নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনিকেত সৈনিক

নাজিম-উদ-দৌলা

আমি আর দশজন সাধারণ বাঙালি যুবকদের মতো একজন। তবে আমি বিশ্বাস করি প্রত্যেক সাধারণের মাঝে অসাধারণ কিছু একটা লুকিয়ে আছে। আমি প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছি নিজের ভেতরের সেই অসাধারন সত্ত্বাটিকে খুঁজে বের করে আনার।

নাজিম-উদ-দৌলা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময়ক্রম (আমার ৫০তম গল্প)

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৫

৪ঠা নভেম্বর, ১৯৮৮

স্থানঃ ঢাকা, বাংলাদেশ



“সুপ্রিয় দর্শকবৃন্দ, এই মুহূর্তে আমাদের মাঝে অবস্থান করছেন উপমহাদেশের বিশিষ্ট পদার্থবিদ প্রফেসর ইউসুফ শিকদার। আপনারা জানেন যে প্রফেসর ইউসুফ সম্প্রতি বিশ্ব বিজ্ঞান পরিষদ আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলন’ এ ভারতীয় উপমহাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন। আমরা এখন তার সাথে এ বিষয়ে কিছু কথা বলব........”



টিভির পর্দা থেকে চোখ না সরিয়েই মিসেস ইউসুফ সখিনাকে ডাকলেন। “সখিনা.... এক কাপ চা দিয়ে যা তো”!



উপস্থাপিকা বলছে, “স্যার, কেমন আছেন?”

প্রফেসর ইউসুফ শিকদার ভরাট কণ্ঠে জবাব দিলেন, “ভাল আছি”।

“স্যার, দুদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত এই আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলনে আপনি ছিলেন আমাদের অঞ্চলের একমাত্র প্রতিনিধি। কেমন কাটল দিনগুলো?”

মুহূর্তে প্রফেসরের হাসি খুশি চেহারা ম্লান হয়ে গেল। গম্ভীর কণ্ঠে বললেন, “বিশ্ব বিজ্ঞান পরিষদ হচ্ছে একটা বোকার স্বর্গ। আর তাদের সম্মেলনে যতসব থার্ড ক্লাস মাথা মোটা উজবুকগুলো এসে মিলেছে । দিনগুলো মোটেও ভাল কাটেনি”।

কিন্তু উপস্থাপিকার কণ্ঠে উৎসাহের অভাব নেই, “স্যার, বিজ্ঞান সম্মেলনে আপনার উত্থাপন করা থিওরির তীব্র বিরোধিতা করেছে বিজ্ঞান পরিষদের সদস্যরা। বিশিষ্ট জনেরা বলছেন বিজ্ঞান সম্মেলনে আপনার বক্তব্য এই উপমহাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। এ সম্পর্কে আপনার মতামত কি?”

“আমার আসলে বলার কিছু নেই। শুধু বলব, আমার থিওরি ছিল খুব সাধারণ। কিন্তু এই সাধারন যুক্তি বোঝার মত মানসিকতা তাদের মাঝে আর অবশিষ্ট নেই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করতে করতে তারা এক একটা রোবটে পরিনত হয়েছে। চিন্তা শক্তি, বিবেক বুদ্ধি সব লোপ পেয়েছে”।

“স্যার, আপনি কি আপনার সেই থিওরিটুকু আমাদের সাথে শেয়ার করবেন?”

“হ্যা, সাধারন মানুষের সামনে এই থিওরিটুকু উপস্থাপনের জন্যই আমি এই সাক্ষাৎকারে রাজি হয়েছি”।

“বলুন স্যার”।



প্রফেসর ইউসুফ শিকদার বড় করে একটা দম নিয়ে শুরু করলেন, “প্রতিটি মানুষের মাঝে জিনগতভাবে কিছু ক্ষমতা বিদ্যমান। কিন্তু অনুশীলনের মাধ্যমে সেটা অর্জন করে নিতে হয়। একটা উদাহরন দিলে বিষয়টা পরিস্কার হবে।



মানব শিশুর হাঁটতে শেখার কথা ভাবুন। একটি সুস্থ স্বাভাবিক মানব শিশুর মাঝে হাঁটার ক্ষমতা আছে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সে নিজ থেকে হাঁটার চেষ্টা করে, প্রথম দিকে পারেনা, হোঁচট খায়, ব্যাথা পায়, ভারসাম্য রাখতে সমস্যা হয় কিন্তু একটা সময় কিন্তু সে হাঁটতে শিখে ফেলে। আর একটা উদাহারন হতে পারে সাঁতার কাটা। প্রত্যেকটি স্বাভাবিক মানুষের মাঝে সাঁতার কাটার সহজাত ক্ষমতা বিদ্যমান। কিন্তু যে কখনো পানিতে নামেনি সে যদি হঠাৎ কোন নৌ দুর্ঘটনায় পরে যায়, তাহলে কি সে সাঁতার কেটে জীবন বাঁচাতে পারবে? অবশ্যই নয়। তাকে নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে সাঁতার কাটার ক্ষমতা আয়ত্তে আনতে হবে। সাইকেল চালানোর কথাই ধরুন। প্রতিটি স্বাভাবিক মানুষের মাঝে সাইকেল চালানোর সহজাত প্রবৃত্তি আছে। কিন্তু পর্যাপ্ত অনুশীলন ছাড়া সাইকেল চালানোর ক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব নয়। একই ভাবে আমরা আরও অসংখ্য উদাহারন টানতে পারি। যেমনঃ ঘোড়ায় চড়া, জিমনাস্টিক, যেকোনো ক্রীড়ায় দক্ষতা অর্জন, পিস্তল চালনা ইত্যাদি। পর্যাপ্ত অনুশীলনের মাধ্যমে একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ অসংখ্য ক্ষমতা অর্জন করে নিতে পারে।



আমার গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিল এমন কিছু ক্ষমতা খুঁজে বের করা যা মানুষের মাঝে জিনগত ভাবে আছে কিন্তু অনুশীলনের অভাবে অর্জন করে নেয়া সম্ভব হচ্ছেনা! দীর্ঘদিন এই বিষয়ের উপর কাজ করতে করতে একটা সময় আমি খুব অদ্ভুত একটা তত্ত্ব আবিস্কার করতে সমর্থ হই। মানুষের ডিএনএর মাঝে টাইমলাইন ও স্পেস ভেদ করে যাওয়ার বৈশিষ্ট্য রয়েছে! অর্থাৎ সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে অতীত অথবা ভবিষ্যৎ ভ্রমন করা সম্ভব, কিন্তু অনুশীলনের অভাবে সেই ক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছেনা। এটাই হচ্ছে আমার থিওরি”।



উপস্থাপিকার পরবর্তী প্রশ্ন প্রস্তুত ছিল। “স্যার, আপনার থিওরি নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছেন। ল্যাটিন আমেরিকান বিজ্ঞানী ফিল কলিংস ব্যাঙ্গ করে বলেছেন, মানুষের পক্ষে হেঁটে হেঁটে চাঁদে যাওয়া সম্ভব কিন্তু অনুশীলনের অভাবে তা পারছে না”।



প্রফেসর ইউসুফ শিকদারকে কিছুটা বিচলিত মনে হল। “আমি জানি আমার কথা শুনে তার মত অনেকেই হয়ত হাসছেন, ব্যাঙ্গ বিদ্রূপ করছেন। তাদের কাছে আমি বিষয়টি বিশদ ব্যাখ্যা করেছি কিন্তু তারা যুক্তি মানতে নারাজ”।



সখিনা এসে চা দিয়ে গেল। মিসেস ইউসুফ চায়ে চুমুক দিলেন।



উপস্থাপিকা বলছে “স্যার, আমাদের উদ্দেশ্যে কি আপনি যুক্তিগুলো একটু ব্যাখ্যা করবেন?”



“অবশ্যই। এবং সে জন্যই আজ আমি মিডিয়ার সামনে উপস্থিত হয়েছি। আমি বিশ্বাস করি মানুষের পক্ষে যে ক্ষমতা অর্জন সম্ভব, সৃষ্টিকর্তা তা অনুশীলন করার সুযোগ রেখেই তাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। এখন প্রশ্ন করতে পারেন মানুষের পক্ষে অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ ভ্রমনের অনুশীলন করা সম্ভব কিনা। আমি বলব অবশ্যই সম্ভব। অন্যান্য ক্ষমতা অর্জনের অনুশীলনের সাথে এর পার্থক্য হচ্ছে- একটা নির্দিষ্ট যায়গায় অবস্থান করেই অন্যান্য ক্ষমতাগুলো অর্জনের জন্য অনুশীলন করা সম্ভব হয়। যেমন সাইকেল চালনা, সাঁতার শেখা এগুলোর জন্য নির্দিষ্ট যায়গা ছেড়ে কোথাও যেতে হয়না। কিন্তু সময়ের সাথে স্পেস খুব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। অর্থাৎ একটি ছাড়া অপরটির ব্যবহার সম্ভব নয়। সময় ভেদ করে যেতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই স্পেস পরিবর্তন করতে হবে। ঘাবড়াবেন না। একটা উদাহারনের মাধ্যমে আমি বিষয়টা বুঝিয়ে দিচ্ছি।

এখন আমাদের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায়। এটি জিএমটি+৬ টাইম জোনের মাঝে পরেছে। স্থানীয় সময় অনুযায়ী বাজে সন্ধ্যা ৭টা। ল্যাটিন অ্যামেরিকান বেশ কিছু দেশ জিএমটি-১০ বা জিএমটি-৯ টাইম জোনের আন্ডারে পরেছে। অর্থাৎ আমাদের থেকে প্রায় ১৫-১৬ ঘণ্টা পেছনে তাদের অবস্থান। স্থানীয় সময় অনুযায়ী কোথাও বাজে রাত ২টা কোথাও বাজে রাত ১টা। এখন আপনি যদি প্লেনে চেপে ১৫ ঘণ্টার আগেই সেখানে পৌছাতে পারেন, তাহলে সেখানকার স্থানীয় সময় অনুযায়ী আপনি আরও একবার সন্ধ্যা ৭টার সময়টা ফিরে পাচ্ছেন। অর্থাৎ দুটি যায়গায় একই সময়ে আপনি অবস্থান করার সুযোগ পেলেন। কিন্তু একই যায়গায় অবস্থানের মাধ্যমে সেটা সম্ভব নয়।

এই অনুশীলন যথেষ্ট নয়। দীর্ঘসময় ব্যাপী একটা নির্দিষ্ট সময়ে ভিন্ন ভিন্ন যায়গায় অবস্থানের দ্বারা মানুষ অতীত ও ভবিষ্যৎ ভ্রমনের ক্ষমতা অর্জন করে নিতে সক্ষম হবে”।



“স্যার, এই থিওরি কি প্রমান করে দেখানো সম্ভব?”

“সম্ভব। আমি দীর্ঘদিনের রিসার্চ থেকে বের করেছি দিনের অর্ধভাগ অর্থাৎ ১২ ঘণ্টা ধরে একটা নির্দিষ্ট রুটে ভ্রমন করলে টাইম লাইন ক্রস করা সম্ভব হবে। কিন্তু সেজন্য প্রচুর আর্থিক সাহায্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজন। যার কোনটাই আমি পাবনা”।

“আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?”

প্রফেসর ইউসুফ হাসলেন, “আমি বাকিটা জীবন চেষ্টা করে যাব এই থিওরি প্রমান করার। কখনো সফল হতে পারব না কিনা জানিনা। কিন্তু বেঁচে থাকতে হাল ছারব না”।



শঙ্কিত চোখে টিভি পর্দায় স্বামীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলেন মিসেস ইউসুফ শিকদার। স্বামীর গলার এই সুর তার অনেক দিনের চেনা। সমাধানে পৌঁছানোর আগে তাকে থামানো সম্ভব নয়।



****



৩রা নভেম্বর, ২০১৩

স্থানঃ চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ



জামিল সাহেব দিনের মধ্যে যে কাজটি সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়ে করেন তা হচ্ছে পেপার পড়া। রিটায়ার করার পর থেকেই সকাল বেলা চায়ের কাপে চুমুকের ফাকে ঘণ্টা খানেক লাগিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পত্রিকার প্রত্যেকটা লাইন পড়া তার নিত্যদিনের রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ পত্রিকা খুলেই তার চোখ ছানাবড়া হয়ে উঠল। প্রথম পাতাতেই বড় করে একটা নিউজ ছেপেছে। পড়তে পড়তে জামিল হায়দার চায়ের কাপে চুমুক দেয়ার কথা ভুলে গেলেন।



“বিখ্যাত মানুষের অদ্ভুত খেয়াল”



আগামীকাল বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় চলচিত্র অভিনেতা সাজিদ খান এর ৩০ তম জন্মদিন। সাজিদ খান নামটি এই উপমহাদেশে নতুন কিছু নয়। তার জন্ম ঢাকায়। ছোটবেলায় পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। অসাধারন অভিনয় প্রতিভার জোরে নিজেকে হলিউডের চলচ্চিত্রে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অস্কার, গোল্ডেন গ্লোবের মত বড় বড় পুরস্কার সব আদায় করে নিয়েছেন খুব কম বয়সেই।

এবছর জন্মদিন পালন উপলক্ষে তার মাথায় এক অদ্ভুত খেয়াল চেপেছে। তিনি একই দিনে ১২ টি ভিন্ন যায়গায় ১২বার ১২টি কেক কেটে নিজের জন্মদিন পালন করতে চান। আর সেই ১২ বার জন্মদিন পালনের ব্যাপারটিও অদ্ভুত। স্থানীয় সময় অনুযায়ী প্রতিবার ঠিক রাত ১২ টার সময় কেক কেটে তিনি নিজের জন্মদিন পালন করবেন। তিনি যদি সফল হন তবে এটা হতে পারে একটা বিশ্বরেকর্ড। গিনেজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ইতিমধ্যে তার ডাকে সাড়া দিয়ে তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছে। এছাড়াও অনেক কোম্পানি তাকে স্পন্সর করতে চেয়েছে। ইতিমধ্যে এক্সন মোবিল সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। স্যাটেলাইট টিভি প্রোভাইডার ডিরেক্ট টিভির কিনে নিয়েছে সমস্ত প্রোগ্রাম লাইভ দেখানোর সত্ত্ব। গ্রিনিচ মান মন্দিরের টাইমজোন অনুযায়ী সাজিদ খান একটি রুট বেছে নিয়েছেন। এই রুট ধরে চলার পথে ১২ বার তিনি থামবেন এবং জন্মদিন পালন করবেন।

চার্টার্ড প্লেন ভাড়া করা হয়েছে। এজন্য বেছে নেওয়া হয়েছে বিশ্বের অন্যতম বড় এয়ারক্র্যাফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিএকশন ইঞ্জিন’স এর তৈরি আধুনিক বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন এয়ারক্র্যাফট স্কাইলন স্পেস প্লেন। এই প্লেনের গতির সাথে রকেটের গতির তুলনা চলে। প্লেনটি ৩০০ যাত্রী নিয়ে মাত্র ৪ ঘণ্টায় ইউরোপ থেকে অস্ট্রলিয়া পাড়ি জমাতে পারে। প্লেনটির চিফ ডিজাইনার অ্যালান বন্ড-এর ভাষ্যমতে প্লেনটি একটি স্ট্যান্ডার্ড রানওয়ে থেকে টেক অফ করলে ঘণ্টায় প্রায় ১৯০০০ মাইল স্পীড তুলতে সক্ষম। চলার রুটে প্রয়োজনে প্লেন বদল করতে হতে পারে তাই বিকল্প প্লেনের ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। তবে বিকল্প প্লেনের ব্যবস্থা থাকলেও বিকল্প পাইলটের ব্যাবস্থা নেই। প্রধান পাইলট হিসেবে আছেন জন ল্যাম্পারড। তিনি এমিরেটস এয়ারলাইন কোম্পানির একজন দক্ষ ও দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ পাইলট। তার সহযোগী হিসেবে আছেন নায়ক সাজিদ খান নিজেই। উল্লেখ্য যে নায়ক সাজিদ খান চলচিত্রে অভিনয়ের আগে একজন বেসরকারি পাইলট ছিলেন। সাজিদ খান, তার স্ত্রী সুচিত্রা, পাইলট জোন এবং দুজন এয়ার হোস্টেস সহ মোট ৫ জন আরোহী নিয়ে প্লেনটি আকাশে উঠবে। একদিনের জন্য এই প্লেন ভাড়া করতে কি পরিমান অর্থ খরচ করতে হচ্ছে সাজিদ খানকে, এই প্রসঙ্গে সঠিক তথ্য জানা যায়নি, তবে সেটা কোটির ওপরে সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। গোপন সুত্রে প্রকাশ, অ্যামাউন্টটি নয় অংকের! সম্ভাব্য অবস্থানের জন্য দেশগুলোর সরকার এবং তাদের বিমানবন্দর কতৃপক্ষের সাথে ইতিমধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার খরচ হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। আগামীকাল ঢাকার হযরত শাহজালাল রহঃ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে সাজিদ খান শুরু করবেন এই পথ চলা। সে যাত্রা শেষ হবে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে গিয়ে। সম্ভাব্য যে টাইমজোন ও দেশগুলোতে তারা থামবেন জন্মদিন পালনের জন্য তা নিচে উল্লেখ করা হলঃ



১. বাংলাদেশ সময়ঃ রাত ১২টা।

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ +০৬.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ বাংলাদেশ

বিকল্প অবস্থানঃ নেই



২. বাংলাদেশ সময়ঃ রাত ১টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ +০৫.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ মালদ্বীপ

বিকল্প অবস্থানঃ উজবেকিস্তান, পাকিস্তান



৩. বাংলাদেশ সময়ঃ রাত ২টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ +০৪.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ ওমান

বিকল্প অবস্থানঃ আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, আরব আমিরাত



৪. বাংলাদেশ সময়ঃ রাত ৩টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ +০৩.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ জর্ডান

বিকল্প অবস্থানঃ বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, সৌদি আরব



৫. বাংলাদেশ সময়ঃ রাত ৪টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ +০২.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ মিশর

বিকল্প অবস্থানঃ দক্ষিণ আফ্রিকা, মোজাম্বিক, জিম্বাবুয়ে



৬. বাংলাদেশ সময়ঃ ভোর ৫টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ +০১.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ আলজেরিয়া

বিকল্প অবস্থানঃ নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন, তিউনিশিয়া



৭. বাংলাদেশ সময়ঃ ভোর ৬টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ +০০.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ আইভরি কোস্ট

বিকল্প অবস্থানঃ ঘানা, আইসল্যান্ড



৮. বাংলাদেশ সময়ঃ সকাল ৭টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ -০১.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ কেপভার্দ

বিকল্প অবস্থানঃ নেই



৯. বাংলাদেশ সময়ঃ সকাল ১০টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ -০৪.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ বলিভিয়া

বিকল্প অবস্থানঃ চিলি, ত্রিনিদাদ এন্ড টোব্যাকো



১০. বাংলাদেশ সময়ঃ সকাল ১১টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ -০৫.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ পেরু

বিকল্প অবস্থানঃ কিউবা, জ্যামাইকা



১১. বাংলাদেশ সময়ঃ দুপুর ১২টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ -০৬.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ কোস্টারিকা

বিকল্প অবস্থানঃ এল সালভাদর, মেক্সিকো



১২. বাংলাদেশ সময়ঃ বিকেল ৪টা

স্থানীয় সময়ঃ রাত ১২টা

আন্তর্জাতিক সময়ঃ -১০.০০

সম্ভাব্য অবস্থানঃ হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ

বিকল্প অবস্থানঃ নেই



লক্ষ করলে দেখবেন বিভিন্ন টাইমজোন পাড়ি দেয়ার ফাকে সাজিদ খান সুকৌশলে ইউরোপিয়ান দেশ গুলোকে এড়িয়ে গেছেন। অনেকে বলছেন ইউরোপে সাজিদ খানের জনপ্রিয়তা না থাকা এর প্রধান কারন। আবার অনেকেই বলছেন ইউরোপ হয়ে যাওয়াটা খুব বেশি ব্যায়বহুল হতে পারে তাই খরচ কমাতে এই ব্যাবস্থা। তবে সাজিদ খান বলেছেন, “যেভাবে সুবিধা হয়, কম ভ্রমনে লক্ষে পৌঁছানো যায় সেভাবেই প্লান করা হয়েছে। ইউরোপ- আফ্রিকা কোন সমস্যা নয়”। এদিকে এমন ইচ্ছা হওয়ার কারন জিজ্ঞেস করলে সাজিদ খান বলেন, “তেমন কোন কারন নেই। আমার স্বভাবটাই এমন একটু পাগলাটে। বিয়ের পর এই প্রথম জন্মদিন আমার। চেয়েছিলাম এবার এমন কিছু করতে যেন পৃথিবীবাসী অনেক দিন তা মনে রাখতে পারে”। “কিন্তু ১২ বারই কেন? কম বেশি নয় কেন?” এমন প্রশ্নের জবাবে সাজিদ খান বলেন, “আমি জন্মভূমি বাংলাদেশ থেকে শুরু করে বর্তমান আবাস স্থল হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে গিয়ে এই ভ্রমন শেষ করতে চাই। হিসেব করে দেখেছি এর মধ্যে ১২বার জন্মদিন পালন সম্ভব, তাই ১২ বার ঠিক করেছি। এছাড়া বিশেষ কোন কারন নেই”।



এদিকে সমালোচকরা বলছেন অদ্ভুত খেয়ালের বসে এত টাকা খরচ না করে সাজিদ খান এই টাকা দিয়ে খুব সহজেই ভাগ্যবঞ্চিত অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারতেন। সেটাও পৃথিবীবাসী অনেকদিন মনে রাখার মত একটা কাজ হত।



***



তারিখঃ ৪ঠা নভেম্বর, ২০১৩

স্থানঃ কলকাতা, ভারত



মোবাইল থেকে ফেসবুকে চ্যাট করছিল দীপা। হঠাৎ মৌরির ফোন আসায় বিরক্ত হল। কল রিসিভ করে বলল, “কি ব্যাপার?”

