নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

May Allah Bless Bangladesh till the dooms day.

আমি চাই শক্তিশালী স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ

I want very active debate

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন হেনরী কিসিঞ্জার এবং ১৯৭৩র ইউম কিপ্পূর যুদ্ধ!

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৭



বর্তমানে যে হামাস ও বিভিন্ন আরব প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাথে ইসরাইলের যে যুদ্ধ চলছে সেটা এই পোষ্টের মূল ফোকাস নয়। আজ থেকে ৫০ বছর আগে মিশর-সিরিয়ার সাথে ইসরাইলের যুদ্ধ এবং কয়েক সপ্তাহ পূর্বে মৃত মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জারের ভুমিকাই এই পোষ্টের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আমরা জানি যে ১৯৬৭ সালে ইসরাইল আকস্মাৎ সামরিক হামলা চালায় সিরিয়া, জর্দান এবং মিশরে। ইসরাইল সিরিয়ার গোলান মালভূমি, জর্দানের নিয়ন্ত্রণে থাকা পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিমতীর এবং মিশরের সিনাই দখল করে নেয়।

ইসরাইল এই আকস্মিক সামরিক অভিযানের মূল কারণ হিসেবে যা বলে সেটা ছিল মিথ্যা এবং প্রতারণা। ইসরাইলী সরকার বলেছিল যদি ৬ই জুন ১৯৬৭তে ইসরাইল এই Preemtive Military Strike বা আগেই মিলিটিারী অপারেশন না করত তাইলে মিশর পশ্চিম দিক হতে হামলা করে ইসরাইলকে ধ্বংস করে দিত। তাদের তথ্যমতে সিনাইতে মিশরের সেনা ডিভশন সিনাইয়ে প্রস্তুত হয়েই ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালে ইসরাইলী বামপন্থী পত্রিকা Haaretz এই মিথ্যার গোমড় ফাস করে দেয়;

"ইসরাইল ১৯৬৭ বিশ্বকে ধোকা দেয় এবং এর জন্য ১৯৭৩ সালে পস্তায়"

Israel Deceived the World in 1967, and Paid the Price for It in 1973

https://www.haaretz.com/israel-news/2017-06-05/ty-article-magazine/.premium/israel-deceived-the-world-in-67-and-paid-the-price-in-73/0000017f-f77e-d460-afff-ff7e84d90000

আরো চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে যে ইসরাইল মোটেও এই আকস্মিক সামরিক আগ্রাসনে মোটেও ঝুকি নেয়নি মানে ঝুকিই ছিল না। কারণ তাদের কাছে পরমাণু অস্ত্র চলে এসেছিল ১৯৬৬ সালেই। ইসরাইলী নীতি নির্ধারকগণ ও সমরবিদরা ঠিক করে রাখে যে যদি কোন কারণে তাদের এই সামরিক অভিযান ব্যার্থ হয় তবে তারা মিশরের সিনাইয়ের খোলা মরুভূমিতে পরমাণু বোমা ফাটিয়ে তিন আরব দেশকে ভয় দেখাবে। ইসরাইলের প্রাথমিক হামলা ছিল তিন দেশের বিমানবাহিনীকে প্রথম দিনেই ধ্বংস করে দেওয়া। এটা যদি কোন কারণে ব্যার্থ হইতো তবে এই তিন আরব দেশ ইসরাইলের বিরুদ্ধে ব্যাপক যুদ্ধ করত। এই পরমাণু অস্ত্রের বিষয়ে ২০১৭ সালে নিউইয়র্ক টাইমসে ইসরাইলের অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল Itzhak Yaakov এই তথ্য ফাস করেন। এই কর্মসূচীর নাম ছিল "Doomsday Operation";

‘Last Secret’ of 1967 War: Israel’s Doomsday Plan for Nuclear Display

https://www.nytimes.com/2017/06/03/world/middleeast/1967-arab-israeli-war-nuclear-warning.html

তবে এই যুদ্ধে ইসরাইলের অপারেশনাল মাষ্টারমাইন্ড ছিল Moshe Dayan! তার মিলিটারী এবং ইসরাইলী ইন্টিলিজেন্স পুরো তথ্য দিয়ে কোথায় কোথায় হামলা চালাবে তার ছক কষে।

এভাবে তিনিটি আরব রাষ্ট্র ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসনে ভূমি হারানো, বেশ ক্ষতিগ্রস্থ, এদের শাসক এবং জনগণ মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে জর্দান ছাড়া সিরিয়ার হাফেজ আল-আসাদ(বাশারের পিতা) এবং মিশরের গামাল আব্দুল নাসের কেউই ইসরাইলের সাথে সমঝোতা করে নাই। জর্দানের বাদশাহ হোসেন সমঝোতা করে তার দেশের দখল হওয়া কিছু জমি ইসরাইল হতে ফিরত পান। আর মিশর লোহিত সাগর ও ভূমধ্য সাগরের মধ্যকার করিডোর সুয়েজ খাল বন্ধ করে দেয়!

