নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমাজ বদলাতে হবে। অনবরত কথা বলা ছাড়া এ বদ্ধ সমাজ বদলাবে না। প্রগতিশীল সকল মানুষ যদি একসাথ কথা বলতো তবে দ্রুতই সমাজ বদলে যেতো। আমি ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে, বর্ণবাদের বিরুদ্ধে, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে অনবরত বলতে চ

মুজিব রহমান

মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনষ্ক মানুষ

মুজিব রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

হারাম যদি হালাল হতো!

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫৭

যদি বৃটিশ আমলে তারা ফতোয়া দিতো, ইংরেজি না-শেখা হারাম! পাকিস্তান আমলে ফতোয়া দিতো মেয়েদের লেখাপড়া না-শেখানো হারাম আর গত শতাব্দির শেষ দিকে ফতোয়া দিতো মেয়েদের স্বাবলম্বী না-হওয়া হারাম! তাহলে আজ মুসলিমরা অনেক এগিয়ে থাকতো৷ অন্য ধর্মের মানুষ, তাদের প্রাতঃস্মরণীয় হিসেবে বরণ করে যারা স্বজাতিকে আলোর পথ দেখিয়েছ৷ বিপরীতে মুসলিমদের মধ্যে যারাই আলোকিত হওয়ার কথা বলেছে তারাই নাস্তিক-মুরতাদ আখ্যা পেয়ে হত্যার শিকার হয়েছে৷ রাজা রামমোহন রায় ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নন্দিত বিপরীতে আহমদ শরীফ ও হুমায়ুন আজাদ নিন্দিত৷
এক সময়ে মাইক বাজানো হারাম ছিল৷ বিয়ে বাড়ির আনন্দের উপলক্ষ্য হতো মাইক বাজানোকে কেন্দ্র করেই৷ আমরা ছোটরা রেকর্ডের উপর নিখুঁতভাবে পিন বসানো ও দম দেয়ার সুযোগ পেলে খুশি হতাম৷ হঠাৎই দেখলাম কনের পিতা মাইক বন্ধ করে নামিয়ে ফেলার নির্দেশ দিলেন৷ দাওয়াতি হুজুর ঘোষণা দিয়েছেন, শয়তানের গলা বন্ধ না করলে বিয়ে বাড়িতে আসবেন না৷ মাইক নামিয়ে ফেরত পাঠানোর পরেই তারা আসলেন৷ আরেকটি ঘটনা মনে পড়ে৷ পাশের উপজেলা থেকে বরযাত্রী এসে দেখলেন কনের বাড়িতে মাইক বাজছে৷ তারা তাৎক্ষণিক বিয়ে ভেঙ্গে দিলেন৷ কিন্তু তারা বউ না নিয়ে যাবেন না৷ তারা আরেক পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করিয়ে নিয়ে গেলেন৷ আর আজ! কথিত শয়তানের গলা ছাড়া আজান দেয়া ও ওয়াজ করা চলে না৷
একবার বিশ্বকাপ চলার সময় ওয়াজ করতে এলেন মাদারীপুরের পীর দেলোয়ার হোসেন আনসারি সাহেব৷ খেলা দেখা বন্ধ৷ ওয়াজ শেষ হলে টিভি ছাড়া হল৷ এর মধ্যেই ছিঃ ছিঃ বলতে বলতে কয়েকজন এসে জানালেন- উঠানে প্রবেশের আগেই হারাম শয়তানের বাক্স-টিভির শব্দ পেয়ে হুজুর খেতে না এসেই মসজিদে চলে গেছেন৷ আমরা টিভি বন্ধ করে পাটি ও বিছানার চাদর দিয়ে ঢাকলাম৷ এর পরেও ওনি আসলেন না৷ পরে খাবার দিয়ে আসতে হল, ওনি মসজিদেই রাত থাকলেন৷ আজ টিভি ও ইউটিউব ছাড়া তাদের ওয়াজ চলেই না৷
আরো কত রকমের হারাম ছিল- মেয়েদের লেখাপড়া হারাম, একা বাইরে যাওয়া হারাম, খেলাধুলা হারাম৷ একবার আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু অসীমের সাথে বাজারের মসজিদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম৷ মুয়াজ্জিন সাহেব ডাক দিয়ে কাছে নিয়ে বললেন, তুই যে একটা মালাউনের সাথে ঘুরিস আখেরাতে কি জবাব দিবি? আমি বললাম, ও খুবই ভাল ছেলে, ভাল ছাত্র৷ ওর চেয়ে ভাল ছেলে এলাকায় কেউ নেই৷ তিনি বললেন, হোক তবুও মালাউনের সাথে চলা হারাম৷ আমি খুবই লজ্জা পেলাম৷ অসীম আমাকে বলল, তুই মন খারাপ করিস না, এসব শুনে আমরা অভ্যস্ত৷ কিছুদিন পরে ইদ একদিন পিছিয়ে গেলে বাজারের হিন্দু দরজি মানত করা টাকা আমার সামনেই মসজিদে দিয়ে আসলো৷ কারো আপত্তি হল না৷
আমাদের এলাকায় মাদক ও জুয়ার কারণে বহু পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল৷ গলাকাটা সুদের ব্যবসা করছে কতজন! হাজারো অনৈসলামিক কাজ দেখছি৷ কেউ কিছু বলে না৷ মাদক জুয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ ও RAB কিছু পদক্ষেপ নেয়৷ সামাজিক প্রতিরোধ নেই৷ কিছু লোক একে ওকে নাস্তিক ঘোষণা দিয়ে কতলের হুমকি দেয় আর ভাস্কর্য বিরোধী মনোভাব তেরিতে কথা বলে৷ আমি দেখি এ লোকগুলো অধিকাংশই অল্পশিক্ষিত মানুষ৷ এরাই ইসলামকে নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্ম থেকে বাঁচে৷ কিন্তু ক্ষতিটাতো করছে মুসলমানদেরই৷ আজ আমরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে পিছিয়ে আছি জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মানবতাবিরোধী ফতোয়াবাজির কারণেই৷ মুসলিমদের এগিয়ে নিতে হলে মূর্খমোল্লাতন্ত্রের দেয়া এসব শৃঙ্খল ভাঙতেই হবে৷

