নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অতঃপর একটি কাল্পনিক চরিত্র
সারাদিন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেই আমার দিন কেটে যায়। আমার মত যারা পথশিশু তাদেরও একইভাবে দিন কাটে। আমাদের জন্য কারোর কোন মায়া দয়া নেই। সারাদিন অনেক রকমের মানুষের মুখোমুখি হই আমরা। তবে হ্যা সব মানুষ আবার এক না। কিছু কিছু মানুষ আছে যারা সত্যিই অনেক ভালো। যারা ভাল মানুষ তাদের জন্য অনেক দোয়া করি সব সময় তারা যেন দীর্ঘজীবি হয়।
সাধারণ মানুষ সারাদিন অনেক বাজে খরচ করে কিন্তু পথশিশুদের একটি পয়সা দিতে চায় না। একটি পয়সার জন্য কতই না মিনতি করতে হয় সেটা কেবল পথশিশুরাই জানে। আমাদেরও তো একটু ভালভাবে বাঁচতে ইচ্ছে করে। আমাদেরও তো একবেলা ভাল খাবার খেতে ইচ্ছে করে। তবে আমাদের এই ইচ্ছে গুলো পূর্ণতা পায় না। অপূর্ণই রয়ে যায়। আমাদের দোষ একটাই, আমরা পথশিশু। পথশিশুদের জন্য কার কি আসে যায়। পথশিশুরা না খেয়ে মারা গেলে, শীতবস্ত্রের অভাবে মারা গেলে দেশের টিভি চ্যানেলে নিউজ হয়। বড় বড় পত্রিকায় নিউজ হয় কিন্তু তবুও কিছুতে কিছু হয়না। পথশিশুরা পথশিশুই থেকে যায়। তবে হ্যা কিছু কিছু মানুষ আছে যারা সত্যিই ভাল মনের মানুষ। তাদের অন্তরে মায়া জিনিস টা আছে। তাদের কাছে একটি পয়সা চাইলে তারা ১০ টি পয়সা বের করে দেয়। তেমনি একজন হলেন নাদিম ভাইয়া।
আমাদের রেল লাইনের চালা ঘরের পাশেই নাদিম ভাইয়ার বাসা। সে অসাধারণ একজন মানুষ। নাদিম ভাইয়া প্রতিদিন সকালে আমাদের চা বিস্কুট কিনে দিয়ে অফিসে যায়। আবার অফিস থেকে ফেরার সময় প্রতিদিন আমাদের জন্য কিছু না কিছু নিয়ে আসবেই। মাঝে মাঝে ভাত ও মাংস নিয়ে আসে। নাদিম ভাইয়া ও তার স্ত্রী টিয়া ভাবি আমাদের অনেক ভালবাসে। এত ভালবাসা মা বাবা ছাড়া আর কারো কাছেই পাইনি।
আমরা ৩ জন একত্রে রেল লাইনের পাশে একটি চালা ঘরে থাকি। আমাদের কারোরই মা বাবা ভাই বোন নেই। মা বাবাও আমাদের মতই ফুটপাতের মানুষ ছিল। এক এক করে সবাই মারা যায়। গত বছর অনেক বেশি শীত পরেছিল। তখন শীতের কাপড় ছিল না আমাদের। অনেক জায়গায় শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে কিন্তু আমাদের কেউ শীতবস্ত্র দেয়নি। শীত বস্ত্রের অভাবে মা বাবা কে হারাতে হবে সেটা কখনো কেউ ভাবিনী। যা শীতের কাপড় ছিল তা দিয়ে আমাদের ঢেকে রেখেছিল। নিজেরা ঠান্ডায় অনেক কষ্ট করেছে কিন্তু আমাদের ঠান্ডায় কষ্ট পেতে দেয়নি। কে জানত যে ঠান্ডায় জমে তারা দূর অজানায় হারিয়ে যাবে।
আমরাও অন্যদের মত লেখাপড়া করতে চাই। কিন্তু এই স্বপ্ন পুরণ হবে কিনা সেটা একমাত্র বিধাতাই জানে। তবে হঠাৎই আমাদের জীবন বদলে যাবে সেটা কখনো কল্পনাও করিনি। নাদিম ভাইয়া আমাদের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবার ব্যবস্থা করেছে। স্বপ্ন দেখতাম, ব্যাগ কাঁধে স্কুলে যাব। সেই স্বপ্ন বাস্তব করার সময় এসেছে। নাদিম ভাইয়া মাঝে মাঝেই বলত, তোদের জন্য বড় সারপ্রাইজ আছে। সেই সারপ্রাইজ যে এমনকিছু হবে সেটা কেউ কখনো ভাবিনী। নাদিম ভাইয়া এবার ভালবাসা দিবসে আমাদের মত পথশিশুদের নিয়ে পিকনিকের আয়োজন করেছে। নাদিম ভাইয়া আর টিয়া ভাবি তাদের সব খুশি গুলো পথশিশুদের মাঝে ভাগ করে দিতে চায় তাই এমন আয়োজন করেছে।
আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে নাদিম ভাইয়ার বাসার স্টর রুমে। সেখানে থেকেই পড়াশোনা করতে হবে আমাদের। আমরা সত্যি অনেক অবাক হয়েছি এত বড় সারপ্রাইজ পেয়ে। নাদিম ভাইয়ার মত মানুষ যদি দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকত তাহলে আর কোন পথশিশুকে না খেয়ে দিন কাটাতে হত না। কোন পথশিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হত না। নাদিম ভাইয়ের মত মানুষ ঘরে ঘরে জন্ম নিয়ে দেশকে পথশিশু মুক্ত করুক। বিধাতার কাছে এটাই আমাদের পথশিশুদের চাওয়া।
