নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

খুব সাধারণ একজন মানুষ। বিনয়ে বলা সাধারণ নয়, সত্যিকারের সাধারণ। রূঢ় ভাষায় বললে \"গুড ফর নাথিং\"।

বিষাদ সময়

বিষাদ সময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

দ্বৈত সত্ত্বার বসবাস

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:০৪





যারা অশিক্ষিত ধার্মিক তাদের কথা নয় বা যারা শিক্ষিত নাস্তিক তারাও নয়। আমার এ কথা খোলা মনের শিক্ষিত আস্তিকদের নিয়ে। হয়তো অশিক্ষিত আস্তিক বা শিক্ষিত ধার্মিকদের দেহেও একই রকমের দ্বান্দ্বিক সত্ত্বার বসবাস। কিন্তু সেই দ্বান্দ্বিক সত্ত্বাগুলোকে খুঁজে বের করার জন্য যে সূক্ষ চেতনার দরকার তা হয়তো আমার নেই।

তাই এ আলোচনা খোলা মনের শিক্ষিত আস্তিকদের নিয়ে এরাই সাধারণতঃ দ্বৈত সত্ত্বায় বসবাস করেন ।
একদিকে বিজ্ঞান ও যুক্তি আরেক দিকে ধর্ম ও বিশ্বাস। দুই চেতনা যদি সমান্তরাল ভাবে প্রবাহিত হতো তবে চিন্তা ছিল না। কিন্তু তা নয় এ দুই চেতনা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দ্বান্দ্বিক এবং অনেক স্থানে তারা পরষ্পরকে ছেদ করে। এই অসংখ্য ছেদ বিন্দু সত্ত্বেও এরা উভয় চেতনায় প্রায় সমানভাবে বিরাজমান থাকতে পারে। একই ধরণের ঘটনা যখন বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে দেখে তখন তাদের সিদ্ধান্ত এক রকম আবার্র একই বিষয়ে ধর্মীয় চিন্তার সিদ্ধান্ত একেবারে বিপরীতমুখী।

আমাদের মধ্যে আনেকে আছে যারা একই ভাবে উভয় সিদ্ধান্তের অভ্রান্ততায় বিশ্বাসী। যেন একই দেহে দ্বৈত সত্ত্বার বসবাস। যারা এভাবে দ্বৈত সত্ত্বা নিয়ে বসবাস করতে পারেন, তারা অনেক ধরনের সংশয় থেকে মুক্ত। যখন এক সত্ত্বা সামনে এসে সিদ্ধান্ত জানায় তখন আরেক সত্ত্বা থাকে মনের অন্তরালে। আবার পিছনের জন বেরিয়ে আসলেই সামনের জন পালিয়ে যায়। তারা কথনও মুখো মুখি দাড়ায় না।

আমার এক বন্ধু ছিল কোন এক বিশ্ববিদ্যালেয়ে এ্যনথ্রোপোলোজির সহযোগী অধ্যাপক কিন্তু প্রচন্ড ধার্মীক। তার সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হতো। সন্ধার পরে অনেক সময় ঘন্টার পর ঘন্টা আলোচনা চলতো। একদিন কথা প্রসঙ্গে সে বলছে আমাদের আগের জমানার মানুষের হায়াত ছিল বেশি তারা অনেক লম্বা চওড়া ছিল......

আমি তাকে বললাম তুমি তো এ ব্যাপারে ভাল জান। এমন কি কোন প্রমান পাওয়া গেছে যে আগের দিনের মানুষেরা অনেক বেশিদিন বাঁচতো বা অনেক বিরাট আকৃতি্র ছিল। সে কিছুটা দ্বিধান্বিত বললো- বাপ দাদারা তো তাই বলেছে তাছাড়া ধর্মেও তো সে রকম কথাই বলে।

আমি বললাম তুমি পড়ানোর সময় কি পড়াও। সে জানালো বিশ্ববিদ্যালয়ে যা শিখেছে তাই পড়ায়। তারপর বেশ জোরের সাথে বললো কিন্তু ধর্মে যা বলে তা তো বিশ্বাস করতে হবে।

তাও ভাল তার পড়ানোর সময় এক সত্ত্বা বাইরে আসে আর ধর্মে কর্মে অন্য সত্ত্বা। দ্বৈত সত্ত্বার সমন্বয় ঘটিয়ে সব জাগায় দ্বন্দ্ব বাধায় না।

