নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাকসুদ আলম মিলন

মাকসুদ আলম মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাজেট কতটা বাস্তবিক!

০৩ রা জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৪




কয়েকদিনের পত্রিকা ঘাটাঘাটি করে যা বুঝলাম,প্রতিবছর যতটা বাজেট ঘোষণা করা হয়,বাস্তবায়নের দিকটা ততটা নাজুক।একরকম আশানুরূপ বাণীর মতো,স্বপ্নের পসরা সাজানোর মতো ।বাজেটের মাধ্যমে দেশের অর্থবছর কোনদিকে মোড় নিবে সেটার নমুনা উন্মোচন করা হয়।একটি নির্দিষ্ট অর্থবছরে কোথায় কত ব্যয় হবে সেই অনুযায়ী প্রত্যেক বছরের মাঝামাঝিতে (জুন মাস) বাজেট ঘোষণা করা হয়।রাষ্ট্র আগে ব্যয়ের খাতগুলো নির্ধারণ করে এরপর ঠিক করে কোথা থেকে অর্থ আসবে।অর্থাৎ খরচ বুঝে আয় করা।আয়ের সাথে ব্যয়ের সামজ্ঞস্য না হলে রাষ্ট্র দেশ বিদেশ থেকে অর্থ ধার করে।আয়ের উৎসগুলো যদি দেখি...

১।প্রত্যক্ষ কর... ব্যক্তি শ্রেণীর আয়কর,ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের আয়ের উপর কর(কর্পোরেট কর), দান কর,উত্তরাধিকার কর,যানবাহন কর,মাদক শুল্ক,ভূমি রাজস্ব ইত্যাদি। ২।পরোক্ষ কর...আমদানি কর,আবগারি শুল্ক,ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর,সম্পূরক শুল্ক ইত্যাদি ।
৩।এছাড়াও সরকারি প্রতিষ্ঠানের লাভ-সুদ,সাধারণ প্রশাসন থেকে আয়,ডাক-তার-টেলিফোন থেকে আয়,পরিবহন আয়,জরিমানা দণ্ড থেকে আয়,ভাড়া-ইজারা-টোল ও লেভি থেকে আয় ইত্যাদি এগুলোকে বলে করবর্হিভূত আয়।

বাজেট দুধরনের, সুষম বাজেট,অসম বাজেট।সুসম বাজেট হচ্ছে মোট আয় এবং মোট ব্যয় সমান।সুষম বাজেট মূলত উন্নত রাষ্ট্রগুলো করে থাকে।তবে প্রতিবছর সুষম বাজেট করা সম্ভব নয় ।উন্নত বা ধনী রাষ্ট্রগুলো বাণিজ্যচক্র মেনে অর্থাৎ অর্থনীতির ওঠানামার সাথে সমন্বয় করে সুষম বাজেট ঘোষণা করে। আইন করেও সুষম বাজেট তৈরি করে অনেক উন্নত রাষ্ট্র।যুক্তরাষ্ট্রের বেশীর ভাগ রাজ্যে এই আইন আছে।সুইজারল্যান্ড,ইতালি,অষ্ট্রিয়াসহ বেশ কিছু উন্নত দেশে সুষম বাজেট প্রণয়নের আইন আছে।
অসম বাজেট হচ্ছে আয় এবং ব্যয় অসমান ।অসম বাজেট দু ধরনের হয় উদ্বৃত্ত বাজেট ও ঘাটতি বাজেট।ব্যয়ের তুলনায় আয় বেশী হল উদ্বৃত্ত বাজেট।এর উল্টোটাই হচ্ছে ঘাটতি বাজেট।ব্যয় বেশী,আয় কম।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন নিয়মিতভাবে সুষম বাজেট তৈরি করলে সুদের হার কমায়,সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বাড়ায় বটে কিন্তু দেশের অর্থনীতি মন্থর গতিতে,দীর্ঘমেয়াদে অগ্রসর হবে।আমাদের মতো দরিদ্র,উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে অসম বাজেটে থাকা ভালো।এতে অর্থনীতিতে উদ্দীপনা বাড়ে,অব্যবহৃত সম্পদের ব্যবহার বাড়ে,ঘাটতি পূরণের চাপ থাকে।