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:১৯
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: সরকার ও ধনী মানুষ গুলো যদি এগিয়ে আসত; তাহলে হয়তো দেশে কোন পথশিশুই থাকত না।
২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:২২
অপ্সরা বলেছেন: নাদিমভাইয়া ও পথশিশুদের জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা!
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:২৫
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ আপুমনি। পথশিশুদের কথা ভেবে খুব কষ্ট হয় আমার। পথশিশুদের জন্য চোখে প্রায় জল চলে আসে। আমার যদি অনেক টাকা থাকত, তাহলে কোন পথশিশুকে না খেয়ে দিন কাটাতে হত না। আর দশটা শিশুর মতই পথশিশুরা বাঁচতে চায়; কিন্তু তারা পারেনা। সরকার ও ধনী মানুষ গুলো যদি এগিয়ে আসত তাহলে হয়তো দেশে কোন পথশিশুই থাকত না।
৩| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:২৭
অপ্সরা বলেছেন:
হুম
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:৩০
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: হ্যাঁ আপুমনি।
৪| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:২৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
লেখক বলেছেন, " সরকার ও ধনী মানুষ গুলো যদি এগিয়ে আসত; তাহলে হয়তো দেশে কোন পথশিশুই থাকত না। "
ধনী, দরিদ্র কাউকে এগিয়ে আসতে হবে না; এরা বাংলাদেশের নাগরিক; এদের প্রত্যকের জন্য বাজেট করা হয়েছে; ৪০ বিলিয়ন ডলার বার্ষিক বাজেটে এদের নামে ডলার আছে; শেখ হাসিনা বাজেট বুঝতে পারছেন না, উনার দরকার টিউটর।
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:২৯
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: বুঝতে ঠিকই পারছেন; বুঝে না বুঝার ভান করছেন হয়তো। দেশের নাগরিক কে খাওয়ালে তো নিজেদের পকেট ভরবে না।
৫| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ২:১৪
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: একজন নাদিমভাইয়ের কারনেই যদি এমন হয় তবে প্রতিটি নাদিমভাইকেই স্বাগতম।।
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:২৯
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ সকাল ৯:২৬
নীলপরি বলেছেন: বাহ , খুব সুন্দর চিন্তা ।
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:২৯
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:০২
নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: খুব সুন্দর একটা পোষ্ট করেছেন।
"আমাদের রেল লাইনের চালা ঘরের পাশেই নাদিম ভাইয়ার বাসা। সে অসাধারণ একজন মানুষ। নাদিম ভাইয়া প্রতিদিন সকালে আমাদের চা বিস্কুট কিনে দিয়ে অফিসে যায়। আবার অফিস থেকে ফেরার সময় প্রতিদিন আমাদের জন্য কিছু না কিছু নিয়ে আসবেই। মাঝে মাঝে ভাত ও মাংস নিয়ে আসে। নাদিম ভাইয়া ও তার স্ত্রী টিয়া ভাবি আমাদের অনেক ভালবাসে। এত ভালবাসা মা বাবা ছাড়া আর কারো কাছেই পাইনি।" এইটুকুতে এসেই চোখে পানি না গড়ালেও অন্তর আত্মা কেঁদে ফেলেছে। সত্যি পথশিশুদের কথা ভাবলে নিজেকে অপরাধী মনে হয়।
নাদিম ভাইদের আল্লাহ্ দীর্ঘজীবী করুক।
শুভকামনা আপনার জন্য।
১৭ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ২:১৬
