নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস । তবু , উড়েছিনু, এই মোর উল্লাস

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ

নিজ জীবনোপন্যাসের নায়ক

ফরহাদ বিন হাফিজ পরাগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মহত্যায় জীনগত প্রভাব : হেমিংওয়ের আত্মহত্যা

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:৩১

আত্মহত্যার কারণ হিসেবে পারিবারিক ইতিহাসকে কতটুকু দায়ী করা চলে ? জেনেটিক ইনিহেরিট্যান্সকে সরাসরি যদিও দায়ী করা যাচ্ছে না,তবু বিজ্ঞানীরা RGS2 নামের এক জীনের সন্ধান পেয়েছেন যেটাকে পারিবারিকভাবে দায়ী করা চলে অনেকটাই । বিশেষ করে,আর্নেস্ট হেমিংওয়ের পারিবারিক ইতিহাস ঘাটলে কিছুটা বিশ্বাস করতেই হয় যে আত্মহত্যার পেছনে পারিবারিক উত্তরাধিকারও কিছুটা দায়ী !

১৯৬১ সালের জুলাই মাসের এক সকাল,যখন খুব কম মানুষই ঘুম থেকে উঠেছে । হেমিংওয়ে উঠলেন, এবং খুব সাবধানতার সাথে বিছানা ছাড়লেন যেন পাশে শুয়ে থাকা তার স্ত্রী, মেরী জেগে না যায় ।
স্টোর রুম থেকে কবুতর শিকারের দুনলা বন্দুকটা বের করলেন,অত্যন্ত সন্তর্পণে । একজন শিকারি পুরুষ,যিনি সারাজীবন শিকার করতে ভালবাসতেন, তিনি অগ্রসর হচ্ছিলেন জীবনের সেরা অথচ কুখ্যাত রাজকীয় শিকারটির জন্য ।

লেখক জগতের টাইটান নিজেকে নিজে শিকার করার জন্য রাজকীয় সাজে সজ্জিত করলেন । তাঁর প্রিয় "এমপেরর রোব " অর্থাৎ "সম্রাটের আলখাল্লা " পড়ে বাড়ীর সামনে লনে দাঁড়ালেন । কপালের যে জায়গাটায় 'তৃতীয় নয়ন ' আছে বলে ধারণা করা হয়,সেই "থার্ড আইয়ের " জায়গাটায় বন্দুক ছোঁয়ালেন, তারপর ট্রিগার চাপলেন । খুব সহজে,খুব বেশি সহজে জীবনাবসান হয়ে গেল ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সী এর স্রষ্টার । '৫৪ তে নোবেল জয়ী এভার ইয়াং ম্যান নিজের 'আর্মের ' কাছে 'ফেয়ারওয়েল ' দিলেন । রাজকীয় একটা মৃত্যু হল তাঁর,শেক্সপীয়ারের ক্লিওপেট্রার মতন : "Give me my robe. Put on my crown; I have immortal longings in me".

আর্নেস্টের বাবাও নিজেকে হত্যা করেছিলেন । যে বাবাকে একটা সময় প্রচণ্ড ঘৃণায় নিজে হত্যা করতে প্ল্যান করেছিল আর্নেস্ট, সেই বাবার মৃত্যুতে অকল্পনীয়ভাবে ভেঙ্গে পড়ে ।

কৈশোরে বাবার প্রতি "ইডিপাল ডিসায়ার " ছিল,অর্থাৎ নিজের বাবাকে হত্যা করতে চাইতো । হত্যা করতে চাওয়ার কারণটা খুব দুঃখজনক এবং সেই সাথে হাস্যকর । তাঁর বাবা একবার তাঁকে রেজর বেল্ট দিয়ে মেরেছিল, প্রবল ব্যক্তিত্বসম্পন্ন আর্নেস্টের তাই বাবার উপর ছিল দারুণ ক্ষোভ । সেই ক্ষোভে বাবাকে গুলী করে হত্যা করতে চেয়েছিল । পরিণত বয়সে বাবা নিজেই যখন নিজেকে গুলী করে,তখন মেনে নিতে পারেনি কোন মতেই । বলা যায়, বিষণ্ণতার সাথে তখন থেকেই পরিচয় হয় আর্নেস্টের ; যার তীব্রতা বৃদ্ধি পায় ভাই লিচেস্টারের আত্মহত্যায় ।

শুধু লিচেস্টার নয়,হেমিংওয়ের আরেকজন ভাই উরসালাও বেছে নিয়েছিল আত্মহননের পথ ।

হেমিংওয়ে পরিবারের সর্বশেষ আত্মঘাতী হলেন আর্নেস্টের নাতনী, অভিনেত্রী মার্গাউক্স হেমিংওয়ে । মার্গাউক্সকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় ক্যালিফোর্নিয়ার এক হোটেলে,১৯৯৬ সালে ।
দাদা, পরদাদার মতন নিজেকে গুলী করেননি মার্গাউক্স, প্রচুর ড্রাগ নিয়ে থামিয়ে দিয়েছেন নিজেকে ।

প্রথমে বাবা,তারপর আর্নেস্ট হেমিংওয়ে নিজে এবং তাঁর দুই ভাই এবং সবশেষে নাতনী । তবে কি মাঝখানে হেমিংওয়ের একটা প্রজন্ম আত্মহত্যার অভিশাপ থেকে মুক্ত ছিল ? নাহ,অভিশাপ ছাড়েনি আর্নেস্টের ছেলে - মেয়ের প্রজন্মকেও । হেমিংওয়ের ছেলে জর্জ (যে ট্রান্সসেক্সুয়াল এবং গ্লোরিয়া নাম গ্রহণ করে) সেই গ্লোরিয়া নিজেকে নিজে শেষ করে দেয় ২০০১ সালে ।

তবে কি আত্মহত্যার সাথে পারিবারিক ব্যাপার স্যাপারও খানিকটা যুক্ত ? খানিকটা নয়,বরং বেশ খানিকটা যুক্ত বলেই বিজ্ঞানীদের অভিমত । শতকরা প্রায় ৪৩% ডিপ্রেসড আত্মহত্যাকারীর কেস স্টাডিতে RGS2 কে দায়ী করা হয়েছে, যা কিনা উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত !

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:৩৮

ফাহাদ ইবনে মুরতাযা বলেছেন: !!

২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ৯:৩৫

রাতুলবিডি৪ বলেছেন: !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.