নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ও বলতে চাই !

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন

ব্লগিং হউক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।

ওয়াসিম ফারুক হ্যাভেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোহিঙ্গা সংকটের কঠিন বাস্তবতা মানবতার মাশুল দিচ্ছে বাংলাদেশ

০৭ ই অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:৩৩

বাংলাদেশ আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থীদের অন্যতম আবাসভূমি। কক্সবাজার ও নাফ নদীর দুই তীরে বিস্তৃত ৩০টিরও বেশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ১২ লাখ শরণার্থীর বসবাস যাদের অধিকাংশই ২০১৭ সালের আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক নিপীড়ন থেকে পালিয়ে এসেছে। এই মানবিক বিপর্যয় এখন কেবল মানবাধিকার সংকট নয়, বরং বাংলাদেশের অর্থনীতি, নিরাপত্তা, কূটনীতি এবং সামাজিক স্থিতিশীলতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। আট বছর পরও প্রত্যাবাসনের কোনো বাস্তবসম্মত অগ্রগতি না হওয়ায় সংকটটি এখন বাংলাদেশের জন্য স্থায়ী ও জটিল রূপ নিয়েছে।

রোহিঙ্গা সমস্যার শিকড় অনেক পুরনো। ব্রিটিশ উপনিবেশিক আমলে রাখাইন অঞ্চলকে প্রশাসনিকভাবে বাংলার অংশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল, যার ফলে মুসলিম রোহিঙ্গা ও বৌদ্ধ রাখাইনদের মধ্যে জনসংখ্যাগত ও সাংস্কৃতিক মিশ্রণ ঘটে। কিন্তু ১৯৪৮ সালে মিয়ানমার স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই রোহিঙ্গাদের ‘বিদেশি অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে দেখা হয়। ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনে তাদের নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এরপর থেকে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের হাতে নিপীড়ন, হত্যা, নারী ধর্ষণ, গ্রাম পোড়ানোসহ অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে এসেছে। ২০১৭ সালে রাখাইনের মুসলিম গ্রামগুলোতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যামূলক অভিযান বিশ্বকে নাড়িয়ে দেয়। জাতিসংঘের তদন্তে এ অভিযানকে জাতিগত নিধন হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ তখন মানবিকতার খাতিরে সীমান্ত উন্মুক্ত করে লাখো শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়। বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হলেও, তা ছিল বাংলাদেশের জন্য একটি চরম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।

২০১৭ সালের আগস্ট–সেপ্টেম্বরে মাত্র দুই মাসে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সীমান্তে মানবিক বিপর্যয় এতটাই ভয়াবহ ছিল যে বাংলাদেশ সরকার দ্রুত আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে আশ্রয় দেয়। কিন্তু বাস্তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কোনো কৌশলগত বিশ্লেষণ বা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছিল না। শরণার্থীদের অস্থায়ী আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা ধীরে ধীরে স্থায়ী শিবিরে পরিণত হয়। শেখ হাসিনার সরকারের মূল যুক্তি ছিল মানবিক কারণে সীমান্ত বন্ধ করা যাবে না এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক চাপের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু আজ আট বছর পরও একটি প্রত্যাবাসনও বাস্তবায়িত হয়নি। এর ফলে সেই সময়ে শেখ হাসিনার তথাকথিত মানবিকতার সিদ্ধান্ত আজ বাংলাদেশের কূটনৈতিক দুর্বলতা ও দেশের ভেতর অশান্তির প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

রোহিঙ্গা আশ্রয়ের সময় তৎকালীন সরকার ও আওয়ামী লীগপন্থী মহলে স্পষ্টভাবেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নিয়ে শেখ হাসিনার জন্য একটি নতুন প্রত্যাশার বাতাবরণ দেখা গিয়েছিলবযা শেখ হাসিনার ও সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা হলো নোবেল প্রাপ্তি। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর এই আকাঙ্ক্ষা শেখ হাসিনার ভেতর আরও গভীর হয়। সেই জন্য তিনি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয়কে মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে মনে করেন। এই লক্ষ্যে রাষ্ট্রের শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রচার সংস্থার বক্তব্য, বিদেশি সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ এবং আন্তর্জাতিক প্রচারণায় শেখ হাসিনাকে “মাদার অব হিউম্যানিটি” হিসেবে তুলে ধরা হয়। বিশেষ করে ২০১৭–১৮ সালের সময়ে ঢাকায় প্রকাশিত ইংরেজি সংবাদপত্রগুলোতে সরকারপন্থী লেখক ও বিশ্লেষকরা নিয়মিতভাবে শেখ হাসিনাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচার করছিলেন। এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই আন্তর্জাতিক ফোরামে বিভিন্ন লবিস্ট নিয়োগ করে রোহিঙ্গা আশ্রয়কে শেখ হাসিনার “অসাধারণ মানবিক নেতৃত্বের” উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছিলেন। কিন্তু বাস্তবে এই প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে খুব বেশি সাড়া পায়নি, কারণ বিশ্বের কাছে রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান নয়, বরং সমস্যার অমীমাংসিত রূপটাই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

