নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বর্তমান বিশ্বে মুসলিম উম্মাহ দলিত, নিপীড়িত ও নির্যাতিত। এর কারণ হচ্ছে উপকারী জ্ঞান এবং তার সঠিক প্রয়োগের অভাব। মুসলিম উম্মাহর রাহবারের দায়িত্বে যারা বসে আছে তারা অধিকাংশই গোঁয়ার, অনমনীয় ও ধর্মান্ধ ব্যক্তি। আর যখন এই ধরনের লোক ক্ষমতার মসনদে বসে তখন কোনো জাতির তাদের কাছ থেকে উপকারী কিছু আশা করা বোকামী। আমাদের অসতর্কতার ফলে এধরনের লোক ক্ষমতার মসনদে জেঁকে বসেছে। এর পরিপূর্ণরূপে আমরাই দায়ী। মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, "আমি তাদের উপর জুলুম করিনি; বরং তারা নিজেরাই নিজেদের উপর জুলুম করেছে...।" [১]
যতক্ষণ পর্যন্ত না মানুষ ভুল থেকে ফিরে সত্যের পথে আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ নিজের উপর নিজে জুলুম করতে থাকে।[২]
আমরা যেভাবেই চলি না কেন জুলুমের কারণ টা নিজেদের মধ্যেই আছে। আমাদের অসচেতনতার জন্যও বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছি। আর এই নির্যাতনের শিকার হওয়ার কারণ আমরা নিজেরাই। আমাদের অসচেতনতার জন্য ধর্মান্ধ ও দ্বীনের প্রকৃত জ্ঞানের ব্যাপারে অজ্ঞ স্বার্থ অন্বেষণের মানসে উম্মাহর রাহবারের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। তারা জনসাধারণের মধ্যে ইসলামের অপব্যাখ্যা ও বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
ইসলামকে সঠিকভাবে অনুধাবন করার পূর্বেই তারা বিভিন্ন স্ববিরোধী মন্তব্য ও ফতোয়া দিয়ে যাচ্ছে। চেতনাধারী ও মুক্তচিন্তার মুসলিমদের প্রশ্নের উত্তরে যখন তাদের মুখ বন্ধ হয়ে যায় তখন তারা এদের কাফির ফতোয়া দিয়ে নিজ রাস্তায় কেটে পড়ে। আফসোস! তারা মূলত এক আল্লাহর উপাসনা নয়; বরং প্রবৃত্তির উপাসনা করে।
বাংলাদেশে প্রচলিত তথাকথিত বিভিন্ন বক্তা, অলি-আউলিয়া, গাউস-কুতুব, পীর-মাসায়েখগণ বিভিন্ন ধরনের অলীক, বানোয়াট ও কল্পিত ঘটনাবলী বর্ণনা করে জনসাধারণকে প্রকৃত ইসলামের উপর বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা ব্যতিত এক কল্পনা ও অবাস্তব ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত করছে। বর্তমানে একশ্রেণীর বক্তাগণ মানুষের মাঝে এমন সব কেচ্ছা-কাহিনী বলে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করে যা প্রকৃত ইসলাম সাংঘর্ষিক। তথাকথিত ইসলামী বক্তাগণ ধর্মীয় জ্ঞানহীন জনসমাগমের মাঝে যত অলৌকিক ঘটনা অর্থাৎ কল্পিত ঘটনা বর্ণনা করে এগুলোর কোনো ভিত্তিই ইসলামে নেই। এর ফলে জনগণের বিশ্বাস প্রকৃত ইসলাম থেকে সরে এক অবাস্তব কল্পিত অবস্থার উপর তাদের প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের এই প্রোপাগাণ্ডার ফলে ইসলামের অভূতপূর্ব ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