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



মোল্লাদের উপর সামাজিক দায়িত্ব নেই, শিক্ষিত উপর আছে; আপনি ও বাকী শিক্ষকেরা কি করছেন, সেটা নিয়ে লিখুন।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩২

মুজিব রহমান বলেছেন: মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক ও মুক্তচিন্তায় উৎসাহিত করার জন্য লেখালেখিতো করছিই। এর বাইরে অনেকগুলো সামাজিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করছি। সংগঠক হিসেবে- একটি সচল ও কার্যকরী ভূমিকা পাঠন করতে থাকা পাঠাগারের সভাপতি, অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের একটি কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক (আমার উপজেলা শ্রীনগরে বিক্রমপুর জাদুঘর স্থাপিত হয়েছে যাতে মূল্যবান পুরাতন সামগ্রী সংরক্ষণ ও প্রদর্শন করা হচ্ছে), বিক্রমপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি, ঢেউ এর সম্পাদক, একটি উপজেলার মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সভাপতিসহ বিভিন্ন সংগঠন এর মাধ্যমে কাজ করছি। যেমন- মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার মাধ্যমে সম্প্রীতি সমাবেশ করেছি। গত এক বছরে পাঠাগারের মাধ্যমে ২ হাজারের বেশি বই ইস্যু করেছি। বই উৎসব করেছি। কয়েকটি মাসিক/ত্রৈমাসিক পত্রিকায় নিয়মিত লিখছি ও সচল রাখতে ভূমিকা রাখছি। এর মাধ্যমেই সামাজিক দায়িত্ব পালন করছি। করোনাকালে অনলাইনে শতাধিক পাঠচক্র করেছি এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করছি। ব্লগে আমার যে দায়িত্ব তা হল লেখা, অন্যের লেখা পড়া, মন্তব্য করা ও মন্তব্যের জবাব দেয়া। সেটা করারও চেষ্টা করছি। আপনি ব্লগে সচল আছেন এটা করে ব্লগে আমার চেয়েও বেশি দায়িত্ব পালন করছেন। আমার লেখার মাধ্যমেই মৌলবাদ বিরোধী মনোভাব তৈরি করার চেষ্টা করছি।

২| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৭

ফটিকলাল বলেছেন: শরৎচন্দ্র বা রামমোহন রায়ের মতো সংস্কারকের জন্ম হয় না কারন আমাদের হুজুর সমাজ ফাসেক, ব্যাভিচারী, ইনঘিমাস, উলামায়ে শূ দিয়ে ভরা। এবং আমাদের আপামর সমাজ এসব হীন মানসিকতার উলামায়ে শূ অনুসরনে পারদর্শী। এক কাজী নজরুল ইসলাম লেখালেখির কারনে তাকে নাস্তিক উপাধি পেতে হয়েছে।

আমার মনে হয় না এরকম হীন মন মানসিকতার মৌলানা থেকে আমরা মুক্তি পাবো। ব্লগেই তো দেখি কত উলামায়ে গুগলের আনাগোনা।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৩

মুজিব রহমান বলেছেন: এরা কোনভাবেই চায় না মানুষ সচেতন হোক, উন্নতি করুক। শুধু চায় মানুষ মূর্খ থেকে তাদের পূজা করুক।

৩| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৫

শাহ আজিজ বলেছেন: এবার তিন ওলামায়ে শু সরকারকে একহাত দেখিয়ে দিল । ফেলে দেবেন না ওদের , ওদের হাত পা গজাতে সাহায্য করেছে এরাই যাদের হুংকারে আমরা ভীত ।

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৯

মুজিব রহমান বলেছেন: সেটাও সত্য। ওদের টেনে দল ভারি করা বা তারা যাতে আন্দোলন সংগ্রাম না করে সামান্য সুবিধার বিনিময়ে সে চেষ্টািই করেছে সরকারগুলো।

৪| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:




আপনি হয়তো পদলোভীদের একজন, সেজন্য এতগুলো সংস্হার সাথে জড়িত; শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার জন্য শিক্ষকদের অবদান কেমন?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪২

মুজিব রহমান বলেছেন: ধারণা করেছিলাম আপনি এমন মন্তব্য করবেন। আপনি ওটা ফাঁদ পেতেছেন তাতেই বুঝেছিলাম। ধন্যবাদ। আমি পদলোভী নই বলেই বহু পদ গ্রহণ করিনি। সক্রিয় থাকার চেষ্টা করি।
একটি হাইস্কুল ও একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছি স্বল্প সময়। এখনো শিক্ষকতা করি তা নয়।

৫| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২২

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

কিন্তু সঠিক সত্য হলো তারাই হয়তো বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
পুরো বাংলাদেশের জনসাধারণের চাল চ্চিত্র দেখে আমার কাছে তাই মনে হচ্ছে।
আপনি যতই লিখুন না কেন কোন কাজ হবে না।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৪

মুজিব রহমান বলেছেন: কাজ হতেই হবে। এমন লেখা যেতো খুবই কম। উগ্রপন্থীরা পিছু হটতে বাধ্য হবে। কদিন দেখুনই না। ওরা শত চেষ্টা করেও মিছিলগুলোতে লোক বাড়াতে ব্যর্থ হচ্ছে। সে তুলনায় একাত্তরের পরে এ প্রথমই দেখছি তাদের পিছু হটতে।

৬| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১১:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: কিছু মনে করবেন না- আমি কোনো মন্তব্য করবো না।
তবে একটা কথা বলি- আজো মনখারাপের ওষুধ চন্দ্রবিন্দু আর অঞ্জন দত্ত।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৪

মুজিব রহমান বলেছেন: মন খারাপ করবেন না।
আমরা সক্রিয় থাকলে ওরা পিছু হঠতে বাধ্য হবে।

৭| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আরে মোল্লারা নিজেরা নিজেরা বনে না আপনি দেখেছেন তবুও তাদের কথা লিখেন। ফেনী পশুরাম ভারতের সীমান্ত এলাকা এখানে চোরাচালান ও মাদক চালান হয় জড়িত তিনজন উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপি। বলেন কার ক্ষমতা আছে

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৬

মুজিব রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ!
মাদকব্যবসায়ী ও সেবিরাও ক্ষতিকর। তবে মোল্লাতন্ত্র রাষ্ট্রের রক্তনালী ও মস্তিষ্কই ধ্বংস করে দেয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.