শেখ হাসিনার এই সিদ্ধান্ত তখন প্রশংসনীয় হলেও কৌশলগতভাবে ছিল ভুল হিসাবের ফল। কারণ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সেখানকার জান্তা সরকার কোনো সময়ই আন্তর্জাতিক চাপের তোয়াক্কা করে না। রাখাইনে তারা জাতিগত নিধন চালিয়েছে বছরের পর বছর। শেখ হাসিনা হয়তো ভেবেছিলেন, জাতিসংঘ বা পশ্চিমা চাপের মুখে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে। কিন্তু এটা ছিল শেখ হাসিনার দুরদর্শী চিন্তার দুর্বলতা। পূর্বের তুলনায় মিয়ানমারের বর্তমান সামরিক জান্তা এখন আরও অনেক শক্তিশালী। শেখ হাসিনা তার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী বা চিরস্থায়ী করতে যে প্রভু রাষ্ট্র ভারতকে নির্ভরতা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন, সেই ভারত তখন রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়ায়নি; বরং ভারতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই মানবিক উদ্যোগ এখন আর শুধু দয়া বা সহানুভূতির প্রশ্ন নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তা, পরিবেশ ও জনসংখ্যাগত ভারসাম্যের বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় জনগণের কর্মসংস্থান, বনাঞ্চল ধ্বংস, মাদক ও মানবপাচার বৃদ্ধি, এমনকি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রভাব বৃদ্ধির আশঙ্কা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।

বাংলাদেশ সরকারের হিসাব অনুযায়ী, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়, খাদ্য, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় বছরে কয়েকশ কোটি ডলার ব্যয় হচ্ছে। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর অনুদানও ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। জাতিসংঘের হিউম্যানিটারিয়ান রেসপন্স প্ল্যান অনুযায়ী, জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা পরিকল্পনা জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান ২০২৫–২৬ এর প্রথম বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের জন্য তহবিলের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, মোট প্রয়োজনীয় তহবিল ৯৩ কোটি ৪৫ লাখ (৯৩৪.৫ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার। ২০২৫ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই পরিকল্পনার জন্য দাতাদের কাছ থেকে মোট ৩৪ কোটি ২০ লাখ (৩৪২ মিলিয়ন) মার্কিন ডলার সংগৃহীত হয়েছে। অর্থাৎ আগস্ট মাসের শেষ পর্যন্ত এই তহবিলের ৩৭ শতাংশ সংগৃহীত হয়েছে এবং ৬২ শতাংশের বেশি ঘাটতি রয়ে গেছে। এই ঘাটতির কারণে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও নিরাপত্তা কার্যক্রমে মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে এমনটাই জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ও ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ক্রমবর্ধমান অপরাধচক্র এখন সরকারের বড় উদ্বেগের বিষয়। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ক্যাম্পে অন্তত ১৫০ জনের বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে, যার পেছনে রয়েছে রোহিঙ্গা গ্যাং ও মাদক চক্রের আধিপত্যের লড়াই। “আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি” বা আরসা এবং “রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন” নামের দুটি গোষ্ঠী অস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে প্রায়ই। ফলে কক্সবাজার অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। স্থানীয় তরুণদেরও মাদক ও পাচারচক্রে জড়িয়ে পড়ায় বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে আজ মাদক সয়লাব। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের পর্যটনের অন্যতম স্থান কক্সবাজার জেলা আজ অপরাধের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। সেখানে ক্রমেই বড় বড় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা বাড়ছে, যা সীমান্তের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।

রোহিঙ্গা সংকটের চাপে কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলো যখন অস্বাস্থ্যকর ও অপরিকল্পিত হয়ে উঠছিল, তখন বাংলাদেশ সরকার ‘ভাসানচর প্রকল্প’ হাতে নেয়। নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে ভাসানচর দ্বীপে প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেখানে স্কুল, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ, পানি ও সড়ক ব্যবস্থা থাকলেও, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অনেকেই শুরুতে এই প্রকল্প নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিল। তবে বাস্তবে সেখানে স্থানান্তরিত প্রায় ৩৫ হাজার রোহিঙ্গার জীবনযাত্রা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ ও সংগঠিত হয়েছে। তবুও এটি কেবল অস্থায়ী সমাধান—স্থায়ী সমাধান নয়। কারণ রোহিঙ্গা সংকটের মূল জায়গা হলো রাখাইন রাজ্যে তাদের নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা।

