থেকে শুরু হয় দখল হত্যা চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের উৎসব। ক্ষমতা ও দখলদারত্বের কতৃত্ব নিয়ে দীপু চৌধুরীর ও বাহিনী খুন করে তিতাস নামের এক যুবককে আর জমি দখল নিয়ে তাদের হাতে জীবন দিতে হয় তারাজউদ্দিন কে। আর মায়া চৌধুরীর মেয়ের জামাই তারেক সাঈদের নারায়ণগঞ্জের সেভেন মার্ডারের কথা তো সারাবিশ্ব ই বলতে গেলে জানে। নারায়নগঞ্জের কথা বলতে গেলেই চলে আসে ত্বকীর কথা তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী ছিলেন নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বী ছেলে। ত্বকী হত্যার পর ই হত্যাকরী হিসেবে যার না উঠে আসে সে আর কেউ নন নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সন্তান আজমেরী ওসমান যার বাবা নাসিম ওসমান চাচা সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান সবাই সংসদ সদস্য ছিলপন ও আছেন। এই ওসমান পরিবার নারায়ণগঞ্জ বাসীর কাছে এক আতংকের নাম। তারা এতই ক্ষমতাধর যে আইন প্রশাসন সবই তাদের কাছে অসহায়।
আজ হাজী সেলিম পুত্র ইরফান সেলিম জেলে ভ্রমমান আদালত কতৃক তার সাজাও হয়েছে। ইতোমধ্যে তাকে কাউন্সিল পদ থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। হাজী সেলিম ও তার পরিবারের ব্যপারে আওয়ামী হাই কমান্ড অনেকটাই নাখেশ কারন ২০১৪ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ যাখন ভরসা করছিল ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের উপর তখন ই হাজী সেলিম হাতী দিয়ে নৌকা ডুবাতে স্বার্থক হয় এর পর গত ঢাকা সিটি নির্বাচনে দলের বিপক্ষে গিয়ে নিজ পুত্র ইরফান সেলিমকে কাউন্সিলের নির্বাচিত করে আনেন। তাই ক্ষমতা স্হায়ী করার কথা বিবেচনায় আওয়ামী জোট সরকার হাজী সেলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা নিতে পুরোপুরি ছিলাম ন ব্যর্থ।
কিছুদিন আগে কক্সবাজারে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান পুলিশের তথকথিত ক্রসফায়ারে মারার যাওয়ার পর এই নিয়ে চরম বির্তকের জন্ম হয় পুলিশ আইজি ও সেনা প্রধান ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যদের আইনের আওতায় এনে পরিস্হিতি সামাল দিতে পেরেছে সরকার তার পর ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই নিয়ে সমালোচনা রয়েই গেছে। তার মাঝে হাজী সেলিমের পুত্র একজন নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মেরে দাঁত ভেংগে রক্তাক্ত করা যা অনেকের মনেই যথেষ্ট ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সবার ই প্রশ্ন যেখনে একজন সমরিক কর্মকর্তা নিরাপদ নয় সেখানে সাধারন মানুষর নিরাপত্তা কোথায়? অনেকেই হাজী সেলিমের পুত্র ও তার পরিবারের প্রতি সরকারের বর্তমান ব্যবস্হা গ্রনকে দাঁত ভাঙ্গা জবাব বলে মনে করছেন কিন্তু আমি এটা কে মোটেও তেমন ভাবে ভবছিনা। কারন এই ইরফান সেলিম ই যদি সেদিন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খানের দাঁত না ভেংগে আমার মত দুই চার জন ওয়াসিম ফারুক কে গুলি করে হত্যা ও করতেন তা হলে ও তার টিকিটা পর্যন্ত ছুতে ব্যর্থ হতেন আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী । যেমনটি হয়েছে রায়হান আহমদের বেলায়। আজ ও রায়হান আহমদ হত্যাকারী এসআই আকবর হোসেন ভুইয়াকে এখনো গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাই হাজী সেলিম ও তার পুত্র ও পরিবারের প্রতি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে পদক্ষেপ নিয়েছেন এটা মোটেও দাঁতভাংগা জবাব না। এটা শুধু মাত্র নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খানের দাঁত ভাংগার জবাব।
২| ০১ লা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: আসলে সব কিছুর মূলে হলো ক্ষমতা। ক্ষমতা মানুষকে অন্ধ করে দেয়।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:২৯
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: হায়েনাদের পুরো শিক্ষা তো হবেনা যদি সামান্য শিক্ষা এবার হয়।