গামাল নাসের অনেক মানসিক চাপে ভেঙে পড়েন। এভাবে ১৯৭০ সালে মিশরের এই মহান নেতার মৃত্যু হয়। এই গামাল নাসেরই সেই ব্যাক্তি ছিলেন যে ইঙ্গ-ফরাসী ও ইসরাইলী আক্রমণ সত্ত্বেও ১৯৫৬ সালে সুয়েজ খালে সামুদ্রিক জাহাজ পরিচালনার দায়িত্ব জাতীয়করণ করেন। এরপর মিশরের প্রেসিডেন্ট হইলেন আনোয়ার সাদাত। উনি ক্ষমতায় এসেই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জোরাল ভাবে ধর্ণা দেন যে কিভাবে কুটনীতিক পথে উনি মিশরের জন্য সিনাই ফিরে পান।



এভাবে মার্কিন সরকারের সাথে জোরাল কুটনীতিক দেন দরবারের পর রিচার্ড নিক্সনের প্রশাসন খানিকটা উদ্যোগী হয়। তারা কয়েকবার সেই সময় ইসরাইরেল মহিলা প্রধানমন্ত্রী Golda Meirর সরকারের সাথে এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করেন। সাদাতের প্রস্তাব ছিল যে ইসরাইল সিনাই ফিরতের বিনিময়ে কায়রো জয়নবাদী ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিবে। কিন্তু গোল্ডা মায়ার ও তার ইসরাইলী সরকার আমেরিকাকে বলে "সাদাত নিজেই ইসরাইল এসে দেনদরবার করুক এবং আমরা অর্ধেক বা আংশিক সিনাই ফিরত দিব"। মানে গোল্ডা ও তার ইসরাইলী সরকার নানা টালবাহানা শুরু করে। আর ঐদিকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনও তার বিশেষ দূত Joeshph Siscoকে বলেন ও সাবধান করে দেন। যে তুমি গোল্ডার ইসরাইলী সরকারকে সীমিত চাপ দিবা কিন্তু এমন চাপ দিও না যাতে ইসরাইল ও মার্কিন সম্পর্ক নষ্ট হয়।

উল্লেখ্য আমেরিকা মিশরকে সোভিয়েত নির্ভর রাষ্ট্র বলত এবং সাদাত বলেন "ইসরাইল আমেরিকার স্যাটেলাইট ষ্টেট"। এরপরে সাদাত বুঝে গেলেন যুদ্ধ ছাড়া এই সিনাই মিশর ফিরে পাবে না। উনি তখন ১৯৭২র মার্চে মিশরের সংসদে ঘোষণা দেন "আমাদের জন্য যুদ্ধ অনিবার্য এবং আমার আরবের এক ইঞ্চি ভূমিও ছাড় দিব না"। কিন্তু তার কথাকে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার কিংবা মার্কিন প্রশাসন গুরুত্ব দেয় নাই। কারণ সাদাত এর আগেও যুদ্ধে হুমকি দিলেও সেভাবে কিছুই করেন নাই।

এরপর সাদাত হেনরী কিসিঞ্জারের সাথে বিশেষ বৈঠক করেন। সাদাত যথারীতি সিনাই ফিরে পেতে ধর্ণা দিয়ে বলেন সিনাই ফিরত পাওয়ার বিনিময়ে উনি ইসরাইলকে ১৯৬৭র পূর্ব সীমানায় স্বীকৃতি দিবেন। জবাবে কিসিঞ্জার তাকে বলেন "দেখ সাদাত তোমার মিশরের সাথে ইসরাইলের যে বিবাদ বা দ্বন্দ সেটা নিয়ে আমি কিছুই করতে পারবো না, কিন্তু যদি এই দ্বন্দ সংকটে রুপ নেয় তখনই কেবল আমি ও আমার আমেরিকা হস্তক্ষেপ করতে পারবো"। এরপরে মার্কিন ভূমিকায় সাদাত আরো হতাশ হলেন। তাই সিদ্ধান্ত নিলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হাফেজ আল-আসাদের সাথে মিলে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে সিনাই এবং গোলান মালভূমি উদ্ধার করবেন। এই বিষয়ে মিশর এবং সিরিয়ার উর্দ্ধতন সামরিক নেতৃবৃন্দ গোপনে দফায় দফায় বৈঠক করেন। যাতে ইসরাইলী মোসাদ, মার্কিন সিআইএ এবং অন্যান্য পশ্চিমা জয়নবাদী বন্ধু রাষ্ট্র গুলি টের না পায়।



