নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুঁজিনি কখনো আকাশের মানে...

আফসানা যাহিন চৌধুরী

আমার পথচলা আমার পথে

আফসানা যাহিন চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরা নই বাঁধা নই দাসের রাজার ত্রাসের দাসত্বে

২০ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৩৪

যখন কোন জনপদে অপরাধের মাত্রা সব ধরণের সীমা অতিক্রম করে ফ্যালে, তখন RAB ধর্মী সশস্ত্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের “ক্রসফয়ার” নীতি বড় স্বস্তিদায়ক মনে হয় । জনপদে কৃতজ্ঞতা জাগে ঐ ধর্মের প্রতিষ্ঠানটির প্রতি ।
এই ইদানিংকালে শিশুশ্রমিক নির্যাতন ও হত্যার যতগুলো নিদর্শন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছে, তার জবাবে ক্রসফায়ারের মত নির্মমতা ছাড়া আর কোন কার্যকরী পন্থা আদৌ মাথায় আসেনা যেটা দ্বারা এধরণের অপরাধের মাত্রা কমতে পারে । ক্রসফায়ার নামক হিংস্র মৃত্যুর ভয়ে হলেও মানুষ ঐসব অপরাধ হতে বিরত থাকবে । মাথায় ভয় কাজ করলে ভবিষ্যতে অন্য কেউ এ ধরণের অপরাধ করবার সাহস পাবেনা ।
কিন্তু এই ক্রসফায়ার নীতিতে অভ্যস্ত হয়ে গ্যালে এরপরে সকলে সব সমস্যার সমাধান ক্রসফায়ারেই খুঁজবে । আর তাই যদি ঘটে যায় সামাজিক মনস্তত্ত্বে, তাহলে রাষ্ট্রকাঠামো, সমাজকাঠামো এমনকি সমাজের মানুষগুলোর মানসিক কাঠামো সবই সম্পূর্ণ বিগড়ে যাবে ! তখন আর সংবিধান, পেনাল কোড, আইন, আদালত, পুলিশ, মানুষ, আমি ,তুমি, প্রতিবাদ, মতামত, কিচ্ছু থাকবেনা । সবাই সব কিছুতে মৃত্যু খুঁজবে, বীভৎসতা দেখতে চাইবে, না পেলে নিজেরাই বানিয়ে নেবে বীভৎসতা - ঠিক এখন যেমন বানাচ্ছে..........! আর রাজা তখন ঈশ্বর হবেন- যার ইচ্ছাই প্রজার নিয়তি এবং “যাও” বললেই ফায়ার হয়ে যায়...!

তাই, যত সরল ভাবে বিষয়টা আমরা নিচ্ছি, (আমরা মানে বিচার না পেয়ে পেয়ে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়ারা ) বিষয়টা তা না । এই যে, মানুষের মনে “এ কাজটা করলে তো আমার খবর আছে!” এই ভয় ঢুকানোর কাজটা- এটা কি আসলেই র‌্যাবের মত কোন গোষ্ঠীর করার কথা, নাকি কাজটা দেশের আদালতের??? আর ভয় ঢুকিয়ে একটা গোটা সোসাইটিতে মানুষকে বেশীক্ষণ নিয়ন্ত্রণ করা কি যায়? আদৌ যদি কোন বোধ তৈরী না হয়??? আমরা মঙ্গলদিবস বা রজনীতে মানুষের শুভবোধের প্রার্থনা করি, আরে যেখানে বোধই নাই, তার আবার শুভ অশুভ হবে কি করে...! সেই নূন্যতম বোধটুকু তৈরী করতে পারে সমাজে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার - যে বিচার মানুষের পক্ষে কথা বলে, আর্তনাদের পক্ষে রায় দেয় ; টাকা বা ক্ষমতার পক্ষে নয়!


