| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জেড আই অর্ণব
আমার নিজেস্ব কোন পরিচয় নেই, সহজাতই আমি মানুষের ফ্রেমে বন্দী এক অজ্ঞাতনামা✔
সাইকোলজি বিশেষজ্ঞ বিষু চাকলাদার
দশ বাই দশ কক্ষের আসবাব বলতে একটা টেবিল, গদিওয়ালা একটা চেয়ার, কাঠের চেয়ার দুটি আর একটা বইয়ের তাক। তাক'টা আপাতত ধূলোর দখলে।
দুটি কাঠের চেয়ারের একটা আমি দখল করে বসে আছি, ড.চাকলাদার এর মুখোমুখি। সমস্ত ডক্টর রোগী পেলে খুশি হন, চোখের পলক দ্রুত ফেলে বিনয়ের বহর সাজায়। কিন্তু ড.চাকলাদার বোধহয় খুশি হতে পারলেন না। এমনকি আমার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছেন না।
একটা A4 পেজ থেকে চোখ তুলে তাকালেন আমার দিকে। আমি বিনয়ের হাসি দিয়ে বললাম
"ডাক্তার সাব কি ব্যস্ত?"
ভ্রু কুঁচকে বললেন
"ডাক্তার সাব বলার প্রয়োজন নেই। সমস্যা বলুন।"
"একই তথ্য দুবার জিজ্ঞেস করে উকিলেরা। আপনি তো উকিল না, আর আমি মক্কেলও না।"
"কথা না পেচিয়ে সোজাসাপ্টা উত্তর দেবেন।"
"জ্বি আচ্ছা"
"আপনি বলছেন আপনার পেছনে কেউ হাঁটে, বুট ঠুকিয়ে?"
"জ্বি"
"আপনি হাঁটা থামালেই শব্দ থেমে যায়?"
"জ্বি"
"এতো জ্বি জ্বি করছেন কেন? আমি কি আপনার ম্যাথ টিচার নাকি? ভয়ে ভয়ে জ্বি জ্বি করছেন।"
আচ্ছা এতো টিচার থাকতে ম্যাথ টিচারের শুধু দোষ হবে কেন? বাংলা টিচার'কে কেউ ভয় পায় না নাকি? আমাদের একটা বাংলা টিচার ছিলেন 'নাজির স্যার' কথায় কথায় অপদস্থ করতেন। তাই তাকে আমরা সবাই ভয় আর অপছন্দ করতাম।
ভ্রু কিঞ্চিত বাঁকিয়ে বললাম-
"কথা প্যাচাতে একটু আগেই না করেছেন। আমি বেশি কথা বললেই লোকে বলে পেচিয়ে কথা বলি।"
"আচ্ছা বুঝেছি। এটা আপনার বিশেষ কোন রোগ না। হ্যালুসিনেশন মাত্র। বুঝেছেন?"
"বুঝিয়েছেন?"
ড.চকলাদার'কে আহত হতে দেখলাম, নড়েচড়ে বসে বললেন
"এটা এক ধরনের মস্তিষ্ক বিভ্রম। মনে হবে কেউ আপনাকে ডাকছে কিন্তু আসলে এমনা হচ্ছে না। হ্যালুসিনেশন অনেক ধরনের হতে পারে। এই যেমন ত্বকের, শোনার, ঘ্রাণের হ্যালুসিনেশন। আপনার শোনার হ্যালুসিনেশন হয়েছিল। এবার বুঝেছেন?"
"আমি মোবাইলের ফ্রন্ট ক্যামেরায় কাউকে দেখলাম না কেন?"