মিশরের শীর্ষ সেনা কর্তা জেনারেল সাদ আল শাজলী, জে. মোহামেদ আব্দুল ঘানি গামাসি এবং সিরিয়ার পক্ষে জেনারেল মোস্তফা আব্দুল কাদির তলাস এই বিষয়ে সামরিক পরিকল্পনা এবং কৌশল ঠিক করেন। সাদাত তার জেনারেলদেরকে বলেন তোমরা যদি আমাকে মাত্র ১০ সেমিও সিনাইয়ের জায়গা দিত পার তাইলে আমি এটা বিশ্ব দরবারে এটাকে ইস্যু করবো। শাজলী সহ মিশরের সামরিক কর্তারা জানতেন সুয়েজ খালের পূর্ব পার হতে ইসরাইলী বাহিনী নিয়মিত পশ্চিম পারে মিশরের সেনাদের পর্যবেক্ষণ করতেছে। তাই শাজলী ঠিক করলেন বিরতি নিয়ে প্রায়ই মিশরের কয়েক ডিভিশন সেনা বহরকে দিয়ে নিয়মিত সামরিক মহড়া দিবেন যাতে ইসরাইলের সন্দেহ না হয়। এই বিষয়ে সোভিয়েতও মিশর এবং সিরিয়াকে খানিকটা সামরিক সাহায্য করে। আর সিরিয়াও সিদ্ধান্ত নেয় যে তারাও যুগৎপোৎ ভাবে হামলা করে গোলান দখল করে নিবে। যদিও এখানে একটা গ্যাপ তথা মিশরের দূর্বলতা ছিল। মিশরের সেনাবাহিনীর কর্তারা সাদাতকে বলেন যে আমাদের বাহিনী সুয়েজের ৮-১০ কিমির বেশী অগ্রসর হতে পারবে না। কারণ তাদের বিমান প্রতিরক্ষার জন্য সোভিয়েত নির্মিত S-125 ভুমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য SAM ক্ষেপনাস্ত্র তাদেরকে ১২ কিমি পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে পারবে। কারণ ইসরাইলের তুলনায় মিশরের বিমানবাহিনী দূর্বল ছিল। সে কারণে জেনারেল শাজলী ও তার সেনা কলিগরা সাদাতকে এই বিমান প্রতিরক্ষার বুহ্যেই থাকতে বলেন। এই নিয়ে সাদাত উদ্বিগ্ন ছিলেন কারণ সিরিয়াস হাফেজকে উনি কথা দিছেন যে তারা সিনাইয়ের অর্ধেক পর্যন্ত অগ্রসর হবে।

প্রস্তুতি পর্বে মিশরের সেনাদের বিরতিতে প্রায়ই মহড়া নিয়ে সুয়েজ খালের পূর্ব পাড়ের ইসরাইলী সামরিক পর্যবেক্ষক, মোসাদ সহ অন্যান্য গোয়েন্দাদের কোন সন্দেহই হয় নাই। তাদের মহড়া এমন ছিল যে মিশর সম্ভাব্য ইসরাইলের পরবর্তী আগ্রাসনের মোকাবেলার জন্য সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছে। মিশরীয় সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি লক্ষ্যের মধ্যে দুটি লক্ষ্য ছিল যে সুয়েজ খালে ইসরাইল বেশ কিছু Napalmএ পরিপূর্ণ দাহ্য পদার্থের পাইপ এবং খালের পূর্ব পাড়ে ট্যাঙ্ক সমূহ যেন সহজেই ঢাল বেয়ে উঠতে পারে। আর মিশর শীর্ষ সেনা জেনারেলরা সিদ্ধান্ত নেয় অক্টোবরের প্রথম দিকে ইহুদীদের ইউম কিপ্পূরের পালনের দিন সমূহে তারা ও সিরিয়ার বাহিনী যূগোৎপৎ ইসরাইলে হামলা চালাবে। এই ইউম কিপ্পূর পালনে ইহুদীরা বেশ কয়েকদিন ছুটি কাটায় অধিকাংশই চাকরী বা ব্যাবসায়িক কাজ করে না।


General Saad El Shazly (মিশর)


General Mohamed Abdel Ghani el-Gamasy (মিশর)


General Mustafa Tlass (সিরিয়া)