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: পথশিশুদের কথা ভাবলে চোখ দিয়ে একাই পানি চলে এসে; কেঁদে ওঠে মন। একা তো আর কিছু করা সম্ভব না, সরকার যদি এদিকে একটু নজর দিত তাহলে কোন পথশিশুকে আর না খেয়ে থাকতে হত না। সকল নাদিম ভাইদের জন্য ভালোবাসা থাকবে চিরকাল।
৮| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: নাদিম ভাইদের মত কিছু লোক সমাজে আছে বলেই মানুষ বলে আমরা গর্ব করতে পারি। আবার কিছু রক্তচোষা নরাধম আছে বলেই আমরা মানুষ হিসেবে আত্মগ্লানিতে ভুগি।
সুন্দর পোস্ট। অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর এবং প্রাণোদ্দীপক একটি তথ্য এখানে তুলে ধরার জন্য।
১৮ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ২:২০
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। নাদিম ভাইদের মত লোকের সংখ্যা বাড়লে দেশ পাল্টে যাবে।
৯| ১৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:১৭
রাসেল ০০৭ বলেছেন: পথশিশুদের হাতে টাকা না দিয়ে তাদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা উচিৎ। কারণ আপনি তাদেরকে হয়তো খাওয়ার জন্য কিছু টাকা দিলেন সে ওই টাকা দিয়ে পলিথিনের নেশা করবে । বেশিরভাগ পথশিশুই এ সমস্যায় আক্রান্ত ।
১৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:২৮
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: আপনার সাথে একমত। ধন্যবাদ।
১০| ২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:২৬
কাল্পনিক কামিনী বলেছেন: অনেক চমৎকার লিখেছেন। পথশিশুদের জন্য সত্যি অন্তর কেঁদে উঠে।
২০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৪৫
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ। কেঁদে ওঠে আমারও কিন্তু কিছু করতে পারছিনা।
১১| ২৫ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১:২৩
মেহেদী হাসান জাহিদঅ বলেছেন: খুব ভালো মানের একটি পোষ্ট। পড়ে ভালো লাগলো।
২৭ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:৩৪
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ।
১২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১২:১৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: অতঃপর হৃদয় ,
ঝড়াপাতাদের নিয়ে একটি স্বপ্নের কথা বলেছেন ।
ঝড়া পাতারা নাদিম নামের সব বৃক্ষের শাখা প্রশাখায় যেন প্রানে ভরপুর, চির সবুজ হয়ে উঠতে পারে ।
০৩ রা এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:০৪
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
১৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১:৩৩
তপোবণ বলেছেন: আহারে! একজন নাদিম ভাই যদি এমন বদলে দিতে পারেন। তাহলে যদি এক'শ নাদিম ভাই থাকতো। ইস কী আমূল বদলে যেত চারিপাশ। দুখের বিষয় হলো আমাদের টাকা হলে আমরা সন্ত্রাসী লালন করি, নিজে সন্ত্রাস হয়ে যাই জবর দখল করি টেন্ডার ছিনিয়ে নেই। হাসিনার লোক হয়ে যাই, হই খালেদার লোক! কিন্তু একজন নাদিম ভাই হতে পারিনা।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ২:০৬
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: সমস্যা ওখানেই। নাদিম সবাই হতে পারেনা। ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ১:১৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
অজানা সেই নাদিমের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা; শেখ হাসিনার দায়িত্ব শেষে নাদিমেরা নিচ্ছে; একদিন শেখ হাসিনা বেকার হয়ে যাবে।