“কি করছিস?”

“সুজয়ের সাথে চ্যাট করছিলাম। তুই কল দিয়ে তো দিলি ভেজাল করে”। বিরক্তি প্রকাশ পেল দীপার কণ্ঠে।

“আরে রাখ তোর সুজয়”। ওপাশ থেকে মৌরির গলায় উত্তেজনা টের পাওয়া গেল। “ভুলে গেছিস আজ যে সাজিদ খানের জন্মদিন”।

“ওহ মাই গড!!” চেঁচিয়ে উঠল দীপা।

“আমি জানতাম তুই ভুলে যাবি। এক্ষুনি টিভি অন কর। কেক কাটা হয়ে গেছে!”



দীপা দৌড়ে গেল ড্রয়িং রুমে। দেখল ছোটভাই অমিত আগে থেকেই টিভি ছেড়ে বসে আছে। সে রাগে ভ্রু কুচকাল, “কিরে তুই একা একাই দেখছিস আমাকে ডাকিস নি কেন?”



অমিত কিছু বলল না। সে টিভি দেখায় ব্যস্ত।



দীপা ধপ করে সোফায় বসে পরল। কেক কাটা পর্ব শেষ। এখন নায়ক সাজিদ খান তার স্ত্রী সুচিত্রাকে কেক খাওয়াচ্ছে। উপস্থাপক বলছে, “আমরা দেখতে পাচ্ছি এবার সাজিদ খান তার স্ত্রী সুচিত্রাকে কেক খাওয়াচ্ছে। আসেপাশের মানুষের বিপুল করতালি আপনার শুনতে পাচ্ছেন”।



দীপা মনে মনে বলল, “অমন সুদর্শন একটা মানুষ কীভাবে এমন বোয়াল মাছের মত মুখওয়ালা মেয়েকে বিয়ে করল?”



উপস্থাপক বললেন, “এবার আমরা সাজিদ খানের সাথে দুই একটা কথা বলল, স্যার, প্রথম জন্মদিন তো পালিত হয়ে গেল। আপনার অনুভুতি কি?”



উপস্থাপক মাইকটা সাজিদ খানের দিকে বাড়িয়ে ধরলেন। সাজিদ খানের ভরাট কণ্ঠস্বর শুনে দীপা শিউড়ে উঠল, “অনুভুতির কথা তো অল্প কথায় বলে শেষ করা যাবেনা। কিন্তু আপনারা জানেন আমাদের হাতে সময় খুব কম। মাত্র ১ ঘন্টার মধ্যে মালদ্বীপ পৌঁছুতে হবে। সংক্ষেপে শুধু এত টুকুই বলব, আমি খুব এক্সাইটেড। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। ইনশাল্লাহ, আপনাদের শুভকামনা পাশে থাকলে আমি এই কাজে সফল হতে পারব। ধন্যবাদ”।



উপস্থাপক এবার মাইক ধরলেন সুচিত্রার দিকে, “আপনার অনুভুতি কি সুচিত্রা?”



“আমি খুব খুব খুব এক্সাইটেড। নেক্সট জার্নি মালদ্বীপ। আমি আগে কখনো মালদ্বীপ যাইনি। আই হোপ উই উইল বি এবল টু মেইক ইট ইন ওয়ান আওয়ার”।



দীপা আনমনে গুজুর গুজুর করছে, “উহ! ইংরেজি মারছে! বেটি তোর কণ্ঠ হচ্ছে ফ্যাসফেসে, তোর তো কথা বলাই উচিত না!”



টিভিতে উপস্থাপক বলছেন, “এখানেই শেষ হল সাজিদ খানের প্রথম জন্মদিন পালন। এখন স্কাইলন প্লেনে চেপে মালদ্বীপ যাবেন সাজিদ খান এবং তার স্ত্রী। হাতে সময় আছে এক ঘন্টা অর্থাৎ আর ঠিক এক ঘন্টা বাদে মালদ্বীপের স্থানীয় সময় অনুযায়ী ১২টা বাজবে। এর আগেই সেখানে পৌঁছুতে হবে সাজিদ খানকে, এজন্য পাড়ি দিতে হবে ১৪৭৭.০১ মাইল পথ। কোথাও যাবেন না। আমাদের সাথেই থাকুন। ঠিক একঘন্টা পরে আপনাদের সাথে দেখা হবে মালদ্বীপের রাজধানী মালের হুলহুলে উপদ্বীপে অবস্থিত ইব্রাহিম নাসির ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে.........”

দীপা ব্যাস্ত হয়ে পড়ল ফেসবুকে সাজিদ খানকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিতে।



***



৪ঠা নভেম্বর ২০১৩

স্থানঃ মানামা, বাহরাইন।



ঠাস করে টিভি সেটটা বন্ধ হয়ে গেল। লোড শেডিং হয়েছে সেটা বুঝতে দু সেকেন্ড সময় লাগল হাবীবের। এই মধ্যরাতে লোড শেডিং! মেজাজ সপ্তমে চড়ল তার। এখন উপায় কি? জলদি মোবাইলে এয়ারফোন কানেক্ট করে এফএম রেডিও অন করল সে। যাক বাঁচা গেল! রেডিওতেও সাজিদ খানের জন্মদিন পালনের বর্ণনা দিচ্ছে।



“...লিসেনারস, আমরা এখন আছি মিশরের নীলনদের তীরে। এখানেই ৫ম বারের মত কেক কেটে জন্মদিন পালন করতে চলেছেন সাজিদ খান। আপনার নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন এই ভেবে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, ওমান, জর্ডানের মত কেন মিশরেও এয়ারপোর্টে জন্মদিন পালন করছেন না সাজিদ খান। কারনটি হচ্ছে জর্ডানের রাজধানী আম্মানের রানী আলিয়া বিমানবন্দর থেকে কায়রো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের দূরত্ব মাত্র ৩০৮ মাইল। মাত্র ১৮ মিনিটে পৌঁছে গেছে স্কাইলন প্লেন। হাতে যথেষ্ট সময় থাকায় কায়রো থেকে একটি হেলিকপ্টারে চেপে স্ত্রী সুচিত্রাকে নিয়ে নীলনদের তীরে এসেছেন সাজিদ খান।



এইমাত্র স্থানীয় সময় অনুযায়ী রাত ১২টা বেজেছে, সাজিদ খান কেক কাটছেন। তাকে ঘিরে দাড়িয়ে আছেন অগনিত ভক্তরা। সমস্ত নদীর তীর আলোয় উদ্ভাসিত। মিশরের নীল নদ যেন আজ অন্যরকম এক মাত্রা পেল! সেই সাথে বোনা হল আরও একটা ইতিহাসের বীজ। আমরা দেখতে পাচ্ছি সাজিদ খান তার স্ত্রী সুচিত্রাকে কেক খাইয়ে দিচ্ছেন... চারিদিকে তুমুল করতালি... এবার সুচিত্রা সাজিদ খানকে কেক খাওয়াচ্ছেন... এবং এরই সাথে শেষ হল আরও একটি জন্মদিন পালন। এখন হেলিকপ্টারের করে সাজিদ খান ফিরে যাবেন কায়রো বিমানবন্দরে।



লিসেনারস, আপনারা জানেন জর্ডানে ল্যান্ড করার সময় স্কাইলন প্লেনটি রানওয়ে থেকে কিছুটা ছিটকে গিয়েছিল। ল্যান্ডিং পারফেক্ট না হওয়ায় বিমানে সামান্য ত্রুটি ধরা পরেছে। ইতিমধ্যে বিকল্প প্লেনের কথা চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। সম্ভবত কেপভার্দ যাওয়ার পর প্লেনটি পরিবর্তন করা হবে। আপাতত পরবর্তী গন্তব্য নাইজেরিয়া। লিবিয়ার আকাশপথ ব্যবহার করতে লিবিয়ান সরকার আপত্তি করায় আলজেরিয়ার পরিবর্তে শেষ মুহূর্তে নাইজেরিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন সাজিদ খান। মিশর থেকে নাইজেরিয়া প্রায় ১৮৯৭.৫৩ মাইল দূর। প্রচণ্ড গতিতে এগোতে না পারলে একঘণ্টায় সেখানে পৌঁছুনে সম্ভব হবেনা। তাই বলা যায় সাজিদ খান এই প্রথম একটি সত্যিকারের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চলেছেন”।



কান থেকে এয়ার ফোন খুলল হাবীব। “শিট!! টিভিতে দেখতে পারলে ভাল লাগত! লোডশেডিংয়ের জ্বালায় লাইফটাই হেল হয়ে গেল। সাজিদ খানকে না হোক, অন্তত তার রূপসী স্ত্রী সুচিত্রার মুখটা এক নজর দেখতে পারলেও শান্তি পেতাম”!



***



৪ঠা নভেম্বর ২০১৩

স্থানঃ নাইরোবি,কেনিয়া।



ভোরবেলা স্বামীকে বিছানায় না দেখে অবাক হলনা সাচিনি। ড্রয়িং রুম থেকে টিভির আওয়াজ আসছে। সে উঠে এল।“কি ব্যাপার স্টিভ? এই ভোর বেলা আবার টিভির সামনে এসে বসে আছো! এমনিতে সারারাত ঘুমাওনি! আজ আর অফিসে যাওয়া লাগবে না!”

ঘাড় ঘুরিয়ে স্ত্রীর দিকে তাকাল স্টিভ, মুখে হাসি। “এমন দিন তো বার বার আসবে না। আজ না হয় না গেলাম অফিসে”।

“অফিস থেকে ফোন করলে কি বলবে?”

“বানিয়ে বানিয়ে কিছু একটা বলে দেব। এখন এস আমরা সাজিদ খানের জন্মদিন পালন দেখি”।

সাচিনি স্বামীর পাশে বসতে বসতে বলল, “কি অবস্থা? এখন কোথায় আছে সাজিদ খান?”

“সেটাই তো বুঝতে পারছি না। যাওয়ার কথা ছিল আলজেরিয়া, পরে বলা হল যাবে নাইজেরিয়া, এখন আবার দেখি আলজেরিয়ায় ল্যান্ড করেছে! এই মাত্র কেক কেটে আবার টেক অফ করেছে”।



দুজনের দুজোড়া চোখ টিভির মনিটরে নিবদ্ধ হল।



“.... এই মাত্র সঠিক খবর আমাদের হাতে এসেছে। প্লেনটি মিশর থেকে টেক অফ করার পর প্লেনের ইতিমধ্যে ধরা পরা ত্রুটিটি বড় আকার ধারন করে। পাইলট জন সাজিদ খানকে জানান নাইজেরিয়া গিয়ে প্লেন পরিবর্তন করতে হবে। ত্রুটি পূর্ণ এই প্লেন নিয়ে আর টেক অফ করা সম্ভব হবেনা। নাইজেরিয়ায় কোন স্কাইলন প্লেন নেই। নিকটবর্তি ইউরোপিয়ান দেশ স্পেনেই শুধু ব্যাকআপ প্লেন রেডি ছিল। সেখান থেকে নাইজেরিয়া প্রায় ২৩০১ মাইল দূরবর্তী। এক ঘণ্টায় স্পেন থেকে নাইজেরিয়া পৌঁছুনো সম্ভব নাও হতে পারে তাই পূর্বের গন্তব্য আলজেরিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সাজিদ খান। এদিকে প্রধান স্পন্সর কোম্পানি এক্সন মোবিলের বিশেষ অনুরোধে লিবিয়ান সরকার সাজিদ খানকে লিবিয়ার আকাশ ব্যবহারের অনুমতি দেয়। ১২টা বাজতে কেবল ২মিনিট বাকি থাকতে সাজিদ খান প্লেন নিয়ে আলজেরিয়ার আন্নাবা সিটির রাবাহ বিতাত এয়ারপোর্টে পৌঁছান। হাতে সময় কম থাকায় কেক কেটেই আবার পরবর্তী গন্তব্য আইভরি কোস্টের আবিদজান শহরের পোর্ট বুয়েত এয়ারপোর্ট এর দিকে রওনা হয়েছেন, আলজেরিয়া থেকে যার দূরত্ব প্রায় ১৫৭৩.৮৭ মাইল। যাত্রা পথে এই প্রথম সাজিদ খানকে একটা বড় ধরনের বিপত্তির মোকাবেলা করতে হয়েছে। তবে আরও একটি বিপত্তি ঘটতে পারে আবিদজান থেকে কেপভার্দ যাওয়ার সময়। কারন এই স্থানের কোন বিকল্প ঠিক করে রাখেন নি সাজিদ খান..........”



***



৪ঠা নভেম্বর, ২০১৩

স্থানঃ কিয়েভকা, কাজাকাস্তান



আহমেদ মাসউদ মসজিদ থেকে ফজরের নামাজ শেষে বাড়ি ফিরেই দেখেন দরজার সামনে পত্রিকা পরে আছে। আজ দেখি সকাল সকাল হকার পত্রিকা দিয়ে গেল। কোন কোন দিন তো ৮টা -৯টা বেজে যায় জমিদার মশাইয়ের।



পত্রিকা হাতে নিতেই মেজাজ গরম হয়ে গেল তার। প্রথম পাতা জুড়ে সাজিদ খানের জন্মদিন পালনের কাহিনি ছাড়া কিছু নেই। ইচ্ছে হচ্ছে পত্রিকাটা নর্দমায় ফেলে দিতে। কয়েকদিন যাবত এই ফালতু কর্মকাণ্ডের বর্ণনা ছাড়া পত্রিকাতে আর কিছু ছাপছেই না। যেখানে যাও শুধু সাজিদ খান সাজিদ খান!



আহমেদ মসউদের ছোটমেয়ে শবনম কখন যেন পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে। পেছন থেকে সে বলল, “আব্বা, আপনি কি আজ পেপারটা একটু পরে পড়বেন? খুব ইম্পরট্যান্ট খবর ছেপেছে তো, তাই!”



আহমেদ মাসউদ মনে মনে বললেন, “কি তোমার ইম্পরট্যান্ট খবর তা তো আমি জানিই! এই সাজিদ খানকে নিয়ে উঠতি বয়সি মেয়ে গুলো কি পেয়েছে কে জানে! বিবাহিত একটা পুরুষের প্রতি তাদের এত আকর্ষণ কেন?” কিন্তু মুখে হাসি ধরে রেখে বললেন, “ঠিক আছে, শবনম। আজ তুমি আগে পড়!”



পত্রিকা হাতে নিয়ে শবনম প্রায় দৌড়ে নিজের রুমে এসে দরজা আটকে দিল। বিছানায় আধশোয়া হয়ে পত্রিকা মেলল। পাতায় পাতায় শুধু কেক কাটা আর জন্মদিন পালনের ছবি। কেপভার্দ পর্যন্ত সব রাত জেগে দেখা হয়ে গেছে তার। লেটেস্ট খবর জানা নেই। কেপভার্দ থেকে বলিভিয়া যাওয়ার পথে কিছু সমস্যা হয়েছে জানা গেছে। তাই ৯ম জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠান লাইভ দেখানো হয়নি। একটু খুঁজতেই খরবরটা খুজে পেল শবনম।



“বলিভিয়ার বদলে চিলিতে পালিত হল ৯ম জন্মদিন”



কেপভার্দ থেকে বলিভিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করার পূর্বেই সাজিদ খান জানতে পারেন বলিভিয়ান প্রেসিডেন্ট জোয়ান ইভো মোরালেস আইমা ঘোষণা দিয়েছেন তাকে বলিভিয়াতে ল্যান্ড করতে দেওয়া হবেনা। কেপভার্দ থেকে বলিভিয়া ৩৪৮৯.২৮ মাইল দূরে অবস্থিত। হাতে তিন ঘন্টা নিয়ে এই দূরত্ব অতিক্রম করা সম্ভব ছিল। সম্ভাব্য বিকল্প অবস্থান হতে পারত ত্রিনিদাদ এন্ড টোব্যাকো। কিন্তু সেখান থেকে পরবর্তী গন্তব্য পেরুর পথে যাত্রার সু ব্যাবস্থা নেই। তাই সবচেয়ে দীর্ঘযাত্রা পথ চিলিকে বেছে নেওয়া হয় পরবর্তী জন্মদিন পালনের জন্য। উল্লেখ্য যে কেপভার্দ থেকে চিলি প্রায় ৪৭০৯.৪৮ মাইল দূরে অবস্থিত। এদিকে কেপভার্দ এর আশেপাশের সামুদ্রিক অঞ্চলে নিন্ম চাপের কারনে প্রতিকুল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর উত্তাল হয়ে ওঠে। তাই এয়ারপোর্ট অথোরিটি স্কাইলনকে টেক অফ করতে নিষেধ করে। প্রতিকুল আবহাওয়ায় এতটা পথ তিন ঘণ্টায় পাড়ি দেওয়া ছিল প্রায় অসম্ভব কাজ। কিন্তু পাইলট জন ল্যাম্পারড তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সময় মত চিলিতে পৌঁছায়। পথে অবশ্য ব্রাজিলে থামতে হয়েছে রিফুয়েলিং এর জন্য। পরবর্তী গন্তব্য পেরু প্রায় ১৮৪৫.০৪ মাইল দূরে। এক ঘণ্টায় সেখানে পৌঁছুনো আরও একটা চ্যালেঞ্জ তাই বেশি দেরি না করে দ্রুত টেক অফ করেন পাইলট জন।



আর একটা খবরে শবনবের দৃষ্টি আটকে গেল।



“বলিভিয়ায় প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ”