এরপর ১০ই সেপ্টেম্বর, ১৯৭৩ জর্দানের মাধ্যমে ইসরাইলকে ধাধায় ফেলতে কুটনীতির আশ্রয় নেন সাদাত এবং হাফেজ। উনারা কায়রোতে জর্দানের বাদশাহ হুসেইনকে আমন্ত্রণ জানান। উনারা বাধশাহ হুসেইনকে বলেন "আমাদের কাছে খবর আছে ইসরাইলী বাহিনী উত্তর জর্দান হয়ে সিরিয়াতে আগ্রাসন চালাবে"। জবাবে বাদশাহ হুসেইন তখন সাদাত ও হাফেজকে বলেন যে "আমার সরকারের তথ্যমতে এমন কোন আশংকার কথা জানিনা এবং তিনি দুই প্রতিবেশী স্বীয় আরব দেশকে নিশ্চয়তা দেন ইসরাইল আমাদের ভুখন্ড ব্যাবহার করবে না"। তারপরেও বাদশাহ হুসেইন এখানে সাদাত এবং হাফেজের আকস্মিক এই তথ্যে ঘাপলা আছে বলে সন্দেহ করেন। এর আগেও মিশর এবং সিরিয়া উভয়েই জর্দানকে মিলে ইসরাইলের সাথে ছোটখাট সংঘর্ষ করাতে গেলে জর্দান হেরে বেশ ভুখন্ড হারান। তাই হুসেইন সিদ্ধান্ত নেন তিনি নিজে একলা গোপনে ইসরাইল গিয়ে গোল্ডা মায়ারের সরকারকে সতর্ক করবেন। হুসেইন নিজে একটি সামরিক হেলিকাপ্টার চালিয়ে জর্দানের একটি ঘাটি হতে ইসরাইলে যান এবং তেলআবিবে গোল্ডার সাথে দেখা করে তার উদ্বেগের কথা জাানায়। তাদের এই বক্তব্য ইসরাইলের গোয়েন্দারাও টেপ করে। ইসরাইলী মিলিটারী ইন্টিলিজেন্সের চীফ জেনারেল Eli Zeiraর যুদ্ধ পরবর্তী ভাষ্যমতে গোল্ডা জর্দানের বাদশাহর এই তথ্যকে গুরুত্ব দেন নাই। কারণ হুসেইন নিজেই ১০০% নিশ্চিত ছিলেন না। গোল্ডা সুয়েজের পূর্ব পাড়ে অতিরিক্ত ইসরাইলী সেনা মোতায়েন না করে নিয়মিত মাত্র ৪৫০ জন সদস্যকেই রাখলেন।

এভাবেই ১৯৭৩এ ৬ই অক্টোবর চলে আসে। সিরিয়া গোলানের পূর্ব এবং মিশরীয় সেনারা সুয়েজের পশ্চিম দিক হতে ইসরাইলের অবৈধ দখলকৃত ভুখন্ডে হামলার পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে চূড়ান্ত নির্দেশের অপেক্ষায় আছে। আক্রমণ শুরুর একঘন্টা আগে ইসরাইলের গোয়েন্দা এবং সামরিক বাহিনী নিশ্চিত হয় যে মিশর ও সিরিয়া হামলা করবে। এরপর মিশরীয় জে. শাজলী সাদাতকে বলেন এবার ইসরাইল জানলেও আমার সেনাবাহিনী পরোয়া করে না। শাজলীর এই সাহসে সাদাত উনার মিশরের বাহিনীকে সিনাইয়ে তথা সুয়েজের পূর্ব পাড়ে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দেন। এরপরেই মিশরের বিমানবাহিনী হামলে পড়ে ইসরাইলের প্রাথমিক ডিফেন্স লাইন তথা সুয়েজের পূর্ব পাড়ের ইসরাইলী বাংকার, ঘাটি এবং সেনা অবস্থানে। এই বিমান হামলাতেই সুয়েজের পূর্ব পাড় মিশরের স্থল তথা সেনাদের জন্য অগ্রসর হওয়ার পথ খুলে যায়। তাদের কমান্ডোরা সেই দাহ্য পাইপ গুলো অকেজো করে এবং সেনারা খালে পন্টূন ফেলে তাদের মিশরের ট্যাঙ্ক, ট্রাক, গাড়ী, কামান সহ অন্যসব সামরিক বাহন ও অস্ত্র সমূহ নিয়ে সিনাইয়ের পশ্চিমে কয়েক কিমি ঢুকে পড়ে। আর সেনাদের প্রাথমিক দল সুয়েজের পূর্ব পাড়ের বিভিন্ন বালিময় ঢাল গুলিকে পাম্প ও হোসপাইপে পানিতে ভিজিয়ে ট্যাঙ্ক গুলিকে বেয়ে উঠার সুযোগ করে দেয়। তাদের মহড়া এটাতে সফল ভাবে সাহায্য করে। এই হামলার সময় ইসরাইল প্রাথমকি ভাবে তাদের বিমানবাহিনীকে সুয়েজে পাঠায় মিশরের স্থল বাহিনীকে ঠেকাতে। কিন্তু সম্পূর্ণরুপে ব্যার্থ হয়। মশা যেমন কীটনাশকে ঝাকে ঝাকে ঝড়ে মরে পড়ে তেমনি ৬ই অক্টোবরই সোভিয়েত এস-১২৫ মিসাইল দ্বারা কমপক্ষে হলেও ইসরাইলী বিমানবাহিনী IAFর ৫০টি জেট ভূপাতিত হয় সিনাইয়ের পশ্চিমাংশে। একই ভাবে সিরিয়ার সেনাবাহিনীও গোলানে হামলা করে কিছু দূর অগ্রসর হয়। আর এই দিকে সিনাইয়ের পশ্চিমাংশে পূর্ব নির্ধারিত পরিকল্পনামত ৮ মাইল জায়গা পুনরুদ্ধার করে শক্ত অবস্থানে বসে থাকে। ইসরাইলের শত শত সেনা মিশরীয় বাহিনীর হাতে বন্দী হয়। আর ইসরাইলও দেখে যে তাদের বিমানবাহিনী মিশরের এই অবস্থানে ফাইটার জেট পাঠালে সেটা হবে আত্নঘাতী। এই হামলা শুরুর এবং মিশরীয় বাহিনীর সিনাইয়ের পশ্চিমে প্রবেশের পর সাদাত ইংরেজী দুনিয়ার কাছে বলেন "ভূমি আমার এই হামলার মূল লক্ষ্য না বরং আমি দেখাতেই চাইছিলাম যে ইসরাইলের তথাকথিত সুরক্ষার ব্যাবস্থা ভেঙে পড়বে"। ৬ বছরেরও পর সিনাইয়ে প্রথমবারের মতন মিশরীয় পতাকা উড়ে! এবার ইসরাইল তার সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেয় ট্যাঙ্ক বহরকে প্রেরণের জন্য। তাদের ট্যাঙ্ক বহরই মিশরীয় বাহিনীকে সুয়েজের পশ্চিম পারে ফিরত পাঠাবে।