ইসলাম একটি বাস্তব চিন্তার ও বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম। কালের পরিক্রমায় বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিরা বিভিন্ন বানোয়াট ও কল্পিত কাহিনী এতে যোগ করার চেষ্টা করেছে। তাই এমন কিছু কাহিনী লোকমুখে শোনা যায়। তবে কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত ঘটনাতে কোনো সন্দেহ নেই। এ সমস্ত ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকুক কিংবা না থাকুক। কেননা, বিজ্ঞান দিয়ে ইসলাম চলে না৷ তাফসির, হাদিস ও ফতোয়াই কেবলমাত্র ইসলামের জ্ঞান নয়। মুসলিম জাতির দৈনন্দিন জীবনযাত্রা সহজ করার জন্য যে সব জিনিসের প্রয়োজন বোধ করে সে সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জনই হলো ইসলামি জ্ঞান। বর্তমান সময়ে যদি ইসলাম ধ্বংস হয় তবে এর কারণ আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের গবেষকের অভাব। অধুনা আমাদের দেশে কিছু আলেম-ওলামা বলে বেড়ান বিজ্ঞান, আধুনিক বিষয়ে গবেষণা ও নতুন কিছু আবিষ্কার— এগুলো পশ্চিমাদের কাজ। তারা নতুন কিছু উদ্ভাবন করবে এবং আমরা তা ব্যবহার করব। তারা হচ্ছে সেবক আর আমরা হলাম সেবিত। এ সমস্ত আলেমগণ মূলত জ্ঞান স্বল্পতার দরুন এমন প্রলাপ বকছেন। একজন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ ভালোভাবেই অনুধাবন করতে পারেন যে, সুস্থ ও শক্তিশালী ব্যক্তির সেবার প্রয়োজন হয় না; বরং অসুস্থ ব্যক্তিরই সেবার প্রয়োজন। ইউরোপীয়রা তো চায় মুসলিমরা কোনোকিছু আবিষ্কার না করুক, তারা আবিষ্কার করবে আর মুসলিমরা তা ব্যবহার করবে। ফলে তারা মুসলিমদের সম্পদ হাতিয়ে নিবে আর মুসলিমরা চিরকাল দুর্বল থাকবে।
আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবু মুসা মুহাম্মাদ বলেন, "যারা আবিষ্কার করে না, অন্যের আবিষ্কৃত বিষয় ধার করে চলে; যারা নিজের মেধা ও জ্ঞানকে কাজে লাগায় না, অন্যের জ্ঞানের উপর ভর করে চলে ইসলাম ধর্মে এ ধরনের জাতির প্রয়োজন নেই।"
ইসলামের আরেক অভূতপূর্ব ক্ষতি সাধিত হচ্ছে অনমনীয়-গোঁয়াড় মুসলিম দ্বারা। অনমনীয়-গোঁয়াড় মুসলিম জানে না যে সে তার একগুঁয়েমী কাজের মাধ্যমে তার মিল্লাত কে নিষ্ক্রিয় বানাচ্ছে এবং অন্যান্য জাতির তুলনায় মুসলিম জাতিকে পতনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। পার্থিব জ্ঞান তথা প্রকৃতি বিজ্ঞানকে উপেক্ষা করে তারা নিজের জাতির জন্য মুসিবত টেনে আনছে -এ বিষয়ে তারা সতর্কও হচ্ছে না এবং ভ্রুক্ষেপও করছে না। ফলে তারা দরিদ্রতার মধ্যে নিমজ্জিত হচ্ছে। যদি তারা নিজেদের জীবনযাপনের দিকে তাকায় তাহলে বলে, আল্লাহ তাকদীরে এমনই রেখেছিলেন। এ জগতের অলস লোকদের হল এ কথা, তারা সবকিছু তাকদীর বলে চালিয়ে দিয়ে ক্ষান্তি লাভ করে। এ স্বভাব অধিকাংশ মুসলিমদের মাঝে অলসতা এনে দিয়েছে। তাদের মধ্যে একদল বের হয়েছে যাদেরকে দরবেশ বলে উপাধি দেওয়া হয়। তাদের কাজ-কর্ম কিছু নেই। তারা ইসলামী সমাজে প্রকৃতপক্ষে পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোক। এ স্বভাবই ফিরিঙ্গীদেরকে মুসলিম সম্পর্কে বলতে বাধ্য করছে যে, ইসলাম অদৃষ্টবাদী। এটা কাজ করার নির্দেশ দেয় না। সৃষ্টিজীব কাজ করুক বা না করুক, যেটা হবার সেটা হবেই।[৩]
তথ্যপুঞ্জি:
[১] সুরা হুদ, আয়াত:১০১।
