![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন ছাত্র। আমার শখ ফটোগ্রাফিতে। এছাড়া নতুন কিছু জানতে ও জানাতে চেষ্টা করি।
ঈদ সামনে রেখে ঢাকার ছোট-বড়
বিপণিবিতানগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা
চললেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে মিরপুরের
বেনারসি পল্লীতে; ঈদের মাত্র কয়েকদিন
আগে ক্রেতার খরায় অলস সময় কাটাতে দেখা
গেছে পল্লীর দোকান মালিক-
কর্মচারীদের।
ঈদ উৎসবে তরুণ-তরুণীদের পছন্দের তালিকায়
শীর্ষে থাকে হাল ফ্যাশনের থ্রি পিস, ফতুয়া,
শার্ট, টি-শার্ট। তবে মধ্যবয়সী নারীদের ঈদ
কেনাকাটায় শাড়ি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।
মূলত বিয়ে-বৌভাতসহ এ ধরনের অনুষ্ঠানে
মেয়েদের শাড়ির জন্য বেনারসি পল্লীর শাড়ির
চাহিদা বেশি থাকলেও প্রতিবছর ঈদ অনুষ্ঠানেও
সেখানে ভিড় জমে বলে দোকানিরা জানান।
মিরপুরে ঐতিহ্যবাহী এই পল্লীতে ছোট-বড়
একশর বেশি শাড়ির দোকান রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেনারসি পল্লী ঘুরে দেখা যায়,
চলতি পথে দুয়েকজন মানুষ দেখা গেলে
তাদের হাঁক দিচ্ছেন দোকানের কর্মচারীরা।
দোকান ব্যবস্থাপকরা গদিতে ‘গালগল্পে’ সময়
পার করছেন।
‘তাওছিফ বেনারসি ফ্যাশন’র বিক্রয়কর্মী সেলিম
হোসেন রিজভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “অন্যবার ঈদের আগে
আগে আসলে আমাদের এভাবে পাইতেন না।
ইফতারের আগে কাস্টমারদের নিয়ে বেশি
ব্যস্ত থাকতে হত। কথা বলার সময় ছিল না।
“কিন্তু এবার কাস্টমার কই? সব ভারতে কেনাকাটা
করতে চলে গেছেন। একেকজন শপিং করে
আনবেন ১০/১২ জনের জন্য।”
এবার ঈদ সামনে রেখে ঢাকায় ১২ দিনের ভিসা
ক্যাম্প করে ভারতীয় হাই কমিশন, যেখানে ভিসার
জন্য ৫০ হাজারের বেশি পাসপোর্ট জমা পড়ে।
এর বাইরে দেশের অন্যান্য জায়গায় ১১টি
ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র থেকেও ভিসা দেওয়া
হয়।
বেনারসি পল্লীর ব্যবসায়ীদের ধারণা, এই
সুযোগে অনেকেই ঈদ কেনাকাটা করতে
গেছেন প্রতিবেশী দেশটিতে।
“ভারতের পক্ষ থেকে হুট করে ৫০ হাজার ভিসা
ছাড়া হল।সেই ভিসা পেয়ে বেশিরভাগ মানুষ যাবে
শপিং করতে। সেখানে সস্তায় পছন্দের পণ্য
পাওয়া যায়, ক্রেতারা শুল্কমুক্ত সুবিধায় নিয়ে
আসবেন পছন্দের কাপড়-চোপড়। সস্তায়
পেলে মানুষ এখানে আসবে কেন” প্রশ্ন
রাখেন ‘ওয়েডিং শাড়িজ’র মালিক রুমি।
পল্লীর আরও কয়েকজন ব্যবসায়ীও একই
অভিযোগ করেন। কয়েকদিন আগে একই
ধরনের কথা বলেছেন ঢাকাই জামদানির কারিগররা।
সম্প্রতি জাতীয় জাদুঘরে জামদানির
প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে ওই কারিগররা
নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন।
তাদের অভিযোগ, ভারত থেকে আনা বাহারি শাড়ি
কম টাকায় ‘ঢাকাই জামদানি’ বলে চালিয়ে দেওয়ায়
বছরের বড় সময় কাজ পান না তারা।
বেনারসি পল্লীতে মিরপুরী বেনারসি কাতান,
জামদানি, রাজশাহী সিল্ক, টাঙ্গাইল শাড়ির পাশাপাশি ভারত
থেকে আমদানি করা বেনারসি, জর্জেট, চেন্নাই
কাতান, টসরসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি পাওয়া যায়।
রয়েছে থান কাপড় ও আন-স্ট্রিচ থ্রি-পিসের
বাজারও।
তাওছিফ ফ্যাশনের সেলিম জানান, মূলত নভেম্বর
থেকে জানুয়ারি বেনারসি পল্লীর বিক্রির মওসুম।
কারণ সে সময় বিয়ে বেশি হয়।
“তবে ঈদের সময়ও বিক্রি অনেক বাড়ে। কিন্তু
এবার বিক্রি একেবারেই কম।”
ক্রেতাহীনতার অবসর দেখা গিয়েছিল ‘খাজানা’
নামে শাড়ি, সালোয়ার ও লেহেঙ্গার দোকানে।
দোকানের বিক্রয়কর্মী মনিরুজ্জামান কবির
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,
“আমাদের এতো মন্দা এর আগে কখনও ছিল না।
বিক্রিই তো নেই। রাজনৈতিক সহিংসতার সময়েও
এখানকার বিক্রিতে কোনো প্রভাব পড়েনি।
“ঈদ সামনে রেখে আমাদের কিছু প্রস্তুতি
থাকে। এবার সেটা কোনো কাজ দিচ্ছে না।
কার্টনের মালামাল কার্টনেই পড়ে আছে।”
তিনি বলেন, “বিয়ের শাড়ির কারণে আমাদের সুনাম
বেশি। ঢাকার পাশাপাশি সারা বাংলাদেশ থেকে
ক্রেতারা আসেন। তবে ঈদ, পূজায় বিক্রি অনেক
বাড়ে। পার্টি ড্রেস হিসাবে এখানকার শাড়ির কদর
আছে।”
তারপরেও ঈদবাজার না জমায় ভারতের বাজারের
দিকে ক্রেতাদের ঝোকই কাজ করছে বলে
মনে করছেন তিনি।
“বেনারসি পল্লীর ক্রেতারা কিছুটা অভিজাত। ভিসা
সহজ, দাম কিছুটা সস্তা এবং পণ্যের শুল্কমুক্ত
প্রবেশাধিকারের কারণে তারা ইন্ডিয়ামুখী
হয়েছেন বলে আমার মনে হয়।”
©somewhere in net ltd.