কিন্তু মিশরীয় বাহিনী পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই বসেছিল। যদিও তাদের বিমানবাহিনী ইসরাইলী ট্যাঙ্ক বহরকে পাল্টা আঘাত করে নাই। ইসরাইলী সামরিক কর্তারা জানত যে তাদের ট্যাঙ্ক বহরকে ঠেকানোর মত সামর্থ্য মিশরের নাই। এই প্রাথমিক ট্যাঙ্ক বহরে ইসরাইলের কয়েকশত ট্যাঙ্ক ছিল। এরা আয়ত্তের মধ্যে আসলে মিশরীয় সেনারা সোভিয়েত নির্মিত 9M14 Malyutka ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী গাইডেড মিসাইল সহ RPG-7 ইত্যাদি দিয়ে ১২ ঘন্টায় ইসরাইলেরও ২০০রও বেশী ট্যাঙ্ক ধ্বংস হয়। এটা ছিল ৯ই অক্টোবরের ঘটনা। এরপরেই শুরু হয় গোল্ডা মায়ারের আর্তনাদ। সে পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ত্রাহি ত্রাহি জুড়ে দেয় সামরিক সাহায্য পাঠানোর জন্য। তাতে আমেরিকাও অকৃপণ ভাবে ইসরাইলকে ১৯৭৩এ সাহায্যও করে। এই সাহায্যের জন্য যতটা না ইসরাইল ঘুড়ে দাড়ায় তার চেয়েও হাফেজকে দেওয়া কথার জন্য সাদাত তার মিশরকে অনেকটাই বিপদে ফেলেন।

মিশরীয় বাহিনী যখন সিনাইয়ের পশ্চিমাংশের ৮ মাইল নিয়ে বসে আছে তখন সিরিয়ার হাফেজ বার বার সাদাতকে তাগাদা দেন। যে দেখেন আমাদের মধ্যে কথা এটা ছিল না। হাফেজের সাথে মস্কো বিশেষ করে তৎকালীন সোভিয়েত প্রধানমন্ত্রী Alexei Kosyginও সাদাতকে চাপ দেয় এই ৮ মাইলের বাইরে যেয়ে সিনাইয়ের আর ভেতরে প্রবেশ করার। বাধ্য হয়ে সাদাত জে. শাজলীর পরামর্শ উপেক্ষা করে মিশরের ট্যাঙ্ক বহরকে আরো অগ্রসর হতে বলেন। তখন হতেই মিশরের সেনাবাহিনী বিপর্যয়ের শিকার হতে থাকে। শুধু যে বিমানবাহিনীই নয় বরং ইসরাইলের ৯০০ ট্যাঙ্ক ছিল। এই হামলা চালাতে গিয়ে মিশর ২৫০ ট্যাঙ্ক হারায় এবং সিনাইয়ের পশ্চিমাংশে মিশরের অবস্থানে গ্যাপও সৃষ্টি হয়। সিনাইয়ের উত্তর পশ্চিম কোণে মিশরের দ্বিতীয় ডিভিশন এবং দক্ষিণ পশ্চিম কোণে তৃতীয় ডিভিশন সেনাদের অবস্থানে একটা ভ্যাকুম বা ফাকা জায়গা তৈরি হয়। এরই সুযোগ নেয় ইসরাইলী বাহিনী বিশেষ করে জেনারেল Ariel Sharon যে পরে প্রধানমন্ত্রী হয়।


Ariel Sharon

সে এই ফাকার মধ্যে যেয়ে ইসরাইলের বাহিনীর একাংশকে সুয়েজ খাল অতিক্রম করে মিশরের প্রবেশ করে সুয়েজের পশ্চিমপাড় হতে মিশরীয় তৃতীয় ডিভিশন সেনাদেরকে(সুয়েজের দ: পশ্চিমে অবস্থানরত) বিচ্ছিন্ন ও অবরুদ্ধ করতে সমর্থ্য হয়। যদিও তাদেরকে সরাতে পারে নাই। এভাবেই যুদ্ধে অচলাবস্থার শুরু হয়।

