নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভুলে যাও বিশ্বের সব জাতি, ধর্ম, বর্ণের সকল ভেদা ভেদ! কেবল নিজের লক্ষ্য ও গন্তব্য ঠিক করে নাও!

দুঃখী জাহিদ

কবি এবং কবিতার জন্য মগ্ন এ মন।

দুঃখী জাহিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মন্দিরা

২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৪৪



আমরা ছিলাম ঝিঁঝিঁ পোকার মত ,সারারাত জেগে কার গাছে কয়টা ডাব ,কোন পেঁপেঁটা আজকেই খাওয়া যাবে ,পেয়ারা গুলো কেমন হয়েছে সব হিসেব নিকেশ মন্দিরায় বসে করতাম। প্রিতদাসের বাড়ির পিছনটায় একটা জঙ্গলের মত ছিল ,দিন কি রাতে কেউ ওখানে যেত না ,আমরা ওখানটা পরিস্কার করে নাম দিয়েছিলাম মন্দিরা। প্রিতো ছিল আমাদের সবচেয়ে জুনিয়র তাই সবসময় একটু ভয় পেত আর সারাদিন মন্দিরায় বসে মা কালি আর জমদূতের নাম নিয়ে কি যে বকবক করতো। আমি আর নিখিল ছিলাম শয়তানের উস্তাদ!

একদিন কালি মন্দিরের পাশ দিয়ে সবাই যাচ্ছি ,হঠাৎ নিখিল মন্দিরে ডুকে এক রমরমা কান্ড ঘটিয়ে দিল। সবাই হাসতে হাসতে মরমরা অবস্থা ,সেকি কি কান্ড বাবা ,মন্দিরের ভিতর যে সব মূর্তি ছিল সব গুলার মাথায় ,গালে এমন জোড়ে জোড়ে থাপড়াচ্ছে আর বলছে এবার কালি দেখি আমায় কি করতে পারিস । প্রিতো তখন খাঁ করে তাকিয়ে আছে ,হঠাৎ চিৎকার করে বলে উঠল নিখিল তুই রক্ত বমি করে মরবি!

নিখিল পাগলামী থামিয়ে চলে আসল। আমরা এমনি খ্যাপাটে পাগলা ছিলাম, ধর্ম কর্ম আমাদের দ্বারা তেমন একটা হয়নি। একদম বাঁধন ছাড়া পাখির মত যেখানে খুশি সেখানেই চলে যেতাম। মা বাবা কারো বাঁধাই মানতাম না, আমরা আমাদের মতই ছিলাম।

ইচ্ছে হলে তপ্ত রোদে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে থাকতাম
আবার ইচ্ছে হলে বৃষ্টির পানিতে ভিজে ডুবুরি খেলতাম ।


আমাদের ভিতরে ভয়ের অবকাশ ছিল না, রাত কি দিন আমরা মন্দিরায় বসে থাকতাম। বিভিন্ন গাছের ফল এখানেই জমা রাখতাম ,অবসর সময়ে সবাই মিলে খেতাম। এই হাসি খুশির জীবনটা এমন করে স্তব্দ হয়ে যাবে, কোন কালে ভাবনাই ছিল না।

দিন কয়েক মন্দিরায় যাওয়া হয়নি আর প্রিতোর সাথেও দেখা হয়নি। হঠাৎ একদিন প্রিতোকে পাওয়া যাচ্ছে না এমন সংবাদ এলো ,আমরা খুঁজতে বের হলাম। এমন কোন জায়গা ছিল না তাঁকে খুঁজার বাকী ছিল কেবল মন্দিরাটাই বাকী ছিল। আমি আর নিখিল দুজন একদূরে মন্দিরায় গেলাম, গিয়ে যা দেখলাম তা হয়তো সোজা কথায় লিখে দিতে পারি কিন্তু বুকের ব্যথাটা কেমন করে বুঝাবো।

সময় ঠিক করে বলা যাচ্ছে না তবে মনে আছে ঘোর কালো অন্ধকারে হালকা তাঁরার আলো ছিল। কি বিষাদে কোন আঘাতে গলায় দরি দিয়েছিল কে জানে তবে মানুষটা সহজ সরল ছিল। এইটুকুনই বলতে পারি। এখন আর মন্দিরায় যাওয়া হয় না, এখন আর সবুজের বুকে মাথা রাখা হয় না। এখন সকাল হলে কোলাহলের জীবন। এভাবেই মন খারাপের দিনগুলি নিষ্ঠুর ভাবে চলে যাচ্ছে ................

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৪০

ফয়েজ উল্লাহ রবি (পারিজাত) বলেছেন: এর জীবন নামই জীবন

"এখন আর সবুজের বুকে মাথা রাখা হয় না। এখন সকাল হলে কোলাহলের জীবন। এভাবেই মন খারাপের দিনগুলি নিষ্ঠুর ভাবে চলে যাচ্ছে ................ "

এই ভাবেই বেঁচে থাকার লড়াই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.