"না দেখাই স্বাভাবিক। ফাংশনাল হ্যালুসিনেশন, রিফ্লেক্স হ্যালুসিনেশন, অটোসকোপিক হ্যালোসিনেশন নামেও আরেক ধরনের হ্যালুসিনেশন আছে। যেমম ধরুন ফাংশনাল হ্যালুসিনেশন।
ফাংশনাল হ্যালুসিনেশন এটি আরেক ধরনের মজার শ্রবণেন্দ্রিয় হ্যালুসিনেশন। কেউ হয়তোবা বাথরুমে গিয়ে পানির ট্যাপ ছাড়ল আর সাথে সাথে কানে গায়েবি আওয়াজ আসতে শুরু করে দিল। মজার ব্যাপার হলো যখনই পানির ট্যাপ বন্ধ করে দেয়া হয় তখন সাথে সাথেই কানের শ্রবণেন্দ্রিয় হ্যালুসিনেশন বন্ধ হয়ে যায়। আপনার ব্যাপারটা অনেকটা এমন। যতক্ষণ হাঁটছেন বুটের শব্দ পাচ্ছেন, হাঁটা থামালেই শব্দ থেমে যাচ্ছে।"
"সবই বুঝলাম। কিন্তু আমার হ্যালুসিনেশন হবে কেন?"
"হ্যালুসিনেশন হওয়াটা খুব সাধারণ বা খুব মারাত্মক কিছু থেকেই শুরু হয়। এই ধরেন আপনি হঠাৎ একা থাকা শুরু করে দিলেন। বিষণ্ণবদনে হাসি ফুটে না। এখান থেকেই হ্যালুসিনেশন শুরু হতে পারে। হঠাৎ হঠাৎ আপনি কারো হাসির শব্দ শুনতে পারেন। তারপর ধীরে ধীরে কথাও হতে পারে।"
"মারাত্মক ব্যাপারটা কি?"
"হঠাৎ কোন এক্সিডেন্ট হলো আপনার সামনে বা আপনারই এক্সিডেন্ট হল। তখন থেকেই শুরু হতে পারে।"
"প্রতিকার কি?"
"এর যথার্থ কোন চিকিৎসা নেই। হ্যালুসিনেশন চিকিৎসা সাধারণত এন্টিসাইকোটিক ঔষুধ নির্ভর হয়ে থাকে। আপনার সমস্যা তেমন গুরুতর হয়ে উঠে নি। তাই মাস খানিকের মাঝেই সেরে উঠতে পারবেন।"
"শুরু করবেন কবে থেকে?"
"কাল সন্ধ্যা ছয়টায় আসবেন।"
আমি চেম্বার থেকে খুশি মনে বেড়িয়ে পরলাম। হাতে ড.চকলাদারের ভিজিটিং কার্ড। বড় বড় করে লেখা
শ্রী শ্রী ড. বিষু চকলাদার।
(চলবে)
পরবর্তী পর্ব: Click This Link
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৫
জেড আই অর্ণব বলেছেন: বড় করার তেমন ইচ্ছে ছিল না।
যাইহোক, পড়ার জন্য ধন্যবাদ :-)
২|
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৩
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: "এর যথার্থ কোন চিকিৎসা নেই।
আছে, বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে। সেখানে যাবেন বাবাজান আপনাকে শুধু আংগুল দিয়া একটা গুতা মারবে তাতে আপনার এস্কে, ক্লবে নূরে তাজাল্লীতে আলোকিত হয়ে অন্তর থেকে সব দূর হয়ে যাবে। তখন আপ্নি- হ হু হা,....... হুক্কু হুক্কু করতে থাকবেন আর বাবা জানের চেহারা মুবারকখানা চাঁদএ দেখলি ডান হাতের তালুতে চারটি চুমু খাবেন। ![]()
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৩
জেড আই অর্ণব বলেছেন: যথার্থ বলিয়াছেন ভাই সাব। আন্তরিক ধন্যবাদ জনাব ![]()
৩|
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:১৩
দিশেহারা রাজপুত্র বলেছেন: বেশ ভালো লাগছিল পড়তে।
২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:১৭
জেড আই অর্ণব বলেছেন: লেখা স্বার্থক
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৯
বর্ষন হোমস বলেছেন: এত ছোট কেন অনেক বড় একটা গল্প লিখা যেত ।যাইহোক এটা সংগ্রহিত কিছু করার নাই।ইন্টারেস্টিং বলা চলে।