তখনই সে সময়কার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জারের ভূমিকা শুরু হয়। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়ন যুদ্ধ থামানো এবং একটা কুটনীতিক সমাধানের উদ্যোগ নেয়। এই প্রক্রিয়ায় ১৯শে অক্টোবর ১৯৭৩ তৎকালীন সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট Leonid Brezhnev মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জারকে মস্কোতে আসার আমন্ত্রণ জানান। কিসিঞ্জার যেন ২০ তারিখে মস্কোতে এসে সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভের সাথে সাক্ষাত করেন যে কিভাবে এই যুদ্ধ থামানো যায়। কিসিঞ্জার যখন মস্কোতে যাত্রাপথে ছিলেন তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট ব্রেজনেভকে একটা বার্তা দেন। সেটাতে বলা হয় আমেরিকা কার্যত তাদের ফরেন সেক্রেটারী হেনরী কিসিঞ্জারকে পাওয়ার অব এটর্নী দিয়ে দিছে। মানে এই আরব ও ইসরাইলের যুদ্ধে কিসিঞ্জারই মার্কিনিদের পক্ষে ব্যাক্তিগত ভাবে সিদ্ধান্ত দিবেন।


Leonid Brezhnev


Richard Nixon

আর ব্যাক্তিগত ভাবে কিসিঞ্জারের ধারণা ছিল ১৯ হতে ২০শে অক্টোবর এই ২৪ ঘন্টায় ইসরাইল অনেক এগিয়ে যাবে। সেই সাথে কিসিঞ্জার মস্কোতে গিয়েও সোভিয়েতদেরকে ঘুড়াবেন যাতে সমাধানটা দেড়ী হয়। এখানে কিসিঞ্জার চেয়েছিলেন ইসরাইল যেন বাড়তি সুবিধা পায়। সোভিয়েতরা বলে যে এই যুদ্ধ বন্ধ করে ইসরাইল যদি ১৯৬৭র পূর্বে ফিরে যায় তাইলে আরব রাষ্ট্রগুলি ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিবে। তখন নিক্সনের বার্তা কিসিঞ্জারের হাতে তুলে দিলে কিসিঞ্জার বুঝতে পারেন যে তার পক্ষে আর এই কুটনীতিক আলোচনা দেড়ী করানো সম্ভব নয়। এভাবেই ২২শে অক্টোবর সোভিয়েত ও মার্কিনিরা মিশর-সিরিয়া এবং ইসরাইলীদের মধ্যে প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। ইসরাইল সরকারী ভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও জয়নবাদীরা প্রকৃতপক্ষে তা ময়দানে লঙ্ঘন করতে থাকে। এরপর ২৪শে অক্টোবর আমেরিকা চাপ দিলেও ইসরাইল এবারও সেটা উপেক্ষা করে মিশরের সুয়েজ শহড় দখলের জন্য মরিয়া হয়। তারা মিশরের আরো পূর্ব-দক্ষিণে অগ্রসর হতে থাকে। কিন্তু মিশরের সেনা ও স্থানীয় প্রশিক্ষিত জনগণ সুয়েজ শহড়ে সজাগ থাকে। উভয়ে মিলে ইসরাইলী সেনাদের ট্যাঙ্ক, আর্মড ভেহিকেল সহ আগ্রাসী সেনাদেরকে গেরিলা কায়দায় হামলা করে আক্রমণ ঠেকিয়ে দেয়। ঠিক অনেকটাই আজকে ২০২৩এ হামাস ও কাসাম-ব্রিগেড ইসরাইলী সেনাকে গাজায় মার দিচ্ছে। ইসরাইলী আগ্রাসী বাহিনীও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে সুয়েজ শহড় হতে লেজ গুটিয়ে ভাগে। পরবর্তীতে ২৮শে অক্টোবর ১৯৭৩এ মিশরের জেনারেল ঘানি গামাসি এবং ইসরাইলের জেনারেল Aharon Yariv দুইজন সাক্ষাত করেন। তারা আলোচনা করে কিভাবে নিজেদের বাহিনীকে বেশ কিছু অবস্থান হতে সরিয়ে নিয়ে পূর্ণ যুদ্ধ বিরতিতে যেতে পারে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। বস্তুত ২৮শে অক্টোবরই যুদ্ধবিরতি সঠিক ভাবে কার্যকর হয়। এটাতে সুবিধা হয় যে মিশরের অবরুদ্ধ তৃতীয় ডিভিশনের সেনাদের অংশ রিসাপ্লাই পায়।