এক সময় খৃষ্টান পাদ্রীদের দৌরাত্বে সাধারণ মানুষের ত্রাহি ত্রাহি রব উঠতো। রেনেসা, শিল্প বিপ্লব এর পর তারা ব্যাকফুটে গেছে। প্রয়োজনে ধর্মীয় বানীকে যুগোপযোগী করে এন্টারপ্রেট করেছে। নিজেদের জ্ঞান, বিশ্বাসকে গীর্জার চার দেয়ালে আবদ্ধ করেছে। বেশির ভাগ সাধারণ ধর্ম অনুসারীরাও নিজেদের ভিতর অদ্বান্দ্বিক দ্বৈত সত্ত্বা তৈরী করে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণাগার আর কল কাখানায় থাকলে বিজ্ঞান বা লজিক নিয়ে চলে আর গীর্জার ভিতরে গেলে বিশ্বাস বা ধর্মের নিয়ম। সাধারণ খ্রীস্টানরা নিজেদে সত্ত্বাকে এভাবে দু ভাগে ভাগ করার ফলে এখন ব্যাক্তি জীবনে তাদের ধর্ম এবং বিজ্ঞানের দ্বন্দ্ব খুব কম হয়।

আবার যে সকল মুসলিমরা ঐ রকম দ্বৈত সত্ত্বার বসবাস করে তারা ভাল আছে। কিন্তু যারা বিজ্ঞানের প্রতিটি বিষয় ধর্মের সাথে টেনে এনে সংঘর্ষ বাধাচ্ছেন তারা ধর্ম এবং বিজ্ঞান উভয়েরই ক্ষতি করছেন। এখন সময় এসেছে ধর্ম এবং বিজ্ঞানের সীমান নির্ধারনের। ধর্মীয় বানীকে যুগোপযোগী করে এন্টারপ্রেটের। সব ধর্মেরই মোডিফিকেশন হচ্ছে এবং হবে, আটকে রাখা যাবে না। অন্য ধর্মের অনুসারীরা এটাকে যত সহজ ভাবে নিয়েছে আমরা সেভাবে নেইনি। আমাদের মূলই ভক্তি, মূলেই শক্তি। ভয় হয় আমরা এভাবে মুল আকড়ে ধরে থাকতে গিয়ে সমূলে উৎপাটিত হই কিনা

ছবি সূত্রঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১৮

অরণি বলেছেন: ধর্ম শুধুই বিশ্বাস এবং বিজ্ঞান শুধুই প্রমান; দুটো আলাদা বিষয়।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০০

বিষাদ সময় বলেছেন: দুটো একদম আলাদা বিষয় তবে কখনও দুই বিষয়ের কথায় মিল থাকে আবার কখনও হয় বিপরীত মুখি।
ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:২৩

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


দ্বৈত সত্তা থেকে মুক্তির উপায় কি?

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৬

বিষাদ সময় বলেছেন: দ্বৈত সত্ত্বা থেকে মুক্তির কি খুব দরকার আছে? এদর পারষ্পরিক দ্বন্দ্ব না হলেই হলো।
বাস্তবিক অর্থে প্রকৃতি বা নিয়তির কাছে মানুষ খুব অসহায়। দৈনন্দিন কাজের জন্য বিজ্ঞান দরকার আবার বিজ্ঞান যেখানে একেবারে অসহায় মানুষ সেখানে কোন একটা বিশ্বাস খুজে নিয়ে শান্তনা পায়। ধন্যবাদ।

৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৩৫

করুণাধারা বলেছেন: বিশ্বাস দৃঢ় হলে কোনো দোলাচলে থাকার কথা না। তাই বিজ্ঞানের সাথে আমি ধর্মের কোনো দ্বন্দ্ব দেখতে পাই না।

মনে আছে অনেকদিন আগে একদিন আমি ক্লোন করা সম্পর্কে একজনকে বলছিলাম, যিনি খুবই ধর্ম বিশ্বাসী। তিনি আমাকে থামিয়ে দিলেন খুব রেগে গিয়ে এবং বললেন যে আমি ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলছি। অথচ একটু ভাবলেই তিনি বুঝতে পারতেন এটা ধর্মের বিরুদ্ধে যায় না।

আপনার বন্ধুটিও একই রকমের। উনি ধর্মে বিশ্বাসী, অথচ উনি জানেন না আমাদের ধর্মের প্রথম শিক্ষা "পড়!" উনি বাপ-দাদার থেকে শোনা কথাকে যাচাই করলেন না!! আস্তিক হলে কুপমন্ডুক হতে হবে কেন!!