বলিভিয়ান সরকার প্রাথমিক অবস্থায় সাজিদ খানের বলিভিয়াতে জন্মদিন পালনকে স্বাগত জানায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দেশটির কংগ্রেস পার্টি প্রধান এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট জোয়ান ইভো মোরালেস আইমার আপত্তির কারনে সাজিদ খানকে দেওয়া বলিভিয়াতে ল্যান্ড করার অনুমতি ফিরিয়ে নেওয়া হয়। প্রেসিডেন্ট বলেছেন বলিভিয়া ইতিহাসের কোন কৌতুকপূর্ণ অধ্যায়ের অংশ হয়ে থাকতে চায়না। কিন্তু দেশটির যুব সম্প্রদায়ের জনসাধারণ এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রেসিডেন্সিয়াল রেসিডেন্টের সামনে নানা রকমের ব্যানার ও পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় পুলিশের জল কামান নিক্ষেপ ও লাঠি চার্জে বেশ কিছু বিক্ষোভকারি আহত হয়। ধারনা করা হচ্ছে এই সিদ্ধান্ত আসন্ন নির্বাচনে কংগ্রেস পার্টির গ্রহন যোগ্যতা কমিয়ে দেবে বহুলাংশে।



***



৪ঠা নভেম্বর, ২০১৩

বেকারস ফিল্ড, ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য, ইউএসএ।



“ওহ কেভিন, তোমার জন্যই দেরি হয়ে গেল”। দরজা খুলতে খুলতে বলল সিমি।

“শুধু আমাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই সিমি। তুমিই তো বললে আঙ্কেল ফিলিপ অনেক অসুস্থ, একবার দেখে না আসলে খারাপ দেখায় খুব। তাই তো যাওয়া হল”।

সিমি ততক্ষনে ভেতরে ঢুকে লাইট জ্বালাল, “কিন্তু আমি তো বলেছিলাম তোমার বাইকটা নেয়ার জন্য। তুমি বললে বাসে যাবে। রোজডেলের দিকে বাস সার্ভিসের বাজে অবস্থা সেটা তো জানতেই”।

“কিন্তু তুমি তো জানতে সাজিদ খান কোস্টারিকার বদলে সরাসরি ক্যালিফোর্নিয়ার আসছে ১১তম জন্মদিন পালনের উদ্দেশ্যে। আমরা তো বাড়িতে না ফিরে সরাসরি এয়ারপোর্টের দিকে চলে যেতে পারতাম”।

সিমি রিমোট টিপে টিভি অন করতে করতে বলল, “ছাই পারতাম! এখন সেখানে যে ভিড় হয়েছে তোমার ধারনা আছে কোন? আগে আগে যেতে পারলে হত। এখন আর একনজর দেখতে পাওয়া যায় কিনা সন্দেহ। তারচেয়ে টিভিতেই দেখি”।



টিভি অন হতেই রিপোর্টারের কথা শোনা গেল। “...... ক্যালিফোর্নিয়া বাসী ভাবতেও পারেনি সাজিদ খানের ১১তম জন্মদিনের সাক্ষী হয়ে থাকবে তারা। সাজিদ খানের যাওয়ার রুটে ক্যালিফোর্নিয়া আসার কোন প্লান ছিলনা। পেরু থেকে কোস্টারিকার উদ্দেশ্যে উড্ডয়নের পর জানা যায় কোস্টারিকায় যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কোস্টারিকা ভ্রমন ও কোস্টারিকা সম্বন্ধীয় কিছু বৈদেশিক চুক্তির স্বাক্ষরের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীদের দাবী মেনে রাজধানী স্যান জোসের দুটি এয়ারপোর্ট থেকেই যুক্তরাষ্ট্র গামী এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগত সকল ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। এই অবস্থায় কোস্টারিকায় ল্যান্ড করাটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এদিকে পেরু থেকে টেক অফ করার আগেই খবর পাওয়া যায় হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি সমুদ্রে নিন্ম চাপ থেকে প্রচণ্ড সামুদ্রিক ঝড়ের সৃষ্টি হয়েছে, হাওয়াইয়ের দিকে ধেয়ে আসছে সাইক্লোন। তাই সময়ের আগে থাকার জন্য সমগ্র মেক্সিকো পাড়ি দিয়ে সাজিদ খান ল্যান্ড করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। ৪২৮৯.৪৯ মাইল পথ পাড়ি দিতে সাজিদ খানের প্লেন মেক্সিকো সিটিতে একবার অল্প সময়ের জন্য নেমেছিল রিফুয়েলিং করতে। ক্যালিফোর্নিয়া কোস্টারিকার তুলনায় টাইম জোন অনুযায়ী দুই ঘণ্টা পিছিয়ে আছে, তাই এখান থেকে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে যাওয়ার জন্য হাতে এখনও দু ঘণ্টা সময় রয়েছে। দূরত্ব ২৪৭১.৩৭ মাইল। আমরা এখন চলে যাব বেকারস ফিল্ড এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে। সেখানে আমাদের প্রতিনিধি হ্যারিস আছেন সাজিদ খানের সাথে”।



লাউঞ্জে রিপোর্টার হ্যারিস শুরু করলেন, “ভিউয়ারস, আমরা এখন আছি বেকারস ফিল্ড এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে। আর কিছুক্ষন পর ক্যালিফোর্নিয়ার সময় অনুযায়ী বাজবে রাত ১২টা। সাথে সাথে কেক কেটে ১১তম বারের মত জন্মদিন পালন করবেন সাজিদ খান।



কিন্তু দর্শক, আপনারা দেখতে পাচ্ছেন লাউঞ্জ জুড়ে সবার মাঝেই একটা মনমরা ভাব। সাজিদ খান নিজেও এখন আর হাসছেন না। দীর্ঘ সময়ের জার্নির কারনে তিনি এবং পাইলট জন ল্যাম্পারড দুজনেই ক্লান্ত। তবে মন খারাপের কারন ক্লান্তি নয়। মন খারাপের কারন হচ্ছে দুটো। প্রথম কারনটি আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন। সাজিদ খানের স্ত্রী সুচিত্রা পেরুতে পৌঁছানোর পর খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পরেন। তাই তার পক্ষে আর ক্যালিফোর্নিয়া আসা সম্ভব হয়নি। তিনি পেরুর লিমা অঞ্চলের ন্যাশনাল হসপিটাল দেল সুরে ভর্তি আছেন। একটু সুস্থ হলে পরবর্তীতে অন্য প্লেনে চেপে তিনি হাওয়াইতে ফেরত আসবেন সাজিদ খানের সাথে যোগ দিতে। এবার আসি ২য় কারনটির প্রসঙ্গে। আপনারা জানেন ইতিমধ্যে হাওয়াই দ্বীপ পুঞ্জে সর্বোচ্চ বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। সামুদ্রিক ঝড় উঠেছে নর্থ প্যাসিফিক সমুদ্রে। সাইক্লোন ধেয়ে আসছে ক্রমশ। ঝড় না থামা পর্যন্ত হাওয়াইকে নো ফ্লাই জোন হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে এবং সকল ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। তবে কি শেষে এসে সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে? সময় পারবে এর জবাব দিতে......”



***



৪ঠা নভেম্বর ২০১৩

স্থানঃ ঢাকা, বাংলাদেশ।



কাজের ছেলেটা প্রায় দৌড়ে এসে বলল, “আম্মাজান খবর শুনছেন নি?”

“কি খবর?”

“ভাইজানের প্লেন নাকি আকাশ থেকে হারায় গেছে!”

“বলিস কি?” বৃদ্ধা আতকে উঠলেন। “আমি তো শুনলাম যাওয়া বাতিল হয়ে গেছে সমুদ্রে ঝড়ের কারনে”।

“আমিও কিছু বুঝিনাই আম্মা। টিভিতে দেখাইতেছে, জলদি ছাড়েন টিভিটা”।

জলদি ছাড়েন বললেই তো ছাড়া যায়না। বৃদ্ধার শরিরে এখন আর আগের মত জোর নেই। সোফার উপর পরে থাকা রিমোটটা দেখিয়ে দিয়ে বললেন, “ঐযে রিমোট, ছাড় তুই”।



কাজের ছেলেটার তোর সইছে না। দু সেকেন্ড লাগল না টিভি অন হতে।



“...আমরা এখন অবস্থান করছি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের হ্যানা সিটির হ্যানা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে। স্থানীয় সময় অনুযায়ী এখন বাজে রাত ১১টা ৫০ মিনিট। এই মুহূর্তে অগনিত মানুষ দাড়িয়ে আছে এয়ার পোর্টের আসে পাশে। সবার লক্ষ একটাই- একটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা। অথচ কিচ্ছুক্ষন আগের কথা ভাবলে এখনও অনেকেই শিউরে উঠবেন। সর্বোচ্চ বিপদ সংকেতের ঘোষণা দেওয়ায় সমস্ত দ্বীপজুড়ে প্রচণ্ড আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু মিনিট দশেক আগে উত্তর মহাসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিন্মচাপটি দিক পরিবর্তন করে আলাস্কার দিকে ঘুরে গেলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার অবকাশ পায়। এখানেই সর্বশেষবারের মত জন্মদিন পালন করার কথা ছিল নায়ক সাজিদ খানের। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে যে এখন পর্যন্ত এয়ার পোর্ট অথোরিটি নায়ক সাজিদ খানের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি। রাডারে প্লেনের কোন অস্তিত্ব ধরা পরছেনা। ধারনা করা হচ্ছে প্লেনটি যেন অতল গহ্বরে হারিয়ে গেছে। আমরা এখন ফিরে যাচ্ছি ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের বেকারসফিল্ড সিটির মিডোস এয়ারপোর্টে আমাদের প্রতিনিধির কাছে চলুন জেনে আসি আসলে কি ঘটেছিল সেখানে”।



রিপোর্টার হ্যারিসকে দেখা গেল টিভি পর্দায়, “ভিউয়ারস, আমি এখন দাড়িয়ে আছি বেকারসফিল্ড সিটির মিডোস এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে। আমার সাথে আছেন স্কাইলন এয়ারক্র্যাফটের পাইলট জন ল্যাম্পারড। তিনি প্লেনটি নিয়ে বেকারসফিল্ডে পৌঁছানোর পর পরই আমরা হাওয়াইতে সম্ভাব্য সাইক্লোনের খবর জানতে পারি। তাই খুব দ্রুত ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্মদিন পালন শেষে পাইলট জন, নায়ক সাজিদ খান, গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড প্রতিনিধি, স্যাটেলাইট টিভি প্রোভাইডার ডিরেক্ট টিভির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রধান স্পন্সর এক্সন মোবাইল কোম্পানির প্রতিনিধির মাঝে একটা মিটিং হয়। আমরা এখন জনের মুখ থেকেই শুনব ঠিক কি বিষয়ে সেই মিটিং হয় এবং কি ঘটেছিল মিটিং এর পর।



পাইলট জন একটু কেশে গলা পরিস্কার করে নিলেন যেন ভাষণ দিতে প্রস্তুতি হচ্ছে! “আমরা মিটিংয়ে হাওয়াইয়ের বদলে বিকল্প স্থান নির্বাচনের চেষ্টা করছিলাম। সম্ভাব্য বিকল্প হতে পারত ফিজি দ্বীপপুঞ্জ। কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ফিজি প্রায় ৮৮৮০.৫৪ মাইল দূর। এতটা পথ অতিক্রমে অন্তত একবার রিফুয়েলিং প্রয়োজন হতে পারে। সেজন্য পথে কিরিবাতি দ্বীপ থেকে রিফুলেলিং করা যেত। কিন্তু সাইক্লোনের আওতার মাঝে কিরিবাতি দ্বীপপুঞ্জ ছিল। তাই এই চিন্তা বাতিল করা হয়। এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নেই হাওয়াই পাশ কাঁটিয়ে গিয়ে জনস্টোন প্রবালদ্বীপ হয়ে মার্শাল আইল্যান্ডে ল্যান্ড করব। সেটাও প্রায় ৪৮০২.৭৯ মাইল পথ। ঘুরে যাওয়ার জন্য পেরোতে হবে ৬০০০ মাইলের মত। সেখান থেকে রিফুলেলিং শেষে পাপুয়া নিউ গিনিতে গিয়ে নামা যাবে। এ প্রক্রিয়ায় সুবিধা হল হাতে ৪-৫ ঘণ্টা সময় পাওয়া যাবে। তাই সেখানে গিয়ে সাজিদ খান খুব সহজেই শেষবারের মত জন্মদিন পালন করতে পারবেন। এ বিষয়ে পাপুয়া নিউগিনির সমুদ্র তীরবর্তী মাদাং রাজ্যের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা সানন্দে আমাদের মাদাং এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করার অনুমতি দেয়। কিন্তু সাজিদ খান শুরু থেকেই হাওয়াইতে যাওয়ার ব্যাপারে ছিল বদ্ধ পরিকর ছিল। বিকল্প অবস্থান নির্ণয়ের প্রস্তাব তিনি মেনে নিতে পারেন নি। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জকে সম্ভাব্য ঝড়ের কারনে নো ফ্লাই জোন হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। হাওয়াই যাওয়ার পথে সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পরে প্লেনটি বিধ্বস্ত হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা ছিল। তাই নিয়ম না মেনে টেইক অফ করতে আমি রাজি হইনি। সাজিদ খানের এই অদ্ভুত খেয়ালের চেয়ে মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি। কিন্তু সাজিদ খান পাপুয়া নিউগিনি যেতে রাজি হন নি। তাই আমরা লাউঞ্জে বসে সামুদ্রিক ঝড় থামার প্রতিক্ষা করতে থাকি। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে হাওয়াই টাইমজন অনুযায়ী দু ঘণ্টা পিছিয়ে আছে। দূরত্ব প্রায় ২৪৭১.৩৭ মাইল। হাতে একঘণ্টা সময় পেলেও রিস্ক নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু একঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরও ঝড় থামার লক্ষণ দেখা গেল না। এদিকে সাজিদ খান বললেন লাউঞ্জে বসে থাকতে তার ভাল লাগছেনা তিনি প্লেনে গিয়ে বসতে চান। আমরা ভাবলাম একদম শেষে এসে সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে যাচ্ছে বলে হয়ত তার মনটা বিষণ্ণ হয়ে উঠেছে তাই কিছুক্ষন একা সময় কাটাতে চাইছেন। কিন্তু মিনিট পাঁচেক পর খবর পেলাম স্কাইলন প্লেনটি স্টার্ট নিয়েছে এবং রানওয়ে ধরে ছুটছে। আমরা যেতে যেতে প্লেনটি টেক অফ করল। কন্ট্রোল বক্স থেকে সাজিদ খানকে বার বার অনুরোধ করা হল ব্যাক করার জন্য কিন্তু তিনি শুনলেন না। সাজিদ খান প্রচণ্ড গতিতে লস এঞ্জেলস হয়ে উত্তর মহাসাগরের উপর দিয়ে প্লেন নিয়ে ছুটছিলেন। বেশ কিছুক্ষন এয়ারপোর্ট অথোরিটি প্লেনটি ট্র্যাক করতে পেরেছিল কিন্তু সামুদ্রিক ঝড়ের উৎসের মুখে পৌঁছুনর পর সব যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে প্লেনটির আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি”।



রিপোর্টার বললেন, “ভিউয়ারস, শুনলেন কি ঘটেছিল বেকারসফিল্ড এয়ারপোর্টে। এখন আমরা আপনাদের নিয়ে যাচ্ছি হাওয়াইতে”।



হাওয়াইয়ের রিপোর্টারের চোখে মুখে বিষণ্ণতা। হালকা গলায় বলছে, “ইতিমধ্যে বেজে গেছে রাত ১২টা। হ্যানা এয়ারপোর্টের অদুরে হ্যানা বিচ পার্কে বিশাল বড় এক কেক সাজিয়ে নিয়ে বসে আছেন ভক্তরা। সবাই উৎসুক চোখে তাদের প্রিয় অভিনেতার পথ চেয়ে বসে আছেন। এখানেই শেষবারের মত জন্মদিন পালন করার কথা ছিল সাজিদ খানের। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ঝড়ের কবলে পরে প্লেনটি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্লেন নিয়ে প্যাসিফিক ওশানের বুকে হারিয়ে গেছেন প্রিয়মুখ সাজিদ খান। আর কখনো রুপালী পর্দায় দেখা যাবেনা তাকে! সামান্য খেয়ালের বলি হয়ে চিরচিনের জন্য হারিয়ে গেছেন প্রিয় মানুষটি”।



কাজের ছেলেটি চেয়ে দেখল মিসেস ইউসুফ শিকদারের দুচোখ বেয়ে অশ্রু নামছে কিন্তু তিনি ঠোঁটে ধরে রেখেছেন অদ্ভুত এক হাসি। সে বুঝতে পারল না, সন্তানের বিপদের কথা শুনে মা হাসেন কীভাবে?



***

তারিখঃ অজানা

স্থানঃ অজানা



ধীরে ধীরে চোখ মেলল সাজিদ খান। কোথায় আছে বুঝতে দু সেকেন্ড সময় লাগল। ভাঙ্গাচোরা একটা প্লেনের ককপিটে তার অবস্থান। কি ঘটেছিল মনে করার চেষ্টা করল সে। যতদূর মনে আছে প্লেন নিয়ে হাওয়াইয়ের আকাশে পৌঁছানোর আগেই সামুদ্রিক ঝড়ের মুখে পরে সে প্লেনের নিয়ন্ত্রন হারায়। সামনে কিচ্ছু দেখা যাচ্ছিল না। হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকের সাথে চারপাশে এক উজ্জ্বল আলোয় বিচ্ছুরণ। ঠিক তার পর পরই এক গভীর অন্ধকারে ঢেকে গেল আকাশ। মনে যেন হচ্ছিল অনন্ত শূন্যের মাঝে কোথাও হারিয়ে গেছে সে। মস্তিষ্কে তীব্র ব্যাথার অনুভূতি। এভাবে কতটা সময় কেটে গেছে জানা নেই। একসময় আকাশ পরিষ্কার হয়ে আসে। তখন আকাশটাকে দেখাচ্ছিল রক্তিম আলোয় উদ্ভাসিত। এ অপার্থিব দৃশ্য। সেই দৃশ্যে চোখ রেখে জ্ঞান হারিয়ে ককপিটে লুটিয়ে পরে দীর্ঘ পথভ্রমনে ক্লান্ত সাজিদ খান। হয়ত সেই অবস্থাতেই ক্র্যাস ল্যান্ড করেছে প্লেনটা।



কতটা সময় এভাবে পরে আছে বোঝার উপায় নেই। এত ঝক্কির মাঝেও হাতঘড়িটা হাতে আটকে আছে! সাজিদ সময় দেখল, ভোর ৬টা বাজে! এতক্ষন হয়ে গেছে অথচ কেউ তাকে উদ্ধারের কাজে এগিয়ে আসেনি! যতদূর মনে হয় হাওয়াইয়ের কোন একটা দ্বীপে সে ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করেছে! কোন মতে নিজেকে ককপিট থেকে বের করে আনল। প্লেনটার খুব বেশি ক্ষয় ক্ষতি হয়নি। মেরামত করে নেওয়া যাবে, সৌভাগ্য বলতে হবে যে প্রানে বেঁচে গেছে সে।

প্লেন থেকে বাইরে বেড়িয়ে এসে অবাক হয়ে গেল সাজিদ খান। এ কেমন জায়গা? তার প্লেনটি ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করেছে একটা উচু নিচু পাহাড়ি অঞ্চলে। চারিদিকে ঘন জঙ্গল। এমন কোন প্লেস হাওয়াইতে আছে বলে তার জানা ছিলনা। এই কারনেই হয়ত মানুষ তার ল্যান্ডিং সম্পর্কে জানতে পারেনি। লোকালয় এখান থেকে কত দূরে কে জানে?



