নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাল থাকেন সব সময়।

ক খ ত্রিমোহনী

আমি নগন্য একজন মানুষ। চাল চুলো কিছুই নেই । খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে চলে যাচ্ছে । এই আর কি।

ক খ ত্রিমোহনী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের প্রেম বিয়ে এবং বর্তমান প্রেম বিয়ে।

০৮ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৮:৫০



একটা সময় ছিলো যখন প্রেম ভালোবাসার কথা বললেই মেয়েরা লজ্জায় লাল হয়ে যেতো || একটা ছেলে একটা মেয়েকে প্রপোজ করতেই লেগে যেত অনেকদিন || অনেকদিন পিছে পিছে ঘুরে আড়চোখে চেয়ে থাকতে থাকতে দুজনই যখন হাপিঁয়ে উঠতো তখনই ভালোবাসার কথা বলতো একজন আরেকজনকে || ভালোবাসি কথাটা বলতেই দীর্ঘ সময় লেগে যেতো || যাকে বলবে তাকে পাওয়ার একটা ইচ্ছা, আকাঙ্খা থাকতো প্রবল || মেয়েটিও পরিবারের কথা ভেবে, সমাজের কথা চিন্তা করে তারপর ছেলেটির প্রশ্নের উত্তর জানাতো || ভালোবাসা হয়ে গেলেও দেখা হতো কম,কথা হতো কত ভেবে চিন্তে || কেউ দেখে ফেলবে,কেউ জেনে ফেলবে,এই ভয়ে দুজনই কাচুমাচু অবস্থা ||

অনেকদিন দেখা না হওয়ার ফলে দুজনই থাকতো অস্থির || একটা মনের প্রতি আরেকটা মনের টান,একজনের প্রতি আরেকজনের ভালোবাসা থাকতো নির্ভেজাল || বহু কষ্টের পর প্রিয়তমার হাতটা একটু ধরতে দেরি হতো কিন্তু এক জটকায় সেটা ছাড়াতে দেরি হতোনা || ভয়ে বলেই ফেলতো এই কি করছেন ? কেউ দেখে ফেলবে,আমি এখন যাই || একযুগ পর দেখা হলেও প্রিয় মানুষটিকে ঠিকই চিনে নিত || বিপরিত মানুষটাও অপেক্ষা করতো যুগের পর যুগ || সেই সময়ে কোনো মেয়ে কোনো ছেলেকে প্রপোজ করা, ভালোবাসার কথা বলা, চাঁদের দেশে পা রাখার সমান ছিল || অথচ আজকাল ভালোবাসার কথা বলতে সময় লাগে মাত্র কয়েক মিনিট || চেনা নেই,জানা নেই,কোনোদিন দেখাও নেই এমন একজনকে ও নির্দিদায় বলে দেয় ভালোবাসি || অপর প্রান্ত থেকেও কোনো ভাবনা ছাড়া,চিন্তা ছাড়া হ্যা বলে দেয় ||

তারপর শুরু হাত ধরাধরি || নেই কোনো ফিলিংস,নেই কোনো ভাবনা || একদিন দেখা হলো,দুদিন দেখা হলো -- ব্যাস দুদিনেই প্রেম সাগরে ভাসতে শুরু করল ,ছেলেটির বলতে দেরি হলে মেয়েটি বলে দেয় ভালোবাসি || এভাবে দুইদিনে গড়ে উঠা সেই প্রেম কাহিনীর মেয়াদ কিন্তু ঐ দুদিনই থাকে ||