এই অক্টোবর ১৯৭৩র যুদ্ধে হেনরী কিসিঞ্জার ইসরাইলকে সুয়েজ খালের পশ্চিম পাড় হতেতো প্রত্যাহার করানই এবং সুয়েজ খালের পূর্ব পাড়েও মিশরের জন্য সেই ৮ মাইল জায়গা হতেও ইসরাইল ছাড়তে বলেন। বস্তুত কিসিঞ্জারের এই মধ্যস্থতায় মিশরের সাদাত মার্কিন কুটনীতিক চ্যানেলে ইসরাইলের সাথে স্বীকৃতির বিনিময়ে সিনাই ফিরে পাওয়ার পথ সুগম হয়। কিন্তু সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হাফেজ আল-আসাদ ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিতে রাজী হন নাই। এই মিশরের অক্টোবর ১৯৭৩ সাফল্যে সাদাত চালকের আসনে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৭ সালে সাদাত ইসরাইলে ঐতিহাসিক সফরে যান। সেখানে গিয়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী Menachem Beginর সাথে সাক্ষাত করে কুটনীতিক মধ্যস্থতা করেন। এরই ফলশ্রুতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের উদ্যোগে সাদাত ও বেগিন মিশর এবং ইসরাইলের পক্ষে ১৯৭৮ সালে হোয়াইট হাউজে ঐতিহাসিক Camp David 1978 চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এতে মিশর ইসরাইলকে ১৯৬৭র পূর্বের সীমানায় স্বীকৃতি দেয় এবং ইসরাইলও সিনাইকে মিশরের অংশ হিসেবে মেনে নেয়। তবে ইসরাইল অনেক ইহুদী বসতি স্থাপন করে সিনাইয়ের বিভিন্ন অংশে। এগুলো সব সরিয়ে ১৯৮২তে ইসরাইল মিশরকে তার সিনাই সম্পূর্ণ রুপে ফিরত দেয়।

র্দূভাগ্যক্রমে কিছু মিশরীয় উগ্র গ্রুপ সাদাতের প্রতি ক্ষুদ্ধ ছিল ইসরাইলের সাথে এই ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির জন্য। তারাই ১৯৮২র ৬ই অক্টোবরেই সাদাতকে হত্যা করে। খুবই দুঃখজনক ছিল এই ঘটনাটা মিশর এবং অন্যান্য আরব রাষ্ট্রগুলির জন্য। বিশেষ করে মিশর প্রায় ৪০ বছরের জন্য স্বৈরশাসক হুসনী মোবারকের অধীনে চলে যায়।

তবে বলতেই হয় ১৯৭৩র যুদ্ধবিরতির পর হেনরী কিসিঞ্জার তার পক্ষে হতে সাদাতকে দেওয়া ১৯৭২র কথা রাখছেন। প্রকৃতপক্ষে মিশর এবং সিরিয়া উভয়েই ইসরাইলে হামলা না করলে কিসিঞ্জারের পক্ষে এই ভূমিকা নেওয়া সম্ভব হইতো না। আর এটাও সত্য জয়নবাদী ইসরাইলী নীতি নির্ধারকরা চাপ বা যুদ্ধ ছাড়া আন্তর্জাতিক আইন-কানুনের পরোয়া করে না। ১৯৭৮এ লেবাননে ইসরাইল হামলা করে দক্ষিণ লেবাননের শিবা খামার এলাকা দখল করে নেয়। এরপর ১৯৮২তেও ইসরাইল লেবাননের বিরুদ্ধে বড়সর যুদ্ধ করে বৈরুত পর্যন্ত পৌছে অর্ধেক লেবানন কব্জা করে। পরে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বেশীর ভাগ এলাকা ছাড়লেও শিবা খামারের আরো উত্তরের কয়েক কিমি তথা দক্ষিণ লেবাননের বেশ এলাকা ২০০০ সাল পর্যন্ত দখল করে রাখে। কিন্তু ইরানপন্থী হিজবুল্লাহ প্রতিরোধী গ্রুপের জন্য ইসরাইল ২০০০ সালে বাধ্য হয়ে সেই কথিত বাফার জোন হতে সেনা প্রত্যাহার করে। যদিও শিবা খামার এখনও ইসরাইল অবৈধ ভাবে দখল রেখেছে।