সাজিদ জঙ্গলের মাঝে পথ করে নিয়ে এগিয়ে গেল। কিছুদুর এগিয়ে আসতেই সে ধপ ধপ শব্দ শুনতে পেল। মনে হল ধাতু পেটানোর আওয়াজ। ঘন জঙ্গলের মাঝে আসে পাশে কোথায় যেন কেউ এক নাগাড়ে ধাতু পিটিয়ে চলেছে। আওয়াজটা সম্ভবত ডান দিক থেকে আসছে। শব্দের উৎস লক্ষ করে এগিয়ে গেল সাজিদ। পাহাড়ি উচু নিচু যায়গায় হাঁটতে বেশ কষ্ট হচ্ছে। কিছুদূর এগিয়ে আসার পর একটা ছোট্ট ডোমের মত যায়গা চোখে পড়ল। এর ভেতর থেকেই ধাতব আওয়াজ আসছে। কাছাকাছি এসে ডোমের গায়ে একটা ছোট্ট ফোঁকর নজরে এল। একজন মানুষ কষ্টে সৃষ্টে চাইলে ভেতরে ঢুকতে পারবে। বেশ কশরত করে ভেতরে ঢুকে পড়ল সাজিদ। ভিতরে ঢুকে একটা অদ্ভুত দর্শন যন্ত্র দেখতে পেল সে, এর ভেতর থেকেই শব্দ আসছে। আস্তে করে ডাকল, “কেউ কি আছেন?”



যন্ত্রের লোহা লক্করের মাঝ থেকে দাড়ি গোঁফে ঢাকা একটা মুখ উকি দিল। একমুহূর্ত তাকিয়ে থাকল সাজিদ। লোকটার সামনে চলে আসা বড় বড় চুলের আড়ালে চোখ দুটোর দিকে তাকিয়ে সাজিদের বুকের ভেতর ধক করে উঠল। সে অস্ফুট কণ্ঠে ডেকে উঠল, “বাবা”!

প্রফেসর ইউসুফ প্রায় ছুটে এসে ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিলেন। তাঁর কণ্ঠে দ্বিগুন উচ্ছ্বাস, “আমি জানতাম একদিন তুই আমাকে খুঁজতে খুঁজতে চলে আসবি। কিন্তু এত দ্রুত চলে আসবে এটা ভাবিনি”।



মিনিট দুয়েক লাগল বাপ ছেলের উচ্ছ্বাস কমতে। প্রফেসর ইউসুফ ছেলেকে ছেড়ে সরে দাঁড়ালেন। আবেগ জড়ানো কণ্ঠে বললেন, “কীভাবে সম্ভব করলি তুই এটা?”

“আমার জন্য বিষয়টা খুব কঠিন ছিলনা। আমি একজন বিখ্যাত অভিনেতা। ১২ বার জন্মদিন পালনের ইচ্ছা প্রকাশ করতেই সবাই উঠে পরে লাগল সাহায্য করার জন্য। নিজের টাকাও আছে প্রচুর। কিন্তু আমি ভাবছি তুমি কীভাবে এটা সম্ভব করেছিলে? তোমার সময়ে তো দ্রুতগতির প্লেন ছিলনা, তোমার টাকাও ছিলনা, কেউ তোমাকে সাহায্যও করেনি”।



প্রফেসর ইউসুফ হাসলেন, “সে অনেক ইতিহাস! আস্তে ধীরে বলব”।

সাজিদ প্রশ্ন করল, “আমরা এখন কোথায় আছি বাবা?”

“কেন? নিজের জন্মভূমিতে”।

“মানে? তুমি বলছ আমরা এখন বাংলাদেশে আছি?” সাজিদের কণ্ঠে অবিশ্বাস। “কিন্তু আমি তো হাওয়াই দ্বীপে ল্যান্ড করেছিলাম!”

“সেটা বুঝিয়ে বলছি। তার আগে বল তুই কি বাংলাদেশ থেকে যাত্রা শুরু করেছিলি?”

“হ্যা”।

“১২ বার টাইমজোন ক্রস করে হাওয়াইতে এসে যাত্রা শেষ করেছিস?”

“হ্যা”

তুই কি করে বুঝলি আমিও এই রুটে যাত্রা করেছিলাম?

“অনুমান করেছিলাম। শেষ খবর পেয়েছিলাম তুমি চিটাগং থেকে একটা চার্টার্ড প্লেন নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছ। সেখান থেকে ধারনা হল তোমার যাত্রার শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। তুমি যৌবনের একটা বড় সময় কাটিয়েছ হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে। ওখানেই পড়াশোনা করেছ, অনেক দিন যাবত গবেষণা করে নানা বিষয়ে। একটা বিজ্ঞান ফার্মে ভাল একটা চাকরিও করতে, কিন্তু মতের মিল না হওয়া চাকরি ছেড়ে জন্মভুমিতে ফিরে এসেছিলে। আমার বিশ্বাস ছিল তুমি যাত্রা শেষ করেছিলে সেখানে গিয়েই।”

“হুম, তুই আর আমি একই স্থান থেকে যাত্রা করে একই স্থানে গিয়ে থেমেছি। তাই বাই ডিফল্ট আমরা একই প্লেসে চলে এসেছি। থিওরি অনুযায়ী ১২ বার টাইমজোন পেরিয়ে একই সময়ে অবস্থান নিতে পারলে তুই যেখান থেকে শুরু করেছিস সেখানেই ফিরে আসবি। আর অতীতে যাত্রা করলে ১২ বার পুরা হলে তুমি চলে যাবে সুদুর অতীতে, কিন্তু ভবিষ্যতে যাত্রা করলে তুমি চলে যাবে সুদুর ভবিষ্যতে”।



“কিন্তু সুদুর অতীত বা ভবিষ্যতে চলে যাওয়ার কথা তো তোমার থিওরিতে ছিলনা বাবা!”

“এটাই আমার থিওরির ভুল ছিল। যদি ভুলটা আগে ধরতে পারতাম তাহলে আমি কখনোই থিওরিটা প্রমানের চেষ্টা করতাম না”।

“আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না বাবা!”

“আমরা অতীতে অবস্থান করছি, সাজিদ”। শান্ত কণ্ঠে বললেন প্রোফেসর।

“কতটা অতীত?”

“অনুমান কর”।

“১০০ বছর?”

“তোর ধারনার বাইরে। প্রায় ৩০০০ বছর”।

অবাক চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে থাকল সাজিদ। বলার মত কোন শব্দ খুজে পেলনা।



“থিওরি অনুযায়ী অতীত থেকে ভবিষ্যৎ, আবার ভবিষ্যৎ থেকে অতীতে চলাচলের ক্ষমতা অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত অনুশীলন প্রয়োজন। একবার টাইমলাইন ভেদ করে এলেই সেই ক্ষমতা চলে আসেনা। প্রয়োজন আরও অনুশীলন। কিন্তু আমরা অবস্থান করছি খ্রিস্টের জন্মের ১০০০ বছর পূর্বে, এখানে নেই কোন আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, নেই প্লেন, নেই জ্বালানী- অনুশীলন করব কীভাবে?”

“বাবা, আমার প্লেনটা ক্র্যাশ ল্যান্ড করলেও মোটামুটি ঠিক আছে”। সাজিদের হতাশ চোখ জোড়াতে হঠাৎ আলোর ঝিলিক দেখা গেল। “একটু মেরামত করে নিলে আবার আকাশে উড়াতে পারব। এটা স্কাইলন প্লেন, নতুন আবিস্কার। ঘণ্টায় ১৯০০০ মাইল পর্যন্ত গতিবেগ তুলতে..........”

“ভুলে যাচ্ছ কেন? এটা প্রস্তর যুগ। এখানে প্লেনের জন্য ফুয়েল পাবে কই?”

“তাহলে আমরা কি আজীবন এখানে আটকে থাকব?” আতংকিত কণ্ঠে বলল সাজিদ।

“অবশ্যই নয়। তুই আমাকে চিনিস না? আমি কি থেমে যাওয়ার মানুষ? গত ২০ বছর ধরে এই যন্ত্রটা বানাচ্ছি। এটা চৌম্বক শক্তি ব্যাবহার করে প্রচণ্ড গতিতে ছুটে চলতে পারবে। এতদিন আমি একা ছিলাম বলে দেরি হয়েছে, এখন তুই চলে এসেছিস- আর বেশি সময় লাগবে না যন্ত্রটাকে রেডি করতে”।

সাজিদ বলল, “তুমি কি এই ২০ বছরে সব সময় এখানেই থেকেছ, বাবা? কোথাও যাওনি?”



“হ্যা, কত যায়গায় গিয়েছি! এদেশে এখনও খুব বেশি মানব বসতি শুরু হয়নি। আর্যদের আগমন শুরু হয়েছে কিছু কিছু করে। পূর্ব দিকে টানা ২০ দিন হাঁটলেই সিন্ধু সভ্যতার দেখা পাওয়া যায়। ওখানে গিয়ে থাকি বছরের বেশির ভাগ সময়। তোকে নিয়ে যাব, ওদের পরিকল্পিত নগর ব্যাবস্থা দেখলে বুঝবি আমরা ওদেরকে যতটা উন্নত ভাবি ওরা আসলে তারচেয়েও অনেক বেশি এগিয়ে ছিল! তবে বছরের এই সময়টা এলেই আবার ফিরে আসি জন্মভূমিতে। কেন আসি জানিনা, হয়ত সৃষ্টিকর্তা চেয়েছিলেন যেন তুই এসে আমাকে খুজে পাস”!



সাজিদ কি বলবে বুঝতে পারছে না।



“নষ্ট করার মত সময় একদমই নেই। কাজে লেগে যেতে হবে। আয় আগে কিছু খেয়ে নে, সুজলা সুফলা আমাদের দেশ। খাদ্যের কোন অভাব নেই। বন জুড়ে রসাল ফলের গাছ। আর ইচ্ছে হলেই তো বন্য জন্তু জানোয়ার শিকার করা যায়”।



কিছুক্ষন পর সাজিদ অচেনা ফলের গায়ে কামড় বসাতে গিয়ে লক্ষ করল প্রফেসর ইউসুফ একটা বহু পুরনো লগ বুকে গাছের ডাল দিয়ে বানানো কলম কালিতে ডুবিয়ে নিয়ে কিছু আকা আকি করছেন। সাজিদ ভাল ভাবে লক্ষ করতেই দেখল লগ বুকের ওপরে লেখা-



তারিখঃ ৪ঠা নভেম্বর, খ্রিস্টপূর্ব ১০১৩ অব্দ।

স্থানঃ জন্মভূমি, বাংলাদেশ।



(সমাপ্ত)



********************************************



রেফারেন্সঃ

গল্পে অসংখ্য তথ্য সন্নিবেশন করা হয়েছে। এইসকল তথ্যের ৯৯ ভাগই সত্য। স্থান ও টাইমজোন সংক্রান্ত বেশির ভাগ তথ্যই নেয়া হয়েছে উইকিপিডিয়া থেকে। দূরত্ব বিষয়ক তথ্যের জন্য distancefromto.net ওয়েবসাইটটির সাহায্য নিয়েছি। এছাড়া কোস্টারিকায় বিদ্রোহ, সামুদ্রিক ঝড়, সিন্ধু সভ্যতা, বলিভিয়ার ঘটনা, স্কাইলন স্পেস প্লেন, এক্সন মোবিল, ডিরেক্ট টিভি সহ টুক টাক বিভিন্ন তথ্যের জন্য তো গুগল মামা ছিলই। আর বিরাট একটা সাহায্য পেয়েছি গুগল ম্যাপস থেকে। আমার জানামতে এসকল তথ্যে কোন ভুল নেই। তারপরও কেউ যদি কোন ভুল খুজে পান তাহলে ধরিয়ে দিলে কৃতার্থ হব।



গল্প প্রসঙ্গেঃ

এই গল্পটি দুটি বিশেষ কারনে আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

প্রথম কারণটি হল এটি আমার ৫০তম গল্প

২য় কারণটি হল এটি সামু ব্লগে আমার ৫০ তম পোস্ট।

গল্পের ইনিশিয়াল আইডিয়াটা পেয়েছিলাম ছোটভাই ইশতিয়াক রেহমান এর কাছ থেকে।

গল্পের প্রুফ রিডিং এর জন্য ধন্যবাদ আমার বান্ধবী ব্লগার নৈঋতকে।



উৎসর্গঃ প্রিয় বড়াপু অপর্ণা মন্ময় । অপর্ণা আপুর প্রত্যেকটা লেখা পড়েই মুগ্ধ হই এবং কিছু না কিছু শিখি। আমার পোস্ট গুলোতে আপুর সুন্দর সাজেশন নিজেকে শুধরে নিতে সাহায্য করে। আপুর দীর্ঘায়ু কামনা করি।

মন্তব্য ১৫৬ টি রেটিং +২৬/-০

মন্তব্য (১৫৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭

কালোপরী বলেছেন: শুভেচ্ছা

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৩৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: ধন্যবাদ। পড়েছেন তো?

পরের গল্পের নাম আপনার নামে দেব- কালোপরী । এই মাত্র ঠিক করলাম :) নামটা গল্পের থিমের সাথে দারুনভাবে যাবে!

২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৫

মামুন রশিদ বলেছেন: আগে ৫০তম পোস্টের শুভেচ্ছা !:#P



এখন গল্প পড়ি গিয়ে :)

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৩৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

ধন্যবাদ মামুন ভাই :)

৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৮

সায়েম মুন বলেছেন: আপনাকে শুভেচ্ছা জানাই।
গল্পটা কিছুদূর পড়েছি। আপনি ভাল লিখেন। সময় করে আপনার লেখা গল্প পড়তে হবে।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৪০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
সময় করে আপনার লেখা গল্প পড়তে হবে। :!>

থ্যাংক ইউ! :)

৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৯

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: খুব পরিশ্রমী পোষ্ট
ভাল লাগল , অর্ধেক পড়েছি বাকিটা পড়ে পড়ব ।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৪২

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

আরে আমার বন্ধুরে ব্লগে পাইয়া তো দিল খুশ হইয়া গেল! :)
ভাল আছেন নি বন্ধু?
গল্প শেষ কইরা জানাইয়েন কিরাম হইছে :)

৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩০

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: :) :)

এতো বড়!!! আস্তে আস্তে পড়তেছি......


৫০ তম পোস্টের অভিনন্দন!!!!!!!!!!!!!

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৪৩

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

পরেন আস্তে আস্তেই পড়েন। সমস্যা নাইকা।
থ্যাংক ইউ :)

৬| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫

মামুন রশিদ বলেছেন: গল্পতো নয়, যেন চারদিকে হৈচৈ শোরগোল শুরু হয়ে গেছে । আর এই শোরগোলে আছি আমিও । সাজিদ খানের সাথে গ্লোব হাতে নিয়ে যেন আমিও উড়ছি মালদ্বীপ-মানামা-জর্ডান-নীলনদ, আলজিয়ার্স-আইভরিকোস্ট-চিলি-ক্যালিফোর্নিয়া হয়ে আদিম হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে ।

টাইম এন্ড স্পেস ভেদ করার ছলে নাজিম-উদ-দৌলার 'আশি দিনে বিশ্ব ভ্রমন' !!

জুলভার্নের 'আশি দিনে বিশ্ব ভ্রমন' প্রথম যখন পড়ি, ঠিক একই রকম উত্তেজনা অনুভব করেছিলাম । পার্থক্য হলো, জুলভার্ন ক্রমাগত পূর্ব দিকে যেতে যেতে কখন যে 'ইন্টারন্যাশনাল টাইমলাইন' ক্রস করে পুরো একটা দিন পিছনে চলে গিয়েছিলেন- লন্ডনে গীর্জায় বিয়ে করতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত টের পান নি । আর আপনি ক্রমাগত পশ্চিম দিকে বার ঘন্টায় বারটা টাইম জোন ক্রস করতে গিয়ে সাজিদ খানকে পুরো তিন হাজার বছর পিছনে নিয়ে গেছেন ।

একটা তথ্যে কিছুটা অসংগতি আছে । সিন্ধু সভ্যতা পাঁচ হাজার বছর আগের । খ্রীস্টপূর্ব ১০১৩ অব্দে সিন্ধু সভ্যতা তার সকল জৌলস হারিয়ে মাটির নিচে বিলীন থাকার কথা ।

গল্পে অনেক অনেক ভালোলাগা । আপনার পঞ্চাশ তম পোস্ট নিঃসন্দেহে স্মরণীয় হয়ে থাকবে আমার কাছে ।

এক গুচ্ছ প্লাস :)


++++++++++++++++++++++++++++++++

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

আপনার মন্তব্য ভাল লাগল মামুন ভাই। এডভেঞ্চার টাইপের লেখা এই প্রথম। আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। চেষ্টা ছিল ৫০ তম গল্পটাকে একটু ভাল করার। যেন অনেক দিন মনে রাখার মত হয়! সে জন্যই এই খাটুনি।

সিন্ধু সভ্যতা ৫০০০ বছর আগের? আমি তো দেখলাম ৩০০০! দেখেছেন, সামান্য একটা তথ্যের ভুল গল্পের আমেজ নস্ট করেছে।

আপনাকে ধন্যবাদ মামুন ভাই। পাশে আছেন বলেই তো এই পথ চলা যদি কখনো সরে যান, থেমে যাব। ভাল থাকুন :)

৭| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৩

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: পড়লাম ৫০তম গল্প। কিন্তু এত গবেষণা, এত পরিকল্পনা সবই যে আমাকে কাহিল করে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত একটা বোইজ্ঞানিক কাহিনীই হয়ে থাকলো, যা আমার জন্য দুর্বোধ্য তো বটে ভীতিকরও বটে। তবে এটুকু বুঝতে পারছি গল্পটি অনেকের কাছেই খুব খুব ভালোলাগার বিষয় হয়ে থাকবে।

সেই সঙ্গে লেখককে অভিনন্দনের পাশাপাশি জানাই অনেক ভালোবাসা। কারণ লেখালেখিটার প্রতি তিনি আন্তরিক যেমন কাজটাকে তেমন ভালোও বাসেন।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০৩

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
জুলিয়ানদা, বর্তমানে বিজ্ঞান কল্পগল্প আমাদের বাংলা সাহিত্যের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। একে ছেড়ে সাহিত্য নিয়ে ভাবলে সে ভাবনা কখনো পূর্ণাঙ্গ হবেনা। এটাকে দুর্বোধ্য ও ভীতিকর ভাবার কোন কারন নেই।

আমি চেষ্টা করি একটু গতানুগতিক ধ্যান ধারনার বাইরে গিয়ে গল্প লিখতে। আগের গল্পে সেটা হয়নি। এবার তাই চেষ্টাটা একটু বেশি ছিল।

আপনাকে ধন্যবাদ :) আমাকে তুমি করে বললে খুশি হব :)
ভাল থাকুন। :)

৮| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৭

অচিন.... বলেছেন: nice :)

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০৪

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

শুধু নাইস? :(

থ্যাংকস :)

৯| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:০৮

একলা চলো রে বলেছেন: গল্পটা সময় নিয়ে পড়লাম। এট সুন্দর প্লট চিন্তা করে বের করলেন কিভাবে? জিওগ্র্যাফির পেছনে যে পরিমানে খেটেছেন তাতে তো সামু কতৃপক্ষের উচিত আপনাকে সম্মানী দেয়া।

তবে আমি আশা করেছিলাম বর্তমানে ফিরে এসে চূড়ান্ত ক্ল্যাইম্যাক্স সৃষ্টি করবে ওরা। নাকি ভাবছেন সিকুয়েল লিখবেন?