কথা হচ্ছে আমাদের দেশে প্রতিবছর অসম বাজেট ঘোষণা করা হয়।অসম বাজেটে ঘাটতি পূরণের চাপ থাকে মানলাম কিন্তু চাপ সামলানোর প্রেক্ষাপট কি আদতে তৈরি হচ্ছে।বছরের পর বছর বেকারত্বের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত,নতুন মূল্য সংযোজন কর আইন প্রণয়ন করেছেন তা কতটা ফলপ্রস্রু হচ্ছে? আমাদের দৈনন্দিন চাহিদার উপর উপচেপড়া চাপ কি দেয়া হচ্ছে না?অব্যবহৃত সম্পদের ব্যবহার বাড়ে অসম বাজেটে কিন্তু আমরা যা ব্যবহার করছি তা কি স্বয়ং সম্পূর্ণভাবে করতে পারছি?আমাদের আয়ের উৎস কি বৃদ্ধি পাচ্ছে? যা আছে সেগুলোরই তো সদ্ব্যবহার করতে পারছি না।সরকারি ভাবে ক্ষেত্র তৈরি এবং ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছি কই?

শিক্ষার কি মূল্যায়ন হচ্ছে? মেধানুযায়ী কি চাকরি হচ্ছে ? চাকরির প্রেক্ষাপট অত্যন্ত নাজুক,ভয়াবহ।মেধা খাটানোর সুযোগ হচ্ছে না।ইঞ্জিনিয়ার পড়ে দেশে থাকা হচ্ছে না, পরিমিত সরঞ্জাম,পরিমিত প্রেক্ষাপট,মেধার মূল্যায়ন নাই বিধায়।শিক্ষা ব্যবস্থাপনার ভয়াবহ চিত্র বাড়ছে দিনকে দিন।এরকম বাজেট "গাছে কাঁঠাল,গোঁফে তেল দেয়া" মতই নয়কি?

সরকারের আগে দৃষ্টিকোণ দেয়া উচিত আয়ের উৎস বাড়ানো ।অযথা ভ্যাট,শুল্ক বাড়িয়ে সাধারণ জনগণের হয়রানি!এটাকে একধরনের শোষণও বলা চলে । শতকরা ১৫ ভাগ ভ্যাট চাপিয়ে দিয়ে মানসিক চাপ বাড়ানো হচ্ছে ।এতে করে হিতে বিপরীতও হতে পারে,চুরি,ছিনতাই,ডাকাতি বাড়তে পারে। আয়ের জন্য অনেকে উন্মুখ হয়ে থাকে কিন্তু সুযোগ পাচ্ছে না,প্রেক্ষাপট পাচ্ছে না,ক্ষেত্র-বিশেষের বড্ড অভাব।আগে দৃষ্টিপাত দেয়া উচিত আয়ের উৎস কিভাবে বাড়ানো সম্ভব? ক্ষেত্র কিভাবে তৈরি করা যায়?
অর্থনীতিবিদদের কথিত সূত্র অনুযায়ী চললে,আমাদের দেশের অর্থনীতি চলমান,উন্নয়নশীল না হয়ে মুখ থুবরে পরে শিথিল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। দেখতে উচিত বাস্তবিক দিক,আমাদের প্রেক্ষাপট,বাস্তবায়ন যোগ্য কি না।আমাদের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী,আমাদের বার্ষিক বাজেট করা শ্রেয় বলে মনে করি ।

তথ্যসূত্র প্রথম আলো

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৫২

চাঁদগাজী বলেছেন:


সরকারী টাকা খরচ করলে, সাধরণ একটা হিসেব রেখে দিলে চলে; কেহ দিষারোপ করতে পারবে না; কিন্তু সেই টাকা কি নতুন সম্পদ ও সুযোগের সৃস্টি করছে প্রতিটি নাগরিকের জন্য, নাকি সেই টাকা, টাকার পরিমাণে কম সম্পদ ও সুযোগ সৃস্টি করছে?

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ রাত ১:২০

মাকসুদ আলম মিলন বলেছেন: বাজেটে একটা দেশের অর্থনীতির সর্বোপরি আয় ব্যয়ের হিসাব গণণা করা হয়। সেখানে নাগরিকের সুযোগ সৃষ্টি, সুবিধা, নতুন সম্পদের ব্যবহারের সকল কিছুই পর্যবেক্ষণ বিশ্লেষণ করাটা কি বাঞ্চনীয় না.??? যেহেতু নাগরিক (মানুষ) আছে বলেই দেশ বলে গণ্য করা হয়।দেশের আয়টা তো নাগরিক ছাড়া অকল্পনীয়।

২| ০৩ রা জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৭

দ্যা ফয়েজ ভাই বলেছেন: অসম বাজেট করুক যেহেতু আমাদের দেশে সুষম বাজেট করা কষ্টসাধ্য। কিন্তু তবুও একটা লিমিট রাখার দরকার ছিলো।বেশিই অসম হয়ে গেছে হয়ত।