বাংলাদেশ বহুস্তরীয় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য। চীন, ভারত, আসিয়ান এবং জাতিসংঘ—সব পক্ষের সঙ্গেই আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। তবে বাস্তবে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বারবার সময়ক্ষেপণ করছে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের তারিখ ঠিক হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। চীন ২০২৩ সালে ‘ট্রিপার্টাইট’ আলোচনার মাধ্যমে (বাংলাদেশ–মিয়ানমার–চীন) একটি পরীক্ষামূলক প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা দেয়, কিন্তু যুদ্ধবিধ্বস্ত রাখাইন রাজ্যের অস্থিতিশীলতা ও সামরিক সরকারের অনীহার কারণে তা বাস্তব রূপ পায়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলা চলমান রয়েছে। ২০২২ সালে গাম্বিয়া কর্তৃক দায়ের করা মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক শুনানি শেষ হয়েছে, কিন্তু রায় পেতে আরও সময় লাগবে। ফলে ন্যায়বিচার ও পুনর্বাসনের মধ্যে ব্যবধান দীর্ঘতর হচ্ছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক সামাজিক পরিবর্তন এনেছে। স্থানীয় শ্রমবাজারে মজুরি কমেছে, ভাড়া বেড়েছে, পরিবেশ নষ্ট হয়েছে, আর সামাজিক উত্তেজনা বেড়েছে। ২০১৯ সালের পর থেকে ইউএনএইচসিআর ও ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের খাদ্য সহায়তা কমে যাওয়ায় রোহিঙ্গা পরিবারগুলো বিকল্প আয়ের পথ খুঁজছে—যার মধ্যে আছে অবৈধ শ্রম, পাচার, এমনকি যৌনকর্মে নিযুক্ত হওয়া। এতে সামাজিক অবক্ষয়ের ঝুঁকিও বেড়েছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৮ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পরোক্ষ ব্যয় বহন করেছে, যার অনেকটাই জাতীয় উন্নয়ন তহবিল থেকে এসেছে। রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান শুধুমাত্র মানবিক সহায়তায় নয়, বরং কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সমঝোতায় নিহিত। তাই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠন যেমন জাতিসংঘ, ওআইসি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আসিয়ান—এ ছাড়া অর্থনৈতিক সংস্থা বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইএমএফ এবং যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীনকে দিয়ে মিয়ানমার সামরিক জান্তার ওপর আরও কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে হবে, যাতে তারা নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়। যদিও ভারত এবং চীন এই দুই আঞ্চলিক শক্তির ভূরাজনৈতিক স্বার্থ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশকে এই দুই দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা অব্যাহত রেখেও মানবিক ইস্যুতে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।

রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের জন্য এক কঠিন মানবিক ও কূটনৈতিক পরীক্ষা। এই দেশ তার সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেও মানবতার ইতিহাসে এক অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে। কিন্তু সহানুভূতি দিয়ে শুরু হওয়া এই অধ্যায় এখন কৌশলগত ও টেকসই সমাধানের দাবি রাখে। বাংলাদেশ একা এই সংকটের ভার বহন করতে পারে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘ ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া রোহিঙ্গাদের স্বদেশে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। অবশেষে প্রশ্ন থেকে যায় মানবাধিকারের চূড়ান্ত রূপ কি কেবল করুণার ওপর নির্ভর করবে, নাকি আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার ও মানবিক দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে দাঁড়াবে? এই প্রশ্নের উত্তরই নির্ধারণ করবে দক্ষিণ এশিয়ার মানবতার ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৪

সৈয়দ কুতুব বলেছেন: শেখ হাসিনা চায়না কে খুশি করার জন্য ইহা করেছে। সাথে বোকা কিছু লোক ঊহা সাপোর্ট করেছে।

২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১১:৩৩

রাসেল বলেছেন: লক্ষ্য কী মানবতা ছিল?

৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১১:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: শেখ হাসিনা এদের আশ্রয় দিয়ে ভালো কাজ করেছেন। মানবতার পরিচয় দিয়েছেন। সেই সময় দেশের সব শ্রেনী পেশার মানুষ তাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলেছে। আমাদের সামু ব্লগ থেকেও তাদের আশ্রয় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এখন কেন রোহিঙ্গাদের গলার কাটা মনে করছেন?

তারা আছে থাকুক। সমস্যার সমাধান হলে তারা চলে যাবে। তারা তো আমাদের এখানে অনেক সুখে নেই। খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছে। যান, গিয়ে একবার নিজের চোখে দেখে আসুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.