অনেক অনেক অভিনন্দন রইল।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
নাহ। সিকুয়েল আর লিখব না। ধরে নিলাম আর ফিরতে পারবে না তারা :)

জিওগ্র্যাফির পেছনে যে পরিমানে খেটেছেন তাতে তো সামু কতৃপক্ষের উচিত আপনাকে সম্মানী দেয়া। :-P :P

ধন্যবাদ ভাই। আপনার আজকের গল্পটা বেশ ভাল ছিল :)

১০| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:২১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আগে অভিনন্দন জানাই। গল্প পড়ে এসে বাকি কথা বলছি।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অপেক্ষায় রইলাম 8-|

১১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৩১

জুন বলেছেন: হাফ সেঞ্চুরীর শুভেচ্ছা জানবেন। কি সুন্দর করে বড় একটি গল্প লিখেছেন। অসাধারণ লাগলো নানা দেশ ঘুরে ঘুরে আসলাম।
আমি লিখতে গেলে সবসময় ভাবি এবার অনেক বড় একটা গল্প লিখবো কিন্ত লিখতে বসলেই আস্তে আস্তে কেমন জানি ছোট হয়ে আসে পরিসর।
+

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আমি যেমন বড় লিখি তেমন বড় গল্প পড়তে ভালবাসি। ছোট বড় সমস্যা না, লেখকের আন্তরিকতাই আসল। আপনার লেখাও আমার যথেষ্ট ভাল লাগে। অবশ্য ইদানিং পড়ছি, আগে পড়া হয়নি খুব একটা।

সুন্দর মন্তব্য ভাল লাগল :)

১২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪৪

একলা চলো রে বলেছেন: ও, আরেকটা কথা। গ্রীনউইচ মীন টাইম তো একবছর আগেই বাতিল করা হয়েছে। সম্ভবত ইউটিসি দিয়ে হিসেব করা হয় এখন। তারপরও GMT অনুসারে টাইম লিখেছেন কি পাঠকের সহজবোধ্যতার জন্য?


আরো একবার অভিনন্দন রইল এমন চমৎকার একটা প্লট নিয়ে গল্প লেখার জন্য। অনেক দূর এগিয়ে যান,কামনা করি।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২১

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আমি ইউটিসি টাইমই ফলো করেছি। GMT লিখেছি বোঝার সুবিধার জন্য। অবশ্য দুটোর মধ্যে খুব সামান্য পার্থক্য আছে।

ধন্যবাদ আবারো :)

১৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:০৪

রেজোওয়ানা বলেছেন: মামুন ভাইয়ের স্ট্যাটাস দেখে আসলাম.........সত্যিই দারুন লিখেছেন!

অভিনন্দন :)

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২২

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ আপু। :)

১৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:০৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: গল্প নিয়ে পরে কথা বলবো। আগে অন্য বিষয় নিয়ে কথা বলি।

প্রথমেই বলি , লেখালেখি বিশেষ করে সাইফাই বিষয়ের উপর তোমার ভালো লাগা, শ্রম এসবে আমি সত্যিই মুগ্ধ। আর একেকটা বিষয় নিয়ে লিখতে গিয়ে সে বিষয়ের উপর তুমি অনেক সময় নিয়ে স্টাডি করো, এটাও একটা ভালো দিক। তবে এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার বেশি পড়ে , তথ্য নিতে গিয়ে নিজের স্বকীয়তা যেন নষ্ট না হয় , লেখায় যেন প্রবন্ধ বা তথ্যের আধিক্যে লেখার সারল্য, নিজস্বতা নষ্ট না হয়ে যায়।

তোমার ছোট ভাই এবং ব্লগার ফ্রেন্ড এর জন্যও শুভেচ্ছা।লেখা বড় হলে বানানে মাঝে মাঝে অলক্ষ্যে ভুল থেকেই যায়। তবুও যে বানানের প্রতি সতর্ক হতে ফ্রেন্ড কে দিয়ে বানান চেক করিয়েছ এটাও একটা ভালো লক্ষন।

আর আমাকে গল্প উৎসর্গ এবং এর কারণ শুনে তো আমি আবার লজ্জা পেলাম তবে ভালো তো লেগেছে নিঃসন্দেহে। ঋণী হলাম। আমি ইদানীং তেমন লিখি না , বলত এপার অর্ধেক লিখে আর সে গল্প আগাতে পারি না। তবে তোমাকেও একটা গল্প উৎসর্গ করার ইচ্ছা পোষণ করলাম। আর সবাইকে দিয়ে সব কাজ হয় না নাজিম , যেমন করে আমাকে দিয়ে সাইফাই গল্প লেখানো কোনোদিন সম্ভব হবে না। আমি আমার মতো করেই একটা গল্প লিখে সেটা তোমাকে উৎসর্গ করবো আশা করছি ।

গল্প পড়া শেষ হলে আমি আবার আসব তোমার পোস্টে।

শুভ লেখালেখি।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৩২

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
শুধু সাইফাই না আপু, আমি থ্রিলার গল্পের জন্যও খাটি এবং তথ্য সংগ্রহ করি। আপনার নিশ্চয়ই সত্যের বীজের কথা মনে আছে! কিংবা জানালার ওপাশে। সেখানেও খেটেছি বিস্তর। আসলে খাটা খাটনি করে লিখতে আমার ভাল লাগে। এটা একটা নির্মল আনন্দের যোগান দেয়।

তবে নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রাখার চেষ্টা থাকে। তথ্যগুলো আসে গল্পের প্রয়োজনীয় অংশ হিসেবে। বাহুল্য যেন না হয়ে যায় সে চেষ্টা করি।

এখন থেকে বানানের প্রতি যত্নশীল হওয়ার চেষ্টা করছি তাই এই প্রুফ রিডিং এর ব্যাবস্থা। শিখার আছে অনেক কিছু- এটা শেষ হয়না কখনো।

একটা জিনিস কি, আমি আসলে চেষ্টা করি সব ধরনের গল্প লিখতে- এখন পর্যন্ত এমন কোন জেনার নাই লিখি নাই। একটা বাকি আছে- ফ্যান্টাসি। ওইটা নেক্সট টাইম লিখব। :) আপনি আপনার মত করেই লিখুন। চেষ্টা করে দেখে পারেন সাইফাই লিখার। আর কিছু না হোক, আনন্দ পাবেন প্রচুর :)

অপেক্ষায় থাকলাম পড়া শেষ হওয়ার :)

১৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:১৫

বোকামন বলেছেন:

৫০তম গল্প ! অভিনন্দন !
হাতে সময় নিয়ে আবার আসবো গল্পটি পড়তে :-)

ভালো থাকুন লেখক।।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৩৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধন্যবাদ প্রিয় বোকামন ভাই। বড় গল্প সময় লাগবে পড়তে। সময় নিয়েই আসুন :)

১৬| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৩৩

বৃতি বলেছেন: আপনি নিঃসন্দেহে একজন পরিশ্রমী লেখক, অনেক হোমওয়ার্ক করে লিখেন তা আপনার গল্পগুলো পড়লেই বোঝা যায় । গল্পটা খুব ভাল লেগেছে, উৎসর্গও পছন্দ হয়েছে । সাজিদ খানের জন্মদিনটা কাছাকাছি থেকেও মিস করলাম, আফসোস শুধু এটাই ।

৫০ তম পোস্টের জন্য অভিনন্দন নিন । কয়েকটা টাইপো পেলাম,
ব্যাঙ্গ=ব্যঙ্গ
হাল ছারব=ছাড়ব
এই ব্যাবস্থা=ব্যবস্থা
টাইমজন=টাইমজোন
ব্যাথার=ব্যথার

অনেক শুভকামনা আপনার জন্য ।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৬

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
নৈঋত, তোরে আমি খাইছি! এই প্রুফ রিডিং দিসস? এত ভুল থাকল ক্যামনে?

আপনাকে ধন্যবাদ বৃতি। নেক্সট টাইম আপনাকে কিন্তু প্রুফ রিড করতে হবএ বলে দিলাম :P

ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভাল থাকুন :)

আমার জন্মদিনও ৪ নভেম্বর। ওইটা আশা করি মিস হবেনা :P

১৭| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৬

সানড্যান্স বলেছেন: দারুণ সাইফাই!!!
এত পরিশ্রম কর লেখা সার্থক হোক।
অনবদ্য!!!
ভাল লেগেছে!!
আর ৫০ তম পোস্টের শুভেচ্ছা!!

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫৩

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধন্যবাদ ভাই।
আপনার জন্য শুভকামনা :)

১৮| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

কালোপরী বলেছেন: গল্প পড়েছি :)


পরের গল্পের অপেক্ষায় রইলাম।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

বেশি অপেক্ষা করতে হবেনা আশাকরি। :)

১৯| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৮

rudlefuz বলেছেন: প্রচণ্ড পরিশ্রম করে লেখা বুঝাই যায়...
তবে আল্টিমেট পে-অফ টা থি জমল না।
আমি আরো ঝাকানাকা কিছু এক্সপেক্ট করছিলাম...
তারপরেও এই পরিশ্রমকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাতে হয়...
আর সেই সাথে ৫০তম গল্পের জন্যে শুভেচ্ছা।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০৪

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
প্রথমে ভাবছিলাম একটা ধাক্কা মত দিয়া শেষ করমু। কিন্তু তাতে অনেক প্রশ্নের উত্তর আর ব্যাক্ষা দেয়া যেত না, তাই একটু বিস্তারিত করতে গেলাম। মুল গল্পটা আগের প্যারাতেই শেষ। শেষ প্যারাটা জাস্ট প্রশ্নের উত্তর।

ধন্যবাদ তোমাকে, সজল। :)

২০| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০৯

আরজু পনি বলেছেন:

১০২ বার পঠিত ৬ টি লাইক ১৫টি কমেন্ট ১ টি প্রিয়তে এবং সোয়া নয়টার পরে শুরু করেছিলাম পড়তে ।

নাজিম, আমি কি বলবো জানি না, তবে এমনিতেই আস্থা ছিল যে, আপনি অনেক ভালো লিখেন, কিন্তু আজকে মনে হচ্ছে এই লেখাটার জন্যে আপনাকে ....

একটা লেখায় একজন লেখকের আন্তরিকতা কতোটা থাকতে পারে তা আজকে নিবিড়ভাবে উপলব্ধি করলাম ।

টুপি খোলা সালাম রইল ।

আর অবশ্যই ৫০ তম পোস্টের অভিনন্দন রইল ।

উৎসর্গটা একেবারেই সঠিক হয়েছে ।।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:১১

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আপু, ধন্যবাদ। আপ্লুত হলাম এমন মন্তব্যে। গল্প লেখার প্রতি আন্তরিকতার অভাব কখনো ছিলনা কারন আপনাদের ভালবাসা আর উৎসাহ থেকে প্রতিমুহূর্তে প্রেরনা পাচ্ছি।

কষ্ট করে সময় নিয়ে পড়েছেন বলে ধন্যবাদ অনেক।

ভালথাকুন আপু :)

২১| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: অভিনন্দন। ব্লগে কোন গল্প লেখার পেছনে কাউকে এত খাটতে দেখসি বলে মনে পড়েনা। জিওগ্রাফিকাল বর্ণনাগুলো নিখুঁত করার প্রয়াস খুব ভালো ছিলো। কোন গলদ রাখতে চাওনি। সাথে বোনাস পাওয়া বিভিন্ন কালচারের মানুষের টুকরো জীবন। তবে গল্পের এ্যাডভেঞ্চার অংশটুকু যতটুকু শক্তিশালী সায়েন্স অংশটুকু তেমনটা না। যেহেতু এখানে থিওরিটিক্যাল ফিজিক্স এসেছে, তাই এর বাস্তব প্রয়োগ কেমন হবে ভাবতে মন চাইবে,এবং ভেবে আমার কাছে এভাবে টাইম ট্রাভেলের থিওরিটা বড্ড খেলো লাগলো। আর বাবার সাথে ছেলের দেখা হওয়াটা আঁচ করা গেছে যখন মা টিভিতে প্লেন হারানোর খবর পেয়েও মৃদু হাসলো। তাছাড়া বিজ্ঞানী ২০ বছর ধরে কোন রিসোর্স দিয়ে অতীতকালের জঙ্গলে বসে অত্যাধুনিক যন্ত্র বানাচ্ছে সেটাও প্রশ্নের উদ্রেক করে।

সবমিলিয়ে একটা জমজমাট গল্প, কিন্তু তোমার সেরা কাজগুলোর মধ্যে পড়ে না।

সবশেষে লেখালেখির প্রতি তোমার এই ডেডিকেশনকে স্যালুট।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২১

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
হামা ভাই, আপনি রে ব্রাডবেরির লেখা পড়েছেন কিনা জানিনা, ওনার কিছু সাইফাই আছে যেগুলোকে বলা যেতে পারে রিয়েলিস্টিক সাইফাই। সেখানে সায়েন্সের তুলনায় ফ্যান্টাসি বেশি গুরুত্ব পায়। ব্যাপারটা অনেকটা এমন যে- কেউ একজন ভাবছে "এমন" কিছু করলে কেমন হবে? এখানে এই "এমন" টা আসলে এমন কিছু যা করা সম্ভব কিন্তু সময়, অর্থ ও সামর্থ্যের অভাবে করা যাচ্ছেনা। আমার এই গল্পটা অনেকটা সে ধাচের হয়েছে।

তবে এই গল্পে আরও কিছু সায়েন্টিফিক ব্যাক্ষা ছিল, গল্প লেখার পর মুছে দিয়েছি বাহুল্য মনে করে। এমনিতেই গল্পটা বড় হয়ে গেছে বলে এটা করতে হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে রাখলেও পারতাম।

লেখালেখির প্রতি তোমার এই ডেডিকেশনকে স্যালুট। :#> পুরাই শরমে ফেলে দিছেন :P

আর প্লেন হারানোর খবর পেয়েও মায়ের মুখে মৃদুহাসিতে সবাই বুঝে যাক ছেলে বাপের সাথে দেখা করতে যাচ্ছে এটাই তো চেয়েছিলাম। আসলে মুল গল্প এখানেই শেষ। এর পরের প্যারাটা জাস্ট পাঠক যেন সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যায় সেজন্য রাখা হয়েছে।

ভাল থাকুন হামা ভাই :)

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৩৬

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
থিওরির এই পার্টটা একটু ভেবে দেখেন হামা ভাই, মানুষ জন্ম থেকে অনেক ক্ষমতা নিয়ে আসে আবার জন্মের পর অনুশীলন দ্বারা অনেক ক্ষমতা অর্জন করে নেয়। কিন্তু কথা হচ্ছে এমন কি হতে পারেনা যে আমাদের পক্ষে হয়ত আরও অনেক ক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব, দরকার শুধু অনুশীলন। কিন্তু অনুশীলনের সুযোগ নেই, থাকলেও আমরা সেটা জানিনা!!

২২| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫৩

তন্দ্রা বিলাস বলেছেন: সময় নিয়ে পড়লাম! এক কথায় দুর্দান্ত !
পোস্টে প্লাস এবং প্রিয়তে।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২৩

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ :)

২৩| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০১

নৈঋত বলেছেন: উপস্থাপক বললেন, “এবার আমরা সাজিদ খানের সাথে দুই একটা কথা বলল, স্যার, প্রথম জন্মদিন তো পালিত হয়ে গেল। আপনার অনুভুতি কি?”

নিশ্চয়ই উপস্থাপক মুন্নি সাহা ছেলো /:) /:) /:) :-P :-P :-P

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২৪

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

ভালা বলছিস তো! মুন্নি শাহারে তো আনা জাইত!

২৪| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:০২

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: পড়ার সময়ই বুঝতে পারছিলাম অনেক খাটাখাটনি করে লেখা। শেষে আপনার নোট থেকে জানলাম কী খাটুনিই না করতে হয়েছে। আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে গল্পটা। খুব সহজ একটা থিওরি দেওয়া হয়েছে যা যে কেউ বুঝবে। অভিনন্দন আপনাকে। ভাল থাকবেন।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২৬

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাদের ভাল লেগেছে দেখে মনে হচ্ছে খাটুনিটা সার্থক। :)
ভাল থাকুন, অনেক ভাল :)

২৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২৪

লেজকাটা বান্দর বলেছেন: আসিফ সজল ভাই এবং হামা ভাইয়ের সাথে একমত। আপনার গল্পে কঠোর পরিশ্রমের ছাপ ছিল, বাট এইটা আপনার বেস্ট লেখা না। সত্যি কথা বলতে কি, জিওগ্রাফি পার্টটা বাদ দিলে এইটা সাধারণ একটা সাই ফাই হয়ে যেত।

আপনার কাছ থেকে এক্সপেকটেশন অনেক অনেক বেশি। আপনি আমার আইডিয়াল। আমি সচেতন ও অবচেতনে আপনার মত হতে চাই। আন্তরিক ভালোবাসা থেকেই উপরের কথাগুলো বলা। আশা করি মনঃক্ষুণ্ণ হবেন না।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৩২

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
এইটা আপনার বেস্ট লেখা না, বাট মনে রাখার মত হয়েছে তাইনা :)

জিওগ্রাফি পার্টটা বাদ দিয়ে গল্পটা নিয়ে ভাবার কি প্রয়োজন? এখানে এডভেঞ্চারটাই তো আসল। সায়েন্স মুল বিষয় ছিলনা। গল্পটাকে ফ্যান্টাসি হিসেবে নিন না। ভেবে দেখুন এমন কিছু যদি আসলেই কেউ করতে চায়? তাহলে উলটা পালটা কিছু ঘটে যেতেও তো পারে!!

মনঃক্ষুণ্ণ হইনি, বরং খুশি হয়েছি গল্প নিয়ে ভেবেছেন বলে। আর এক্সপেক্টেশন আরও বেশি বলছেন দেখে আমার লেখার খিদে আরও বেড়ে গেছে :)

২৬| ১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:২৮

আমি ইহতিব বলেছেন: এটাও সাইফাই? সময় স্বল্পতায় হাজিরা দিয়ে গেলাম, কাল সকালে গল্প পড়ে শেষ করবো ইনশাআল্লাহ।

৫০ তম পোস্ট ও ৫০ তম গল্পের জন্য শুভেচ্ছা। আপনার ১০০ তম পোস্টেও যেন আপনাকে শুভেচ্ছা জানাতে পারি এই আশা রাখি।

১৫ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৩৩

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

ইনশাল্লাহ আপু। আশাকরি ১০০ তম পস্টেও আপনাকে পাশে পাব।
ভাল থাকুন। :)

২৭| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:১৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: প্রথমেই পুনঃ অভিনন্দন, নাজিম। এতগুলো ভাল গল্প এতোটা ডেডিকেশন নিয়ে লেখা চাট্টিখানি কথা নয়।

এবারে গল্পে আসি। টাইপো নিয়ে কিছু বলা উচিত না, হাতি গল্পে টাইপো না থাকাটাই প্রায় অপরাধ। গল্পের 'লাফানো' মনোভাব একটা বিষয়গত বৈচিত্র্য এনে দিয়েছে, এবং তথ্যগত খুঁটিনাটি অবাক করার মত। পড়তে অনেকক্ষণ লেগেছে। এই আইডিয়াটুকু দিয়ে সিনেমা বানানো গেলে বোধহয় দারুণ ইন্টারেস্টিং হবে।

আপনি যে পরিমাণ পরিশ্রম করে লিখেছেন, তাতে আমার মত কুঁড়ে ব্যক্তির গা শিউরে শিউরে উঠছে! আপনার গল্পের প্রতি এই ভালবাসা দেখে ভালো লাগল।

গল্পে খটকার কথা বাকিরা বলেছেন। আমি বলব, যতটুকু বুঝেছি ভাল লেগেছে। আপনার পরিশ্রম সফল।

শুভকামনা রইল গল্পকার। পরের গল্পের অপেক্ষা করছি।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:২৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধন্যবাদ শঙ্কু। প্রুফ রিডার ফাকি দিছে বুঝাই যাচ্ছে।

আপনি কুঁড়ে হবেন কেন। আপনার গল্পেও পরিশ্রমের ছাপ লক্ষণীয়। আপনার প্রতিটি লেখাই আমার ভাল লাগে। শেষ গল্পটা তো অসাধারন ছিল। আপনার একটা গল্প মনে হয় বাদ পড়ে গেছে, পড়া হয়নি মাঝে একটু ব্লগ থেকে দূরে ছিলাম বলে। পড়ে নেব।

আপনাদের ভাল লেগেছে জেনে পরিশ্রম সার্থক মনে হচ্ছে। ভাল থাকুন :)

২৮| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৩৩

নুসরাতসুলতানা বলেছেন: লেখার প্রতি আপনার ডিভোশন প্রসংশনীয়। ভাল লাগলো। অভিনন্দন আপনাকে।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল লাগল মন্তব্য। :)

২৯| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৩৭

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: অসাম! গল্প লেখার পিছনে অনেক খেটেছেন! দুর্দান্ত লাগলো আমার কাছে! আর হ্যাঁ যতটা সম্ভব নিখুত করতে চেয়েছেন গল্পটাকে! বিশেষ করে ইনফো গুলো এত খুটিনাটি বিষয় কেও যত্নকরে ফুটিয়ে তুলেছেন যে কি বলবো!