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ রাত ১:৩৪

মাকসুদ আলম মিলন বলেছেন: সিপিডি তো সংবাদ সম্মেলন করে বলছে." ঘাটতি অর্থায়নে প্রাপ্তির যে হিসাব দেয়া হয়েছে তা অঙ্কের হিসাব জানা শিশুও বিশ্বাস করবে না!!!২০১৫-১৬ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৭০ কোটি ডলার বিদেশি সাহায্য এসেছিল, প্রস্তাবিত বাজেটে এক লাফে সেটাকে ৭৬০ কোটি ডলারে উন্নীত করার প্রাক্কলন করা হয়েছে। তাহলে এই প্রাক্কলন কতটা বিশ্বাসযোগ্য?"

৩| ০৩ রা জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৮

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: মাঝ পর্যন্ত পড়ে যথেষ্ট আশাবাদি হয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পড়ে হতাশ হলাম।
সুসম আর অসমে পড়ে না থেকে আমাদের কর্মসংস্থান ও সুসমবন্টন নিয়ে ভাবা উচিৎ।

ভালো লিখেছেন ভাই। খুব সুন্দর করে বুঝিয়েছেন। ভালো লাগলো।
শুভকামনা আপনার জন্য।

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ রাত ১:৪৫

মাকসুদ আলম মিলন বলেছেন: আমাদের প্রেক্ষাপট অনুযায়ী,আমাদের বার্ষিক বাজেট করা শ্রেয় বলে মনে করি । ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

৪| ০৩ রা জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৯

নতুন বলেছেন: সরকারী টাকা লুটপাট হয় বেশি... সরকারী কম`চারীরা কাজ করে কম এবং টাকা মারে বেশি...

নতুবা বাজেটে উন্নয়নের খাতগুলি বাস্তবায়ন হলে সবার ভালোই হোতো।

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ রাত ২:৩৮

মাকসুদ আলম মিলন বলেছেন: উন্নয়নের খাতগুলো গতবছরেও গাথাত পড়ছিল এবারও তার ব্যতিক্রম হবে বৈকি

৫| ০৩ রা জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মানুষকে বোকা বানানোর প্যাঁচ ভালোই দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অপ্রয়োজনীয় পণ্যের লম্বা তালিকা যোগ করে ভ্যাট অব্যাহতির পণ্যসংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে বাহবা কুড়ানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু অব্যাহতির তালিকায় এমন অনেক পণ্যের নাম ঢোকানো হয়েছে যেগুলো এ দেশের অনেক মানুষেরই জীবদ্দশায় একবারও দরকার পড়ে না। ঘোড়া, গাধা, খচ্চর বা ঘোটকের মাংসে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমদানি ও সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে শূকরের মেদবিহীন মাংসে। বাদাম, চিনাবাদামের ক্ষেত্রেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ভ্যাট। দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে এসব পণ্যের প্রয়োজনীয়তা কতটা সে প্রশ্ন এখন প্রায় সবার মুখে মুখে। অন্যদিকে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বসানো সাবান, শ্যাম্পু, শেভিং আইটেম, মশার কয়েল, অ্যারোসলের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্য অব্যাহতির তালিকায় রাখা হয়নি। ফলে সাধারণ মানুষকে ভ্যাট থেকে বাঁচানোর যে চেষ্টার কথা প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, বাস্তবে তাতে শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে।


আক্ষরিক মানুষ মারার বাজেট বোধকরি এমনই!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ রাত ২:৪০

মাকসুদ আলম মিলন বলেছেন: সহমত ।মাছের লেজ দেখিয়ে মাছে মাথা খাওয়ার মতো আরকি!!!

৬| ০৩ রা জুন, ২০১৭ রাত ৮:২১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: বাজেট বাস্তবসম্মত হলেই বা কী, আর না হলেই বা কী? বাজেট নিয়ে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কিছু করার নাই।

০৪ ঠা জুন, ২০১৭ রাত ২:৪৮

মাকসুদ আলম মিলন বলেছেন: দেশটা যখন গণতান্ত্রিক কিছু করার নেই এর মানে বুঝলম না।বাজেট ঘোষণাটা আইন বানিয়ে পকেট মারার সদৃশ।যখন আপনার পর্যাপ্ত উপার্জনে সক্ষম থাকার পরেও সংসারে টানাপোড়ন চলবে তক্ষন বুঝবেন কত ধানে কত চাল!!!নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যে যে হারে ভ্যাট বসানো হয়েছে এই বাজেটে ভ্যাটের চাপে আলুর চপ হতে বেশী সময় লাগবে না...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.