নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস । তবু , উড়েছিনু, এই মোর উল্লাস

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ

নিজ জীবনোপন্যাসের নায়ক

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নৈতিকতা ও পিডোফিলিয়া

২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৯

আমি খুব জড়সড় হয়ে ভদ্রমহিলার সামনে বসে আছি। পা একটার উপর আরেকটা কিভাবে রাখব সেটা নিয়ে নিজের ভেতরে তুমুল ঝগড়া চলছে । বড় কারো সামনে একদম সোজা হয়ে বসার সময় পা একটার উপর আরেকটা রাখলে সেটা কি বেয়াদবির পর্যায়ে পড়ে ?

'তুমি কি কোন কারণে অস্বস্তি বোধ করছ ? ' সামনে বসে থাকা ভদ্রমহিলা প্রশ্ন করলেন ।

'না,না । আমি ঠিক আছি । ' খুব মৃদুভাবে উত্তর দিলাম আর নার্ভাসলি তার দিকে তাকালাম ।

শ্যামলা গায়ে জলপাই কালারের শাড়ি । এতদিন জানতাম শ্যামলা মানুষকে জলপাই রঙ্গে ভাল লাগেনা । উনাকে দেখে প্রথম বুঝলাম, আমি ভুল এবং ভাল মতনেই ভুল ।
কয়েকদিন আগে মাত্র দ্রৌপদীর কাহিনী পড়েছি । উনাকে দেখে সেই দ্রৌপদীর সৌন্দর্য বুঝতে পারলাম ।

'দেখ ছেলে । আমি যে তোমার দাদি লাগি সেটা জেনেছ । নরম্যাল হও । এমন কাঠ হয়ে বসে থাকার দরকার নেই । ছোটবেলায় তোমার প্যান্ট পর্যন্ত আমি বদলিয়েছি । হিহি । '

সামনে বসে থাকা দ্রৌপদী মহিলা সত্যিই আমার দাদি হন । গ্রাম সম্পর্কের দাদী । দাদি হলেই যে বয়স্ক বয়স্ক হতে হয়,এমন না । উনি খুব অল্পতেই দাদি হয়ে আছেন । মা হওয়ার আগেই দাদী হয়ে আছেন ।
আমি খুব মিনমিন করে বললাম, 'আমি ঠিক আছি । ' বলে শরীরটাকে আরেকটু মুছড়ে আরাম করে বসলাম ।
দ্রৌপদী আমার সাথে কথা জমাবার চেষ্টা করছে বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে, কিন্তু আর্লি টিন লাইফের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল কারো সাথে আলাপ করার মত বিষয় পাওয়া যায় না । নিজেকে ঠিক বড় ভেবে বড়দের সাথে যেমন কথা বলা যায় না,তেমনি ছোটদের প্রতি অনীহা আসে । মনের মধ্যে 'বড়' হওয়ার টপিকগুলো ডাক ডাক গুড় গুড় করে,কিন্তু বলার মত সাহস পাওয়া যায় না । তাই দ্রৌপদীর সব চেষ্টা বিফলে দিয়ে তের চৌদ্দ বছরের আমি মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম । তখন নতুন এসেছি ফেসবুকে, তাই চ্যাট করার তৃষ্ণা তখন পুরোমাত্রায় । অন্ধ্র প্রদেশের মেয়ে অশ্বিনী যে কিনা আমার চেয়ে কয়েক বছরের বড়,তাকে লিখলাম --ফ্রেন্ডশীপে বয়স কোন ফ্যাক্ট নয় ।

কথাটা লিখেছিলাম এবং নিজের কথাতে নিজেই চমৎকৃত হয়েছিলাম । যে কথাটা লিখেছি,সেটা নিজে যদি বিশ্বাস না-ই করতে পারি,তবে লিখলাম কেন?
আর বিশ্বাস করলে সামনে বসে থাকা দ্রৌপদীর সাথেও ফ্রেন্ডশিপ সম্ভব । এই প্রথম একটু ইজি হওয়ার প্রয়োজন বোধ করলাম ।

দ্রৌপদী আমার মনের ভাব বুঝল কিনা কে জানে । ও আমার পাশে সোফায় এসে বসল । বলল,'মোবাইলে কি এত গুঁতাগুঁতি কর? কারো সামনে বসে থেকে এভাবে মোবাইল টিপা অভদ্রতা । দেখি,কি কর মোবাইলে? প্রেম কর? '

প্রশ্ন শুনেই আমার কান গরম হতে লাগল । এভাবে সরাসরি অল্প পরিচিত কেউ প্রেম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে পারে এটা আমার ধারণার বাইরে ছিল ।
আমার অবস্থা দ্রৌপদী বুঝতে পারল । 'আরে,এত এম্রাসড হচ্ছ কেন? আমি সম্পর্কে দাদী হই। নাতীরা স্বামীর সমান । তুমি আমার দ্বিতীয় স্বামী । আহারে ছোটবেলায় কত চুমু দিতাম তোমায়! এই রে! এত লজ্জা পাচ্ছ কেন? '

