নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

facebook.com/yousuf.khan221b

ইউসুফ খান

\"যদি তুমি নাহি বোঝো আমার নীরবতা, বুঝিবেনা-এর আড়ালে লুকিয়ে থাকা কথা\"\n©না জিগায়া কপি করিবেন না,পিলিজ©

ইউসুফ খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

"নায়ক"... The Hero

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৫

যতোদূর মন পরে, ক্লাস থ্রি বা ফোর এর ঘটনা...

বাংলা ক্লাস চলছিলো। ক্লাস নিচ্ছিলেন স্কুলের অন্যতম মারমুখি শিক্ষক, মামুন স্যার। সেসময় যেই কয়জন স্যারের নাম শুনলেই পোলাপান ভয়ে কাঁপতো, মামুন স্যার ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। ক্লাসে ঢুকেই স্যার বই বন্ধ করতে বললেন। আমার মতো যারা ভেবেছিলো, বাসায় না পড়ে ক্লাসে যেয়ে একটু চোখ বুলিয়ে নিবে- তাদের মাথায় বাজ পড়ার প্রচণ্ড শব্দ পেলাম। ক্লাসের পড়া ছিলো 'সন্ধি- বিচ্ছেদ'...



সেদিন স্যার বেশ কিছু ট্রিক্স খাটিয়েছিলেন ছাত্রদের বেধড়ক মারধোর করার প্রয়াসে। প্রথমেই বললেন- যারা যারা পড়া করিস নাই, তারা বেরিয়ে আয়।

'সততার পুরস্কার' গল্পটা তখন সবার সবেমাত্র পড়া ...

বিবেকের কাছে বাধা পেয়ে সত্যি সত্যিই বেশকিছু সৎছাত্র বেরিয়ে পড়লো তাদের পুরষ্কার আনতে...

আমি দ্বিধায় পরে গেলাম- কি করবো। এদিক- সেদিক তাকিয়ে বসে রইলাম। যা হয় হবে- আল্লাহ্‌ ভরশা। প্রথম রাউন্ড শেষ হলো স্বেচ্ছায় মাইর গ্রহণকারী ছাত্রদের কাতরানোর শব্দে। এবার দ্বিতীয় রাউন্ড... আমরা যারা পড়া পারি বলে বসে ছিলাম, তাদেরকে স্যার এবার বেরিয়ে আসতে বললেন। আমরা দুরুদুরু বুকে স্যারের টেবিলের সামনে গিয়ে লাইন করে দাঁড়ালাম। পুরো ক্লাস চুপচাপ। সবার দৃষ্টি আমাদের দিকে। ওদের বিপদ কেটে গেছে, এবার ওরা আয়েশ করে উপভোগ করবে আমাদের মাইর খাওয়ার দৃশ্য। তেল চিটচিটে চুলের কয়েকজনকে দেখলাম ব্যাগ থেকে লুকিয়ে আঁচার আর চিপস বের করে বেশ আয়েশ করে বসলো। মুখে এক ধরনের পৈশাচিক হাসি...



যাই হোক, এই রাউন্ডের মাইর সবচেয়ে ভয়ানক। ক্লাসের ফার্স্ট ক্যাপ্টেন থেকে শুরু করে সেকেন্ড, থার্ড সবাই পাশে দাড়িয়ে ছিলো। ভয়ে দাঁত কপাটি লেগে আসছিলো আমার। স্যার কিছুক্ষন বইটা উল্টে- পাল্টে বেশ পরিচিত তবে মারাত্মক কঠিন, ' ৈ কার যোগে' একটা শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ জিজ্ঞেস করলেন। একটাই...

লাইন ধরে একে একে সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন একটিমাত্র সন্ধি বিচ্ছেদ। সবাই একে একে উত্তর দিয়ে গেলো। স্যার কাউকে কিছু বললেন না। শুধু উত্তরগুলো নিলেন। সবার উত্তর দেয়া শেষ।

অবাক করা ব্যাপার ছিলো, আমরা যেই কয়জন এই লাইনে ছিলাম সবাই সেই শব্দটার সন্ধি বিচ্ছেদ করেছি ঠিকই তবে কারও সাথেই কারওটা মেলেনি। সবাই স্বতন্ত্রভাবে সন্ধি- বিচ্ছেদ করেছে সেই শব্দটার। সবার উত্তর গ্রহন শেষে স্যারের মুখে আচমকা এক অমানুষিক হাঁসি খেলে গেলো।

নিশ্চিত হলাম, আজকে বাসায় যেয়ে গোসলের সময় বেশকিছু বরফ নিয়ে নিয়ে ঢুকতে হবে বাথরুমে...



বাম পাশ থেকে শুরু হলো ঝড়ের তাণ্ডব...

স্যার স্যার, আহ, উফ, ওমা, বাবাগো, শব্দে ঝড় এগিয়ে আসছিলো আমার দিকে। একদম কাছাকাছি আসতেই চোখ বন্ধ করে ফেললাম...

যেভাবে আচমকা ঝড় শুরু হয়েছিলো, সেভাবেই আচমকা ঝড়টা থেমে গেলো আমার কাছে এসে। চোখ খুলে দেখলাম, স্যার আমার দিকে তাকিয়ে একগাল হেঁসে নিলেন। এরপর আমার ডান পাশের ছাত্রদের উপর দিয়ে ঝড় কন্টিনিউ করলেন।

শেষ হলো ঝড়ের তাণ্ডব...

কারও বুঝতে বাকি রইলো না, পুরো ক্লাসে সেদিন এই একটিমাত্র শব্দের সঠিক সন্ধি- বিচ্ছেদ করতে পেরেছিলো মাত্র একজন ছাত্র...





বিঃ দ্রঃ- উপরোক্ত ঘটনাটি সত্য... বাস্তবের সবার সাথেই এর মিল রয়েছে... কাকতালীয় কিছু ধরতে হবেনা... এবং, সেই ঐতিহাসিক 'সন্ধি বিচ্ছেদটি' কি ছিলো সেটার উল্লেখ এখানেই কোথাও আছে...



প্রথম প্রকাশ- ফেইসবুক



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৫৪

প্রফেসর মরিয়ার্টি বলেছেন: নায়ক-এর সন্ধি-বিচ্ছেদ সঠিকভাবে বলতে পেরে, সেই দিন ক্লাশেতো আপনি নিজেই নায়ক হয়ে গিয়েছিলেন দেখছি B-)

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২১

ইউসুফ খান বলেছেন: ;)

২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২১

হাসান মাহবুব বলেছেন: আমি পারি না :|

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২২

ইউসুফ খান বলেছেন: নৈ+অক ;) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.