পরিশেষ বলতে হয় বেশ কিছু বিষয়ে হেনরী কিসিঞ্জারের আদর্শের সাথে অমিল থাকলেও তিনি একজন জিনিয়াস রাজনীতিবিদ এবং কুটনীতিবিদ ছিলেন। যেমন ১৯৭১র বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং ১৯৭৩এ চিলিতে আলেয়ান্দ্রকে ক্যু করে সরিয়ে দেওয়া কিসিঞ্জারের কালো অধ্যায় তেমনি ১৯৭৩এ মিশর-সিরিয়ার সাথে ইসরাইল যুদ্ধও তার কুটনীতিক সাফল্য। প্রকৃতপক্ষে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদই তাদের পলিসিতে যেভাবেই সাজায় সেভাবেই কিসিঞ্জারকে চলতে হইছে সেটা বাংলাদেশই হৌক আর চিলিই হৌক। পক্ষান্তরে ১৯৫৬ সালে বৃটিশ, ফরাসী এবং ইসরাইলের সম্মিলিত ভাবে মিশরের বিরুদ্ধে সুয়েজ খালের পরিচালনা নিয়ে যে যুদ্ধ হয় তাতে আমেরিকা কায়রোর পক্ষ নেয়। যেকোন কারণেই হৌক আমেরিকা চায় নাই ইউরোপ বিশেষ করে বৃটেন তার উপনিবেশিক আমলের মত মিশরের সুয়েজকে নিয়ন্ত্রণে রাখুক। সেই সাথে ২০১৩ সালে ইউম কিপ্পূর যুদ্ধের ৪০ বছর পর ইসরাইলের বিভিন্ন উদ্ধত্য আগ্রাসী জবাবে কিসিঞ্জার বলেন "ইসরাইল তোমাকে জানাতে চাই ১৯৭৩এ এই আমেরিকাই তোমাকে রক্ষা করে";

Kissinger Wants Israel to Know: The U.S. Saved You During the 1973 War

https://www.haaretz.com/us-news/2013-11-02/ty-article/.premium/kissinger-u-s-saved-israel-in-1973/0000017f-f70f-d044-adff-f7ff9d280000

এই কথা তিনি এর জন্য বলেছিলেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও অন্যান্য ইসরাইলী নীতি নির্ধারক সহ বিভিন্ন এলিটরা আমেরিকাকে তুচ্ছ জ্ঞান করত। যেন আমেরিকাকে ছাড়াও তারা বহাল তবিয়তে চলতে পারবে। কিসিঞ্জার নিজেও একজন ইহুদী হওয়া সত্ত্বেও জয়নবাদী ইহুদী নেতাদের উগ্র আচরণে বিক্ষুদ্ধ ছিলেন। কারণ জয়নবাদী নেতাদের অনেকেই অকৃতজ্ঞ!

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৩

বিজন রয় বলেছেন: ওয়েলকামব্যাক।
প্রায় এক বছরের বেশি সময় পরে পোস্ট দিলেন।

আশাকরি নিয়মিত পাওয়া যাবে।
অনেক অনেক শুভকামনা।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৫২

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলেছেন: এই একটা পোষ্ট লিখতেই তিনদিন লাগছে। চেষ্টা করবো!
ধন্যবাদ!

২| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১৩

শাহ আজিজ বলেছেন: ধন্যবাদ , অনেক কিছুই জানা গেল ।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৫২

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলেছেন: ধন্যবাদ!

৩| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: অনেক তথ্য সমৃদ্ধ পোষ্ট।
আন্তর্জাতিক বিষয়ে আমার জ্ঞান শূণ্যের কোঠায়। আমি আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে লিখতে পারি না। দুঃখ লাগে।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৫৩

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলেছেন: ধন্যবাদ!

৪| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৫৩

প্রামানিক বলেছেন: অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা হলো,যুদ্ধ সম্পর্কে কিছু কিছু জানলেও এতো বিষদ জানা ছিল না।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৫৩

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলেছেন: ধন্যবাদ!

৫| ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৪২

কামাল১৮ বলেছেন: প্রতিটা যুদ্ধের পেছনেই গল্প থাকে।কিছু জানা যায় কিছু কখনই জানা যায় না।আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের পিছনেও অনেক গল্প আছে।আমরা তার কতোটুকু জানি।

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:০৩

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলেছেন: একদম সত্য কথা! যেমন ১৯৬৪ সালে আমেরিকা মিথ্যা আক্রমণের অজুহাতে উত্তর ভিয়েতনামে সামরিক আগ্রাসন চালিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সুচনা করে। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বেইন্স জনসন(শয়তান) পেন্টাগণকে দিয়ে বিকৃত রিপোর্ট সাজায় যে ভিয়েতনামের Gulf of Tonkinএ নাকি উ: ভিয়েতনামের কমিউনিষ্টরা মার্কিন নৌবাহিনীর ডেষ্ট্রয়ার USS Maddoxএ হামলা করে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। বরং ১৯৫৫ সালে বিভক্ত ভিয়েতনামে আমেরিকা কোনদিনও উত্তর ভিয়েতনামের সুমুদ্র সীমানাকে তোয়াক্কা করত না। উ: ভিয়েতনামের পেট্রল বোট গুলি সতর্ক করে গুলি ও গোলা খোলা সুমুদ্রে ছুড়ত। আর USS Maddoxকে কোন হিটই করে নাই কমিউনিষ্টরা। আমেরিকানদেরকে বোকা বানাইছিল লিন্ডন ঠিক যেমন বুশ জুনিয়র ২০০৩এ মিথ্যা অজুহাতে ইরাকে আগ্রাসন চালায়। ধন্যবাদ!

এটা দেখতে পারেন;
When presidents lie to make a war
view this link

৬| ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৪৯

বাংলাদেশ জিন্দাবাদ বলেছেন: :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.