নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস । তবু , উড়েছিনু, এই মোর উল্লাস

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ

নিজ জীবনোপন্যাসের নায়ক

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টিস্নানের বিবর্তন

২২ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৪৯

দশ পনের বছর আগেকার শৈশবের বৃষ্টিতে কোন আনুষ্ঠানিকতা ছিল না । মুগ্ধ মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে উপলধ্বি করারও প্রশ্ন ছিল না । তখনকার ঝুম বৃষ্টি, ধুম বৃষ্টি আর আন্ধা তুফান বৃষ্টি ছিল কেবলমাত্র উপভোগের । বৃষ্টি একটু ভাল করে নামল , ব্যস । আর কিছু চিন্তাই করার ছিল না । খালি গায়ে হাফপ্যান্ট পড়ে নেমে যাওয়া ছিল একমাত্র কাজ ।



এই বাড়ি, ওই বাড়ি গিয়ে দশ পনের জন মিলে যখন বড় মাটির রাস্তাটায় দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করতাম, তখন সেখানে বড় কারও শাসনের ভয় ছিল না । তবু অন্য একটা ভয়ে ঠিকই কাবু হয়ে থাকতাম । ভয়টা ছিল বজ্রপাতের ---- ঠাডা পড়া ।

এই ঠাডার ভয়ে কতবার যে মাটিতে গড়াগড়ি খেয়েছি হিসেব নেই ।



আজকাল বিদ্যুৎচমকানো কোন ভয় সৃষ্টি করে না । ক্ষণকালের সে প্রভায় শুধু স্মৃতিগুলো ঝলসে উঠে । বিদ্যুৎচমক আজকাল ভীতিজনক নয়,স্মৃতি উসকানো উদ্দীপক ।

ঠাডায় পড়া মৃত মানুষ নিয়ে কত গল্প... তাদের রহস্যময় লাশ...আর উৎ পেতে থাকা চোরের গল্প... তাই প্রতিবার বিদ্যুৎ চমকানোর সাথে সাথে দেখা যেত আমাদের দশ পনেরটা পাংশু মুখ কানের ভেতর আঙ্গুল গুজে বিড়বিড় করছে, 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু... ' আর সেই সাথে মাটিতে গড়াগড়ি ।



গ্রীক মিথ অনুসারে,জিউসের প্রদত্ত শাস্তি হল বজ্রাঘাত । আর আমাদের গ্রাম্য মিথ অনুযায়ী , শয়তানকে শাস্তি দেওয়ার জন্য এই বজ্র । শয়তান যদি কারো শরীরে আশ্রয় নিতে পারে,তবে তার উপরই ঠাডা পড়বে । শয়তান বুঝে শুনে আগেই চলে যায়,মাঝখানে মারা যায় মানুষটা । তাই 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ... 'বললে শয়তানও ঘেঁষে না,নিরাপত্তাও ষোলআনা ।





শয়তান আমাদের কাছে কতবার এসে ফিরে গেছে, আদৌ আসতো কি-না, জানা নেই । তবে এটুকু জানি যে,মাটতে গড়াগড়ি খাওয়াটা খুব উপভোগ্য ছিল । বৃষ্টিতে গোসল করতে এসে পরিষ্কার হওয়ার বদলে কাদামাখা মূর্তির নোংরা অবতার হয়েই পুকুরে নামতাম ।



আজকাল ঝড় - বৃষ্টি - বাদল - বজ্রপাতে ভয় পাইনা । ভয় পেতে ইচ্ছে করে । মাটিতে গড়াগড়ি দিতে ইচ্ছা হয় । ইচ্ছা হয় প্রবল বৃষ্টির মাঝে কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে থাকতে । কোন কিছুই করা হয় না । শুধু ফেসবুকে আদিখ্যেতা মাখানো কয়েক লাইন লেখা পোস্ট করা হয় । কয়েকটা লাইকের কাছে বাদলা দিনের চালভাজা খাওয়ার আনন্দ বিনিময় হয়, খুব বেশি হলে বৃষ্টির শব্দে মিশিয়ে চা-কফি খাওয়া হয় ।



তবু আক্ষেপ থেকেই যায় । বারান্দার পাশে না খেয়ে ভরা বর্ষণের মাঝে চা খাওয়ার আক্ষেপ । উঠানে জমে যাওয়া পানিতে পেঁপে গাছের ডাল দিয়ে মেশিন মেশিন খেলার আক্ষেপ , বৃষ্টির মাঝে পুকুরে গোসল করার আক্ষেপ আর... থাক আক্ষেপের ফিরিস্তি দীর্ঘ করে লাভ কী ?

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:০৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: থাক আক্ষেপের ফিরিস্তি দীর্ঘ করে লাভ কী ?

২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:৪৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ ,




বাহ্‌.... বেশ সুন্দর আক্ষেপ, বৃষ্টির জন্যে ।

আজকাল কি সেই বৃষ্টি আছে ? দিন বদলেছে , বদলেছে বৃষ্টিও । আজকালকার বৃষ্টি তো ফ্লেক্সি লোডের মতো এই শুরু তো এই-ই শেষ !

৩| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১:০৩

পার্থ তালুকদার বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণ ।

৪| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১৪

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ বলেছেন: প্রকৃতির উপর অত্যাচার করলে বৃষ্টি বদলাতে বাধ্য

৫| ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১৪

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ বলেছেন: প্রকৃতির উপর অত্যাচার করলে বৃষ্টি বদলাতে বাধ্য

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.