আইনের শাসন যখন ন্যায় বা নায্য হয়, তখন আপনাতেই ঐ জনপদে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জাগে, আস্থা তৈরী হয় । এবং সেখান থেকেই সূত্রপাত হয় বোধ সৃষ্টির । মানুষের ভেতর ন্যায়-অন্যায় বা নিদেনপক্ষে উচিত-অনুচিতের ন্যূনতম বোধও যদি তৈরী হয়, তাহলে অপরাধের এই অকল্পনীয় মাত্রা আপনাতেই থেমে যাবে । আর অস্ত্রের শাসন লাগবে না ! সেই বোধ যখন শুশ্রুষা পাবে, তখন তা শুভ হয়ে উঠবে, সৃষ্টি হবে শুভবোধ!
অস্ত্রের শাসন আর যাই হোক অপরাধের এই পর্যায়ের মাত্রা থামাতে পারবেনা, সাময়িকভাবে একটা স্থবিরতা আনতে পারবে হয়ত ।


হয়ত আমার এত সুকোমল কথা ভালো লাগার সময় নয় এটা ।
বিচারহীনতাই যখন প্রত্যাশিত ও স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে যায়, আইন মানেই যখন দীর্ঘসূত্রীতা আদালত মানেই যখন ক্ষমতাবানদের মিলিওনিয়ারস ক্লাব (!) তখন এরকম বানের পানির মত বাড়তে থাকা অতিমানবিক অপরাধগুলো কমাবার আর কোন রাস্তা নাই ক্রসফায়ার ছাড়া ! আসলেই নাই !
তারপরও প্রশ্ন তৈরী হয় প্রতিদিন - ঐ দুই লীগমার্কা সন্ত্রাসীর ক্রসফায়ারের ঘটনা চাউর হবার পর এর মধ্যে ওরকম বীভৎসতা কি আর দেখা যায়নি (যেটা মিডিয়া কাভারেজ পেয়েছে) ! কিন্তু অথর্ব মিডিয়ার বাইরেও খবর থাকে, ছবি থাকে ! সেখানেও প্রতিদিন আশ্চর্য নির্লিপ্ততায় ঘটে শিশু নির্যাতন-> বিশেষত শিশুশ্রমিক!
তারপরও প্রশ্ন থাকে, কমেছে কি ধর্ষণের মাত্রা??? কমেছে কি দিনেদুপুরে বা রাতদুপুরে জবাই হবার উৎসব??? যারা এসব সন্ত্রাস করছে, তারাও মানবিক জীবন একইভাবে কলুষীত করছে, অসহায়, অসুস্থ করে রাখছে আমাদের ! দিন, তাদেরও ক্রসফায়ারে দিন!!!
আর এই যে আমি অস্ত্রের কাছে নতি স্বীকার করে নিলাম, তার জন্য দায়ী ব্যার্থ বিচারিক প্রতিষ্ঠানগুলো । আর দায়ী সরকার । সর্বাগ্রে দায়ী ! তবে আমার কিংবা আমাদেরও কিছু দায় থেকে যায়- সেই দায় মাথায় নিয়ে লিমনের সামনে থেকে মুখ লুকিয়ে চলে আসতে হয়...!
যে আদালত পারতো লিমনের জন্যে সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে, সেই আদালতের ব্যার্থতার জবাব দিলো ঐ RAB ই! কি আচানক দুনিয়া......!

রক্তকরবীতেও ত্রাসের রাজার বিরুদ্ধে সবাই বিদ্রোহ করেছে । সবরকম অধিকার, সুযোগ নিশ্হ্নি করার পরপরই মানুষ উঠে দাঁড়িয়েছে, উদ্ধত দাম্ভিক রাজপুরুষকে টেনে মানুষের কাতারে নামিয়ে এনে যক্ষপুরী মুক্ত করেছে । এ পোড়ার যক্ষদেশে এখনও কারো খবরই হয়নি যে, তারা কোন খনির অতলে পড়ে আছে..! বাইরে বিশাল মুক্ত পৃথিবী.................দুর ছাই!!!

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:২১

আহমেদ জী এস বলেছেন: আফসানা যাহিন চৌধুরী ,


সুন্দর লিখেছেন । কাটাছেঁড়াও করেছেন প্রতিটি বক্তব্যের ।

লিখেছেন - আইনের শাসন যখন ন্যায় বা নায্য হয়, তখন আপনাতেই ঐ জনপদে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জাগে, আস্থা তৈরী হয়
আপনার লেখা দিয়েই উত্তর দেই - "বিচারহীনতাই যখন প্রত্যাশিত ও স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে যায়, আইন মানেই যখন দীর্ঘসূত্রীতা আদালত মানেই যখন ক্ষমতাবানদের মিলিওনিয়ারস ক্লাব (!) তখন এরকম বানের পানির মত বাড়তে থাকা অতিমানবিক অপরাধগুলো কমাবার আর কোন রাস্তা নাই ক্রসফায়ার ছাড়া ! আসলেই নাই ! "