একটা সময় ছিল মেয়েদের বিয়ের কথা উঠলেই নিমিষেই সবার সামনে থেকে আড়ালে চলে যেত || মুখটা লজ্জারাঙা হয়ে যেত মেয়েটির || মনের মাঝে বিয়ের ডংকা ডং করে বেজে উঠতো না || উঠলে ও মৃদ্যু হাসির মাঝেই তা সীমাবদ্ধ থাকতো || বান্ধবীদের, ভাবিদের সামান্য রং তামাসার মাঝেও মেয়েটি বড্ড লজ্জা পেতো || মাস্টার্স শেষ করা ছেলেটাও পরিবারে বাবা মায়ের সামনে নিজের বিয়ের কথাটা বলতে লজ্জাবোধ করতো || বাবা মা বললে মাথা নিচু করে অন্য রুমে চলে যেতো || এর মানে ছেলেটি বিয়েতে রাজি নয় এমনটা বুঝাতো না কিন্তু, এর মানে আমি রাজি আছি মা তোমরা ব্যবস্থা করো ||

একটা সময় ছিল বিয়ের স্টেইজে বসা মানে মেয়েটি নিজেকে খুব শক্ত করে তৈরী করতে হতো || সবার সামনে বরের চোখের দিকে চাওয়ার তো কোনো প্রশ্নই ছিলনা || সেকি লজ্জা,সেকি উৎকন্টা নিয়ে একেকটা ছেলে মেয়ের বিয়ের স্টেইজে সময়গুলো কাটতো || আর মনে মনে বলতো কবে যে শেষ হবে বিয়ে টিয়ে করা || কিভাবে কেমন করে সবার সামনে একজন আরেকজনকে মিস্টিমুখ করাবে ভিতরে ভিতরে দুজনই সেই জন্য লজ্জায় লাল হয়ে থাকতো || এমনকি যে মিস্টিমধুর শব্দটা বলে দুজন বাহুডোরে আবদ্ধ হবে সে শব্দটা বলতে মেয়েটার ঘন্টাখানেক সময় লেগে যেত || ছেলেটার কম সময় লাগলেও ভিতরে উৎকন্টা ঠিকই থাকতো ||

বহু কষ্টে সহজ সরল তিনটা বর্নের সংমিশ্রণে তৈরি শব্দটা তিনবার বলে মেয়েটি যখন কান্নায় ভেঙে পড়তো || আবেগে জড়াজড়ি হয়ে সেই কান্না থামাতে গিয়ে বাবা মা ভাই বোন সবাই কেদেঁ একাকার অবস্থা হয়ে যেতো || আর এখনকার দিনে ছেলে মেয়েগুলো বিয়ের আগেই ঠোটের ডগায় শব্দটা বসাইয়া রেখে দেয় || বিয়ের আগেই ঝটপট করে বলতে থাকে বহুবার || আমি হয়তো বুঝিনা ওরা হয়তো অনুশীলন করে যাতে বিয়ের দিন বলতে মুখে না আটকায় -- বাধা না আসে -- পাছে বিয়ে ভেঙে যায় সেই ভয়ে ||

বিয়ের রাতে নববধুর ঘরে প্রবেশ করতেই সময় লেগে যেত অনেক || ঘরে প্রবেশ করে খাটের এক কোনে চুপটি করে বসে থাকতো অনেক্ষন || ভিতরে ভিতরে হয়তো কথা সাজিয়ে নিত নববধুকে কি বলবে || নববধুর ঘোমটাপরা মুখটা দেখার আশায় বেচারাকে কতশত যুদ্ধ করে ঘুমটা খুলতে হতো || দ্বীধা আর লজ্জায় একনজর একপলক দেখার পর পরের পলকে নতুন করে তাকানোর সময়টুকুর মাঝে ও লজ্জায় ঘিরে ফেলতো দুজনকে || একজনের হাতে হাত রাখতে ও দুজনার কতো ভাবনা || তারপর দুজনার সম্বন্ধটা আপনি থেকে তুমিতে আসতে সময় লেগে যেতো কয়েকদিন || এর মাঝে বিয়ের আমেজটা হয়তো কেটে যেতো তবু দুজন দুজনকে আপনি করেই বলতে থাকতো ||