সাচুর পোস্টে আপনার উল্লেখিত মনোবিজ্ঞানের শিক্ষিকার নাম সম্ভবত আলপনা তালুকদার। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৩০

বিষাদ সময় বলেছেন: হয়তো দ্বন্দ্ব আছে, হয়তো নেই। এক্ বিবর্তনবাদ নিয়ে যে পারিমাণ বিতর্ক হচ্ছে তা বলার মতো না।

আমার বন্ধুটিকে একেবারে কুপমন্ডুক বলা ঠিক হবে না। কারণ ধর্ম এবং বিজ্ঞান উভয় নিয়েই তাকে পড়া লেখা করতে দেখেছি। হয়তো বাবা দাদার বলা কথার পক্ষে ধর্মীয় প্রমাণ পেয়েছে দেখেই সে সেখান থেকে সরতে পারেনি।

ভুলে যাওয়া সেই ব্লগার এর নাম মনে করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। আরেকজন ব্লগার এর মন্তব্যে ব্লগার ওমেরা এবং রাবেয়া রহীম এর নাম উল্লেখ করায় অতি পরিচিত এই দুজন ব্লগারের কথা আবার মনে হল।

বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন।

৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৩১

কামাল১৮ বলেছেন: আস্তিক আর নাস্তিক ৯৯% একই রকম।খালি ১% তারা আলাদা।নাস্তিক প্রমান ছাড়া বিশ্বাস করে না।আস্তিক প্রমান ছাড়া বিশ্বাস করে।দুটি দিকেরই ভালো দিক খারাপ দিক আছে।তবে কম বেশি।
যার যার ধারণা নিয়ে (বিশ্বাস) শান্তিতে থাকাই উত্তম।নাস্তিক কোপাতে আসে না,আস্তিক কোপাতে আসে।।হাজার হাজার প্রমান আছে।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৪২

বিষাদ সময় বলেছেন: আপনার কথায় যুক্তি আছে এ কথা মানতে হবে। তবে ৯৯% মিল আছে কিনা এ ব্যাপারে আমি কনফিউজড।
নাস্তিকদের অবিশ্বাসের ক্ষেত্রে তেমন কোন আবেগ কাজ করেনা কিন্তু আস্তিকদের বিশ্বাস আবেগে পরিপূর্ন । এ কারণেই মনে হয় কোপাকুপির ঘটনা ঘটে। ধন্যবাদ।

৫| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:১১

শেরজা তপন বলেছেন: এই বিষয়টা আমাকে খুব ভাবায়। ব্যাপারটা মানসিকভাবে খুবই বিরক্তিকর -সবসময় দ্বীধাবিভক্ত করে। নিজের ভাবনা চিন্তাকে এলোমেলো করে দেয়। সবখানেই সন্দেহ অবিশ্বাস। এক এলোমেলো জীবন- দ্বৈতসত্ত্বায় যেন বসবাস। এর থেকে আমৃত্যু উত্তোরনের হয়তো কোন উপায় নেই। যারা চোখ বন্ধ করে আত্মবিশ্বাসের সাথে একদিকে চলে গেছে তারাই হয়তো সুখে আছে।

০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:১৩

বিষাদ সময় বলেছেন: আপনার এ সুচিন্তিত মন্তব্যটা পেয়ে পোস্টটি লেখা স্বার্থক হলো। আপনি একবারে আমার মনের কথাগুলো বলে দিয়েছেন। আমার উপলব্ধিও আপনার মতো কিন্তু কিছু কিছু মানুষ আছেন যারা বুঝতেই পারেন না যে তারা দ্বৈত সত্ত্বা নিয়ে বসবাস করছেন। তারাও খুব একট দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগেন না, ভালই থাকেন।
পোস্টে এসে সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

৬| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:২২

কামাল১৮ বলেছেন: যখনি আপনি আবেগি হবেন, তখনি যুক্তি কাজ করবে না।

০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:১৫

বিষাদ সময় বলেছেন: যখনি আপনি আবেগি হবেন, তখনি যুক্তি কাজ করবে না।

কিন্তু সমস্যা হল মানুষ মাত্রই আবেগ থাকে বা আবেগ আছে বলেই আামরা মানুষ।
ধন্যবাদ।

৭| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: বিজ্ঞানের অগ্রগতি ধর্মকে কোনঠাসা করে ফেলেছে।

০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:১৯

বিষাদ সময় বলেছেন: বিষয়টাকে এভাবে সরলীকরণ করলে মনে হয় ভুল করা হবে। পনের বছর আগের চেয়ে বাংলাদেশ বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়েছে একই সাথে ধর্মের বিস্তার কিন্তু ঘটেছে তার চেয়ে অনেক বেশি। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.