মানুষের ভেতর ন্যায়-অন্যায় বা নিদেনপক্ষে উচিত-অনুচিতের ন্যূনতম বোধও যদি তৈরী হয়, তাহলে অপরাধের এই অকল্পনীয় মাত্রা আপনাতেই থেমে যাবে । তৈরী হবে কবে ? কারা করবেন ? সমাজ না ব্যক্তি ?
সবটাই তো রসাতলে । সমাজ - ব্যক্তি - রাষ্ট্র সবাই । টেনে তুলবেন কাকে এবং কি করে ?
রক্তকরবীর সে যুগ নেই । উও চ্যলা গ্যায়া বহোৎ দুর সে দুর ....
যে যুগ পড়ে গেছে তাতে সাহারা মরুভূমির রূক্ষতা আর মরীচিকাই সার । সেখানে ফসল ফলেনা ,রোদে ঝলসানো মৃত পশুর কঙ্কাল পেড়ে থাকে শুধু ।

ধুর ছাই......... !!!!!!!!!!!!!

২০ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:০০

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: তৈরী হবার উপায় ঐ যে বললাম, ঐটাই। আইনের শাসন যদি আসলেই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, আমরা যদি প্রতিটি অপরাধের নিয়মতান্ত্রিক নায্য বিচার পেতাম, তাহলে মানুষের ভেত অটোমেটিক্যালি উচিত-অনুচিত বোধ তৈরী হবে- যেটা অস্ত্রের শাসন দ্বারা হওয়া সম্ভব নয়। আমাদের মনে এটা নিশ্চিত ভাবে গেঁথে আছে যে, অপরাধ করলে পার পাওয়া খুবই সোজা! আর টাকা বা ক্ষমতা থাকলে তো নাকে সরিষার তেল দিয়েও ঘুমানো যায়!
অস্ত্রের শাসন আজকে একটু ভড়কে দিয়েছে, তারপর কিছুদিন বাদে আবার একই অপরাধ নতুন কোন কায়দায় ঘটবে!

২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: আফসানা যাহিন চৌধুরী ,



আপনার সব কথাই তো মেনে নিলুম আগের মন্তব্যে।
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হলে তো ল্যাঠাই চুকে যেত ।
কিন্তু এটা প্রতিষ্ঠা করবে কে ? আমার প্রশ্ন ছিলো তাই । আপনি নিজেও তো বলেছেন - আদালত মানেই যখন ক্ষমতাবানদের মিলিওনিয়ারস ক্লাব ....

২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৩২

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: একটি দীর্ঘশ্বাসের ইমো.........

৩| ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৩৭

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: এই ক্রসফায়ারের অনেক অপব্যবহারেরও উদাহরণ আছে, তাই এটা কোন মতেই কোন সমাধান নয়। একমাত্র সমাধান হল আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে, প্রতিটি নাগরিককে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। এটা ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই।

লেখা ভাল হয়েছে ++++

ভাল থাকুন সবসময়, শুভকামনা রইল।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৩২

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ বোকা মানুষ :)

৪| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৩

আহসানের ব্লগ বলেছেন: বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: এই ক্রসফায়ারের অনেক অপব্যবহারেরও উদাহরণ আছে, তাই এটা কোন মতেই কোন সমাধান নয়। একমাত্র সমাধান হল আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে, প্রতিটি নাগরিককে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া। এটা ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই।

লেখা ভাল হয়েছে ++++

ভাল থাকুন সবসময়, শুভকামনা রইল।
একমত বোকা ভাইয়া ।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:৩৩

আফসানা যাহিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আহসান।

৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১২

জেনারেশন সুপারস্টার বলেছেন: জ্বি

৬| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১০:৫২

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আইন মানেই যখন দীর্ঘসূত্রীতা আদালত মানেই যখন ক্ষমতাবানদের মিলিওনিয়ারস ক্লাব (!)

নির্মম সত্য । লাইক নাম্বার থ্রি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.