প্লাসের বন্যা হবে!

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
হ্যা, ইনফো গুলো সব নিখুত করার জন্য অনেকটা সময় নেট ঘেটেছি। আপনার ভাল লেগেছে জেনে খুশি হলাম। ধন্যবাদ ব্লগে সময় দেওয়ার জন্য :)

৩০| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫৩

টেস্টিং সল্ট বলেছেন: জিম... তুই জানিস, আন্তর্জাতিক সময় রেখা এবং যে বিষয়টি তুই তুলে এনেছিস, সময়ের পেছনে যাবার ব্যপারটা, আমার খুব পছন্দের বিষয়, ভাবতে ভালো লাগে এগুলো নিয়ে।

আমি ভাবছি... গল্প পড়ার সময় অনেক কিছু কমেন্ট করব ভাবছিলাম। এখন মাথায় শুধু ভাবনা...

একটা ছোট্ট লাইন দিয়ে আমার বিশদ কমেন্ট করার অপারগতা বদলে দিতে চাই...

এই বাক্যটা দম্ভ নয়, বন্ধুত্বের দায়স্বীকার নয়। এটা আমার আন্তরিক ভাবনা।

~ বাংলাদেশের পরবর্তি জাফর ইকবাল হতে যাচ্ছিস তুই।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:১৪

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

বাংলাদেশের পরবর্তি জাফর ইকবাল হতে যাচ্ছিস তুই।
এই একটা কথা কতটা আবেগআপ্লুত করছে আমাকে তা তোকে বোঝাতে পারব না। মনটা ভারী হয়ে গেল, ঘুম আসছিল তাও পালাল।

জানিনা তোর কথা সত্য হবে কিনা। অত বড় স্বপ্ন আমি দেখিনা। কিন্তু তোরা যদি পাশে থাকিস, বিশ্বাস কর- কোন অসম্ভবকে আমি ভয় পাইনা।

৩১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৫৮

নৈঋত বলেছেন: টেস্টিং সল্ট বলেছেন:
~ বাংলাদেশের পরবর্তি জাফর ইকবাল হতে যাচ্ছিস তুই।


শুভ কামনা রইলো :)... তখন কিন্তু অনেক অনেক ফ্রি ফুড প্রোভাইড করবি :#)

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:১৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
এত বেশি ফ্রি ফ্রি করিস কেন? তুই তো ফ্রি দিস না। ৫০ টাকা রাখিস ;)

৩২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:২৭

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন:
গল্পটা সায়েন্স ফিকশনই থাকবে। এখানে বিজ্ঞানের বিষয়গুলো জটিল মনে হয়েছে। ফিকশনে বিজ্ঞান খুবই সহজ ভাবে থাকে।

তবে ভাল লেগেছে।
আপনার পরিশ্রম আর গবেষণায় প্লাস।

কিন্তু মানুষের অতীতে চলে যাওয়াটা কেবল স্বপ্নেই সম্ভব মনে হয়...

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:১৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
এখন পর্যন্ত স্বপ্নেই সম্ভব। কিন্তু হয়ত একদিন বাস্তব হবে। চাঁদেও এক্সময় মানুষ স্বপ্নেই যেত তাইনা? :)

ভাল লেগেছে আপনার মন্তব্য।

৩৩| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৩০

দিগন্ত নীল বলেছেন: আমি এসে পড়েছি ভাই :-P
গল্পটা ফেসবুকে দেয়ার ১২ মিনিটের মাথায় ই পড়েছি এবং এক বসাতেই শেষ করেছি ।
কিন্তু লগইন করতে পারি নাই :-(
যাইহোক ভাই ,অবাক হলাম আপনার পরিশ্রম আর ধৈর্য্য দেখে ।একটু ধৈর্য্য আমাকে দিয়েন ভাই ।আর অর্ধশতকের শুভেচ্ছা এবং সেঞ্চুরীর অপেক্ষায় ।অনেক শুভকামনা থাকলো ।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:১৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
সেঞ্চুরি ইনশাল্লাহ আরও আগেই হবে। যে পরিমান তেল তোমরা দিচ্ছ! :P

ভাল থাক নীল। এই সময়টা ভাল ভাবে পড়াশোনা কর। :)

৩৪| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: সাই-ফাই, এডভেঞ্চার, ফ্যান্টাসি সব মিলিয়ে মারাত্মক কম্বো।
টাইমজোনের বিষয়টা ভাল লেগেছে। বিশ্ব ঘুরে ঘুরে জন্মদিন পালন করাটাও অভিনব আইডিয়া। সবচেয়ে ভাল লেগেছে, মানুষ জন্ম থেকে যে ক্ষমতা নিয়ে আসে সেগুলোকে চর্চার মাধ্যমে আয়ত্বে নিয়ে আসার ব্যাপারটা। সত্যি মৌলিক চিন্তা।

১২ বার টাইমজোন পেরিয়ে একই সময়ে অবস্থান নিতে পারলে স্থান অপরিবর্তিত থাকবে--এই জিনিসটা একটু ব্যাখ্যা দিলে আরও পোক্তা হত সাই-ফাই হিসাবে।

আরেকটা বিষয়, ৩০০০ বছর অতিতে কেন গেল? এটা ৩০০ নয় কেন অথবা ১০০০ নয় কেন? টাইমজোন পেরনোর সাথে এর একটা সম্পর্ক দেখালে আরো ভাল হত।

সব মিলিয়ে চমৎকার; আপনার পরের গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:২৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: এই চিন্তাটা প্রথমে শুরু হয়েছিল বিন্দু থেকে, ক্রমে ভাবতে ভাবতে শেষে সিন্ধু সভ্যতায় গিয়ে ঠেকেছে। :P

৩০০০ বছর অতিতে যাওয়া আর ১২ বার পেরলে অবস্থান পাল্টানোর বিষয়গুলোর ব্যাক্ষা ছিল গল্পে। বড় হয়ে জাওয়ায় কিছু অংশ বাদ দিয়েছি। মুল গল্পের মজা রাখার চেষ্টা আর কি।

পরের গল্পের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হবেনা একটা রেডিই আছে। আশাকরি আগামি সপ্তাহে দিতে পারব :)

৩৫| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:২১

ভিয়েনাস বলেছেন: প্রথমে ৫০তম গল্পে ৫০তম পোস্টের শুভেচ্ছা....

গল্পটা অনেক সময় নিয়ে পুরোটাই একবসায় পড়ে ফেললাম। পুরো গল্প জুড়ে টান টান উত্তেজনা কাজ করছিল। বৈগ্গানিক ব্যাখ্যা গুলো ভালো লেগেছে।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৫৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ আপনার জন্য।
শুভেচ্ছা গ্রহন করলাম।
আপনার জন্য শুভকামনা থাকল। :)

৩৬| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৪:১৯

প্রিন্স হেক্টর বলেছেন: অভিনন্দন রইলো। !:#P !:#P



আমি আর কি বলব? গুনী ব্লগাররাই যা বলার বলে গেছেন.. আমি নতুন করে কি বলবো? 8-| 8-|

পোষ্ট পড়ে ভাল লাগলো :)


+ দিলাম। ইউ ডিজার্ভ ইট

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৫৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আপনিও তো গুনি ব্লগার :)

ভাল লাগল আপনাকে ব্লগে পেয়ে।

ভাল থাকুন :)

৩৭| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৩

গোর্কি বলেছেন:
-মেগাপোস্টে ভাললাগা জানাই।
-সবচেয়ে ভাল লেগেছে গল্পের ধারাবাহিকতা সুনিপুনভাবে বজায় রাখা। -শুভকামনা।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
মেগা পোস্ট! ভাল বলছেন।
এটা একটা মাইলফলক ছিল আমার জন্য। ৪৯টা গল্প লিখে আটকে ছিলাম অনেক দিন।
ধন্যবাদ আপনাকে :)

৩৮| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:১২

মারুফ মুকতাদীর বলেছেন: আপনার ‘সত্যের বীজ’ গল্পটা আমার বুকমার্ক করা, মাঝে মাঝে পড়ে কোডগুলো শেখার চেষ্টা করছি। :D
ওইটার তুলনায় এটায় তবু কম খাঁটতে হয়েছে মনে হয়। :D

পড়ার সময় ‘রাউন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেইজ’ র কথা মনে পড়ছিল।
একদম সহজ করে লেখা তাই পড়তে ভালো লাগছিল আর আতঙ্কিত ছিলাম শেষে কি না কি করে দেন। তবে আশার তুলনায় টুইস্টটা একটু সাদামাটাই লেগেছে। গল্প আমার ভালোই লেগেছে তবে আপনার অন্য গল্পগুলোর চেয়ে একটু কম!

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:১৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
সত্যের বীজের তুলনায় পরিশ্রম বেশি ছিল এখানে। ওই গল্পটা তিন সপ্তাহে দাড় করাতে পেরেছিলাম। এইটার জন্য লেগে গেল প্রায় দেড় মাস। টুইস্ট সম্পর্কে বলব এই গল্পে টুইস্ট নিয়ে খুব বেশি ভাবিনি আমি। এডভেঞ্চার পার্ট টা বেশি ফোকাস করেছি।

ভাল লাগল আপনার এই সুন্দ মন্তব্য :)
ভাল থাকুন :)

৩৯| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:২২

নৈঋত বলেছেন: আর জীবনে তোর কিছু কইরা দিমূ না /:) /:) /:)

না করে দিলেই হতো X( X( X(

ফ্রি ফুড ও দিবো না X(( X(( X((

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:১৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আবার বানান ভুল? দিমূ= দিমু!

রাগিস কেন? দুই চারটা বকা ঝকা করার অধিকার কি আমার আছে না? ;)
এর পর থেকে তুই আমার সব গল্প প্রুফ রিড করবি। বানান ভুল পেলে দোষ হবে তোর B-)) আমি বাইচা যাব :)

৪০| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:০৫

আমি ইহতিব বলেছেন: এতো একটা দারুন মাস্টারপিস হয়েছে নাজিম ভাই, পোস্টের পেছনে আপনার করা পরিশ্রম সত্যিই প্রশংসনীয়। আমার সামর্থ্য থাকলে আপনাকে এই গল্পটার জন্য একটা এওয়ার্ড দিতাম। শুভ কামনা আপনার জন্য, ভবিষ্যতে আরো ভালো ভালো গল্প পাওয়ার প্রত্যাশা বেড়ে গেলো।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:২১

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

গল্প লেখা আমার প্যাসন, আপু।
এই কাজে সময় দিতে আমার খুব ভাল লাগে। খুব ইনজয় করি। যে গল্পে বেশি একটা সময় দিতে হয় না সেটা লিখে আনন্দ পাইনা :)
আপনার মন্তব্য সব সময় ভাল লাগে। ভাল থাকুন :)

৪১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:০৭

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: লেখকের বিপুল পরিশ্রমের পোস্টে হ্যাট'স অফ।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:১৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধন্যবাদ ইহসাক ভাই। পাশে আছেন দেখে ভাল লাগল :)

৪২| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:০৯

রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: দারুন একটা গল্প হয়েছে, এতদিনকার পড়া সব আন্তর্জাতিক মানের অ্যাডভেঞ্চার গল্পের চেয়ে একতিলও কম নয়। আরও আরও লিখুন ,বিশেষ করে এই ধাচের, কেননা এই দিকটিতে বাংলা সাহিত্যের প্রবল দারিদ্র আছে।পরিশেষে, আপনার ধৈর্য দেখেও অবাক ও মুগ্ধ হয়েছি।
৫০তম পোষ্টের শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

১৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:০০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
একটা লিখতে জান বেড়িয়ে গেছে! এডভেঞ্চার গল্প রিয়েলিস্টিক করতে এত বেশি তথ্যে যোগাড় করতে হয় বিশয়টা গল্প লিখতে বসার আগে বুঝিনি। ইনশাল্লাহ লিখব আরও সামনে। এবার একটা ফ্যান্টাসি গল্প লিখতে ইচ্ছে হয়েছে।
ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য :)

৪৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১৬

এইস ম্যাকক্লাউড বলেছেন: ৫০ তম গল্প aka পোস্ট এর জন্য অভিনন্দন।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:২৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: ধন্যবাদ ভ্রাতা :)
ভাল থাকুন।

৪৪| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৪১

বোকামন বলেছেন:






অন্যান্য ক্ষমতা অর্জনের অনুশীলনের সাথে এর পার্থক্য হচ্ছে- একটা নির্দিষ্ট যায়গায় অবস্থান করেই অন্যান্য ক্ষমতাগুলো অর্জনের জন্য অনুশীলন করা সম্ভব হয়।

এই টাকা দিয়ে খুব সহজেই ভাগ্যবঞ্চিত অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারতেন। সেটাও পৃথিবীবাসী অনেকদিন মনে রাখার মত একটা কাজ হত।

কাজের ছেলেটি চেয়ে দেখল মিসেস ইউসুফ শিকদারের দুচোখ বেয়ে অশ্রু নামছে কিন্তু তিনি ঠোঁটে ধরে রেখেছেন অদ্ভুত এক হাসি।

সমস্ত নদীর তীর আলোয় উদ্ভাসিত
আকাশটাকে দেখাচ্ছিল রক্তিম আলোয় উদ্ভাসিত।

আয় আগে কিছু খেয়ে নে, সুজলা সুফলা আমাদের দেশ। খাদ্যের কোন অভাব নেই।


সম্মানিত লেখক,
লাইনগুলো মন্তব্যে নিয়ে আসলাম। এ্যডভেনচারাস জার্নি সাথে তথ্য-উপাত্ত এবং প্রাঞ্জল উপস্থাপন সব মিলিয়ে দারুণ একটি গল্প। তবে ফিকশনের মাঠ পেরিয়ে আধুনিক সাই-ফাই গল্পে রূপান্তরিত হয়েছে উল্লেখিত লাইনগুলোর জন্যই। যদিও গল্পের প্লট সেটিংস বলছে এ্যাডভেনচার জাতীয় গল্প/ফিকশন হিসেবেই লেখক উপস্থাপন করতে চেয়েছেন। এবং তাই হয়তো ঐ তথ্য যোগাড় নিয়ে এতটা খাটাখাটনি..... সাধুবাদ জানাই।।

সময় যাত্রা নিয়ে আবারো মুভির কথা মনে পড়ে গেল। “লুপার(২০১২)” মুভিটি দেখেছেন ?

“কতটা অতীত?” পুরো গল্পের মূল নির্যাস যেন ঢেলে দিলেন এই একটি প্রশ্নে। টাইম ট্র্যাভেলর কী হতে পারবো আমরা !

স্টিফেন হকিং মজার প্রশ্ন করলেন-
“If time travel is possible, where are the tourists from the future?”

ভালো থাকুন প্রিয় লেখক। শুভকামনা।।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:১৩

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

আপনার সম্বোধনে শরম লাগে :P ধন্যবাদ হে সাইফাই বোদ্ধা। B-)

গল্পটা লেখার সময় চেয়েছিলাম অ্যাডভেঞ্চারের বিষয়টাকে গুরুত্ব দিতে। তাই বাহুল্য সাইফাই বর্ণনা বাদ দিয়েছি। গল্প বড় হলে মেলা সমস্যা! :(

আপনি যেমন খাটাখাটনি করে মন্তব্য করেন, সত্যি আমি অবাক হয়ে যাই।

লুপার দেখেছিলাম, অসাধারন লেগেছিল। সোর্স কোড দেখেছিলেন তো? এর উপরে সাইফাই মুভিই হয়না! ওইটা তেও বার বার অতিতে যাওয়ার ব্যাপার ছিল।

স্টিফেন হকিং এর এই প্রশ্নের জবাব কিন্তু অনেক বিজ্ঞানি দিয়েছেন। সব কিছুর একটা শুর আছে, একটা শেষ আছে। সেই হিসেবে বলতে গেলে পৃথিবীতে মানব জাতির শুরু থেকে শেষ অবধি একটা লুপ আছে। সেই লুপে যদি আমরা প্রথম ফেসের অভিযাত্রী হই, তবে আমরা শেষ মাথায় পৌঁছানোর আগে তো সত্যিকারের ভবিষ্যতের সৃষ্টিই হবেনা!

৪৫| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৫৮

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: হাফ সেঞ্চুরীর শুভেচ্ছা নাজিম ভাই ! প্রিয়তে রাখলাম , রাতে পড়ে মতামত জানিয়ে যাবো !

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:১৪

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

ধন্যবাদ অভি ভাই :)

৪৬| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

সোমহেপি বলেছেন: আপনার এ গল্পটা শেষ করতে পারলাম।

গল্প ভালো লাগলো।তবে একটা খুত হল যে আপনার সায়েনাটিফিক দিকগুলো বাস্তবে কতটুকু কি হওয়া সম্ভব।আমি যতটুকু জানি তা হল অতীত কিংবা অবিশ্যতে যেতে হলে আলোর বেগের কাছাকাছি বেগে চলতে হয়।আর সেটা সম্ভব না মানুষের জন্য এ জন্য যে তখন বস্তু শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।


আপনার শ্রমের এবং প্রচেষ্টার প্রতি শ্রদ্ধা।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৩০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
শেষ করতে পারায় ধন্যবাদ প্রাপ্য আপনার। এত বড় গল্প পরে শেষ করা মুখের কথা না :)

জুলভারনের লেখা পড়েছেন তো? কয়েকশ বছর আগের লেখা। তখন কিন্তু মানুষ তার লেখা পড়ে হাসত, বলত এগুলা পাগলের প্রলাপ! অথচ তার অধিকাংশই আজ বাস্তব। এত বছর পরে এসে আমরা তার লেখার প্রশংসা করি আর তার দূর দৃষ্টি দেখে অবাক হই!