বলতে বলতে দ্রৌপদী আমার দিকে ঝুঁকে এল আর আমি আমার কানের পাশে গরম একটা কামড় অনুভব করলাম ।
আমি আমার জীবনে এত বড় বিব্রতকর অবস্থায় পড়িনি । কি করতে হবে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না,শুধু বুঝতে পারছিলাম আমি আমার উপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছি ।

অবশ হয়ে যেতে থাকা হাতকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা বাদ দিয়ে দ্রৌপদীর দিকে তাকালাম--- পূর্ণ মনোযোগের সাথে ।

নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে আর তিরতির করে চোখ কাঁপছে । শ্যামলা গালের বাম পাশে একটা তিল হাসি দিলে সেটা টোপরের মাঝে হারিয়ে যায়। দ্রৌপদী তখন হাসছিল,তাই বুঝতে অসুবিধা হয়নি ।

সা করে উনার মুখ আমার কাছে চলে এল আর আমার মনে হল কয়েকশ ওয়াল্টের একটা বাল্ব আমার মুখের সামনে । কড়া একটু জর্দার গন্ধ পেলাম তারপর নিজেকে সরিয়ে নিলাম ।

সেদিন নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম, তবু মনে মনে চাইছিলাম দ্রৌপদী আবার আমাকে জর্দার ঘ্রাণ দিয়ে মাথা ঘুরিয়ে দিক । কিন্তু ও চুপসে গিয়েছিল আমার বিহ্বল মুখ দেখে । বলেছিল, "তুমি খুব বেশি লাজুক । লাজ ভাঙ্গাতে হবে । "

নৈতিকতার জ্ঞান খুব টনটনে ছিল সেই দিনগুলোতে । প্রেমের খাতিরে ফিজিক্যাল রিলেশন করেছে এমন শুনে শিউরে উঠেছিলাম একদিন । আর আজ ? নৈতিকতা আমার কাছে বড় অনৈতিকতা । অশ্লীলতার প্রলেপন নৈতিকতা ।

শিশুকাম অর্থাৎ পিডোফিলিয়া আমাদের দেশে নতুন নয়,প্রাচীন কালের সাথে পাল্লা দিয়েই এটা চলে আসছে । আগে গ্রহণযোগ্য ছিল বাল্যবিবাহের নামে, এখন বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ হলেও সুখি নেই শতকরা নব্বই এর অধিক শিশু । তারা কিছু বোঝার আগেই শিকার হচ্ছে পশু পিডোফিলিকদের, বিশেষ করে মেয়ে শিশুরা । তবে ছেলেরাও নিরাপদ নয়,যদিও লাজ লজ্জার ভয়ে সেই গল্প উহ্য থেকে যায় । সময় এবার লড়াই করার ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:১৪

আমিজমিদার বলেছেন: টাস্কি :-* :-* :-* :|

২| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২৪

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ বলেছেন: টাস্কি খাওয়ার কি আছে?

৩| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৩২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: লিখে যাও| সাহসী লেখা| ওরা তো টাস্কি খাবেই| লেখা পড়ে কেউ টাস্কি না খেলে সেটা লেখাই না| আর প্রত্যেকটা কমেন্টের পাশে মানে ডান দিকে কতগুলো চিহ্ন আছে, সেগুলো সর্ববামের টায় ক্লিক করলে একটা বক্স পাবে| সেখানে লিখলে মন্তব্যকারীর কাছে নটিফিকেসন চলে যাবে প্রতিউত্তরের| হ্যাপি ব্লোগিং

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৩

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ । সত্যিকার অর্থে এটা প্রকাশের পুরো কৃতিত্ব তোমার । আমি শুধু লিখে গিয়েছিলাম, পোস্ট করেছি তোমার ইন্সপাইরেশনে ।

৪| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:০৬

এম এল গনি বলেছেন: সুন্দর লেখা | তবে, "ফ্রেন্ডশীপে বয়স কোন ফ্যাক্ট নয়" বলতে ঠিক কি বুঝালেন বুঝলাম না; ফেক্টর বলতে গিয়ে ফেক্ট বললেন কি না ..

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৬

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ বলেছেন: ফ্যাক্টর বুঝাতেই সংক্ষেপে ফ্যাক্ট লিখেছি । বন্ধুত্ব বয়সের বাধা মানেনা । :-)

৫| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:২১

বিদ্রহীসূত বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন। প্রথমে ভেবেছিলাম লেখাটি অশ্লীলতার দিকে যাচ্ছে হয়ত, শেষের দিকে এসে অসম্ভব ভালো লেগেছে। দ্রৌপদীর পরিবর্তে অন্য নাম হলে ভালো হতো। এই চরিত্রে দ্রৌপদীর নাম দেওয়াটা শোভন নয়, যদিও আপনি সৌন্দর্যের তুলনা করেছেন। ঠিক আছে।
শুভ কামনা রইল।

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৫

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ বলেছেন: কোন পৌরাণিক চরিত্রকে আঘাত করা আমার ইচ্ছা ছিল না । আমি সৌন্দর্যের তুলনা কিংবা চরিত্র ফুটিয়ে এটা ব্যবহার করেছি । তবু কারো খারাপ লেগে থাকলে দুঃখিত ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.