এমন অনেক আছে যাদের দাম্পত্য জীবনের শেষ পর্যায়ে এসেও আপনিতেই রয়ে গেছে || আর এখনকার ছেলে মেয়েগুলো বিয়ের আগেই তুমিতে চলে আসে || আজ দেখা আজই তুমি করে বলা শুরু ||

সময় গুলো দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে ঠিক তার দ্বিগুণ দ্রুত পাল্টে যাচ্ছি আমরা || চোখে চোখ রেখে,হাতে হাত ধরে হাটা আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়ে গেছে || অচেনা যাকে তাকে দুই একটা কথা বলে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াটাও বড্ড সহজ হয়ে গেছে || এই ধরনের ভালোবাসা অনেকটা হাওয়াই মিঠাই এর মতো -- দেখতে পিংক কালার -- খেতেও মিষ্টি, অথচ মুখে দিতেই শেষ || মিলিয়ে যেতে সময় লাগেনা || মিস্টির রেশ কিছুটা মুখে লেগে থাকলে তাও শেষ হয়ে যায় দ্রুত || যেন দ্রুত শেষ হবার এক প্রতিযোগিতা চলে সবকিছুতে ||

একটা সময় ছিল যখন বাবা মা সুন্দর ছেলের জন্য কালো মেয়ে আর সুন্দর মেয়ের জন্য কালো ছেলে ঠিক করা হলে ও মেনে নিত || কালোতে কি আসে যায় ?
ভিতরটা ভালো হলেই হয় || সে হোক ছেলে অথবা মেয়ে || আর এখনকার ছেলে/মেয়ে দুজনেরই প্রথম পছন্দ আর যাই হোক গায়ের রংটা ফর্সা হওয়া চাই ||
কদাচিৎ খুব কমই পাওয়া যায় যাদের রং নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই ||

সময় পাল্টে যাচ্ছে সাথে পাল্টে যাচ্ছে জীবনের মূল্যবান সবকিছু || তবু সবকিছুর পরেও ভালো ছেলে মেয়ে আছে যারা আগের মতোই লাজুক || তাদের ভিতরের আবেগ,অনুভুতিগুলো অনেক দামি || এরা সংখ্যায় কম তবু আছেতো || ভালো সবকিছুর সংখ্যাই তো দিনে দিনে পৃথিবী থেকে কমে যাচ্ছে -- ভালোর সংখ্যা সবসময় খুব কমই থাকে |||||

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:২০

খাঁজা বাবা বলেছেন: ভাল লাগল কথা গুলি

২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:২০

খাঁজা বাবা বলেছেন: ভাল লাগল কথা গুলি

৩| ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৩৬

নীল আকাশ বলেছেন: কাউ কে ভালোবাসি এ কথা টা বলতে আগে যত সময় লাগতো এখন তার চেয়ে আগে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

কাউ কে কতটা ভালোবাসি এ কথা টা উপলব্ধি করতে আগে যে সময় লাগতো এখন তার চেয়ে আগে STATUS CHANGE
হয়ে যায় FACEBOOK এ।

এই সময়ের ভালোবাসার ষ্টাইল দেখলে মনে হয় এটা JUST TIME PASSING.

ভালোবাসার সংগা, উদাহরন, কারক, সমাস, বিভক্তি সব কিছুর পরিবর্তন এখন খুবই জরুরী হয়ে পরেছে.........

৪| ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৪৭

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।
বাস্তব।

৫| ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪

বারিধারা ২ বলেছেন: আর এখনকার প্রেম হচ্ছে, "চুমকি চলেছে একা পথে........ রাগ কোরনা, রাগলে তোমায় লাগে আরও ভাল"
"বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ" , "জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ"

পরিত্যাক্ত মডেল সারিকার ভাষায়, "ডিভোর্স হওয়াতে সবাই সিম্প্যাথি দেখে মনে হয় আমার বুঝি ক্যান্সার হয়েছে"

৬| ০৮ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:৫৮

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: অন্তত আবেগগুলোর বেঁচে থাকার কথা ছিল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.