শুধু মাত্র আলোর গতির কাছাকাছি বেগে যাওয়াটাই অতিতে যাওয়ার এক মাত্র উপায় না। আপনি একটু নেট ঘাঁটাঘাঁটি করলে দেখবেন মানুষ কত বিচিত্র ধরনের গবেষণা করছে তার ইয়ত্তা নেই :)

৪৭| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:২৩

অনাহূত বলেছেন: গল্পটা গত রাত্রেই পড়েছি। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বিধায় মন্তব্য করা হয়নি।

ইয়েস, সবার মতো করে আমিও বলতে চাই-
আপনি একজন পরিশ্রমী লেখক বটে। গল্প ভাবনা আমার কাছে বেশ লেগেছে।
সাইফাই পোকা হিসেবে - গল্পও। বড় গল্পে খানিকটা অসাঞ্জস্যতা থাকতে পারে। এসব ঠিক হয়ে যাবে।

কিন্তু সব ছাপিয়ে -
সাজিদ খানের বউকে নিয়ে 'দীপা' এবঙ 'হাবীব' এর ধারণাটা আমি এনজয় করেছি। :)

সমালোচকদের সমালোচনা, খানিকটা রাজনৈতিক ঘ্রাণ চলে আসায় গল্পে একটু ভিন্ন মাত্রা এসেছে। ভালো লেগেছে খুব। সাজিদ খান এবঙ ইউছুফ শিকদার এই দু'জনই মূল চরিত্র। তাই মনে হলো। চিত্রায়ণও ভালো হয়েছে।

গল্পের মেইন পিলার - এডভাঞ্চারাস সাইন্স ফ্যান্টাসিও বেশ জমেছে। সব মিলিয়ে সময়ক্রম আমার কাছে দারুণ উপভোগ্য ছিলো। চালিয়ে যান।



১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৪৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
'দীপা' এবঙ 'হাবীব' এর ব্যাপারটা একটা বাড়তি মজা ছিল। অনেকেই খেয়াল করে নাই। আপনাকে ধন্যবাদ :)

আসলে মনোযোগ দিয়ে পড়লে গল্পের ভেতরে সূক্ষ্ম অনেক বিষয় নজরে আসবে।

গল্পের শেষটা নিয়ে অনেকেই স্যাটিস্ফাইড না মনে হচ্ছে তাই আমার মাথায় একটা বিকল্প এন্ডিং এসেছে। ভাবছি এডিট করে দেব।

আপনাকে আবারো ধন্যবাদ :)

৪৮| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: সামু লোড হতে সময় লাগছে। তাই পড়তে গিয়ে বার বার সমস্যা অনুভব করছি। পরে এসে আবার মন্তব্য করব। তার আগে ৫০ তম গল্পের জন্য অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইল।

১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৩৩

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

হ্যা, বেশ সমস্যা করতেছে। ধন্যবাদ কাভা ভাই।
সমস্যা নেই। আস্তে ধীরে আসেন, কেমন লাগল বইলেন :)

৪৯| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫৫

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: আপনাকে শুধু স্যালুট জানাতে পারি , অনেক কষ্ট করেছেন , তাও গল্প ঝুলে যায় নি কোথাও , এত্ত বড় গল্প টানা পড়ে ফেলেছি , টুইষ্ট ও ছিল !তবে ১২ টা টাইম লাইন অতিক্রম করলে অতীত কিংবা ভবিষ্যতে যাওয়ার ব্যাপার টা কি গল্পের প্রয়োজনে নাকি সম্ভব , এ নিয়ে কি কোন রিসার্চ হয়েছে ??
শেষ গন্তব্যের আগে ঝড় না উঠলে হয়তো সে অতীতে আসতোনা , পরিকল্পনা সফল হতো !
মনে রাখার মত গল্প হয়েছে ! শুভেচ্ছা আর অভিনন্দন ! তবে ব্যাপারটা এক্কেবারে অসম্ভব না , ব্যাক টু দা ফিউচার অনেক আগের মুভি , আঠারশ কত সালের যেন , সে সময় যদি মানুষ অতীত , ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে পারে , এখন ২০০ -৩০০ বছর পর হলেও হতে পারে অতীতে যাওয়া সম্ভব হয়েছে ! টাইমজোনের বিষদ ব্যাখাও নাকি তাই বলে !
অভিনন্দন নাজিম ভাই আরেকবার !

১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:০৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

আপনাকে শুধু ধন্যবাদ ছাড়া আর কি জানাতে পাড়ি বুঝতেছি না। চমৎকার মন্তব্য আমার খুব ভাল লেগেছে। এই নিয়ে রিসার্চ হয়েছে কিনা জানিনা, তবে আমার রিসার্চ করার ইচ্ছে আছে। ;)

মানুষের পক্ষে অসম্ভব কিছু আসলেই নাই। পৃথিবীতে মানব জাতির শুরু থেকে শেষ অবধি একটা লুপ আছে। সেই লুপে যদি আমরা প্রথম ফেসের অভিযাত্রী হই, তবে আমরা শেষ মাথায় পৌঁছানোর পর হয়ত সেটা সম্ভব হতেও পারে।

চেয়েছিলাম মনে রাখার মত করতে। তারপরও হয়ত আমার সেরাটুকু দিতে পারিনি। সামনে চেস্টা থাকবে আরও ভাল করার। পাশে থাকার জন্য অশেষ ধন্যবাদ অভি ভাই। সবসময় ভাল থাকুন :)

৫০| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৩২

ইশতিয়াক রেহমান বলেছেন: ৫০ তম গল্পের শুভেচ্ছা ভাইয়া। অনেকদিন পড়ে ব্লগে বসার সুযোগ হল। এখন গল্প পড়ি...... :)

২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:০৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: :) :)

৫১| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৫৪

ইশতিয়াক রেহমান বলেছেন:
আমি একটা সামান্য কথা বলছিলাম। যেকোনো মানুষের পক্ষে অতিতে যাওয়া সম্ভব যদি সে এমন কোন দেশে যায় যেই দেশ সময়ের তুলনায় পিছিয়ে আছে! এই কথা থেকে তুমি এত্ত বিশাল একটা গল্প দাড় করায়ে ফেলছ! আমি তো মারাত্মক অবাক হয়েছি!

অর্ধেক পরেছি গল্প। বাকিটা পরে পড়ব :)

২০ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৪৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আর পরসিস তুই :'(

পুরা পড়ে দেখ, শেষ দিকে হিউজ মজা পাবি :)

৫২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ ভোর ৬:৫২

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: অসাধাদরণ কল্পনাশক্তি আপনার। আলো ব্লগে লিখছেন না, তাই গল্পগুলো পড়া হয় না।

আমি খুব অতীত বিলাসী। আমার খুব ইচ্ছে হয় অতীতের ঘটনাগুলোতে ফিরে যাওয়া। পুরাতন পত্রিকা আমার প্রিয় পাঠ্য! তাই আপনার সাইয়েন্স ফিকশনটি আমি অনেক আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। যুক্তি আছে গল্পের প্রতিটি কথায়।

আমার মতো সকল মানুষেরই অতীতে ফিরে যাবার ইচ্ছা আছে কমবেশি। কালাতিক্রম করা মানুষের সহজাত আকাঙ্ক্ষা। ছোটকালে বড় হতে চায়, বড়কালে ছোট। আপনার গল্পে সে আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।

কিছু জায়গায় বানানগুলো দেখে নেবেন!
অনুসরণ করে রাখলাম।

শুভেচ্ছা, প্রিয় নাজিম-উদ-দৌলা:)

২০ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধন্যবাদ মইনুল ভাই। আলো ব্লগে লেখা ছেড়ে দিয়েছি ৭-৮ মাসের বেশি হয়ে গেছে। কারন অনেকগুলো। কিন্তু তারপর থেকেই বুঝেছি, সত্যিকারের ব্লগিং প্লাটফর্ম হিসেবে সামুর বিকল্প হয়না। :)

আপনার চমৎকার মতামত আমার খুব ভাল লেগেছে।

হায়রে বানান! প্রুফ রিডার দায়িত্বে অবহেলা করায় এমন দিন দেখতে হল আমার !

ভাল থাকুন :)

৫৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৯:১৬

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


সিমপ্লি গ্রেট +++

২০ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে :)

৫৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:০৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: একটু একটু করে তোমার গল্পটা পড়ে গিয়েছিলাম নাজিম। দুঃখিত দেরী হলো পাঠ প্রতিক্রিয়া জানাতে। তার উপর গল্পটা আমাকেই উৎসর্গ করেছ !

প্রথমেই বলি , তুমি এই গল্পের পেছনে এতটাই শ্রম দিয়েছ যে আমি খুব খুশী হয়েছি। ১২ টা টাইম জোনের হিসাব করা বাংলাদেশের সময়ের সাথে মিলিয়ে, সেই সব দেশের এয়ারপোর্ট এর নাম , ল্যান্ডিং স্ট্র্যাকচার, আবহাওয়া এবং বিভিন্ন চরিত্রের সন্নিবেশ, হালকা রাজনৈতিক ছোঁয়া ইত্যাদি তুলে ধরতে পারা কম কথা নয়।

দীপার ব্যাপারটা মজার লাগলো সাজিদের খানের বৌ কে ঘিরে যে ভাবনা আবার হাবীবের ব্যাপারেও লাগলো সাজিদ খানের বৌ কে দেখার জন্যই টিভির সামনে বসা বা লোডশেডিং এর কারণে বিরক্তি ।

সাজিদ খানের সাথে তার বাবা উপমহাদেশের বিশিষ্ট পদার্থবিদ প্রফেসর ইউসুফ শিকদারের হঠাৎ করে দেখা হবার ব্যাপারটা আমার কাছে একটু দ্রুতই মনে হয় দেখানো হলো। অর্থাৎ প্রথম টা শুরু হলো তার বাবার থিউরি নিয়ে সময় অতিক্রম করার বিষয়ে। এরপর ওখানেই শেষ তবে বোঝা যাচ্ছিলো পরে এই চরিত্রের আগমন আবার ঘটবে। কিন্তু সাজিদ খানের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে তার বাবার সাথে পুনর্মিলনের ব্যাপারটা পড়ে মনে হলো বাবা- ছেলের পূর্ব কিছু অতীতচারণার প্রয়োজন ছিল কিংবা বাবার প্রিয় গবেষণার পথ ধরে হাঁটার স্বপ্ন ছিল সেটা সে মানে সাজিদ খান নিজের মাঝেও রোমন্থন করতে পারতো তার বাবার সাথে তার স্মৃতিচারণ হিসেবে। তাহলে পাঠকদের কাছে পিতা-পুত্রের মিলন দৃশ্যটা আরও বাস্তব এবং বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করা যেতো।

তার মানে বোঝা যাচ্ছে থিওরি অনুযায়ী অতীত থেকে ভবিষ্যৎ, আবার ভবিষ্যৎ থেকে অতীতে চলাচলের ক্ষমতা অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত অনুশীলন প্রয়োজন এবং এর সঠিক চর্চা হলে সেটা বাস্তবেও কাজে লাগানো যাবে -- ব্যাপারটা কি এমন নাকি জাস্ট এটা সাইফাইএর ব্যাপার ?

গল্প অনুযায়ী সাজিদ খান লাস্ট যাত্রা করে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের উদ্দেশ্যে কিন্তু যখন তার বাবার সাথে তার দেখা হয় সেখানে সময় এবং স্থান - অজানা দেখানো হল। তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে সে জানল তারা এখন বাংলাদেশে আছে অর্থাৎ খ্রিস্টের জন্মের ১০০০ বছর পূর্বে। তারমানে কি ? যাত্রা শুরুর বাংলাদেশ ১০০০ বছর পূর্বে হাওয়াই দ্বীপের অধীনে ছিল। ? আসলে ইতিহাস জ্ঞানও আমার নাই :||

সব মিলিয়ে গল্প আমার ভালো লাগছে। বিশেষ করে একই সময় ১২ টি স্থানে থাকার ব্যাপার টা। অতীতে ফিরে যাওয়া কিন্তু বর্তমান মানসিকতা , চিন্তা নিয়ে -- এরকম যদি আমার ক্ষেত্রে হতো, কেমন একটা স্বপ্ন স্বপ্নের মতো ভাব, ভাবতেই ভালো লাগছে।

তোমার লেখালেখির সুসময় থাকুক সব সময় এই কামনাই করছি নাজিম তোমার জন্য।

২০ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:২৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

আপু, এত বেশি মনোযোগ দিয়ে খুটিয়ে খুঁটিয়ে গল্প পড়তে আগে কাউকে দেখিনি আপনি। আমি গল্প লেখার পিছনে অনেক সময় দিয়েছি থিকই, আপনি পড়ার জন্য কিছুমাত্র কম সময় ব্যয় করেন নি।

গল্পের শুধুমাত্র থিওরি আর ক্যারেক্টার বাদের প্রত্যেকটা বর্ণনা সঠিক এবং নিখুত না হলেও নিখুতের কাছকাছি হবেই :) এমন কি স্কাইলন প্লেন, আবহাওয়ার পরিবর্তন, সামুদ্রিক ঝড়, বিদ্রোহ সহ যা যা ঘটনা সন্নিবেশ করেছি সবই বাস্তব।

দীপা আর হাবীবের ব্যাপারটা আপনি আর বকামোন ধরতে পেরেছেন :)

তার মানে বোঝা যাচ্ছে থিওরি অনুযায়ী অতীত থেকে ভবিষ্যৎ, আবার ভবিষ্যৎ থেকে অতীতে চলাচলের ক্ষমতা অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত অনুশীলন প্রয়োজন এবং এর সঠিক চর্চা হলে সেটা বাস্তবেও কাজে লাগানো যাবে-- এটা শুধুই ধারনা। রিয়েলিস্টিক সাইফাই গল্পে এই বিষয়টা নিয়ে কাজ করা হয়। বাইরে এ ধরনের গল্প অহরহ লেখা হচ্ছে! এখানে সাইফাই তত্ত্ব সম্পূর্ণ বিজ্ঞান সম্মত নয়, এটা আসলে এক ধরনের ফ্যান্টাসি। তবে এমন ধরনের গল্পে লেখককে যদি আপনি বলেন "এমন কখনো হতে পারেনা"। লেখক বলবে "অবশ্যই হবে, আপনি চেষ্টা করে দেখুন"। তখন আপনার আর কোন জবাব থাকবেনা কারন এটা করা সম্ভব কিন্তু সময় আর সম্পদের অভাবে কেউ করতে পারবে না :)

এসেছি। থিওরি অনুযায়ী ১২ বার টাইমজোন পেরিয়ে একই সময়ে অবস্থান নিতে পারলে তুই যেখান থেকে শুরু করেছিস সেখানেই ফিরে আসবি।
বাংলাদেশ ১০০০ বছর পূর্বে হাওয়াই দ্বীপের অধীনে ছিল না। ওরা ১০০০ বছর পূর্বের বাংলাদেশে ফিরে গেছে।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু :)

গল্পের শেষটা নিয়ে আমি কিছুদিন ধরে ভাবছি। একটা অল্টারনেটিভ প্লান এসেছে মাথায়। :) এডিট করব ভাবছি :)



৫৫| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩০

রিভানুলো বলেছেন: অসম্ভব ভালোলাগলো আপনার গল্প।

২০ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধন্যবাদ, ভাললাগা প্রকাশের জন্য :)
ভাল থাকুন।

৫৬| ২০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:০৬

বটবৃক্ষ~ বলেছেন: অনেক দেরিতে হলেও পড়তে পারলাম!! কিসু বলার নাই! আপনার প্রতিটা গল্প পড়েই মনে হয়যে একটা ;লেখার পিছনে কতোটা ডেডিকেশন থাকলে এমন গল্প লিখা সম্ভব!!

নাথিং টু সে ! জাস্ট.......

২০ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:০৪

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
মেনি মেনি থ্যাংকস! :)

গল্প লেখাটা আমার প্যাসন। এর পিছনে আমার সময় দিতে ভাল লাগে :)
আর আপনাদের উৎসাহ পেলে তো কথাই নাই :)

৫৭| ২০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:০৮

বটবৃক্ষ~ বলেছেন: ওহ!! আমার রাত্রি জাগরণ সার্থক হইলো!! :)

প্রিয়তে রাখালাম!! মূল্যবান গল্পটা!!

২০ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:০৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ইয়া খোদা! ৩টা ৮ বাজাইছেন গল্প পড়তে গিয়ে! আমি তো টাস্কি!
আমরা রাত তিনটা পর্যন্ত ব্লগে থাকি আর এক জনে কয় সামু ব্লগ নাকি ত্রিশোর্ধদের দখলে! আফসুস!

৫৮| ২০ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৮

অদৃশ্য বলেছেন:





নাজিম ভাই

আপনি পরিশ্রমি লেখক... অনেক সময় ও শ্রমের পর একটি অত্যন্ত সুন্দর/ অনন্য সুন্দর গল্প দাড় করিয়েছেন... গল্পটা পড়ে মুগ্ধ না হবার কোন কারনই ছিলো না...
খুবই ক্রিয়েটিভ...

প্রশ্নটা মনের ভেতরে এসেছিলো পড়বার সময়েই... মন্তব্যে দেখলাম অপর্ণা দি সেটা লিখে গ্যাছেন... হাওয়াই এ দূর্ঘটয়া অথচ অবস্থান করছে বাংদেশে... কেন? ৩০০০ বছর পূর্বে কি ভৌগলিক স্থান বর্তমানের হাওয়াই= কাছাকাছি বাংলাদেশ এমন ছিলো! নাকি এর ভেতরে আপনার কোন স্পেশাল থিওরী আছে... জানার ইচ্ছা রইলো...

গল্পের ভেতরে এন্টারটেইনমেন্ট এর কোন কমতি ছিলোনা... আবারো বলছি মুগ্ধ হয়েছি লিখাটি পাঠে...

শুভকামনা...

২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:০৩

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

উত্তরটা অপর্ণা আপুর কমেন্টের উত্তরে দিয়েছি। থিওরি অনুযায়ী পূর্বের অবস্থানে ফিরে গেছে। কিন্তু সময়টা গেছে পালটে। থিওরি অনুযায়ী ১২ বার টাইমজোন পেরিয়ে একই সময়ে অবস্থান নিতে পারলে তুই যেখান থেকে শুরু করেছিস সেখানেই ফিরে আসবি।বাংলাদেশ ১০০০ বছর পূর্বে হাওয়াই দ্বীপের কাছাকাছি ছিল না। ওরা ১০০০ বছর পূর্বের বাংলাদেশে ফিরে গেছে।

ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্বের জন্য। আপনাদের দেওয়া উৎসাহ আমাকে অনুপ্রেরনা যোগায়। :)

ভাল থাকুন সব সময় :)

৫৯| ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:২২

আমি তুমি আমরা বলেছেন: অসাধারন-দুর্দান্ত-চরম।

পঞ্চাশমত পোস্ট ও গল্পের অভিনন্দন রইল :)

২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:০৪

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

ধন্যবাদ আপনাকে। :)

আপনার জন্য শুভকামনা থাকল :)

৬০| ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:১৫

মেহেরুন বলেছেন: অনেক বড় গল্প। পুরোটা শেষ করতে পারলাম না তাই প্রিয় তে নিয়ে নিলাম। প্রথম অংশ পড়ে দারুন লেগেছে।

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০২

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

কষ্টটুকু করার জন্য ধন্যবাদ। আশাকরি সময় করে বাকিটা শেষ করবেন। এক একটা পোষ্টের পিছনে মাস খানেক সময় দেই, তাতে গল্পটা বড় হয় হোক, ব্লগাররা গল্পটা পড়বেন সেই আশা নিশ্চয়ই করতে পারি ? :)

ধন্যবাদ আপনাকে :)

৬১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:২১

নুর ফ্য়জুর রেজা বলেছেন: দারুণ লিখেছেন ভাই। মুগ্ধ হলাম পড়ে। জমিয়ে রেখেছিলেন শেষ পর্যন্ত। কল্পনাশক্তির স্ফুরণ দেখতে পেলাম। আমি অনেকদিন ব্লগে নিয়মিত না তাই আপনার আগের লেখাগুলো মিস করেছি দেখে খারাপ লাগছে।


+++++

২২ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০৯

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
গল্প পড়ে মতামত জানানোর জন্য ধন্যবাদ ভাই। খুব বেশি লেখা আশাকরি মিস করেন নি। লিখি তো খুব কম। ভাল থাকুন আর ব্লগে নিয়মিত হবেন এই আশা রাখি :)

৬২| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:১৮

অপু তানভীর বলেছেন: গফ পড়া শুরু করলাম ! প্রিন্ট দিলাম !

সবার কমান্ট গুলোও দেখলাম ! মনে হচ্ছে কিছু পাবো !!
যদি ভাল না লাগে খবর আছে কিন্তু ! দেড় মাস ওয়েট করাইছেন !!

৫০তম গল্পের শুভেচ্ছা !!