[২] তাফসীরে আল মানার।
[৩] মুসলিমদের পতন ও বিধর্মীদের উত্থানের নেপথ্য কারণ। লেখক: আল-আমির শাকিব আরসালান
২০ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৪৮
যুবায়ের আলিফ বলেছেন: আমীন
২| ২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:১৩
মেটালক্সাইড বলেছেন:
সময়পোযোগী বিশ্লেষণ, বর্তমান উম্মাহ কুরয়ানকে টেপ রেকর্ডার বানিয়ে ফেলেছে।
কুরয়ান নিয়ে চিন্তা, গবেষণা, আবিস্কার এইসব এখন মুসলিমদের কাছে আঙ্গুর ফল টক হয়ে গেছে।(উদাঃ আজহারী,মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকধারীরা)
রইল ধান্দাবাজ পীর,অলি, মাজার ও মুসলিম বেশধারী মুনাফিকের ব্যপ্তি ও কলেবর এত বিশাল হওয়ায় একটি উপায় আবার ফিরে
এসেছে জরুরী প্রয়োগের, যেটি রাসূলুলাল্লাহর ওফাতের পর খলিফা আববকর রাঃ শুরু করেছিলেন এবং সমস্ত সাহাবী পিছন না ফিরে এর মূল শুদ্ধু উপড়ে ফেলেছিলেন।
২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:২৩
যুবায়ের আলিফ বলেছেন: মূল্যবান মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
৩| ২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:২৭
নেওয়াজ আলি বলেছেন: সুন্দর উপস্থাপন । একমাত্র আল্লাহই রক্ষাকর্তা ।
২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:২৭
যুবায়ের আলিফ বলেছেন: ধন্যবাদ
৪| ২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৩৪
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: জি, আপনি শুরুতে যা লিখছেন তা-ই হচ্ছে।
বাস্তবিক হয়ে আমাদেরকে জ্ঞান এবং ধর্মচার্চা করতে হবে।
২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:২৬
যুবায়ের আলিফ বলেছেন: জ্বী। সাথে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে ধর্মান্ধদের ব্যাপারে সতর্ক করতে হবে।
৫| ২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: ধর্মের দিকে ঝুকলেও করোনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না।
২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:২২
যুবায়ের আলিফ বলেছেন: জ্বী ভাই। গত আর্টিকেলে এ ব্যাপারে বলছিলাম।
৬| ২০ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৬
আহমেদ জী এস বলেছেন: যুবায়ের আলিফ,
পঞ্চম ও শেষ প্যারাতে সঠিক কথাই বলেছেন।
২০ শে মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩৭
যুবায়ের আলিফ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে মার্চ, ২০২০ দুপুর ২:৪৫
একনিষ্ঠ অনুগত বলেছেন: কুরআন এবং হাদিস চিরন্তন সত্য। এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই কোন ঘটনা বা কাহিনী যদি কুরআন ও হাদিস এর বিরোধী হয় তা অবশ্যই মানা যাবে না। ইসলামে আলিম ওলামা ও গবেষকদের গুরুত্ব রয়েছে তেমনি যারা দ্বীনকে মেনে মানুষের উপকার (দুনিয়াবি) করেন তাদেরও সম্মান রয়েছে। কিন্তু মানুষের দুনিয়াকে আরও আরামদায়ক করার জন্য দ্বীনের বিধানকে ছোট করার কোন সুযোগ ইসলামে নেই। আল্লাহ্ সবাইকে বুঝদান করুণ।