২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৫০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
হে হে, ভালা না লাগার কোন চান্সই নাই ;)

বান্দরবনে থাইকা তো সিরাম আনন্দ কইরা আসলেন :)

৬৩| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:২৬

কামাল। আহমেদ বলেছেন: অসাধারণ চিন্তাশক্তি। এমন আনকমন আইডিয়া যে আপনার মাথায় কোথা থেকে আসে, আমি তাই ভাবি। আর একটা বিষয় আপনার লেখনিতে লক্ষণীয় সেটা হল,শুধু গল্পের খাতিরে গল্প বলা নয় আপনার লেখায় থাকে বিভিন্ন তথ্য এবং মেসেজ যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনিও। এই গল্পটার শেষের দিকে পড়ে চমৎকৃত হয়েছি।



কিছুক্ষন পর সাজিদ অচেনা ফলের গায়ে কামড় বসাতে গিয়ে লক্ষ করল প্রফেসর ইউসুফ একটা বহু পুরনো লগ বুকে গাছের ডাল দিয়ে বানানো কলম কালিতে ডুবিয়ে নিয়ে কিছু আকা আকি করছেন। সাজিদ ভাল ভাবে লক্ষ করতেই দেখল লগ বুকের ওপরে লেখা-

তারিখঃ ৪ঠা নভেম্বর, খ্রিস্টপূর্ব ১০১৩ অব্দ।
স্থানঃ জন্মভূমি, বাংলাদেশ।

(সমাপ্ত)

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:৪৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ধন্যবাদ কামাল ভাই,

আসলে চেস্টা ছিল গল্পটাকে মনে রাখার মত করার। তাই সমস্ত ডেডিকেশন ঢেলে দিয়েছিলাম। কতটা ভাল হয়েছে জানিনা। তবে আপনার ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগছে। গল্পের আইডিয়া আছে অনেক মাথায়। কিন্তু লিখতে আলসেমি লাগার কারনে লিখা হচ্ছে না।

আপনি ভাল থাকুন ভাই। শুভকামনা আপনার জন্য। :)

৬৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫০

অন্ধকার রাজপুত্র বলেছেন: অনেকদিন আগে থেকেই আপনার ৫০ তম গল্পটা পড়ার জন্য আগ্রহ নিয়ে বসে ছিলাম। কিন্তু ঈদের কয়েকদিন আগেই ইন্টারনেট জগত থেকে সাময়িকভাবে ইস্তফা নেয়ার কারণে আপনার গল্পটা পড়া থেকে বঞ্চিত ছিলাম। তবে এতদিন পর শুধুমাত্র এই গল্পটা পড়ার জন্য আমি ব্লগে ঢুকলাম। আপনার গল্পের প্রতি আমার অন্যরকম একটা টান অনেক আগে থেকেই ছিল একমাত্র ইউনিক সব টুইস্ট থাকে বলে ।তবে সাম্প্রতিক গল্প গুলোতে আপনার পরিশ্রম দেখেই সবচেয়ে বেশী মুগ্ধ হয়েছি। এই গল্পটা পড়ে অনেকদিনের সেই আগ্রহটা পূর্ণতা পেল। খুব ভালো লেগেছে নাজিম ভাই। মন থেকে দোয়া করি আপনি একজন বড় মাপের লেখক হোন কারণ আপনার লেখনী সেই বিশেষ যোগ্যতাটা প্রমান করে। ;) ;)

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৩৪

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। গল্পটা লিখি লিখি করে লিখা হচ্ছিল না। হয়ত ভাল মত উঠে পড়ে লাগলে দেড় মাস লাগত না! যাই হোক শেষ পর্যন্ত শেষ করতে পেরেছি এটাই অনেক আনন্দ দায়ক আমার জন্য। আপানাদের ভাল লেগেছে- সেটা তো আরও বেশি আনন্দের। বড় মাপের লেখক হতে পারব কিনা জানিনা তবে লিখে যাব যতদিন আপনারা পাশে আছেন, ইনশাল্লাহ।

ভাল থাকুন। :)

৬৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২৩

তাসজিদ বলেছেন: হুম্মম,
একটি লেখার জন্য কতটা পরিশ্রম করা যায়, আর বেসিক ধারণা বদলাতে হচ্ছে বারবার আপনার লেখার জন্য।
কি ভয়ানক পরিশ্রম করেছেন ভাবা যায় না।

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:৩৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
পরিশ্রমটা বৃথা যায়নি বুঝা যাচ্ছে আপনাদের ভাল লাগার প্রকাশ দেখে। গল্প লেখা আমার প্যাসন, এই কাজে সময় দিতে আমার ভাল লাগে। :)

আপনাকে ধন্যবাদ তাসজিদ ভাই কষ্ট করে গল্পটা পড়ার জন্য। :)

৬৬| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৫৮

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: হৃদয়ের অর্ঘ্য ঢেলে দিলাম। হ্যাটস অফ টু ইউ । মুগ্ধতার কথা আসলে পরিপূর্ণভাবে ভাষায় প্রকাশ করা যায় না । অন্তত আমি পারি না । অনেক কিছু মনের ভিতর থেকে যায় ।
আপনার গল্প টা পরিপূর্ণ একটা পৃথিবীর মত , সব আছে । ।

গর্ব করেই এখন বলতে পারি নাজিম - উদ - দৌলা নামে আমাদের একজন
অসাধারণ অসামান্য লেখক আছেন ।
একদিন , আপনার লিখনির স্পর্শ পাক পুরো দেশ এই কামনাই করছি ।


সাজিদ খানের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে তার বাবার সাথে পুনর্মিলনের ব্যাপারটা পড়ে মনে হলো বাবা- ছেলের পূর্ব কিছু অতীতচারণার প্রয়োজন ছিল কিংবা বাবার প্রিয় গবেষণার পথ ধরে হাঁটার স্বপ্ন ছিল সেটা সে মানে সাজিদ খান নিজের মাঝেও রোমন্থন করতে পারতো তার বাবার সাথে তার স্মৃতিচারণ হিসেবে। তাহলে পাঠকদের কাছে পিতা-পুত্রের মিলন দৃশ্যটা আরও বাস্তব এবং বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করা যেতো।
আপুর সাথে আমিও একমত ।
তবে আমার মনে হচ্ছে আপনি এটা ইচ্ছে করেই করেন নি কলেবর
বৃদ্ধির আশংখায় । এমনিতেই ৬০০০ শব্দের গল্প ।

৫০ তম গল্পে অভিনন্দন জানিয়ে নাজিম ভাইকে স্বস্তি দিতে চাচ্ছি না ,
সেঞ্চুরি করুন তারপর না হয় ভেবে দেখা যাবে । :P :P :P

যেতে নাহি চাই তবু যেতে হয় !
ভাল লাগার বাটনে প্রেস করলেও কাজ হচ্ছে না তাই কমেন্টেই
++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++



২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩১

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: আপনার ভাললাগার এমন প্রকাশ দেখে আমি আপ্লুত ও আনন্দিত হলাম মাহমুদ ভাই। অনেক সময় লাগিয়ে ধীরে ধীরে গল্পটা শেষ করেছেন। পাশাপাশি ফেবুতে চ্যাট চলেছে দুজনের। ভাল লাগার কিছু চমৎকার মুহূর্ত কাটালাম আপনার সাথে! :)

গল্পটাকে মনে হচ্ছে উপন্যাস হিসেবে লিখলে ভাল হত। আপনার, অপর্ণা আপুর, হামা ভাইয়ের মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে ৬০০০ শব্দ যথেষ্ট ছিলনা গল্পের জন্য। সামনে আরও ছোট গল্প লিখব বলে চিন্তা করছি।

সেঞ্চুরি করতে সময় বেশি লাগবে ভাই। হাফ সেঞ্চুরিতে গেছে দেড় বছর। সেঞ্চুরিতে হয়ত ৩ বছর লেগে যেতে পারে। আমি খুব স্লো হয়ে গেছি ইদানিং :P

অনেক ভাল থাকুন মাহমুদ ভাই। আপনার গল্পের অপেক্ষায় আছি :)

৬৭| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:০৭

তাসজিদ বলেছেন: অনেক দিন ধরে সাই ফাই আর সায়েন্স ফিকশান নিয়ে আছে। আপনার জীবন ভিত্তিক গল্প গুল মিস করছি।

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩১

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:


লিখছি একটা এখন। তাড়াতাড়ি পাবেন :)

৬৮| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:১৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব চমৎকার একটা গল্প পড়লাম। পাঠ শেষে তৃপ্তি এবং অতৃপ্তির এক যৌথ অনুভূতি হচ্ছে। আমি যদিও খুব অল্প জানি, আমার ব্যক্তিগত ধারনা ব্লগে আপনার মত পরিশ্রমী গল্প লেখক খুব কমই আছে। একজন প্রফেশনাল লেখক হবার সকল গুন আপনার মধ্যে বিদ্যমান। সাহিত্যিক হিসেবে হিসেবে গল্পের মূল্যায়ন করার মত খুব বেশি দক্ষতা বা যৌগ্যতা আমার নেই, তবে পাঠক হিসেবে আমার অনেক ভালো লেগেছে। আপনার গল্পগুলোতে মাঝে মাঝে অনেক অজানা বিষয়ও জানা যায়, এটা খুবই ভালো একটা দিক।

যাই হোক, ভালো থাকুন। অনেক শুভেচ্ছা রইল।

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
সাহিত্যিক মূল্যায়ন দিয়ে কি হবে? পাঠক ও বড়ভাই হিসেবে যতটা মূল্যায়ন করেছেন তাতেই আমি খুশি। তৃপ্তিটুকুর জন্য আনন্দিত হলাম আর অতৃপ্তির জন্য জিভ দেখালাম :P B-)

গল্প লিখতে গিয়েই আমি অনেক অজানা বিষয় জানি :) সেগুল গল্পে জুড়ে দেয়ার লোভ সামলাতে পারিনা :)

অনেক অনেক ভাল থাকুন কাভা ভাই :)

৬৯| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:১২

গৃহ বন্দিনী বলেছেন: বরাবরের মত অসাধারণ গল্প , আগেই পড়েছিলাম মন্তব্য করতে দেরি এই যা ।
আমার কাছে আপনার গল্পের সব চেয়ে আকর্ষনীয় দিক হল প্রতিটা গল্পেই কিছু না কিছু অজানা জিনিস জানা যায় ।
প্রতিটা গল্প পড়লেই বুঝা যায় অনেক পরিশ্রম করেন এক একটা গল্পের জন্য ।

এই গল্পটা নিয়ে একটু বলি , আমি যত দূর জানি GMT ১২ বার পরিবর্তনের জন্য একদিন আগানো বা পেছানো যায় , যেটা ইন্টার ন্যাশনাল ডেট লাইন ক্রস করলেও হয় । কিন্তু গল্পে আপনি হাজার বছর পিছিয়ে দিয়েছেন , যাইহোক এটা কে গল্পের ফিকশন হিসেবেই ধরে নিলাম । (একটু আজাইরা সমালোচকের ভাব নিলাম কিছু মনে কইরেন না :P )

ভাল থাকবেন প্রিয় নাযিম ভাই ।

২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:২৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ফিকশনটার ব্যাক্ষা আছে। বড় হয়ে যাচ্ছে বলে এড়িয়ে গেছি। আপনার গল্প ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। আমি আসলে নানা যায়গায় ঘাটাঘাটি করি তো! তাই অনেক সময় নতুন শিখা বিষয়টা গল্পে দিয়ে দেই। :)

ভাল থাকুন। অনেক অনেক ভাল :)

৭০| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০৫

টুম্পা মনি বলেছেন: খুবই চমৎকার লেখনি!

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৩৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: ধন্যবাদ প্রশংসার জন্য :)

৭১| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৩১

রোকেয়া ইসলাম বলেছেন: চমৎকার.........
এক কথায় অসাধারন। আপনার প্রতিটা গল্পই একটু ভিন্ন স্বাদের। একটু সময় নিয়ে পড়তে হয়। আগেও একবার এসেছিলাম সময়ের অভাবে পড়তে পারিনি। আজ পরলাম। সত্যি অনেক অনেক ভাল লিখেন আপনি।

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:৪২

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:

হ্যা, বড় হওয়ার কারনে একটু সময় নিয়ে তো পড়তে হয়ই। আমি কেন যেন ছোট লিখতে পারিনা :(
সময় করে ব্লগে এসেছেন বলে ধন্যবাদ।
ভাল থাকুন। সাথে শুভকামনা রইল অনেক :)

৭২| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:৩১

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: গল্প পড়ে গিয়েছি আগেই, বলার কিছু নাই, আমি বরাবরের মতই মুগ্ধতা নিয়ে পড়েছি। আর লেখার সাইয কোনো বিষয় না, আপনার লেখা বড় হলেও একঘেয়ে লাগে নাই কখনও।

আমি আপনার গল্প লেখার যে বিষয়টাতে বেশী মুগ্ধ সেইটা হল গল্পের প্রতি আপনার নিবিড় মমতা ও পরিশ্রম। এই জিনিসটা আমাদের অঞ্চলের লেখকদের মধ্যে অনেক কম। মৌলিক লেখার পেছনে অধ্যয়ন আর শ্রমটা আমি অনুবাদ লেখাতেই বেশী পাই। লেখকের নাম না জেনে পড়লে আমি নিশ্চিত থাকতাম যে এইটা কোনো অনুবাদ লেখা। আপনার এই বিষয়টাতে আমি বেশ অনুপ্রানিত! গল্প লিখতে হইলে সেইটার পেছনে সময় দিতে হবে যথেষ্ট!

অনেক অনেক শুভকামনা রইলো সুপ্রিয় গল্পকার!

ভালো থাকুন!

ও,
দীপা মনে মনে বলল, “অমন সুদর্শন একটা মানুষ কীভাবে এমন বোয়াল মাছের মত মুখওয়ালা মেয়েকে বিয়ে করল?”

কান থেকে এয়ার ফোন খুলল হাবীব। “শিট!! টিভিতে দেখতে পারলে ভাল লাগত! লোডশেডিংয়ের জ্বালায় লাইফটাই হেল হয়ে গেল। সাজিদ খানকে না হোক, অন্তত তার রূপসী স্ত্রী সুচিত্রার মুখটা এক নজর দেখতে পারলেও শান্তি পেতাম”!

এই অংশটা সেরাম হয়েছে! :)

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:১৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
হাহাহাহা!!

এই অংশটা বাড়তি বিনোদন ছিল। অনেকের হয়ত চোখ এড়িয়ে গেছে! আপনি ধরতে পেরেছেন দেখে ভাল লাগছে। আসলে একই বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী দেখাতে চেয়েছেইলাম।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সময় করে এসে গল্পটা পড়েছেন বলে। অনেক শুভকামনা আপনার জন্য।

আর আশা করব কবিতার পাশাপ[আশি মাঝে মধ্যে গল্প লিখবেন, বড় হলেও লিখুন। :)

৭৩| ৩১ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

তাসনুভা সাখাওয়াত বীথি বলেছেন: সত্যি আপনি অসাধারন লিখেন । উপরে সবাই এত এত প্রশংসা করেছেন যে আমি কি বলব বুঝতে পারছিনা ।

অপর্না আপু অনেক ভাল লিখেন । উনার লেখার হাত নিঃসন্দেহে অনেক অনেক ভাল ।

পোষ্টে লাইক দিতে পারছিনা তাই এখানে +++ দিয়ে গেলাম :) ভাল থাকুন ।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:০৬

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
দেরিতে রিপ্লাই করার জন্য সরি!
নেট খুব বেশি ঝামেলা করছে আমার।
আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
ভাল থাকুন প্রতিটি মুহূর্ত।

৭৪| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৬

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: প্রিয় ব্লগার অনেক দেরীতে হলেও আপনার চমৎকার সাই ফাই টি পড়ে ফেললাম। অসাধারণ লাগলো। অনেক পরিশ্রম করেছেন গল্পের প্লট ও সম্পর্কিত বিষয়গুলোর অবতারণা করতে। সাধুবাদ আপনার প্রাপ্য।

উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হোক আপনার ব্লগ মানসম্পন্ন সব পোস্টে। ৫০ তম পোস্টের অভিনন্দন।


ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা রইল।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:০৮

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ভাই দুঃখিত আমি, দেরিতে রিপ্লাই দিচ্ছি বলে। আসলে নেট ঝামেলা করছিল এত দিন। এখন ঠিক হওয়ায় ঢুকতে পেরেছি।
অনেক সাধনার গল্প এটা আমার। বলতে পারেন- একটা মাইলফলক পেরোলাম!

নতুন একটা গল্পও পোষ্ট দিয়ে ফেলেছি। সময় করে চলে আসবেন পড়ার জন্য :)

৭৫| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৭

আমি ইহতিব বলেছেন: ৫১ তম গল্প কবে আসবে? অপেক্ষায় আছি।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:০৫

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: আজ পোষ্ট দিলাম :)

৭৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৫

রেজওয়ান তানিম বলেছেন: ভাল লাগল।

আশ্চর্য হলেও সত্য, গল্প পড়তে পড়তে অনন্ত জলিলের কথা মনে আসছিল শুধু ;)

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অস্বাভাবিক না ভাই।
অনন্ত জলিলের ব্যাপারটা আমার মাথায়ও আসছিল লেখার সময়। :)
ভাল থাকুন।

৭৭| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪৮

সাদরিল বলেছেন: গল্প পড়েই বুঝতে পারছিলাম অনেক খাটাখাটুনী করেছেন।সেজন্য সেল্যুট।গল্পটাও বেশ ভিন্ন রকম।এরকম আগে কখনো পড়েছি বলে মনে পড়ে না।তবে কিছু জায়গায় অসংগতি দেখেছি।সেটি হলো আপনি বলেছেন ইউরোপে সাজিদ খানের তেমন জনপ্রিয়তা ছিলো না।অথচ দেখা যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য আর আফ্রিকার মতো দেশগুলোতে তার তুমুল জনপ্রিয়তা।ইউরোপে একজন হলিউড স্টারের জনপ্রিয়তা নেই অথচ মধ্যপ্রাচ্য আর আফ্রিকার রক্ষনশীল দেশের মানুষ তার ব্যাপারে খোজ খব রাখছে বিষয়টা খটকা লাগলো।আরেকটা ব্যাপার সাজিদের বাবা কীভাবে একা প্লেন উড়িয়ে রওনা হলেন তার প্লেনটা কই গেলো সে ব্যাপারে কিছু বলেন নাই।আসলে গল্পের সবকিছু এতোই বাস্তব যে এই দুটি জিনিষ সামান্য এদিক ওদিন হয়াতে হুট করে চোখে পড়েছে।তবে গল্পটা অতীব অতীব চমতকার।ফেভারিটে নিলাম।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫২

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
ইউরোপে জনপ্রিয় মানে তো এই নয় যে এশিয়া- আফ্রিকাতে তার জনপ্রিয়তা নেই। যেহেতু ইউরোপে জনপ্রিয় কথাটা বলেই দিয়েছি তাই গল্পের ভেতরে আর ইউরোপকে আর তুলে আনিনি। আর রুট বাছাইয়ের সময়ও সমস্যা হয়েছে। আমার ইচ্ছে ছিল ইউরোপিয়ান একটা কান্ট্রি দেখাব যাত্রাপথে, কিন্তু টাইমলাইন এতই টাইট ছিল যে সেটা সম্ভব হয়নি।

নায়কের বাবার বিষয়টা একটু ধোঁয়াটে রাখা হয়েছে ইচ্ছে করেই। আসলে বড় হয়ে যাচ্ছে বলেই এমনটা করা। শেষটুকু নিয়ে আবার একটু কাজ করব আমি।

আপনাকে ধন্যবাদ সাদরিল ভাই, ভাল থাকুন। :)

৭৮| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৩০

মু.ই.মা ইমন বলেছেন: স্পিচ লেস :)

সেই হয়েছে :) :)
মাথা নষ্ট করা স্টোরি :) :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.